দ্বিতীয় বিশযুদ্ধ-সমকালীন বাংল! কথাসাহিত্য
(১৯৩৯--১৯৪৫)
ডঃ মীর ঘোষ
ঃ পরিবেশক £ মডার্ণ বুক এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড ১* বহ্িম চ্যাটার্জী গ্রীট কলকাতা +০০০৭৩
[01099 315518]000110-98,7418166]) 390019 181118591)1199 (1939-1/4৭ ) $/110061) 09 191 01118 010051)
প্রথম প্রকাশ £ ১৯৬৯
প্রকাশক £ ্লীকালদাস মত ৩৪|কে 'সমলা বোড কলকাতা ৭০০০৬
মুদ্রাকব £ শ্লীমদন মোহন কুমার মদন প্রেস
১/১এ গোমাবাগান স্ট্রীট ঝলকাতা 9০9০9০০9৬
উত্স্গ
আমাব পরমতম শ্রত্ধেয় দ্বর্গতি গগতা শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ স্মরণে
এবং
আমার অন্তরঙ্গ বন্ধযর মত মা শ্রীমতী বেলার়াণী ঘোষের করকমলে
১৪ই সেপ্টেম্বর ১৯৮৪
প্রথম অধ্যায় দ্বিতীয় অধ্যায় তৃতায় অধ্যায় চতুথ অধ্যায় পণ্ম অধ্যায় ঘণ্ঠ অধ্যায় সঞম অধ্যায়
জন্টম অধ্যায নবম অধ্যায়
দশম অধ্যার একাদশ অধ্য।য়
সৃচীপত্র
উপরুমাণিকা ১ দ্বিতীধ '্বিষুদ্ধ-সমকালীন পশ্চাংপট ৩৪ গতানুগাঁতক বিষ ও ভাবধারার অনুসৃত ৫৮ 'দ্বতাঁয় বিশ্বষুণ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চিত্ত ৬৬ প্রাকীতক দুষেগি ও মন্বন্তর-প্রাতক্রিযাব ছাব ৯৬
ব্যাপক গণশীবক্ষোভের উত্জবল ভাত্তভাম বাংলা কথাসাহিত্য ১৫২ নবোদ্ভূত ধাঁনক শ্রেণী, সামাজিক শ্রেণী-বৈষম্য এবং অদ্হিবতা-
অবন্গষেব নফল রূপাযন ১৯৯ প্রেম-ভাবনা, দেহ-সর্বস্বতা ও উংকৌন্দ্ুক হাদযভাবের উজ্জল ব্প ২৩৯ বাংলা কথাসাহত্যের বিষয়ে বাবধ-আদ্বাদ-বৈচিন্না ৩০৬ বাংলা-কথাসাহিত্যের রুপ ও রাত ৩৫১ উপসংহার ৩৭২
নিবেদন
বাংলাদেশের রাজনগতি-আর্থনগতি-সমাজনণাত সহ বশ শতকেব দ্বিতীঘ ি*বষুদ্ধ- সমকাল সাহত্য ও সং্কাতিব ক্ষেত্রে এক আত জাটলতম সময় । এমন ছ”ট বছরের গধ্যে বাঁচত বাংলা-কথাসাহিত্য অর্থাৎ গল্প ও উপন্যাস এক গ্রুত্বপণণ সময-পাবাধব ফসল-বশেষ । এই সমযের বাংলা-বথাসাহত্য যে, আম যতটা জান, বাংলা ভাষায কোন গ্রন্ছ আজ পযন্ত বত হযাঁন। দঃঃএবাঁট একেবারেই ছেট-খাটো প্রবন্ধ বচিত হলেও তা অনুল্েখা । সূতবাং আমাব এই গ্রন্হাটই সেই প্রযাসে প্রথম পদক্ষেপ । বতমান গ্রন্হটি আমাব কলকাতা বশ্বাবদ্যালযে পি. এইচশড. পবীক্ষায় প্রদত্ত গবেষণাণগ্রন্হ । একালের একজন খাতকটর্তি মননশনল প্রব'ধকান এবং কলকাতা বিশ্বাবদ্যালযের বাংলা ভাষা ও সাহত্যের অধ্যাপক ও াবডার, আমাব শ্রদ্ধেম শিক্ষক ডঃ উজ্জবলকুমার মজুমদারের অধীনে আমি এই কাজ কাঁব। কাজাঁট কবাব সময় তিনি যে-সব মূল্যবান উপদেশ ও নির্দেশ দেন, যেভাবে-এক-একাঁটি অধায লেখা শেষ হওষার সঙ্গে সঙ্গে আতি দ্রুত আমাব পান্ডুূলাপ দেখে সংশোধন কবে দেন, তা যদ না করতেন, বি*বাঁবদ্যালষ-ীনাঁদণ্ট সময-সীমায এই গ্রন্হটি জমা দেওযষা আমাব পক্ষে কোনক্রমেই সম্ভব হত না। তাঁব মত শিক্ষকেব সাঙ্গ আমাব সম্পক মাম্ীল কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা প্রকাশেব অনেক উধের্ব । তাৰ অনগত ও দ্নেহধন্য ছান্রী ?সেবে আমার এই গ্রন্হটিই তার প্রাত আমাব আজীবন সশ্রদ্ধ প্রণান হযে বইল । গ্রন্হটিব অন্যতম পবাক্ষক ছিলেন কলকাতাব ববীন্দ্রভাবতী 'বিশ্বাবদ্যালযেব বাংলা ভাবা ও সাঁহত্যেব গিবভাগীয প্রধান ডঃ ক্ষেত্র গুঞ্তু পি. এইচ.-ড. ডি. লিট । তাঁকেও আমাব সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই । আংধাশক হলেও পাশ্চমবঙ্গ সবকাবের আর্থক অনুদানটুকু না পেলে এই গ্রন্হটি প্রকাশে আম সাহসই পেতাম না, ভাঁবধ্যতে কোনাঁদন প্রকাশিত হত কনা সন্দেহ । গ্রন্থটি ছাপাব বাজ মদন প্রেসেব পক্ষে তবুণ কুমাব এবং ছাপাখানাব কম"রা আমাকে যথাসাধ্য সাহাখ্য কবোছন ৷ তাঁদেব আঁম আন্তবিক কৃতজ্ঞতা জানাই । গ্রন্থ যে বেশ কিছু ছাপাব ভুল থেকে গেছে তার মূলে আম এবং আমাব অসতর্কতা ও প্রুফ দেখাব অনভিজ্ঞ তাই দায়ী । পববত+ সংস্করণ প্রকাশের সুযোগ কোনাদন হাল নিশ্চই সম্পূণণ নিভূি ববাব চেপ্টা কবব । তবু দুশট গ্বৃত্বপ্ণ মুদুণ-প্রনাদের উল্লেখ প্রযোজন, না হলে গ্রন্হেক সহ্দয় পাঠক-পাঠিকাবা ভুল বুঝবেন। ২৮ পন্টায ২১ লাইনে 'নান্দ্রলাল- বসুর বদলে পড়তে হবে 'নবেশ5ন্দ্র সেনগুেব » ১৬১ পঙ্ঠা থেকে ১৬২ পৃষ্ঠার মধ্যে মানক বন্দ্যোপাধ্যাযের একাঁট গজ্পের নাম একাধকবাব ছাপা হযেছে "বলাসমন”, পড়তে হবে শবলামসন, ৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালীন বাখল! কথাসাহিত্য (১৯৩৯-১৯৪৫)
প্রথন্ম অন্যান উপক্রমণিকা।
এক
বাংলা সাহিত্যস্ধারায় কথাসাহিত্য শাখাটি অর্বাচীন কালের হ্ৃষ্টি। উনিশ শতক--যে কাল পাশ্চাতা বেনের্সায উচ্চকিত, তারই দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে প্রথম দিকে এব আবির্ভাব ঘটে । আবির্ভাবের মুহূর্তে কথাকারদের পক্ষে রচনার মূল প্রেরণা ছিল সমাজ-সংস্কার-প্রয়ান৯», সমাজের শুভাশুভবোধ, আর এর পরিকল্পনা গৃহীত হযেছিল পশ্চিমী সাহিত্যের শিক্ষা ও সংস্কৃতির নতুন অভিজ্ঞত। থেকেই। কিন্তু সেই আবির্ভাব সময়েব সামাজিক-সাংস্কতিক-অর্থনৈতিক পরিবেশ বিচারে এটাই সহজবোধ্য ইয় যে, কথাপাহিত্য অর্থাৎ গল্প-উপন্তাস রচনার উপযোগী সমাজরূপ তখন ছিল না বাংলাদেশে । দে সময়ের বাংলাদেশের ফিউডাল-প্রথাবদ্ধ সমাজ ছিল একেবারেই অনগ্রসর, অথচ সুগঠিত নাগরিক মধ্যবিত্ত সমাজ না হলে কথাসাহিত্যের, তার যথার্থ প্রকাশের উপযোগী সবল ভিত্তি রচিত হয় না। এবিষয়ে সমালোচকেব মন্তব্য গ্রহণযোগা)-]106 10061 15 009 616 21 [0]া) 0 ০01 100061) 008156015 59০1615 , 11169201160 105 01) 9090016 10 115 ০৫] ০01 016 ৪০০1819.২ এই সময়ের অপটু বাংলা গগ্যও তাব শৈশব-অবস্থ! সম্পূর্ণ কাটিয়ে উঠতে পারে নি বলে কথাসাহিত্য রচনায় সে সবল স্থস্থ প্রেরণ! যোগাতে অক্ষম হয়।
তবু উনিশ শতকের এই দ্বিতীয়ার্ধের শক থেকে ক্রমশ প্যারীচাদ মিত্র, মধুস্থদন, কালীপ্রদন্ন সিংহ, বংকিমচন্ত্র প্রমুখ তীক্ষতধী পুরুষদের হাতে যেভাবে গন্য যৌবন- স্বতাবে চিহ্নিত হয় ত্বরিত, ঘেভাবে রেনের্লার প্রেরণায় দেশজ আত্মাম়ুজির উল্লামে নেচে ওঠে, ন্বজাগরণের আন্তর প্রেরণায় নরনারীর ব্যক্তিত্বাতস্ত্রবোধ ্পষ্ট হয়, তাতে অভাব্নীয়ভাবে অন্তত উপন্তান একটা স্থায়ী মর্ধাদ1! পাবার মত রূপ
চি
পেতে শুরু করে। প্যারীাদ মিত্র টেকটাদ ঠাকুরের ছদ্মনামে যে “আলালের ঘরের দুলাল” উপন্তা রচনা করেন, তা বাংলা কথাসাহিত্য*্ধারায় প্রথম উপন্তাস নিশ্চয়ই, কিন্তু লেখক ন্বয়ং মে সম্পর্কে যে অঅচেতন ছিলেন তার প্রমাণ তার গ্রন্থটির ভূমিকার মত মন্তব্যেই”-4006 আ০:10 1085 ৮660 আ110]) 10 ও 9001৩ 5151৩ ৪0৫ €0 :101617615 06510005 ০01 200101176 10 10101112010 1071011606৩ 01 0116 760581) 18050266 2110 2০000211002006 %101) 1311700] 00779695010 1166) 11 %/11| 0911)91)8 06 08100 85610].৩
১৮৫৫ সালে প্যারীটাদের পক্ষে সার্থক উপন্তাস রচন। নিশ্চয়ই দুরূহ ছিল, কারণ যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবোধ ও সমাজে নারীর পূর্ণ প্রতিষ্ঠা উপন্যাসের অন্যতম মূল প্রেরণা, ত৷ তখনও লেখকের সামনে দেশজভাবে প্রত্যক্ষ নয় । বঙ্কিমচন্দ্র আপন প্রখর মনীষায়, অভিজ্ঞতায় ও পূর্ণ ব্যক্তিত্বের অপ্রতিহত ক্ষমতায় নবাগত রেনেসাকে শিবের সমুদ্র- মন্থনজাত বিষ আক গ্রহণ করার মত আত্মস্থ কবে যে কথাসাহিত্য রচনা করেন, মেখানেই সার্থক বাংলা উপন্যানের প্রথম “মাইলস্টোন” চিহ্নিত হল। তা হল 'ছুর্গেশনল্দিনী? |
এইভাবেই উনিশ শতকেব উপন্তাসেব জন্মলগ্র থেকে এক একজন অসম্ভব ক্ষমতাবান মানুষের ব্যক্তিত্বের বেগে কথাসাহিত্য-ধাবার অগ্রগমন ঘটে । প্যারীচাদ মিত্রের হাতে যার শুভ জন্যেব শঙ্খধবনি, বঙ্কিমচন্দ্রের লেখনীতে তারই রক্তিম গ্রাণময় যৌবনকালেব প্রবল ঝংকার । বাংলা কথাসাহিত্য-ধারায় বঙ্কিমচন্ত্র স্বযং একটি যুগ বা বোধহয মহাকাল- নির্দিষ্ট একটি সময়। প্রধানত উচ্চকিত বেণেণয এবং গৌণত প্যাবীঠাদ মিত্রের উপন্যাস বচনার স্থত্রে বহ্িমচন্দ্রের মনে উপন্যাস রচনার প্রতিক্রিয়া জাগে। এই প্রতিক্রিযায় বঙ্ছিমচন্ত্র নিজ কালচেতনায নবজাত কথাপাহিত্যে যে বেগের স্থষ্টি করেন, রবীন্দ্রনাথ উপন্তামে আনেন আর এক নতুন প্রতিবেগ। বঙ্ষিমচন্ত্র বাংলাদেশে উনিশ শতকের একজন পূর্ণ মানুষ । রবীন্দ্রনাথ উনিশ ও বিশ এই ছুই বিশাল ও জটিল শতকের যৌজক এক পূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এই ছুই ব্যক্তিত্বের কথাসাহিত্য-সথপ্টির বেগ-প্রতিবেগে বাংলা কথা- সাহিত্য-ধাবা এসে দভায় বিশ শতকের প্রথম বিশ্বযুদ্ধেব (১৯১৪-১৯১৮) পরে, কল্লোলে'র কালে।
বিশ শতকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ওপনিবেশিক ভারতবর্ষে দেশজ রাজনৈতিক চেতনা, সমাজভাবনা, অর্থ নৈতিক বিধি-ব্যবস্থা। নতুন নতুন ভাবনা-চিন্তায় দীপিত হয় । নিশ্চয়ই উনিশ শতকের মত নয়, বিশ শতকেব তৃতীয় দশক থেকে ত্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪%) আগে পর্ধন্ত যে বিদেশী চেতনা-ভাবন! লেখক-বুদ্ধিজীবীদের প্রাণিত করে,
ও
তা অনেক জটিল হয়ে গঠে। তখন গড়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত নাগরিক সমাজ জীবন। সমাজনিহিত এই জীবনকে গ্রহণ ও গ্রান করে যে সমস্ত অসম্ভব ক্ষমতাবান লেখক “কল্পোলে'র কালে কথাসাহিত্ রচনাষ ব্যস্ত হন, তারা বাংল! কথাসাহিত্য-ধারায় আবার এক বেগের স্প্টি করেন । বঙ্কিমচন্দ্রকে কথাকারের সর্বোচ্চ স্বমহিমায় রেখে রবীন্দ্রনাথ সরে এসেছিলেন আর এক নতুন দিকের অন্বেষণে । সেই অন্বেষণের শেষ ধাপে কল্লোলের লেখকরা কথাসাহিত্য ধাবা নতুন বেগের সঞ্চার ঘটালেন । বাংলা উপন্তাস যুগ ও কালের প্রেক্ষাপটে আবাব লক্ষনীয়ভাবে ধার! বদল করে । নতুন বেগে দেখা দেয় কথা সাহিত্যের নতুন বূপ* নতুন পরীক্ষা-নিবীক্ষা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সেই ধারায় আবার এক জটিল আঘাত দিতে শুরু কবে। নতুন নতুন উপকবণে বাংল! কথাসাহিত্যেব ধাবা-মুখ উজ্জ্বল হতে থাকে । জাটলতায়, বিশ শতকের বিক্ষত হ্বভাবে, ছন্দে বাংল! কথাসাহিত্যেব নতুন নতুন মুখবিম্ব ভেসে ওঠে। আমাদের কথ! হুল, বাংল! উপন্যাস ও ছোটগল্পেব ধারা সেই প্যারীঠাদ মিত্রের হাত থেকে বঙ্কিমচন্ত্র-ববীন্দ্রনাথ-কল্লোলের কাল ধবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক-কাল ও সমকালে বার বার নতুন হয়ে উঠেছে । প্রতিবাবেই বেগ ও প্রতিবেগ 009915) 2170107655 ও 9101)0919--এই যুক্তি-তকের ন্যায়ে তার প্রেবণা, বিকাশ ও বিবৃদ্ধি ঘটেছে।
আমাদের আলোচ্য বিষয় বিশেষ একটি সময়-ভাগের ( ১৯৩৯-১৯৪৫ ) বাংলা কথাসাহিত্য । এই সমষ সম্পূর্ণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বসমকালীন প্রেক্ষাপটটি নির্দিষ্ট করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পর এবং দ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগের বাঙালী মানুষ ও মন অনেক বেশী জটিল । নসাধারণ উপনিবেশ-লালি ত জীবনে ভয়াবহ সংকট তথন প্রত্যক্ষ । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘমকালে মেই সংকট ভযস্কব, বীভৎ্ হয়ে দেখা দেয়। এই অবস্থার প্রতিচিত্রণে সমকালের উপন্তাসে ও গল্পে কথাকাবরা যে জীবন গ্রহণ করেন তা জটিল হতে বাধ্য । কারণ, ব0৬61159 ৫0111651619 53 11)611 21 001 110, 02190119 909152106 0106 00100101651695 20৫ ০9001065 ০01 11669 8816 2100 5069956106 5০910061929 ৬০10 01,001) 01765 ৫0 00 0001 00101)160 1610090168.55
ও্পনিবেশিক ভাবতবর্ষে মধ্যবিত্ত সমাজ বিশ শতকের গোড। থেকেই অনেক বেদী সবগঠিত হতে দেখা যাষ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রবল ধাকক। পধোক্ষভাবে ভারতবর্ষে লাগে এবং সেই মধ্যবিত্ত সমাজে তার প্রতিক্রিয়া! মস্থর বিষক্রিধার মত কাজ করে চলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালে সেই বিষক্রিয়া নানাভাবে নানাদিকে দ্রুত গভীর-নিবিষ্ট হতে থাকে মধ্যবিত্ত-সমাজে ও জীবনে । যেহেতু উপন্তা হল “০৫90 ০1 ৪ 80010, 0৩%৩10112 10210015 01895 5০0০0161% ...11)6 1)151017 ০1 061501) 1968:090 &৪
৪
10018] 61088, 06865 12 16150001000 5801) 01036 200 60 ৪0০160.৫” তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বসমকালীন বাংল! কথাসাহিত্যে এই নতুন জটিলতম সমাজ ও নীতিশ্ুদ্ধ মানুষকে তীদের বক্তব্যের একমাত্র আশ্রয় করেন একালের কথাকারর]। আমাদের ধারণ! ও বিশ্বাস, বাংল! কথাসাহিত্য ধার! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্-সমকালে যেভাবে যে জটিল রূপাবয়বে সামনে আসে, তা ধারাটিকে আরও তীব্র জটিল অথচ প্রবল গ্রতিবেগের সম্মুণীন কবে তোলে । যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পবোক্ষ প্রতিক্রিয়ায় যে বথা- সাহিত্যেব জন্ম বিশ্বযুদ্বসমকালে, তার বিবিধ বিচিত্র রূপ, প্রবণতা, বৈশিষ্ট্য এবং অব্যবহিত পরবতীকালে সেই নতুন বেগের পরিণামী 9$01)5518-এব স্বরূপ কিঃ তা-ই আমাদের আলোচ্য ।
ছ্ই
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালীন বাংল! কথাসাহিত্য আমাদেব আলোচ্য বিষয় বলেই সাধারণ অর্থে বিশ শতকীয় যুদ্ধ এবং লেই ন্ত্রেই দু'টি চিহ্নিত মহাপবাক্রমশীলী যুদ্ধের স্বরূপ-বৈশিষ্টোের সংক্ষিপ্ত আলোচনা, আমাদেব মনে হয়, এ ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক হবে না। কারণ বিশ শতকের বিগত প্রায় তিরিশ বছবের (১৯১৪--১৯৪৫) দুই প্রাস্ত থেকে এমন ছুই বিশ্বযুদ্ধেব প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রতিক্রিয়। শুধুমাত্র যে ভারত তথা বাংলাদেশের এতিহাসিক সামাজিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে জটিল-যৌগিক নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তাই নষ, সেই সঙ্গে বাংলাদেশেব বহ্িমচন্দ্র-ববীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র-পুষ্ট-কথা- সাহিত্য শাখার সবল ধারাকে করেছে গভীরভাবে প্রভাবিত। আধুনিক যুদ্ধ আধুনিক বুদ্ধিজীবী মানুষের জীবনেরই গভীব-প্রোথিত বুদ্ধি-সংকটজাত মানসিকতার এক চরম প্রক্রিয়া] ও প্রকাশ । আবাব, সমালোচকের ভাষায়, 'জীবনই হলে। সমস্ত শিল্প-স্প্টির মৌলিক উপকবণ এবং গ্পন্তাসিক ছাডা আব কেউই বোধ হয় অতটা জীবনের মৌলিক উপকরণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ নন ৮৬ তাই যে কোন দেশের কথাসাহিত্য-শাখায় দুই ধারাই-_- ছোটগল্প ও উপন্যাস__সমাজব্দ্ধ মানুষের জীবন, সমাজ-ভাবনাকে সম্পূর্ণ গ্রাস করেই তার পূর্ণতা পায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-সমকালীন, দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যব্তীকালীন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চিহ্নিত ছয়টি বছরের মধ্যে রচিত কথানাহিত্য-শাখ! যুদ্ধ ও যুদ্ধের গভীরতম তাৎপর্বকে ভিত্তি করেই বিকাশ ও বিবৃদ্ধির স্ত্রে এগিয়েছে বলে মনে করি।
লক্ষ্য করার বিষয়, বিশ শতকের ছুই বিশ্বযুদ্ধই, ঘটে যাওয়ার অব্যবহিত আগে, সমকালে ও পরে মানুষের সমাজ ও জীবনকে চতুর্দিক থেকে করেছে জটিল । প্রিতদিনের জীবন থেকে দামগ্রিক জীবনের প্রেক্ষিত ও পরিণাম়কে বিদ্ময়করভাবে করে
৫
তোলে সংকটজনক। এই সংকট যেমন সমাজ ও অর্থনীতির, তেমনি তা থেকে বেরিয়ে- আসা কালে ছায়ার মত আরও গভীবতম ভয়াল প্রতিবিষ্ব অতি ধীরে মাচ্ছষের জীবনের মগ্রতাকে আবৃত করে, জীবনের গভীরে মিশে যায়। মানুষের শ্বভাবনিহিত নীতিবোধ, আবেগ-উচ্ফ্রাস, ভূল-্রান্তি, চিত্তের শুদ্ধি-অশ্ুদ্ধি, জীবন গঠনের অন্তনিহিত ছন্ব-সংঘাত যুদ্ধের ছায়ায় এক তীব্র-তির্ধক ন্ব-বূপ পায় এবং স্বাভাবিকভাবেই সেই ক্ুদ্বশ্বাস জীবন প্রতিফলিত হয সমকাল ও উত্তরকালের সাহিত্যে-_-বিশেষ করে ব্যাপকভাবে কথাপাহিত্যে। এর আর একটি কারণও ওতপ্রোত আছে কথাসাহিত্য-শাখার শিল্প আত্মার মধ্যেই । এ বিষয়ে আধুনিক সমালোচকের বিশ্লেষণই যথাযথ,_“সমস্ত মিশ্র-শিল্পের মধ্যে উপন্তাপই নবচেয়ে বেশি মিশ্র । কারণ, পরিচিত মানুষজনেরই কীতিকলাপ, আবেগ সংরাগ, ছন্ব-সংঘাত প্রতিদিনের ব্যবহৃত ভাষায় ওঁপন্যাসিক প্রকাশ করেন। জীবনের নৈতিক সংকট, ঘটনা ও পরিস্থিতি ওপন্তামিকের আলোচ্য বিষয়। কাজেই মানুষ ঘে নৈতিক ও আবেগগত বিক্ষোভের পবিসীমাব মধ্যে থাকে এবং আচার-আচবণগত যে সমশ্তয। তাকে প্রতিদিন পীড়িত করে তার সঙ্গেই উপন্তাসের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক । সমস্যা ছাড। যেমন জীবন নেই তেমনি কোনো উপন্তাসও বোধ হয় নেই।১৭
ঘে কোন গঠমান ও স্থগঠিত সমাজ, জীবন, সভ্যতার পক্ষে বিশ শতকের এক একটি যুদ্ধ হল আধুনিক বিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষার এক একটি গবেষণাগারেব মত। একালের যুদ্ধ বিবিধ বিজ্ঞান-আবিক্ষিযার গুরুত্পূর্ণ অনুষঙ্গ, অন্ুপ্রেবণা, উত্সাহ ও আধার, বলা যায়, আধেয়ও । অর্থাৎ বিশ শতকের যুদ্ধ মূলত বিজ্ঞানের যুদ্ধ। বিজ্ঞান অভিশাপ, ন1! আশীর্বাদ--এই সমাজনীতি-ভাবনার সুজ্রে কোনরকম তাত্বিক প্রশ্নের জটিলতায় আদৌ না গিযে বলা যায়, বৈজ্ঞানিক যুদ্ধে কিন্তু বাক্তি ও সমগ্র জীবন, সমাজ, সভ্যতার শিকড প্রবল ভূমিকম্পের মত কেঁপে ওঠে । যুদ্ধ হয় বিজ্ঞানের অস্ত্রধারী প্রবল প্রতাপান্থিত অত্যাচারী এক বীরবেশী দিগ্বিজয়ী রাজার মত--যার জন্য জীবন, নমাজ, সভাতা। নান। দিক থেকে তার স্থৃস্থিত কেন্দ্রবিন্দুটি থেকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাষ, উৎকেন্জ্িক হয়ে ওঠে।
এমন ছুটি যুদ্ধ ঘটেছে এই ৰিশ শতকের পৃথিবীতে--একটি ১৯১৪ সাল থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যবর্তী সমযে, আর একটি ১৯৩৪৯ সাল থেকে ১৯৪৫-এর সময় সীমায়। ওপনিবেশিক শাসন-যস্ত্রের অত্যাচারের চাপে রুদ্ধশাস বাংলাদেশের আপামর মানুষ ১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সালের প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে দেখেছে দুরে দরে থেকে অনেক দুরের কোন কালবৈশাধীর ঘন কালে! মেঘকে দেখার মত বিম্ময়ে--যে মেঘ সেই দূরেরই কোন বিশাল ভূপৃষ্ঠে ঝড় এনে দীপিয়ে দিয়ে সরে গেছে। কিন্ত সেই বাংলাদেশের
গ্
মানুষই ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছে কাছে থেকে, তার বিশ্বজনীন বীভৎস রূপ দেখে কখনে। বাড়িব উঠান ছাড়িয়ে নিজেরই ঘরের মধ্যে যুদ্ধের সঙ্গে নানাভাবে মোকাবিলা! করে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছিল অগ্রত্ক্ষ, ছ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল প্রত্যক্ষ রূঢ বাস্তবতায় দীপ্ত ।
কিন্তু ছুটি যুদ্ধের ফ্লশ্রুতি থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি-জ্ঞান ও সমাজ-সচেতন, উপনিবেশিক শাসনে পরুদন্ত মানুষের যুদ্ধ সম্পর্কে তাত্বিক শিক্ষা ছু'ববম হলেও যুদ্ধেৰ তত্ব দু'টি বিণ শতকেগ ইতিহাস-চিহ্নিত যুদ্ধে যোগস্থন্্রে এক ক্রমবিকাশের বিশিষ্টতাম ভয়াবহ হযে দীভায়। বস্তত আধুনিক যুদ্ধ-অভিজ্ঞ, ঘুদ্ধ-শিক্ষিত মানুষের কাছে যদ্ধের কয়েকটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ্পষ্ট। সেই যুদ্ব অভিজ্ঞতা যতই প্রত্যক্ষ ব পরোক্ষ ভোক, অথবা একই সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব মিলিযে যতই জটিলতা সৃষ্টি করুক, বাংলাদেশের বুকে ছুই বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যেকটির সমকালে ও উত্তব-কালে গতীব-জটিল প্রভাব বিস্তার করেছে সমীজে ও জীবনে । আর এই স্ত্তে কথাসাহিত্যের বিষয়ে ও আঙ্গিকে যেমন দেখা দিষেছে নানান গ্রন্থি, তেমনি অভাবনীয় নানান বৈচিত্র্য | আমাদের মতে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অতিক্রম ববে দ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ব-সমধালে সেই জটিল'তা ্রস্থি-উন্মুক্ত হযে আবার নতুন গ্রস্থিতে বাধা পড়েছে ।
যুদ্ধ তথ] বিশ্বযুদ্ধে সাঁধাবণ লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য থেকেই বিশ শতকে সংঘটিত ছু'টি বিশেষ বিশ্বযুদ্ধের পরিচয, প্রতিক্রিষ1 ও প্রভাবের মূল্যায়ন সহজসাধ্য হবে। সাধাবণভাবে যেকোন আধুনিক যুছ মানুষের সমাজ ও জীবনে কষেকটি বিশিষ্ট প্রতিক্রিয! হষ্টি করে। প্রথমত, সমাজবদ্ধ ম|নুষেব জীবনে যে স্থশুঙ্খল, দীর্ঘআচরিত সমাজ-ব্যবস্থায় শান্তি ও স্থিতি থাকে, তার মন্ততী বিনষ্টি ঘটে, দ্বিতীযত, যুদ্ধ তীব্র আঘাত হানে আরও গভীরে, একেবারে স্বস্থ ও স্ুস্থিত জীবন-ধানের মর্মমূলে, তা হল, সমস্ত রকম বিশুদ্ধ মানবিক মূল্যবোধ ও জীবন-্যায় থেকে উত্তত খাটি নীতিবোধের মুলে কুঠারাঘাত করে, মানুষকে বরে মানস-আশ্রয় থেকে উন্মুলিত, উৎকেন্দ্রিক, তৃতীয়ত, এই হ্যত্রেই দেখা দেয় একান্ত ব্যক্তি-সম্পর্কে ও মনে সধহারা নৈবাশ্য ও বেদনা, অবসাদ ও শৃন্ততা। যুদ্ধ, মাহুষকে একই সঙ্গে 'ফ্রাস্ট্রেটেড' ও গভীর এম আঘাতে “সিনিক* কবে তোলে ।
তিন প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বস্তত তাই এসেছিল বিশ্ব তথ| ভারতীয় জীবনে নিষ্ঠুর
অভিশাপের মত। কিন্তু বিশ শতকের ছুই বিশ্বযুদ্ধে সময়ের যেমন তিরিশ বছরের ব্যবধান, তেমনি প্রভাবে-প্রতিক্রিয়ার ব্যবধানও গুণগতভাবে অনেক বেশী। (১) প্রত
পী
বিশ্বযুদ্ধ ছিল ব্যাপক ও ভক্নংকর এবং এসবই এসেছিল আকম্মিকতার মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ যেহেতু আরও ভয়ংকর যন্ত্রের তথ! বিজ্ঞানের যুদ্ধ, তাই তার আবির্ভাব তুলনাষ ব্যাপকতর ও ভয়ংকরতম। (২) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আকম্মিকতা৷ কেটে গেলে বুদ্ধিজীবীর্দের মধ্যে এর বিরুদ্ধে দেখা দিয়েছিল স্বণ! ও ক্রোধ। দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ সংঘটনের আগে একটা স্থিতিকাল ছিল । প্রথস্ন মহাযুদ্ধের অভিজ্ঞভায যুদ্ধোত্তর মান্ুষ নিজেকে পরবর্তী যেকোন আঘাতের জন্য কিছুটা! তৈবী করতে পেরেছিল। তাই দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ আকম্মিকতাষ আপেনি, সাধাবণ ও বুদ্ধিজীবী সর্বশ্রেণীর মানুষকে এর বিকদ্ধে বলিষ্ট প্রতিবাদী কঠে সোচ্চার হতে সাহায্য কবেছিল। সমস্ত রকম নৈরাশ্ঠ, অবিরাম সমবেত প্রতিবাদের নানান তবঙ্গে ছিতীয বিশ্বযুদ্ধ-সমকাল হয়েছিল উচ্চকিত এবং ধিক্কণ্ত। (৩) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মানুষ প্রত্যক্ষ করেছিল প্রথম দেখাব অবাক- বিস্ময়ে মস্ত বকম আদর্শবোধ, নীতিবোধ, নিষম-শক্ষলা, সুস্থতা ও শুদ্ধি থেকে বেদনাদায়ক বিচাতি, ছ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ধে সেই অবোধ বিস্ময ও অসহায বেদনা ছিল না, বিশ্মযের বদলে হৃতাশ।, বেদনার বদলে চরম ক্ষোভ সত্য হয়ে ওঠে । (৪) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তুলনায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্গের স্থিতিকাল বেশী হলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যতটা ক্ষতি করেছিল আকম্ষিক আবির্ভাবেব কাবণে, দ্বিতীষ বিশ্বদুদ্ধে সেই পরিমাণ সর্পগ্রা্ী সমৃহ ক্ষতি ও সর্বনাশের আশংকা বাস্তবে বপায়িত হতে পাবে নি। প্রসঙ্গত স্মবণীয়, আগেও একবাব উল্লেখ কবেছি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে ভারতবর্ষ আদে২ প্রত্যক্ষভাবে সম্পকিত ছিল না। সে যুদ্ধের তাগুবলীল৷ ইউবোপ ভূখণ্ডে দেখা দিয়ে সেখানেই সমাপ্তি বেখ। টানে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতবর্ষ একেবারে প্রত্যক্ষভাবেই জড়িত হযে যায়। তাব কাঁবণ বিশ শতকীয় যুদ্ধ বিজ্ঞানের যুদ্ধ এবং বিজ্ঞান কোন বিশেষ দেশের শিক্ষ। চর্য! ও প্রযুক্তিবিদ্ভাষ বাধ। থাকে না। তা সমগ্র বিশ্বের নিয়ন্ত্রক যেহেতু, তাই যুদ্ধ যে খণ্ডেই প্রত্যক্ষ হোক, পবোক্ষ প্রভাব বিশ্বের অন্য ভূখণ্ডে কম-বেশী ফেলবেই। তা ছাডা বিশ শতকীয় এঁতিহাসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ও সংকটগুলি যেহেতু সব সময়েই আন্তর্জাতিক ও আন্তর্জাগতিক নিয়ণে দেখ! দিতে বাধ্য, তাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরোক্ষে ক্রমশ ভারতবাসীর মধ্যেও গভীর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়। আনে । আর একটি দিকও লক্ষণীয়। ভারতবর্ষ সে সময়ে একটি ওুপনিবেশিক রাষ্ট। সেই শাসক-বুটিশের উপনিবেশ থাকায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ংশগ্রহছণকারী ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পর্ক-স্থত্রেই প্রথন বিশ্বধুদ্ধের প্রভাব ভারতব্ধে নানা- ভাবে দেখ! দেয়। কিন্তু খিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ল্ঘকালে যে যুদ্ধপ্রতি ক্রিয়া ভারতবাসী অন্ভব করে তা যেমন
৮
ভদ্ভাল, তেমনি দীর্ঘদিনের শপনিবেশিক শালন-যন্তরে নিষ্পিষ্ট, পর্ু'স্ত, রুদ্ধশ্বাস ভারত- বাসীর সমবেত সংগ্রামী চেতনাও অত্যন্ত প্রতিরোধযূলক শৌর্ধবীর্ষের প্রকাশে দীপ্ত, উজ্জ্বল । অর্থাৎ একদিকে ভয় আর একদিকে ভয়হীনতা, একদিকে তীব্র ক্ষোত আর একদিকে বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদ, একদিকে উপনিবেশবাদের বন্ধন-যন্ত্রণা আর একদিকে বন্ধনমুক্তিব বলিষ্ঠ আতি। এ কথ ঠিক, মানুষ যখন অসহায় হয়ে পড়ে, তখন অবধারিত মৃতু/কেই চরম হুতাশায় চোখেব সামনে দেখে, তখন শেষ বাচার বাসনাকেই মৃত্যু প্রতিরোধ কবার শেষতম উপায় হিসেবে অস্ত্র করে নেয। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালে সেই-জাতীঘ চেতনার অন্তিম ব্যাপক গভীব অভ্ভাদয় বস্তত জাতিকে মুত্যুৰ কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে জীবনের গান শোনাবার শেষ প্রয়াস। দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ-লমকালে আমরা সমগ্র ভারতীয় জনজীবনকে একই ক্ষেত্রে মৃত্যু ও জীবনের লঙ্গে সমান সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকালের ত্ববিত ঘটনাবলী থেকে যে শিক্ষা স্পষ্ট, তাতে বোঝা যায়, ভারতবাী যেমন সবল পদক্ষেপে জাতীয় জীবনে রাজনৈতিক স্বাধীনতার দিকে এগোয়, তেমনি জীবনের অন্তস্থলে অন্তঃশীল থাকে কর্কট রোগের বীজাণুর মত অসংখা অস্তিত্ব যা সুদীর্ঘ এতিহ-আশ্রিত, সুগঠিত জীবনের নীতি ও মূল্যবোধ, সমস্ত রকম শুতবুদ্ধি ও মহৎ প্রেরণ, এক কথায় বিশুদ্ধ মানবতাকে সমূলে বিনষ্ট করে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকালের সমাজ ও জীবনের বহিরঙ্গে এবং অস্তরঙ্গে যে গোপন ক্ষয়, তার সমস্ত দায়িত্ব শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তঃপ্রেরণায় নিহিত নয়, তার উৎস প্রথম বিশ্বযুদ্ধেই, তার বিকাশ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবতাঁকালে সমাজ ও জীবনে যুদ্ধপ্রতিক্রিয়া- জাত নানা ফলশ্রুতিতে, তার সৃষ্টির যন্ত্রণা ও বেগ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমস্ত রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়াব শেষতম সিদ্ধান্তে । এই সিদ্ধান্ত ১৯৩ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্বন্ত বিশ্ব- রাজনীতির মঞ্চে প্রধান প্রধান নেতাদের দাবা খেলার বিবিধ বিচিত্র চালের মধ্যেই নিহিত ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-উত্তর বিশ্ব-রাঁজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও পরোক্ষভাবে উপনিবেশিক ভারতবর্ষের যুদ্ধজনিত নানান শান ও নিয়ম-কান্নের চাপ একই সঙ্গে ভারতের এতিহাপিক ও রাজনৈতিক মঞ্চকে জটিল করে তোলে। সেই জটিলতায় বাংলাদেশের মানুষের অভিজ্ঞতা! ক্রমশ প্রবল যুদ্ধ-অভিজ্ঞতার সঙ্ষে জড়িয়ে যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ঘে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের (১৯১৫--১৯১২ ) আশা-নিরাশার উত্তাল তরঙ্গ দেখা দেয়, সেই বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরবতী সময় থেকেই দেই ধরণের ছোট-বড একাধিক জাতীয় আন্দোলন সংঘটিত হলেও আর একটি যুদ্ধের মঞ্চ ক্রমশ নিগিত হতে থাকে
ক
অলক্ষ্যে । বিশ্ব রাজনীতিতে ভ্রুত পট-পরিবত্তন ও লক্ষণীয় ঘটনা ঘটতে দেখা! যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার দাত মাস পবেই জার্মানীর সঙ্গে ভার্সাই সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় (২৮ জুনঃ ১৯১৯)। এর পর হিটলার হন জার্মানীর প্রথম চেয়ারম্যান ( ২৮ জুলাই, ১৯২১)। ফ্যাসিষ্ট নেতা মুসোলিনীর আবিতাব (১৯২২), বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক বাষ্ সৌভিয়েট ইউনিয়নের আবিভাব ও বৃটেন কর্তৃক স্বীকৃতি দান (১৯২৪, ১লা ফেব্রুয়ারী), সারা পৃথিবী জুড়ে বাজার মন্দাব আরস্ত-_-এমন কয়েকটি উল্লেখ্য ঘটনায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময় চিহ্নিত হতে থাকে বারে! বছব ধরে (১৯১৮-১৯৩৯)। ১৯৩* সালের পব থেকেই হিটলারের ক্রমশ একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতাবুদ্ধি, কমিউনিষ্টদের বিরুদ্ধে দমন নীতির মাধ্যমে ভ্তাস স্থষ্টির প্রযাস (২৭ ফেব্রুয়ারী,১৯৩৩), মুসোলিনীর ফ্যাসিবাদিতা, হিটলার কর্তৃক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিগুলিকে অবমানন! ও অস্বীকার, সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শক্তিসঞ্যজনিত ভীতি, প্রতিবেশী রাষ্ট পোল্যাণ্ডের প্রতি হিটলারের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন মনোভঙ্গি-_এই সমস্তই ক্রমশ ১৯৩৯ সালের ১ল! সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে আনুষ্ঠানিকভাবে আরন্তেব মহত্তম সুযোগ ঘটিয়ে দেয়।
বস্তত প্রথম বিশ্বযুদ্ধেব মূল উৎস ছিল বিশ্বের চিহ্নিত সাম্রাজ্যবাদী গোীগুলিব মধ্যে যে অন্তবিরোধ, যে চরম দ্বান্বিক মনোভাব--তার মধ্যেই । তখন একদিকে ছিল নেতা জার্মানীর লঙ্গে ইতালী ও জাপান, আর একদিক ছিল নেতৃত্বে ব্রিটেন, সেই সঙ্গে ফ্রান্স ও আমেরিকা--এই ধনতান্ত্রিক তিন রাষ্ট্র। প্রত্যেকটি রাষট্ুই তখন স্পষ্টত সাআাজাবাদের ধ্জাধারী। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে ঠিক একুশ বছর পরে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়, তার বিশ্ব-প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ ম্বন্তর। এই স্বাতন্ত্র্ের মুল এতিহাসিক-রাজনৈতিক ধাব। বিচারে নতুন এবং প্রথম সমাজবাদী রাষ্ট্রের পত্তনে নিহিত । পৃথিবীতে জন্মলাভ করেছে এক নতুন যুগ, যে যুগের মৌল বিরোধ হয়ে উঠেছে-_ একদিকে মুমূর্ষু ধনতন্ত্র, অপরদিকে গতিষুণ সমাজত্তস্ত্রের মধ্যে বিরোধ
আমাদের মনে হয়, সায্রাজ্যবাদ্দী গোষ্ঠীর মধ্যে যেমন বিরোধ ক্রমশ তীব্রতম হতে থাকে জার্মানীর একনায়কতন্ত্রী নেতা হিটলার ও ফ্যাসীবাদী শক্তির বিশীল উদ্ভব ও বিকাশে, তেমনি সোতিয়েট ইউনিয়নে মহান বিপ্লবের ফলে নতুন লমাজতান্ত্রিক গোষ্ঠীর বাজবেশে উদ্ভব ও প্রভূত শক্তিলঞ্চয়ের দিকটিও বিশ্বরাস্্ীয গোষ্ঠীগুলির প্রতিদন্িতাকে তীত্র ও অবধাবিত করে তোলে । বিশ্বের মন্দ! বাজার, ফাসিষ্ট শক্তির নির্বাধ গতিময়তা, সোভিয়েট ইউনিয়ন তথ! সমাজতান্ত্রিক শক্তিকে ভয়, কমিউনিষ্টদের বিরুদ্ধে নির্দয় দমন- মূলক অত্যাচার, সাম্রাজ্যবাদী গোঠীগুলির পুরনে। অস্তবিরোধের স্থতেই নতুন করে আরও জটিলভাবে সম্পর্ককে যুদ্ধাভিমুখী করে তোল1-_এইসব বিশ্ববাজনৈতিক অন্তর-বাছির
১৩
শ্রোতই ১৯৩৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর, হিটলারী জার্মানীর পোল্যাণ্ড আক্রমণের মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে অবধারিত কবে তোলে।
যেহেতু বিশ্বরাজনীতি মে সময়ে গুঁপনিবেশিক রাষ্ট্র ভারতবর্ষের বাজনৈতিক- অর্থনৈতিক জীবনের লঙ্গে সমান স্থত্রে জডিত, তাই ভারতবর্ষ তথ] বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখ! দেয় নানান বিপরীতমুখী শ্রোত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ- সমকালীন বাংল! কথানাছিত্যের রাজনৈতিক সামাজিক-অর্থনৈতিক পটভূমি যুদ্ধপমকালে যুদ্ধের বপে ও শ্বরূপে এত গভীনে প্রোথিত ৪ সম্পৃক্ত যে, তার ম্বরূপ আলোচনার আগে যুদ্ব-আরম্ভের আগেব বাঁজনৈতিক প্রেক্ষিতেব পরিচিতি একান্তই প্রয়োজন । কোন সমস্ত! যখন মানবতার মূল ভিত্তিকেই কাপিষে দেয়, বলা যাষ সমূলে ধ্বংদ করতে উদ্যত ইয়। এবং মানবতা যেহেতু সব সময়েই বিশ্বমানবতার সঙ্গে গভীর-নিবিষ্ট, অনেকটা নাডীর বন্ধনের মত, তখন সেই সমস্ত! আন্তর্জাতিক ও আন্তর্জাগতিক ব্যাপ্তি ও বিশালত। পাবেই। যে কোন আধুনিক যুদ্ধ সেই সমন্তাকে আবস্তেই তীক্ষ করে তোলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ শুরুর আগে এই সমস্তাই নানাভাবে কখনো বাইবে কখনো বাঁজনীতি-অর্থনীতি ও সমাজনীতির ভিতরে স্থায়ীভাবে আসন গ্রহণ কবতে থাকে ।
বাংলা কথাসাহিত্য ধারার ওপব দ্বিতীঘ বিশ্বযুদ্বসমকালীন পরিবেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রতিক্রিয়া, তার উৎ্ম আছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালের ভারতবর্ষে সংঘটিত নানান রাজনৈতিক ঘটনার দলিলে। দ্বিতীঘ বিশ্বযুদ্ধের আগেই ভাবতে রাজনৈতিক আন্দোলনে ছিল তিনটি স্বতন্ত্র যুখ,--(১) গান্ধীজীব অহিংস আন্দোলন, (২) সহিংস সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন, এবং (৩) নবোদ্ভুত সমাজতান্ত্রিক, সাম্যবাদী চেতনায় উদ, শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলন ।
সাব ভারতে জাতীয কংগ্রেসের নেতৃত্বে থেকে গান্ধীজী অহিংস অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। গা্ধীজীর নেতৃত্বেই কংগ্রেস আন্দোলনে সত্যাগ্রছের পথ গ্রহণ করে। বুটিশ শাসক ভাবতের বুকে জনগণের পক্ষে নির্ধম দমননীতির শ্শষ্ট প্রতীক রাগলাত আইন (১৯১৯, ওরা মার্চ) চাপিয়ে দেষ। এরই প্রতিবাদে যে আন্দোলন, সত্যাগ্রহ, একটানা হরতাল, নানান গণ-আন্দোলন দেখ! দেয়,_-তার সামগ্রিক বূপই হল ভারতের মাটিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলনের প্রথম রূপ। ১৯২* সালে খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলন একই সন্ধে সংঘটিত হয়। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পূর্ণরূপ দেখা দেয়। বাংলাদেশের এই আল্দোলন রবীন্দ্রনাথ, দেশবন্ধু প্রমুখ রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের নির্দেশে প্রবলতম উৎ্নাহ ও উদ্দীপনার রূপ গ্রহণ করে। সাইমন কমিশন বয়কট আন্দোলন ( ১৯২৮,
১১
শর! ফেব্রুয়ারী ), শ্রমিক শ্রেণীর জাগরণ ( ১৯২৮-১৯২৯), গুজরাট লবণ আইন আন্দোলন (১৯৩০, ১২ই মার্চ )--এ সবের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকে।
অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের পাশে চলে সহিংস সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন । এই আন্দোলনটিকে কংগ্রেন জাতীয আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবে কখনও ম্বীকাব করেনি। অবশ্য জনসাধারণের চোখে, কংগ্রেন-আন্দোলন থেকে ভিন্নধমী হলেও এই আন্দোলনটি ছিল জাতী আন্দোলনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।”৯ প্রথম বিশ্বযুদ্ধেব আগে সাব। দেশ জুভে মধাবিত্ত শ্রেণীর ছাত্র ও যুবকদেব মধ্যে যে বেকাব সমন্তার তীব্রতা কারণে চখম অস্থিরচিত্ততা, ধৈর্যহীনত।, হতাশা, চাঞ্চল্য ক্রমশ চাপ! বিক্ষোভে রূপান্তরিত হচ্ছিল, তানই বহিঃগ্রকাশ ঘটে সন্ত্রামবাদী আন্দোলনে । বাংলাদেশে এই আন্দোলন নান।ভাবে মাটির মধ্যে শিকড বসায়, কারণ, প্রথমত, বেকাব সমস্যার আশু, সমাধানহীন ভযাবহরূপ, দ্বিতীয়ত, বাংলা বিভাগের জন্য লর্ড পাজনের গভীর যভয্ত্র, তৃতীযত, বাঙালীদের উচ্চশিক্ষা থেকে ছলে-বলে-কৌশলে নিবৃত্ত কবাব বুটিশ সাম্রাঞ্যবাদী ও উপনিবেশবার্দী প্রয়াস, চতুর্থত, বিদেশী শানক কর্তৃক জাতী চবিত্রকে অপমান ও কটাক্ষ কথার উদ্যোগ । এই সমস্তই বাঙালী শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ছাত্র ও যুবগোষ্ঠীর মধ্যে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন স্থচনার মাটি রচনা কবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পেশার মান্চষও একত্রিত হয।
একদিকে বুটিশের চরম দমননীতি, আব একদিকে ক্রমাগত দেশীয় অর্থনীতিতে বিপর্যয়-_এই ছুষের মধ্যে গপনিবেশিক পরিবেশ থেকে রাজনৈতিক মুক্তিবাসনায় আর্ত সর্বস্তরের বাঙালীর মধ্যে থেকেই একদল সন্ত্রানবার্দী আন্দোলনে মামিল হযে পডে। বাংলাদেশের বুকে ছোট ছোট গ্তপ্ত সমিতি গঠন; বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকঘরে অগ্নিসংযোগ ( ১৯২০-১৯২৪ ), বিদেশী শাসকের অস্ত্রাগার, খাজাঞ্িখানা ইত্যাদি আক্রমণ ( ১৯২৪- ১৯৩০ )--এসবের মাধ্যমে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন একটা রূপ পাষ। নিভাঁক আত্মত্যাগের উন্মাদনার মধ্যেও ক্রমশ আত্মসমালোচন ও আত্মজিজ্ঞাসার মধ্য দিষে এবং ১৯২৪-১৯৩*-এর মধ্যে কমিউমিস্ট পার্টির আবির্ভাবের ফলে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনে যথেষ্ট ভাট। পড়ে । কিন্তু এ কথ। ঠিক, এই আন্দোলন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বসমকালীন বাংলাদেশের পটভূমিতে জাতীয় আন্দোলনের তীব্রতা সৃষ্টিতে যথেষ্ট সহায়ক হয়।
আমর! পরবতাঁ অধ্যায়ে ছ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ-নমকালীন প্রেক্ষাপট আলোচনাব সময় দেখাবে। যে, মে নময়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি নানা ভুলন্রান্তি সত্বেও কি অসামান্য অবদান রেখেছে বুটিশের ভারত ত্যাগের পিছনে অন্যতম অবধারিত শক্তি হিসেবে । কিন্তু এই কমিউনিস্ট পার্টি-_যে বিপ্লব-শক্তি নিয়ে সে সময়ে জনমনে স্থান গ্রহণ করে ছিল,
১২
তারও প্রস্ততি ছিল প্রাক দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ-পর্বে। এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক ও সমকালে যে সাম্যবাদী আন্দোলন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে ক্রমশ একটি পূর্ণাবয়ৰ আকার ধারণ করে, তার ছবি ও প্রভাব নিশ্চয়ই ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালে নানাভাবে ধর! পড়ে এই বিশেষ কালে রচিত কথাসাহিত্যেই।
ভারতের মাটিতে নিজন্ব কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্র বচনা এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিব তৃতীঘ কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের অন্তরূক্তি ঘটে ১৯২৭ থেকে ১৪৩* সালের মধ্যেই । ১৯২৭ সালের রাশিয়ায় সবহীবা বিপ্লবের স্থত্রে লেনিনের নেতৃত্বে থে তৃতীয কমিউনিস্ট ইণ্টারন্যাশনাল গঠিত হয় ১৯২৯ সালে, তারই প্রেবণাষ ভারতের মজুরদের ধর্মঘটের মাধ্যমে আসে কমিউনিস্ট চেতনা । কিন্তু বুটিশ গভর্ণমেণ্ট এই পার্টি গঠনের আদি থেকেই দমনমূলক নীতির দণ্ডে কমিউনিস্টদ্দের চিহ্নিত করতে থাকে। এই চিহ্নিতকবণ চলে ১৯২২ থেকে ১৯২৯ সালেব মীবাট ষভযন্ত্র মামলার মাধ্যমে । ১৯৩৪ লালে ভাতের কমিউনিস্ট পার্টি বুটিশ শাসকদেব দ্বার বে-আইনী ঘোষিত হয়। ভারত তথ! বাংলাদেশের বনু সন্ত্রাসবাদী এই পার্টিতে যোগ দেষ।
কমিউনিষ্ট পার্টি বাংলাদেশের কৃষক ও শ্রমিকদেব একটি দক্ষ, মজবুত বাজনৈতিক মঞ্চ তৈরী করে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এই মঞ্চে গঠন নান। আন্দোলনের মাধামে রূপ পায়। ছ্িতীয বিশ্বধুদ্ধের আগে কমিউনিষ্ট পার্টির য়ে আন্দোলন. তা ভারতের জাতীয় আন্দোলন ও দ্বিতীষ বিশ্বধুদ্ধ-সমকালের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক নতুন অধ্যায় রচনা করে। এই কমিউনিষ্ট আন্দোলন সাংগঠমিক দিক থেকে উত্তাল, উদ্দীপনাপূর্ণ শ্রমিক-মঙ্জুরদে জাতীয় আন্দোলনে একটি এক্যবদ্ধ আন্দোলনেব দিকে নিষে যাওয়ার সহায়ক-শক্তি হযে ওঠে ।
আমরা আগেও বলেছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে, অর্থাৎ প্রথম মহাযুদ্ধের অব্যবহিত পর থেকেই সাধারণ সবশ্রেণীর মানুষের মধ্যে দেখা দিচ্ছিল অর্থনৈতিক ছুরবস্থার কারণে চাপ। অসন্তোষ এবং বাঁজনৈতিক মুক্তিব পথে পর্ধত প্রমাণ বাধার কারণে গভীরতম অস্থিরচিত্ততা। জনগণের মনের এমন ছু"দিক থেকে ব্যক্ত অভিগ্রায় দ্বিতীঘ বিশ্বযুদ্ধেব আগে জাতীঘ জীবনকে যে পথে চালিত করে, সেই পথেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ- সমকাল উচ্চকিত হয় আবো অধিক মরবতাম্। প্রথম যুদ্ধের পরবর্তী রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অস্টিরতাই নানান আন্দোলনের মাধ্যমে যে পরিকেশ ও মাটি রচনা করে ভারত তথা বাংলাদেশে, তার সঙ্গে যুক্ত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্বব সংসার-জীবনে অভ্যন্ত সামাজিক মান্ুষের নানান জিজ্ঞাস । ব্যক্তি জীবন ও সমষ্টি জীবনের হুত্রে সারা বাংলা- দেশৈর মমাজ-জিজ্ঞাস। তখন এক ভয়াবহ উত্তরের মন্মুখে স্থিরনেত্র হয়ে থাকে । যেহেতু
১৩
জীবন, সমাজ ও লমাজ-মানুষ- এসবের যথাযথ বাস্তবসম্মত শিল্পরূপায়ণেই কথা- সাহিত্যের শক্ত এবং একমাত্র ভিত্তি, তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগের সামাজিক সমস্যা ও চাকুরী-পর্বস্ব মধ্যবিত্ত মানসিকতার সংক্ষিপ্ত আলোচন। একান্ত গ্রযোজন।
চার
মানুষ এবং মানুষের জীবন যেমন আদিমতম, তেমনি মানুষের গড়া সমাজও । মানুষ এবং জীবনের প্রয়োজনেই একদিন সমাজের উত্তব, বিকাশ ও বিবৃদ্ধি। অর্থাৎ মানুষ ও জীবনের বিকাশে যে এঁতিহ, সভ্যতার ধারাবাহিকতায় যে এঁতিহা, সমাজের গঠনেও সেই এঁতিহা। একালে পুরনো এঁতিহাসম্মত সমীজ সমব্তে মানুষের জীবন- যাপনের ও ধারণের সঙ্গে যুক্ত সর্বদিকের সমগ্য়ে একট! বিশেষ সময়ের প্রবাছে স্ুস্থ্িত থাকে। পৃথিবীর বুকে স্থর্ষেব ওঠা ও অন্ত যাওযার যেমন নিয়ম আছে, প্ররুতির বুকে গাছের বীজ থেকে বৃক্ষে উপনীত হওয়ার যেমন নিষম আছে, তেমনি মানুষেব গড়া দির্ঘআচরিত সমাজেরও নির্দিষ্ট নিয়ম আছে । এমন নিয়মেই সমাজ থাকে ন্বস্থ ও সুস্থিত। সচেতন মাজষেব মানবিক বোধে গড সমাজ এতই স্পর্শকাতর, এতই সতর্ক যেকোন আকম্মিক মাঘাত বা পরিবর্তনেব ধাক্কায়, সে আঘাত সামান্য হলেও; তা কেপে ওঠে। তার এঁতিহো ও সুস্থিত অবস্থায আঘাত লাগলেই সমাজবদ্ধ মাচুষের জীবন ও জীবনেব অন্তমিহিত রূপটি নষ্ট হয়ে যায়। একট! ভাঙা সমাজ গডতেও সময লাগে।
কিন্তু ঘি সমাজের ভাঙন বাইরে স্পষ্ট ন। হযে মানবদেহে ক্ষষরোগের বীজাণুর মৃত অতি ধীরে সমাজ-দেহকে পঙ্গু প্রাণহীন করে দেঁয়, তা হলে তা থেকে নতুন সমাজ গড়। সময়সাপেক্ষ নিশ্চয়ই, অন্য দিকে তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ ও সবল কর! সম্ভব কিনা, সন্দেহ থেকেই যায় । সমাজেব সঙ্গে জডিত থাকে মানুষ ও মানুষের জীবন, মানুষের স্স্থ চেতনা ও সবল মানবিকবোধ-বুদ্ধি। সমাজ বাদ দিযে মানুষের যেমন পায়ে নীচের মাটি রাখা যায় না, তেমনি মানুষ বাদ দিয়ে সমাজকে বাচিষে রাখার অর্থই হুল সাপহীন থোলসটিকে লালন করা। আবার সমাজ ও মানুষ বা! মানবজীবন--এদের সমন্বষে যদি মানহত। নামক বস্তুটি বলিষ্ঠ ভিত্তি না পাষ, যদি বিনষ্ট হয়ে যায সমাজদেহ থেকে, তবে সমাজ তথা মানবজীবন দুইই অর্থহীন, পঙ্গু জরা গ্রস্ত, শীর্ণ-বিবর্ণ হয়।
প্রথম মহাযুদ্ধ শেষের পর থেকে দীর্ঘ একুশ বছরে দেখা গেছে, বাংলা দেশের সমাজ ও তার সঙ্গে সম্পংক্ত মানুষও ক্রমশ পঙ্গু, জরাগ্রন্ত, শীর্ণ, বিবর্ণ হতে থাকে। আধুনিক যুদ্ধ আধুনিক মানবসমাজের সবচেয়ে ঝড় শত্রু, সবচেয়ে বড় প্রতিষ্প্ধা শক্তি,
১২
তারও প্রস্ততি ছিল প্রাক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পর্বে। এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক ও লমকালে যে সাম্যবাদী আন্দোলন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে ক্রমশ একটি পূর্ণাবয়ব আকার ধারণ করে, তার ছবি ও প্রভাব নিশ্চয়ই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালে নানাভাবে ধরা পড়ে এই বিশেষ কালে রচিত কথাসাহিত্যেই।
ভারতের মাটিতে নিজন্ব কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্র বচন! এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির তৃতীয় কমিউনিস্ট আন্তর্জীতিকের অস্তরক্তি ঘটে ১৯২৭ থেকে ১৯৩* সালের মধ্যেই । ১৯২৭ সালের রাশিয়া সবছীব1 বিপ্লবের সুত্রে লেনিনের নেতৃত্বে ঘে তৃতীয় কমিউনিস্ট ইণ্টারন্যাশনাল গঠিত হয় ১৯২৯ সালে, তারই প্রেরণায় ভারতের মজুধদের ধর্মঘটের মাধ্যমে আসে কমিউনিস্ট চেতনা । কিন্তু বুটিশ গভর্ণমেণ্ট এই পার্টি গঠনের আদি থেকেই দমনমূলক নীতির দণ্ডে কমিউনিস্টদ্রের চিহ্নিত কবতে থাকে । এই চিহ্নিতকবণ চলে ১৯২২ থেকে ১৯২৯ সালের মীবাট ষড়যন্ত্র মামলার মাধামে। ১৯৩৪ সালে ভাবতের কমিউনিস্ট পার্টি বৃটিশ শাসকদেব ছার। বে-আইনী ঘোষিত হয়। ভারত তথা বাংলাদেশেব বনু সন্ত্রাসবাদী এই পার্টিতে যোগ দেষ।
কমিউনিষ্ট পার্টি বাংলাদেশের কৃষক ও অমিকর্দের একটি দক্ষ, মজবুত রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরী করে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এই মঞ্চের গঠন নান। আন্দোলনের মাধ্যমে রূপ পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে কমিউনিষ্ট পার্টির য়ে আন্দোলন. তা৷ ভারতের জাতীয় আন্দোলন ও ছ্িতীয বিশ্বুদ্ধ-লমকালের স্বাধীনতা আন্দোলনে এক নতৃন অধ্যায় রচনা করে। এই কমিউনিষ্ট আন্দোলন সাংগঠনিক দিক থেকে উত্তাল, উদ্দীপনাপূর্ণ শ্রমিক-মজ্জুরদের জাতীয় আন্দোলনে একটি এঁক্যবদ্ধ আন্দোলনের দিকে নিয়ে যাওয়ার মহায়ক-শক্তি হযে ওঠে ।
আমরা আগেও বলেছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে, অর্থাৎ প্রথম মহাযুদ্ধের অব্যবহিত পর থেকেই সাধারণ সবশ্রেণীর মান্ধষের মধ্যে দেখা দিচ্ছিল অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে চাপ। অপস্তোষ এবং বাজনৈতিক মুক্তিব পথে পর্বত প্রমাণ বাধার কারণে গভীরতম আস্থরচিত্ততা। জনগণের মনের এমন ছু”দিক থেকে বাক্ত অভিপ্রায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেব আগে জাতীয জীবনকে যে পথে চালিত করে, সেই পথেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ- সমকাল উচ্চকিত হয় আবেো| অধিক লরবতায়। প্রথম যুদ্ধেব পরবতাঁ রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অস্থিবতাই নানান আন্দোলনের মাধ্যমে যে পরিকেশ ও মাটি বচনা করে তারত তথ বাংলাদেশে, তার সঙ্গে যুক্ত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর সংসার-জীবনে অভ্যস্ত সামাজিক মানুষের নানান জিজ্ঞাসা । ব্যক্তি জীবন ও সমষ্টি জীবনের সুত্রে সার! বাংলা- দেশের সমাজ-জিজ্ঞাস।' তখন এক ভয়াবহ উত্তরের সম্মুখে স্থিরনেত্র হয়ে থাকে । যেহেতু
১৩
জীবন, সমাজ ও সমাজ-মান্থুষ-_এসবের যথাযথ বাস্তবসম্মত শিল্পরূপায়ণেই কথা” সাহিত্যের শক্ত এবং একমাজ ভিত্তি, তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগের সামাজিক সমশ্য। ও চাকুরী-সর্বন্থ মধ্যবিত্ত মানসিকতার সংক্ষিপ্ত আলোচন। একান্ত প্রয়োজন ।
চার
মাচ্ষ এবং মানুষের জীবন যেমন আদিমতম, তেমনি মানুষের গড। সমাজও । মানুষ এবং জীবনের প্রয়োজনেই একদিন সমাজের উদ্ভব, বিকাশ ও বিবুছি। অর্থাৎ মানুষ ও জীবনের বিকাশেব যে এঁতিহা, সভ্যতার ধারাবাহিকতায় যে এঁতিহা, সমাজের গঠনেও সেই এতিহ। একালে পুরনো এঁতিহুসম্মত সমাজ মমবেত মানুষের জীবন- যাপনের ও ধারণের সঙ্গে যুক্ত সর্বরিকের সমগ্থয়ে একট! বিশেষ সময়ের প্রবাহে সুস্থিত থাকে। পৃথিবীর বুকে স্র্ধেব ওঠা ও অন্ত যাওয়ার যেমন নিয়ম আছে, প্রকৃতির বুকে গাছের বীজ থেকে বুক্ষে উপনীত হওয়ার যেমন নিয়ম আছে, তেমনি মানুষেব গড়। রীর্ঘ-আচরিত সমাজেরও নিরিষ্ট নিয়ম আছে। এমন নিয়মেই সমাজ থাকে ন্বস্থ ও স্স্থিত। সচেতন মান্ষের মানবিক বোধে গড়া সমাজ এতই স্পর্শকাতর, এতই তর্ক যে কোন আকন্মিক মাঘাত ব৷ পরিবর্তনের ধাক্কায়, মে আঘাত সামান্য হলেও, তা কেপে গঠে। তার এঁতিহো ও স্ুস্থিত অবস্থায় আঘাত লাগলেই সমাজবদ্ধ মা্গষের জীবন ও জীবনেব অন্তনিহছিত রূপটি নষ্ট হয়ে যায়। একটা ভাঙা সমাজ গড়তেও সময় লাগে।
কিন্ত ষদি সমাজের ভাঙন বাইবে স্পষ্ট ন। হয়ে মানবদেহে ক্ষষরোগের বীজাণুর মত অতি ধীরে সম্াজ-দেহকে পঙ্গু প্রাণহীন করে দেয়, তা হলে ত। থেকে নতুন সমাজ গড়া সময়সাপেক্ষ নিশ্চয়ই, অন্য দিকে তাকে সম্পূর্ণ স্থস্থ ও সবল কর] সম্ভব কিনা, সন্দেহ থেকেই যায়। সমাজেব সঙ্গে জডিত থাকে মানুষ ও মানুষের জীবন, মানুষের স্থস্থ চেতনা ও সবল মানবিকবোধ-বুদ্ধি। সমাজ বাদ দিযে মানুষের যেমন পায়ের নীচের মাটি রাখ! যাষ না, তেমনি মানুষ বাদ দিয়ে সমাজকে বাচিয়ে রাখার অর্থই হল সাপহীন খোলসটিকে লালন কর1। আবার সমাজ ও মানুষ ব। মানবজীবন--এদের সমন্বয়ে যদি মানবতা নামক বস্তুটি বলিষ্ঠ ভিত্তি না পাষ, যদি বিনষ্ট হযে যায সমাজদেহ থেকে, তবে সমাজ তথ। মানবজীবন ছুইই অর্থহীন, পঙ্গু, জরাগ্রন্ত, শীর্ণ-বিবর্ণ হয়।
প্রথম মহাযুদ্ধ শেষের পর থেকে দীর্ঘ একুশ বছরে দেখা গেছে, বাংল! দেশের সমাজ ও তার সঙ্গে সম্পংক্ক মানুষও ক্রমশ পন্থু* জরাগ্রন্ত, শীর্ণ, বিবর্ণ হতে থাকে। আধুনিক যুদ্ধ আধুনিক মানবমাজের সবচেয়ে বড় শত্র, সবচেয়ে বড় প্রতিষ্প্ধী শক্তি,
১৪
নিশ্চিত মুত্যুর লক্ষে নিযে যাওয়ার উপযোগী বিষাক্ত অস্ত্র। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে সমাজের বুকে সেই করূণ পরিণামের সুচনা! লক্ষ্য করা যায়।
ঘে কোন দেশের বাজনৈতিক আন্দোলনের মূলে থাকে দৃঢমূল জাতীয় আদর্শ- চেতনা । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত-পূর্ব দশটি বছরের মধ্যে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের স্থত্রে আমর! দে ববম এক আদর্শ চেতনা-চকিত রাজনৈতিক মানসিকতার প্রমাণ পাই। অর্থাৎ ১৯*৫ সাল থেকে ১৯১২ সালেব মধ্যে বাঙালী সাধারণ ও বুদ্ধিীবী মান্ুষ জ[তীয় আদর্শ চেতনাঘ প্রবলভাবে উদ্বন্ধ ছিল। দেশের সমাজবদ্ধ মানুগুলি তখন নবপ্রাণে প্রাণিত । প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আগে এই নবপ্রাণন| কিছুটা স্তিমিত হয এবং গমশ সন্ত্রাসবাদের দিকে তা মুখ ফেরায়। তবু শ্বীকার করতেই হবে, দেশের ছাত্র ও যুবসমাজ উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থায যে ক্রমশ রুদ্ধশ্বাস হযে পডছে, এমন একটি এঁকাবদ্ধ ভাঞ্ন। জাতীয় রাজনৈতিক আন্েঃলনের আকারে রূপ পেতে থাকে ।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ভারতের বাইবে সুদূর ইউবোপ তৃখণ্ডে ঘটলেও পরোক্ষে আমাদের দেশের জনমানসে, গুঢচারী সেই চেতনা আঘাত হানে । খাবণ বুটিণ উপনিবেশ ছিল ভারতবর্ষ । প্রথম মহাযুদ্ধেৰ মধ্য দিষে বুটিশের কাছ থেকে যুদ্ধেব কারণে বিছু স্বায়ত্ব- শাসনের যোগ লাভ কব যাবে_-এমন ভেবেছিজেন সে সমযের জাতীয় নেতৃবুন্দ। কিন্তু যুদ্ধবশেষে দেখা যাম নৈবাহ্বা। জাতী নেতাদেব যেমন এই নৈরাশ্ত আসে, ঠেমনি হতাশা ও বোনায বিধ্বন্ত হম যুবসমাজ । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরবতী সময থেকে ছ্বিত'য বিশ্বযুদ্ধ আপন্তেব আগে পধন্ত সমগ্র বিশ্বেব সঙ্গে ভারতবর্ধায় সমাজও দারণ স.বটেব মধ্য পড়ে ।
সমাজ-সংকটের সম্ভাব্য কারণগুলি হল,_0১ সার! দেশব্যাপী অসহনীয় আধিক সংকট ও বেকারত্ব, (২) বাজনৈতিক জাতীয় আন্দৌলনগুলির একের পর এক ব্যর্থতায় পরিণতি, (৩) যে সয়ন্ত মধ্যবিত্ত মাষের জীবন ছিল চাকুরী-নির্ভর, তাদের জীবন- যাপনে নিরাপত্তীব অভাব-স্থষ্টি, (8) নগর জীবনের সাজানো! ব্যবস্থায় অসহায বিফলতা।। রবীন্দ্রনাথ প্রথম বিশ্বযুন্ধ'শেষেব অব্যবহিত পরবতাকালে বচিত একটি প্রবন্ধে প্রসঙ্গত মন্তব্য কবেছেন,_পোলিটিকাঁল যোগ বা ইকনমিক যোগ পূর্ণ যোগ নয়, সর্বশক্তির যোগ চ1ই।১০ (দিত বিশ্বযুদ্ধে আগে পধন্ত বাংলাদেশের যে বাজনৈতিক অর্থনৈতিক- সামাজিক পটভূমি, তাতে লব্দিকের 'সবশক্তির যোগ” ঘটেনি বলেই সমাজ ও সমাজ- মানুষের প্রকৃত পরিবর্তন ঘটেনি। সমাজকে ও ব্যক্তিকে এক অলহায অধঃপতনের দিকে নিক্ষেপ করেছে। “দেশের কল্যাণের একটা বিশ্বরূপ মনের সম্মুখে উজ্জল করে রাখলে দেশের লোকের শক্তির বিচিত্রধার] সেই অভিমুখে চলবার পথ হৃদয় ও বুদ্ধিশক্তির
১৫
বার খনন করতে পারে 1,১৯৯ দেশের কল্যাণের এমন “বিশ্বব্ধপণ ভারতের মানুষ রাখতে পারছিল না, কারণ ছিল প্রথম মহাযুদ্ধের পরবর্তীকালে দেশীষ রাজনীতির নানান জটিল স্লোত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ক্রমশ অসহায় কূপ এবং লবদিকে হতাশা।
দেশের মধ্যেই জাতীয় নেতাদের বাব বাব রাজনৈতিক মতাদর্শের বিভেদজনি'ত ংঘধে জাতীয় আন্দোলনগুলি যুব মনেব সমস্ত বকম পাস্ত্াজ্যবাদ-বিবোধী, উপনিবেশ- বিরোধী আশা-প্রত্যাশাকে বিক্ষৃদ্ধ, বিমূঢ করে দেয়। যে কোন দেশেব সমাজ তকণ ও যুবকদের সুস্থ মানস গঠনেই মজবুত হয। তাদের প্রাণের উন্মাদনা যত বেশী সাথক নেতৃত্বে বল স্বত:ক্ফু্তায় বাস্তবভিত্তি পাবে, ততই সেই সমাজ হবে গতিশীল । প্রাণের আবেগে সমাজের অন্তনিহিত অবসাদ, জডত্ব, ভয, বিভেদ, আত্মিক পচনশীগ্গতাকে নির্মল কবতে পাববে। কিন্তু দেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে সংঘটিত বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন থেকেই একাধিক ছোটবড আন্দোলন যেভাবে প্রশমিত-উত্তেগ্গন। থেকে অস্তিম নিক্ষল ফল দেয়, তাতে দেশীয় যুনসমাজ ক্রমশবহতাশ[কেই নিজেদের শবীরের ছাযাব মত সঙ্গী করতে থাকে।
এই হতাশার সঙ্গে সমন্ত হয় বিশ্ব-বাজাব-মন্দার সঙ্গে সম্প্ত দেশীয় অর্থনৈতিক মন্না-অবস্থা । যুব্পম্াজের মধ্য বেকারত্ব প্রবল হয়। দেশের অর্থ- নৈতিক স্-মবস্থা' একটি শির্দিষ্ট কাঠামোব মধ্যে থেকেই, উৎপাদন সাম্গ্রীব কেন্দ্রে লক্ষ্য রেখেই বজায থাকে । এবং এর থেকে যে উন্নতি, তা উৎপাদন ব্যবস্থার প্রভূ সমৃদ্ধিব সঙ্গে গভীর-ঘনিষ্ঠ। অর্থনৈতিক স্থ-অবস্থার এই বিশ্বনীতিতেই যখন মন্দ! এবং সে মন্দ। যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তাঁ ১৯৩০ সালের বাজার-মন্দার সঙ্গে ভারত তথ| বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মন্দায় জড়িত হয়, তখন সারা দেশের বেকারত্ব, জীবনযাপন সম্পর্কে আশাহীনতা, নিরাপন্তাহীনত। ক্রমশ অমা-রাত্রির কঠিন অন্ধকারের মত চেপে থাকে। প্রথম মহাযুদ্ধের আগে ও সমকালে যার] ছিল কিশোর, তৃতীয় ও চতুর্থ দশকে তার! অস্থিরচিত্ততাষ, নৈরাশ্ঠে, হতোগছ্যমে নিস্তেজ, নিবীর্ধ হতে বাধ্য । কারণ যৌবনের দৃপ্ত লগ্নেই তাবা চতুম্পার্থের সমাজের কাছে প্রাপ্য চেয়ে বিফল মনোরথ হচ্ছে বারবাব।
অন্থদ্ীকে যার! ছিল চাকুরী-নির্ভর জীবনযাপনে অত্যন্ত, সংপারকে সেইভাবে একট। কেন্দে দৃঢ় বাথতে তৎপর, সেই মধ্যবিত্ত চাকুরীপ্রাণ মান্গষর! কেন্দরচ্যুতিব আশংকায় দোছুলামান হযে ওঠে । তার মূলেও সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ক্রমশ উঠে- আম! বিশ্ববাজার-মন্দাব আভ্যন্তরীখ প্রতিক্রিয়া! বাংলাদেশের এমন অর্থনৈতিক সংকটের সামনে সংসারী মধ্যবিত্ত শিক্ষিত যানুষ আত্মরক্ষার পথ ও হ্যত্র অন্থপন্ধানে দিশেহার। হয়ে যায়। পিতা-মাতা-পুত্র-বন্তাত্ত্রী এদের সমবেত মানবিক আশ্রয়ে যে
১৬
সংসার, তাকে কেন্দ্রচ্যুত না হতে দেওয়ার জন্য সেই শ্রেণীর মানুষের হনে ক্রমশ জাগে জটিল প্রতিক্রিয়।। একদিকে জটিল সমাজ, অন্যদিকে সংসারকে নিজেদের চেন! কেন্জে স্থিত রাখার প্রবল প্রম্নাস ও আত্মলংগ্রাম--এমন প্রতিকূল সংগ্রামে নীতি-ছুর্নীতির প্রশ্ন আসে, মানবতাবোধ বড় হয়, সেই সঙ্গে নীতিগত আদর্শকে আপ্রাণ বাচানোর প্রয়াস__ আর এসবকে ধ্বংস করার জন্য তখন সমাজের প্রথাবদ্ধ সামগ্রিকতায় শৈথিল্য--এ সব থেকে মধ্যবিত্ত সংসারজীবন ক্রমশ এক ছন্বসংকটের ভিত্তির ওপব এসে দাড়ায় ।
এমবের সঙ্গে আরও একটি দ্বিক লক্ষণীয় । পসর্বকালেই দেখ! গেছে, ভারতবর্ষে নবগঠিত বা পুরনো শহর ঘত দ্রুত এগিযেছে, গ্রাম তত পিছিয়ে পড়েছে ।' অবশ্যই বুটিশ শাসিত উপনিবেশ ভারতবধের প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বের ভারতের গ্রাম ও শহর সম্পর্কেই একথা প্রযোজ্য ৷ বুটিশ শাসনে, তাদের ওঁপনিবেশিক বুদ্ধি ও দাত্রাজ্যবাধী লোভ-লিগ্নায় স্থদদূর ইংলগু থেকে নির্দেশিত রাস্ত্ীয় স্বার্থপরতায় ভারতেব উন্নতি অর্থাৎ একাস্তভাবে ভারতীয়দের উন্নতি সম্ভব হয় নি। থাগ্যব্যবস্থার উন্নতি, শিল্পের প্রসার__বৃটিশদের নিজেদের প্রযোজনে ছাডা৷ সারা ভারতে দেখা দেয় নি। এই সাম্রাজ্যবাদী, উপনিবেশিক স্বাথপরতাষ ও ধ্যানধারণায় পুষ্ট বুটিশ শাসনে থাকাব কালে বাংলাদেশে কলকাত! শহরকে কেন্দ্র কবে জীবন-মন গঠিত হয লে সময়েব শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে । যার শহরবামী, তার] সেই মনে লালিত ও পুষ্ট এবং ক্রমশ তৃপ্ত হতে থাকে । এটা তাদের মধ্যে যেন জাতিগত বংশগত এতিহ্য হযে যায়। আব সেই সঙ্গে যুক্ত হয় একটি শহরের চতুষ্পার্থে বেষ্টিত হাজাব হাজার গ্রাম থেকে শহব আগমনেচ্ছু গ্রামীণ মানুষের বাসনা ও প্রযাস। বাচাব তাগিদে গ্রামের মান্য বংশগত ব্যবসা ত্যাগ করে শহরে আপার বাসনা লালন করে, শিক্ষিত ও অল্প-শিক্ষিতরা চাকুরীর জন্য কলকাতামুখী হতে থাকে। হাজার হাজার গ্রাম তখন কলকাতার দিকে তাকিয়ে থাকে | যেখানে শহুরে অগনন বেকার, মধ্যবিত্ত সংসারে অর্থ- নৈতিক ছুববস্থা ও নিরাপত্তাব অভাব সেই সুত্রে নৈতিকমূল্যবোধে সংশয়, যেখানে যুবধনে নানাদিকের হতাশায় অসহায় ক্ষোতেব স্তুপ, সেখানে গ্রামেব কিছু সচেতন মান্ধষের কলকাতামুখী হওয়ার মধ্যে শহর জীবনও নানাভাবে পর্যন্ত হবার অবস্থায় আসে ক্রমশ ।
অর্থাৎ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-শেষের পর থেকে ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরস্তের আগে-_বিশেষ করে ১৯৩* সালের পর থেকে দেশের সামীজিক অবস্থা এক জটিল রূপ নিতে থাকে। এবং এই জটিনতার মুল কাবণ যেমন ভারতের বুকে বঠিন পাথরের মৃত বুটিশ উপমিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ; তেমনি অথনৈতিক বাজার মন্দা এবং দেশীয় রাজনৈতিক আন্দোলনের নানান সমহ্যাসংকূল দিক। এসবের প্রত্যেকটি দিকে যুক্ত হয়েছে
9৭
চাকুরী-নির্ভর মধ্যবিত্ত মানুষের মানসিকত। ৷ আমাদের আলোচ্য বিষয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ব-সমকালীন বাংল। ছোটগল্প ও উপন্তাসের বিভিন্ন প্রবণতা । এই প্রবণতাগুলির আগে ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পূর্ব পর্বে বাংল। কথাসাহিত্যের যে কয়েকটি জটিল দিক, তার সঙ্গেই কুত্্বন্ধ হয়ে দেখ। দেয় ছিতীয় বিশ্বযুদ্ব-সমকাপীন কথাসাহিত্য ধারা ।
কিন্তু আমাদের বক্তব্য, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কালের সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ক্রম-ঘনায়মান প্রকাশ্ট ও অন্তঃশীল সংকটের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালের উত্তাল পরিবেশ রচনার উপযোগী জাতীয় জীবনের সামগ্রিক মানসশক্তির বীজটিও ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরোক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে দেশের মান্থযের একটি শিক্ষ! ও মানসপ-প্রস্ততি ছিল পরবর্তী কোন বিশ্বযুদ্ধ সংঘটনের স্বরূপ বোঝার, তার সম্মুখীন হওয়ার। তার! যেমন একদিকে উপনিবেশবাদ্দ ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির চাপে রুদ্ধশ্বাস হচ্ছিল, অনহাযতাকে অনিচ্ছায় গ্রহণ করছিল জাতীয় চরিত্রে, তেমনি পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে এঁক্যবদ্ধ হওয়ার, জাতিকে প্রবল প্রতিরোধের সামনে এঁকা- বন্ধ থাকার শিক্ষা গ্রহণ করছিল। এর পরিচয় পাই তিরিশের দশকের একেবারে শেষ দিকে, অর্থাৎ ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার আগের তিন-চার বছরের মধ্যেই, যখন ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ওঁপনিবেশিক শামন ব্যবস্থার মধ্যেও নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং গঠন করে কংগ্রেম প্রার্দেশিক মন্ত্রীভাগ্তলি। এ সময়ে বুর্জোয়া নেতৃত্বের মধ্যে যেমন আসে কিছুট। শুভ দিক, তেমনি অন্যদিকে সমস্ত আন্দোলনের শক্ত ভিত্তি যে ট্রেড ইউনিয়ন-সক্রিয়্তা-_তার তীব্রতা । ৭ 105%7 0-80186 ০ (0805 01101 80010 268910176 20 03৩ 90106 5/৪%৩ 01 1937-38, 1081 91 056 10110 81110 9৬৩ 90096000180 018 00৩ (65101001219 ০910191156 £65158] ৫06 ৫০ 11৩ 81109106100 £৪০৩,১২-দ্েখী দিয়েছিল--এ মন্তব্য করেছেন ইতিহাঁসকার। ঠিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে সারা ভারতবর্ষে এমন নতুন ধরনের ট্রেড ইউনয়ন সক্রিয়তা, সমগ্র বিশ্বের রাঁজনৈতিক-দামাজিক সম্পর্কের সঙ্কে সম্পর্ক রেখে এমন বিশাল জাগরণের দিক নিশ্চয়ই পরবর্তীকালের জাতীয় বুদ্ধি-বিবেচনার গু প্রতিরোধ গঠনের শক্তিকে যেমন ত্বরাশ্বিত করে, তেমনি একটি শক্ত ভিত্তিও দান করে। তা বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের সঙ্গে এই ভারতের সামাজিক শক্তি ও স্থস্থতাকে কতটা রূপদ্ধানে মহায়ক হয়েছে, আমর। সেই প্রসঙ্গই একটু আলোচনা করতে চাই ।
এই ট্রেড ইউনিয়ন সম্পর্কে ইতিহাসকারের ব্যাখা,--0৩ 08৫5 8107 300৩1050710 801680 169%1705 6০ 11365 16017091101, 01 55618] 205%% 05191088100 1960115 110906001718 6৩0 0১৩ ৮7011061817) 8588009)
দ্বিতীয় নিশ্বযুদ্ধ-দমকালীন বাংলা কাসাহিতা ২
১৮
190601768 200 00018101560 100081195১৩ স্মরণীয়, সে সমক্বের কর্মী ও শ্রমিকশ্রেণীর মানুষের মধ্যে মধ্যবিত্ত মানুষ ছিল অনেক। ট্রেড ইউনিয়নের এই যে এমন ব্যাপক বিস্তার, তার আন্দোলনে এই যে সমস্ত খেটে-খাওয়া মান্থধকে এীক্যবদ্ধ করার প্রয়াস, এর মধ্য দিয়ে সামাজিক জীবনের আর একটি দিক গড়ে ওঠে । সে দিকটি হল, পূর্বকধিত সমস্ত অন্তঃশীল হতাশা, অপচয়, অবক্ষষ ও মুল্যবোধহীনতা, অলহায়তাব পাশাপাশি উপনিবেশবাদকে ও সাত্রাজ্যবাদকে ধাক্। দেওয়ার উপযোগী একটি মানস-গঠন চলছিল । অর্থাৎ সে সময়ের সমাজ- মানসে সমকালের কালচেতন! থেকে গৃহীত এঁক্যভাবনা তার্দের এক বিশাল কর্মী ও শ্রমিক-মান্থুষকে সংঘবদ্ধ হবার প্রেরণ! ও রসদের যোগান দিচ্ছিল। এই যোগানের যে প্রতিক্রিয়া তা হচ্ছিল শুধু মানপিক নয়, তা মন-প্রাণের গভীরে আত্মিক । আমাদেব কথ! হল, এমন আত্মিক শক্তির সঞ্চয় ছিল বলেই সেই সামাজিক মানুষই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ- সমণালের প্রবল অত্যাচার ও ভয়ের সামনে নিভীক হতে পেরেছিল, উপনিবেশবাদের বিষক্রিয়াকে নিশ্চিহ্ন করার শপথ নিতে পেরেছিল, পেবেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম- কালের সমস্ত রকম প্রতিরোধকে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-পামাজিক-নৈতিকভাবে ঠেকিয়ে রাখতে ।
স্থতরাং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের সমাজের যাবতীয় বাহ্িক-মানপিক প্রভাব- প্রতিক্রিয়। নান। মানুষ, ঘটন। ও সিদ্ধান্তেব ক্রশ-কারেণ্ট”এ এমন একট। বূপাবয়ব গ্রহণ করেছিল, য1 দ্বিতীয় বিশ্বদুদ্ধ-সমকালে পূর্ণতা পায়। এমন পূর্ণতার প্রতিফলন আছে ছ্বিতীয বিশ্বযদ্ব-সমকালের কথাসাহিত্যে- ছোটগল্প ও উপন্যাসে, এমন বূপাবষবের স্বীকৃতি আছে ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পুর্ব বাংল] কথাসাহিত্যে। এক কথায়, আমাদেব আলোচনার ন্যায় এই কথাই প্রমাণ করে, প্রথম মহাযুদ্ধের পরবতী দীর্ঘ একুশ বছরের অর্থনৈতক-রাজনৈতিক-সামাজিক পরিবেশ-প্রতিক্রিয়ায় যে বাংল! কথাসাহিত্যের জন্স, বিশেষ করে একই অর্থে তিরিশের দশকের শেষ নয়টি বছরে সেই বথাসাহিত্য ধারাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নতুন নতুন বিষয়ে ও প্রবণতায় দীপিত হয়ে ওঠে । যুদ্ধের আগে ঘে সমস্ত প্রবণতা ছিল কথাসাহিত্য-ধারার, যুদ্ধের সমকালে সেগুলি এক জটিলতম অবস্থায় আসে । বাংলা কথাসাহিত্যের ধাবা আসে বৈচিত্র্য, আসে অস্ত:শীল জটিলতা, আসে অন্তরুখীনতা| ।
আমাদের বিশ্বাস, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্ববর্তী বাংলা কথাসাহিত্য-ধারার দিগন্ত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তাঁকালের প্রতিক্রিয়ায় ও প্রভাবে যেভাবে বিস্তৃত হয়, সেই বিস্তাব-মুখ চিষ্টিত কবে ছিতীধ বিশ্বযদ্ব-সমকালের কথাসাহিত্য-ধারার উৎসমুখকে।
১৯
কথাসাহিত্য ধারার একটি ধারাচিহ্থিত পর্বের যেখানে শেষ হওয়ার অধ্যায়, সেখানেই আবার পরবী ধারার শ্রুর সোপান। আমাদের পরবর্তী আলোচনায় ছ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্ববর্তী কথাসাহিত্যধারার প্রবণতাগুলির সাধারণ সামগ্রিক একটি পরিচয় দানের চেষ্টা আছে।
পাচ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯১৮ সালে । শেষ হওয়ার অব্যবহিত পববর্তা কালগুলি নানান নতুন নতুন সংকটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হতে থাকে ধীরে ধীরে । সারা বিশ্বের এতিহাসিক-রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত এক কালো ছায়ার আবরণে স্থির হতে থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রধানত ছিল দুই বিব্দমান সামত্রাজাবাদী রাষ্্রগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত । এই যুদ্ধ আগ্রাসন সাম্রাজ্যবাদের নিজেরই বীভতখদ আত্মার এক দ্বিখপ্ডিত রূপের দ্বন্দ থেকে জাত জটিল ঘটনা । সেই ঘটনাগত সমস্ত। কঠিনভাবে আঘাত হানে বিশেষ করে পশ্চিম ইউরোপেই । এমন আঘাতের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় সাহিত্যধার সম্পর্কে ইলিয়! এরেনবুর্গের মন্তব্যই যথার্থ,-7106 (/11181)0 ০01 00৩ স্যাত5; 1185 1095990. 11 529 11160 ড10) 2809 81)800%/9 112 9001590 15910011959 2100 06012551010. 0 [115 02110065501 10181) 1099 (91161) 101616.১১5
ভারতবর্ষ তখন এক উজ্জল ওপনিবেশিক রাষ্ট্র, তাই যুদ্ধ থেকে দুরে থেকেও যুদ্ধের বীজাণুযুক্ত থাকতে পারেনি। সেই 46200817983 200 (601689801” এবং ৫81107689 ০1 911) ভারতীয় সমাজ ও জীবন এবং সমগ্রভাবে মাছুষ ও তার সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত কববেই। যেহেতু কোন দেশের বিশেষ সময়ের উপযুক্ত বাণীরপ হুল তার সাহিত্য, বিশেষভাবে জীবননিষ্ঠ কথাসাহিত্য, তাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সমাজ ও সময়ে রচিত কথাসা হিত্যে যুদ্ধের লক্ষণীয় প্রতিক্রিয়া দেখ! দিতে থাকে । কোন দেশেরই লেখকর] সমাজ-বিচ্ছিন্ন আত্মকেন্দ্রিক থাকতে পারেন না৷ এবং সাহিত্যিক বুদ্ধি্ীবীদদের পক্ষে নিছক আত্মকেন্দ্রিকতা শ্রেষ্ঠ সাহিত্য ুরির প্রধানতম অস্তরায়ও বটে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ভারত তথ বাংলার্দেশের কথাসাহিত্যিকর্দের যে অভিজ্ঞতা, তা তাদের পরিপার্খ ও পায়ের নীচের মাটি দিয়ে রচিত সযাজ-্ভাবনার সঙ্গে গওতপ্রোত হয়েই দেখা দেয়। তাতে সাহিত্য হয় জীবনানুগ, মৃত্তিকাম্পর্শী। সে সাহিত্য লেখকের জীবনবোধের গভীরতায় যত বেশী শিকড় বসাতে পারে, ততই তার মহীরুহের মর্ধাদা আকাশয়ুখী বিশাল হয়ে ওঠে। এই প্রসঙ্গেই স্মরণীয়,---হ106 01 ০1 2
হও
09618 09 ৫5081050 &5 0১৩ 9০0০160 10 91171010196 119৩8" : 108 ৪ ভাত 0:০৫01055 18 2130 06661101750 05 1019 0100180175, 1015 670761৩1006, 1088 01819061.১৫
লেখকের সমাজ-পরিবেশ, জীবনযাপন পদ্ধতি যে প্রেরণ! ও প্রতিক্রিয়া স্্টি করে বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিকদের মনোভূমিতে, তার প্রকাশ তখন জরুরী ছিল যুবক বুদ্ধিজীবীদের পক্ষে। ১৯২৪-.৯২৫ সাল থেকে তারতের মত শুপনিবেশিক রাষ্ট্রে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের শাসন-দষন যেমন তীব্র রূপ পায়, সমাজদেছে তখন হতাশা বাস! নির্মাণের জন্ত পাখিদের এক এক করে খডকুটে! আনার মত জমতে থাকে । বারবার হতাশাগ্রস্ত বুদ্ধিজীবী মানুষ এমন প্রতিকূল অবস্থার প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি-মান্ুষের আশা- প্রত্যাশার একটি আশ্রষ খু'জতে থাকে । সেই আশার আশ্রয়স্থ্কে যদি পাখির তৈরী একটি পরিণত বাসার সঙ্গে তুলনা কর! যাঁয়, দেখ যায়, সে সময়ের বুদ্ধিজীবী মানুষের সেবাস। আর রচিত হয় নি। ব্যক্তি-মান্থযের স্বপ্র ভাঙতে থাকে, বিশ্বাস নডে ওঠে, সমস্ত শুতবোধ সংশয়ে যূল্য-নির্ণয়ে কেপে ওঠে । শোচনীয় অর্থনৈতিক দুরবস্থার চাপে দারিদ্র্য প্রকট হয়। যে কোন ওপনিবেশিক রাষ্ট্র ও সমাজে দারিদ্র্য আসে অর্থনৈতিক ব্টন-বৈষম্যে ও বিশ্ববীজাব মন্দা থেকে । এই দারিদ্র্য যেমন আঘাত হানে স্থস্থিত জীবন-ব্যবস্থার মূলে, তেমনি যারা জীবনকে দ্বপ্র দিয়ে গতিপ্রাণ করতে আগ্রহী, যার! আবেগ-উচ্ছ্বাল দিয়ে জীবনের বৃহৎ মৃল্যায়ণের জন্য ভত্ন্নুক, স্বপ্রকে সতো রূপাস্তরিত করতে অন্তরে বাহিরে দৃঢগ্রতিজ, শপথ গ্রহণে ছুর্জয় সাহুনী সেইসব যুবপ্রাণে হতোঘ্যমের পাথর বসিয়ে দেয়। বাংলাদ্দেশের যুবকরা সে সময়ে এমন অর্থনৈতিক বিধিব্যবস্থায় প্রথম বিশ্বযদ্বপরবতী নিয়তির মত স্থির ললাটের লিখনেই বেকার জীবনকে তাদের ভাগ্যলিপি ভেবে নেয়। ১৯২৪ সালেই বাংলাদেশে যুবকদের মধ্যে বেকারত্ব যে পাবাণভার হয়ে উঠেছিল, তার প্রমাণ আছে ওই লালেই ত্দানীস্তন সরকার কর্তৃক 'বেঙ্গল এমপ্রয়মেপ্ট এনকয়ান্ধি কমিটি” গঠনের মত সংবাদের মধ্যেই । এর ফলে বাঙালী যুবক-প্রাণের জীবনবোধের স্থম্থিত কেন্দ্র থেকে ক্রমাগত সরে যাওয়ার প্রবণতা দেখ দিতে থাকে।
এমন উৎকেন্ত্রিক জীবন ও মনকে সাহিত্যে-শিল্পে ধরে রাখার জন্তই সে সময্নের কথাসাছিত্যিকরা মিলিত হয়েছিলেন “কল্লোল” পত্রিকায় । যৌচাকের মধ্যেই কিছু মৌমাছি যেমন বসে যায় স্থিরভাবে, কিছু তার চারপাশে মধুগন্ধে গড়ে, আবার বেশ কিছু তাকেই কেন্ত্র করে দূরে সরে গিয়ে মৌচাককে প্রদক্ষিণ না করে থাকতে পারে না, তেমনি কিজ্পোল” পক্তিকাকে কেন্দ্র করে একমাত্র কল্লোলেরই লেখক, আবার
২5
কল্লোলে'র নীতি-অন্থ্প্রাণিত লেখক এবং কল্পোলকেই লক্ষ্যে রেখে “সংহতি, 'প্রগতি*, 'কালি কলম» ধূমকেতু" পত্রিকার লেখকরাও দেখা দেন সে সময়ে।
পৃথিবীর সব দেশের মত আমাদের দেশেও সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নতুন আন্দোলন শুরু হয়েছে পত্র-পত্রিকাকে কেন্দ্র করেই । বেনের্সী-উচ্চকিত উনিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের শেষে বাঙালী মন, মনন ও মনীষার একমাত্র আধার হুযেছিল পত্র-পন্র্িকাই | দিগদর্শন ( ১৮১৮, এপ্রিল )-এর প্রকাশে এর প্রথম পদক্ষেপ। তারপর থেকে মনীষার যে বিপুল বিকাশ, তারই পথরেখা চিষ্তি হয়ে গেছে সংবাদ প্রভাকর, তত্ববোধিনী, বঙ্গদর্শন, সাধনা, সবুজপত্র, সাহিত্য, ভাবতী ইত্যাদি পন্রিকাকে একমাত্র ভিত্তি করেই। স্থতরাং এক একটি সাহিত্য-সংস্কৃতি সমাজ-শিল্প সংক্রান্ত পত্রিকা সে সময়ে শুধু পত্রিকা মাত্র ছিল না, ছিল গোঠী, ছিল স্থুল বৃহত্তর তাৎ্পর্যে এক একটি দেশের এক এক সময়ের সবাবয়ব সাংস্কতিক ও শৈল্পিক সৌরবলয়--বিবিধ বিচিত্র বোধ বুদ্ধি অন্থৃভুতির এক একটি ্ব্ণময় পাত্র। আর এই সব আধারে আধেয় ছিল লমকালের অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজ, হতাশাগ্রস্ত জীবন, যাবতীয় নৈতিক আদর্শে অবিশ্বাসী, সংশয়ক্রিষ্ট বেকার মধ্যবিত্ত মান্য, আগামী দিনের বিপ্রবের স্বপ্নে বিভোর যুবক মনেব গতিশীল সত্তা । ১৯৩০, বৈশাখ সালে অর্থাৎ ইংরাজী ১৯২৪ সালে “কল্লোলে” যে নতুন প্রাণের সমবেত কলধ্বনি, তা প্রতিধ্বনিত হয় সংহতি ( ১৩৩, বৈশাখ )১৬, কালি কলম ( ১৩৩৩), প্রগতি (১৩৩৪), বিচিত্রা, ধূমকেতু ইত্যাদি একাধিক পত্রিকা । অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের এক স্বতিচারণে কিল্লোল' পত্রিকাটি প্রচণ্ড আবেগে দীপ্তিময় ও স্বপ্নময় হযে উঠলেও তাঁর ব্যাখ্যাই আমাদেব ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী নয বছরের ( ১৯২৪-১৯৩৩ ) কথাসাহিতোর মূল ভাবনার গতি প্রকৃতি এবং স্বাতন্ত্য ও প্রবণতা বোঝার সহায়ক হবে। তীর ভাষায়,--- “কল্লোল বললেই বুঝতে পারি সেটা কি। উদ্ধত যৌবনের ফেনিল উদ্দামতা, সমস্ত বাধা বন্ধনের বিরুদ্ধে নিরধারিত বিদ্রোহ, স্থবির সমাজের পচা ভিত্তিকে উৎখাত করার আলোডন 1১?
বর্তমান অধ্যায়ের এই শেষ অংশে আমাদের আলোচনার মূল লক্ষ্য হল, ১৯২৪ সালে “কল্পোল'-এর প্রকাশকে কেন্দ্র করে দেশের সমকালের বুদ্ধিজীবী-প্রাণের যে বিস্বন চোখে পড়ে কথানাহিত্যে, তার মধ্যবর্তী সমস্ত প্রবণতা বা লক্ষণগ্ডলিকে স্পষ্ট করা। কারণ, আমাদের মতে, বংকিমচন্দ্র-রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্ত্র-প্রভাবিত কথাসাহিত্য-ধারায় সেই লক্ষণ ব৷ প্রব্ণতাগুলির অভিনবস্থ ও হ্বাতন্্যই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ব-সমকালে নতুন এক রক্তক্ষয়ী বিশ্বযুদ্ধের করাল মুখব্যাধানে আবার এক জটিলতম অধ্যায়ে অভিনব অভিথথাতের সন্পুধীন হয়। বাংলা কথাসাহিত্যধার। প্রথষ বিশ্বযুদ্ধের প্রবল তাড়না ও
৮৮
অস্তঃশীল তিরম্কারকে সহনশীল করতে না করতেই আবার এক প্রবল ধাক্কার সম্মুখীন হয়। প্রবণতাগুলির স্থিতাবস্থা আসেনি, নতুন অস্থিত অবস্থায় আরও বৈচিত্র্য জানে ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালে। বদ্তত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকাল অর্থাৎ সমকালের যুদ্ধ-ব্যন্ত চত্র্দিকের চরম আক্রমণে এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় বাংলা কথাসাহিত্য এক অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন হয়। ১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুদ্ধবিরতির চিহ্নিত সীমাটি পর্যন্ত সেই পরীক্ষার আগুন এক নিযতি-নির্দি্ট ধুলিঝাডে, রহস্তময় রুত্বশ্বাস উত্তাপে স্তম্ভিত করে আমাদের ।
“কল্লোর' পত্রিকা এবং তার প্রকাশের অব্যবহিত পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত পত্রিকাগুপিকে কেন্দ্র কবে যে সমন্ত লেখক সমবেত হয়েছিলেন কথাসাহিত্যের পসবা নিষে, তারা মূলত কথাসাহিত্যের কয়েকটি স্থনির্দিষ্ট পথরেখাকে কখনো চিহ্নিত, কখনে। নির্দিষ্ট, কখনে। বা স্পষ্ট খজুণেখ আলোয় আলোকিত করে গেছেন। অচিস্ত্যকুমার সেনগুপ্তের “কল্লোল? পত্রিকা সম্পর্কে একটু আগের মন্তব্যের স্ুত্রকে ধরে তিনটি বিশিষ্ট মনোভঙ্গির প্রসঙ্গ রাখতে পারি এখানে । কল্লোলেব লক্ষ্যের মূলে ছিল (১) যৌবনের দৃপ্ত আবেগ, (২) বন্ধন থেকে মুক্তির জন্য বিদ্রোহ, (৩) পচনশীল সমাজকে উচ্ছেদ । আমাদের বিশ্বাস, এই তিনটি মৌল প্রতিক্রিয়ার শক্ত-ভিত্তিতেই কথাসাহিত্যের অর্থাৎ বাংলা গল্প ও উপন্তথাসের বিষয়-বিচিত্রতা ও রীতির স্বাতন্ত্রা এবং অভিনবত্ব দেখা দিযেছিল ১৯২৪ সাল থেকেই । মানব চবিত্রের নিয়ম হল, তাব হতাশ! ও অবসাদ গভীন আলম্ত ও লঘু রোমার্টিকতা আনে, তাব যাবতীয় অতৃপ্তিআ[ঙ অসহায় বেদন।-ছুঃখ জাগায়, তাব আগামী দিনেব স্বপ্র ও ম্বপ্লের মোহ মেই সঙ্গে আবেগ ও লাধনাব দিকে তাকে আকর্ষণ করে । এসব থেকে জীবন যদি ছেঁকে আনে নৈরাশ্যকে, তা-ও ক্রমশ শিকড গাডতে গাড়তে সমস্ত প্রতিকূলতায় বিদ্রোহ ও বিপ্লবকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বসে। প্রথম মহাযুদ্ধের পর এমন সব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই দেখ। দেয় “কল্লোপ? ।
ষে প্রতিবাদ, বিদ্রোহ, নৈবাশ্য, দারিদ্র, শুন্যতা থেকে “কলোল" ও তার লেখকর। দেখ! দেন, ৬1-ই জন্ম দেয় বাংল! কথাসা হিত্যে আধুনিকতার ॥ বাংল! কাব্য যতীন্ত্রনাথ সেনগুপ্ত, যো হিতলাল প্রমুখ যে আধুনিকতার শুত্রপাত ঘটিয়েছিলেন তথাকথিত রবীন্দ্র বিরোধিতাকে সম্বল করে, বাংলা! কথাসাহিতোও কল্লোলের খোলা দরজায় দীডিয়ে নমকালের যুবক-লেখকর] ছুহাতে সেই নব আধুনিকতার পতাক। আন্দোলিত করেছিলেন । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রায় একই সমক্কে বাংল! কাব্যের ক্ষেত্রেও “ববীন্ত্রনাথের মায়াজাল থেকে মুক্ত হবার ইচ্ছেটা জেগ্গে উঠেছে ১১৮ *কল্পোল-অগ্তভূক্ত ও সমসাময়িক কিশো র-যুবক-
টি
কবি-সাহিত্যিকদের “অগ্রজ সমসাময়িক মোহিতলাল ও যতীন্ত্রনাথ সেনগুণ্ড এবং নজরুলের ঠিক সেই সময়ের পরিচয় দিতে গিয়ে বুদ্ধদেব বন্থ বলেছেন,--“যেন একটা আলো-আধারি সময়, যখন নতুনের ঝিলিক দিচ্ছে জানলায়, অথচ ঘরের মধ্যে জড়ো হয়ে আছে পুরানো আসবাবপত্র ভারি, অনড়, মমতাময় অভ্যাস ।১৯ কল্লোল পত্রিকার উদ্যোগী লেখককুলের প্রয়াসও বস্তত এরকম একটা অবস্থাকে সামনে রেখেই ষে তৎপর ছিল; এ কথা বললে মনে হয় অপ্রাসঙ্গিক হবে ন|।
বন্ধত “কল্লোল” ছিল একট! আন্দোলন-_আধুনিকতার আন্দোলন। “আধৃণিকতা কথাটি আপেক্ষিক । কোন বিশেষ যুগের ও সময়ের চাহিদা, আবেগ, অধিকারকে সবাংশে গ্রহণ করে অতীত ও এতিহ্যক্ে সামনে বেখে আগামী দিনে সবল পদবিক্ষেপে এগিষে যাওয়া ও পরবর্তা আরও একাধিক নব আধুনিকতার জন্ম-বীজ রেখে যাওয়ার গ্রচ্ছন্ন প্রদ্ত তি যেখানে থাকে, তারই সাধাগণ তাত্বিক অর্থ হল “আধুনিকতা'। তাই আধুনিকত। “আপেক্ষিক হতে বাধ্য । যে লেখকের দল নিয়ে 'কলোল”, তাদের প্রাথমিক কথা; তখন আমবা যার ও-পত্রিকাষ লিখত আমর! সকলেই “কল্লোলের দল; নামে পরিচিত ছিলুম, এবং আমাদের নিন্দুকরা যতই সংখ্যায় ও তেজে বর্ধিঞ হতে লাগলো, আমার্দের আননাও ততই যেন উচ্ছল হলে।-- 1১২০ সে সময়ের কিশোর ও যুবক কবি-সাহিঠ্যিকদেব সব কিছু অবহেলায় অস্বীকার ও উপেক্ষা করাব সাহস ও উত্সাহ থেকেই জন্ম নেয় সময়োপযোগী ঝক-ঝকে আধুনিকতা - যে আধুনিকত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওঘার আগেই বাংলা! কথাসাহিত্যে একটা শিজস্ব আসন বরে নিতে সক্ষম হযেছিল।
যদিও মন্তব্যটি কল্লোলেব সময় থেকে শুরু-হওয়া বাংলা! ছোটগল্পের আলোচনা প্রসঙ্গেই, তবু এক সমালোচকেধ এহ মন্তব্য সামগ্রিকভাবে “কল্পোলে'র আধুনিকতার বিশিষ্টতাকেই তুলে ধরে,_“বাংলা ছোটগল্পের যে বিচিত্র দুর্বার স্রোত আধুশিকতার শতমুখী কাটাখালে বইতে শুরু করল, তার যাল্র। ঠিক কল্লোল থেকে আরস্ত ন] হলেও, কল্লোল তার গতি খরতব করে দিল। দিল ভৌগোলিক পরিধির বিস্তৃতি ঘটিয়ে । দিল বাহলোক আর অন্তর-মানসের সীমানা বাড়িয়ে ২১ কল্লোল পন্ত্িকার আধুনিকতার অধিকাংশ লক্ষণকে আত্মসাৎ করে কল্লোলের অন্তম লেখক-প্রতিনিধি প্রেমেন্দ্র মিজ্ঞের একটি পত্রের আংশিক উদ্ধৃতি, আমাদের মনে হয়, কল্লোল-সমসাময়সিক লেখকদের মানসিক অবস্থার একটি স্বচ্ছ দর্পণেরই দৃষ্টান্ত দেয়। “মনে হয়, গাছের যে ভালপানা একদিন ছবাহছ মেলে আকাশ আর আলোর জন্য তপস্যা করত, যার লোত ছিল আকাশের নক্ষত্র, সে ডালপালা আজ যেন কে কেটেকুটে ছারখার করে দিয়েছে। শুধু অন্ধকার ।
ই
মাটির জীবদ্মংত গাছের মৃলগুলো হাতড়ে-হাতড়ে অন্বেষণ করছে শুধু খাবার মাটি আর কাদা, শুধু বেচে থাকা--কেঁচোর মত বেঁচে থাকা 1২২
এমন নাভিশ্বাস অবস্থার, পরিবেশের, অস্তিত্বের চরম মংকটের বিরুদ্ধে সবল বিদ্রোহ থেকেই কল্লোলের আধুনিকতা স্বতঃস্ফু্ত হয়ে ওঠে । রবীন্দ্রনাথের স্বকোমল স্ঙ্জ মানবধর্মী আধুনিকত! এবং ইতিপূর্বে আবির্ভূত জগদীশ গ্প্তেব রচনার তির্ধক আধুনিকতা সমসাময়িককালে ব্যাপক থাকা সত্বেও স্বাদে ও স্বাতন্ত্রে কল্লোলের নিজন্ব হয়ে দাড়ায়। কাল্লালের আধুনিকতা এক ধরণের “এক্সপেরিষেন্ট,--বিষয় ও রীতিকে নতৃনভাবে গ্রহণ কবে, নতুন নিরীথে একই সঙ্গে আবেগ ও বুদ্ধি-যুক্তি-বিবেচনার গবেষণাগাবেব মাধ্যমে উপস্থাপিত কবাব এক অকপট প্রযাস। কল্লোল'-এব এই প্রধান বস্তত তার নোমান্টিক বিদ্োহিতা । রোমার্টিসিজম-এর মূল কথাই হল বদল, বিদ্রোহ। কল্লোল-এর লেখকব। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবতী অন্তঃশীল অভিঘাতে জর্জরিত অবস্থায হয়ে উঠেছেন মনে প্রাণে বোমান্টিক যুদ্ব-পরবতাঁ সমাজন্তায়ে যুবক-মনের নিরীক্ষায় তা-ই সত্য । এই রোমার্টিকত। আনে বিত্রোহ-_তা-ও সমাজন্যায়ে যেমন এসেছিল কল্লোল, তেমনি এসেছিল প্রবল রবীন্দ্রবিরোধিতার কাঁবণে। যাকে কল্লোল” যুগ বলা হয, তার প্রধান লক্ষণই হুল বিত্রোহ আব সে-বিদ্রোহেব প্রধান লক্ষ্যই ববীন্দ্রনাথ। ***এই বিদ্রোহে আতিশযায ছিলে সন্দেহ নেই, কিছু আবিলতাও ছিলো, কিন্তু এব মধ্যে সত্য যেটুকু ছিলো তা উত্তরকালেব অঙ্গীরুরণের ছার! প্রমাণ হযে গেছে ।১২৩
এমন সব মস্তব্য স্পষ্ট করে “কল্লোলে'ন যৌবনধর্ম, “কল্লোলে,র ত্বভাব-লক্ষণ, এবং যুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রমাণ কবে, কল্লোলেব পরবর্তীকালে বাংল! সাহিত্যেব সঙ্গে সম্যক সমন্বয়ের পৃণ৩।। প্রথম বিশ্বযুদ্ব-পববতী সমাজ-সমন্তার মূল হিসেবে অর্থনৈতিক মহা- সংকটজাত দারপ্র্য, বেকারত্ব, সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক মনোবিকাশে স্পষ্ট রবীন্্র- বিরোধিতা, “শুধু অন্ধকার? শুধু বেচে থাকা--কেঁচোব মত বেঁচে থাকা” থেকে মুক্তির আতি, সমসাময়িক কালের পাশ্চাত্য ভাবনা ও দর্শনের প্রভাবপপ্রতিক্রিযা, এক পূর্ণ মান্থষ রবীন্দ্রনাথের হুষ্ট সাহিতোর বিশ্তুদ্ধ হৃদয় ও মনন, কল্পনা, বিশ্ববিস্তারকে সাধারণ পাঠকের পক্ষে বুঝে উঠতে না পাবায় অন্বস্তি, অবহেলা থেকে জাত পাঠক মনের ভ্যাকুয়াম হুষ্টি-_-এ সবের মধ্যে থেকেই একদা কল্লোল” জন্ম নেয় বিশাল বৃক্ষের বিশ্বাস ও বিস্তারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে
কল্পোলের এই প্রতিশ্রতি সাহিত্যে এক নব আধুনিকতা প্রতিষ্ঠা প্রতিশ্রুতি। এই “আধুনিকতা” নবীনভার নামান্তর । কল্লোল ছিল নবীন, আধুনিক। 'কল্লোলে' এবং “কল্পোল'-প্রাণিত অন্তান্ত পত্র-পত্রিকায় ও লেখকপ্রয়াসে যে সমস্ত গল্প ও
৫
উপন্তাসের জন্ম ঘটে, তাদের মধোকার বেশ 'কছু সমান লক্ষণ মিলিয়েই “কল্লোলে"র আধুনিকতা-লক্ষণ নির্দিষ্ট করা যায়। এ সময়ের ছোটগল্প ও উপন্তাসগুলিতে এমনি চিন্তা-তাবনার প্রবল 'ক্রস্কাবেন্ট” ছিল যে, ঠিক নিখুঁতভাবে ভাগ করে লক্ষণ উল্লেখ অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে আধুনিকতার পক্ষে প্রধান প্রবণতাগুলিকে লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করায় সম্ভবত অক্রুবিধে হবে না । এবং এই প্রসঙ্গে আবার ম্মবণ করি, সে সমস্ত প্রবণতা বা লক্ষণই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরবর্তীকালে উদ্ভুত পর্বে আলোচিত এঁতিহামিক-রাজনৈতিক, সামাজিক-অর্থনৈতিক এবং সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক প্রকাশ্য ও অন্তঃশীল পবিবন্তনকে মেনে নিয়েই দেখ। দিয়েছে । “কল্লোল'-এব লেখা ও লেখকদের মানস প্রবণতা, লক্ষণ ও প্রতায বস্তত দ্বিন্টীম বিশ্বযুদ্ব-সমকালীন বাংলা কথ! সাহিত্যে পক্ষে উদ্দীপন বিভাবের মত । অচিন্তাকুমান সেনগুপ্তের “কল্লোল” সম্পকিত একটি মদ্ঘব্যের সারমর্ম কবছি কল্লোলীয়দেব আবেগধর্ম, নিদ্রোহ ও গলিত- সমাজ-বিবোধিতা--এই তিনটি প্রতীকী শব্দ প্রয্যোগের মাধামে । এবং আমাদের বিশ্বাস, এই তিনটি শব্বহূত্র থেকেই, এদেব প্রতীব-প্রতিম ব্যঞ্না থেকেই কললোলের সব লক্ষণ সুবোধ হবে।
কল্লোলের প্রথম লক্ষণ হল তীব্র রোমার্টিকতা__যা সে সমযের বাংল। দেশের নবীন” 'কীচা» সবুজ, 'অবুঝ» অশাস্তঃ” “প্রমন্ত'২৪ তরুণ বুদ্ধিজীবীদের শ্বভাবেব পক্ষে রক্ত-মাংস- মজ্জা-প্রাণ-মাত্মার মত হযে দেখা দিঘেছিল। এমন রোমার্টিসিজম-এর জন্ম পরম রমণীয় আলম্যে-বিলাসে নয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবতী যুবকদের পোড-খাওয়া, ভেঙে-পড়া, হতাশাগ্রস্ত মনের গভীর প্রয়োজনের তাগিদের মধ্যেই নিহিত ছিল। এমন রোমান্টিসিজ মূ- এর নাম দেওয়া যায় দুঃসাহস" |
কল্লোলের লেখকদের বয়স অল্প। সব কিছু প্রচলিত, বাধাবাধি নিয়ম শৃঙ্খলাকে তুচ্ছজ্ঞান করার, অস্বীকার করার ছুঃপাহন এই বয়সেই থাকে । এই বযসেই থাকে তীব্র অতিমানবোধ, জীবনের অস্তিত্বে মহজ ম্পর্শকাতরত1 | “কল্লোল'এর লেখকদের এমন মানসিকতা থেকে প্রমাণ হয়ে যায় তারা সবল পোমার্টিক বিদ্রোহিতায় স্থির-বিশ্বাসী ছিলেন। তরুণদের--বিশেষ করে যার! রোমান্টিক, তাদের থাকে অপার বিম্মমবোধ, অসীম কৌতৃছল, অনন্ত জিজ্ঞাসা । আর এইলব দিয়েই বাংলা! কথানাহিত্যে কল্লোলের লেখকর। পদচারণা করেছিলেন ।
কল্পোলের রোমার্টিক লেখকদের যধ্যে ছিলেন স্বয়ং-সম্পাদক গোকুল নাগ, মনীন্্রলাল বন্থ, বুদ্ধদেব বহু, প্রবোধকুমার শান্তাল, অচিস্তাকূমার সেনগুপ্ত, প্রেমেন্্র মিত্র, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রমুখ। কিন্তু কল্লোলীয়রা স্বভাবে রোমান্টিক হলেও সাহিত্যে
হন
রোমার্টিদিজ ম-এর প্রতিষ্ঠায়, তার মধ্যে অভিনবত্থ স্থউিতে তেমন সফল হন শি। এব স্বপক্ষে মাণিক খন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তবা ম্মরণীয়,মধ্যবিত্ব জীবনের বাস্তবতা আসেনি, দেহ বড হয়ে উঠলেও মধ্যবিত্তের অবাস্তব রোমাঁটিক প্রেম বাতিল হয় নি, ওই একই রোমান্স শুধু দেহকে আশ্রয় করে খানিকটা অন্যায়ভাবে রূপায়িত হয়েছে ।”২: মাপিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যটি "মধ্যবিত্তের অবাস্তব রোমান্টিক প্রেম সম্পর্কে হলেও “কল্পোল'-এর লেখকদেএ রোমান্টিক মনের একটি যুক্তিগ্রাহ ব্যাখ্যা ধরা পডে। “কলোল"- এর লেখকদের রোমার্টিকতা রূপ পেয়েছিল নায়ককে ভবঘুরে করে তোলার মধ্যে-_ যেমন, অনিন্ত্যপুমার সেনগুপ্তের “বেদে? ও ইন্দ্রাণী উপন্যাসের নায়ক, প্রবোধকুমাব সান্যালের “যাযাবর', “আকাবাকা+, পপ্রিক্ববান্ধবা”র নাযক, গোকুল্চন্দ্র শাগের “পথিক” এর নায়ক । রোমার্টিসিজ ম-এর আব এক স্থাক্ষর ছিল তীব্র, কৌতুহলী আবেগ- ধমিতায়। ভাষার আবেগ ব্যক্ত হয়েছে কাবাধগ্রিতায়, গদ্ঠের অদ্ভুত গঠনে | রোমার্টিসিজম- এর তৃতীয় সুত্র আছে নর-নারীর গেহ-সম্পর্কের বর্ণনায়, যৌনচিত্রের জীবন্ত রূপায়নে। এমন যৌন সম্পর্ক উপস্থাপনে ও বর্ণনায় দুঃসাহসিকতার পরিচয় নিঃসন্দেহে রোমান্টিক। অচিন্ত্যকুমাক্জের প্রাচীর ও প্রান্তরে”ব নাঘক-নাধিকার সম্পর্কচিত্র, প্রবোধকুমার সান্তালের আকাবাকা"ব নগ্রদেহ শাষক-নায়িক। মীনাক্ষী-কংকরেপ বপচিহণ ইত্যাদিতে তার প্রমাণ মেলে।
“কল্লোল'-এর লেখককুলেব দ্বিতীষ পক্ষণ নিঃসন্দেহে বোমাট্টিনিজ ম-এব পবিপৃরক-_ রবীন্দ্রবিনৌধিতা । এমন চিন্তা-ভাবনা পক্ষে উদ্দীপন বিভাবের কাজ করেছে যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পব্ববতারঁ দেশজ সবাবযব সমস্যা, তেমশি আছে বিদেশী সাহিত্য ও তার বিপুল পাঠের ২৬ প্রতিক্রিয়া । পরবীন্দ্রসাহিত্যেব বিশ্বজনীন মনন কল্পনা সমকালের যুবকদের যেমন একদিক থেকে শিক্ষিত করছিল, অন্যদিকে তেমনি রবীন্দ্র ভাবনায় লালিত ছাধাচ্ছন্তা থেকে পলাযনে ইন্ধন যুগিযে ছিল। এরই প্রবল আকার রবীন্দ্রবিরো ধিতা, বিদ্রোহ ।
তৃতীয় লক্ষণ, প্রাক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পবের উপন্তাস ও ছোটগল্পের কাহিনী, ঘটনা, চরিত্র ও মূল লক্ষ্যের ব্যাপারে সমাজের নীচের তলার মান্থুবদের মনুষ্যত্বকে শিল্পের মূলা দিতে গিয়ে যে স্বাদের স্বাতস্থ্য সট্টি কবেন কল্পোলের লেখকরা, তা হুল বাস্তবতা। কল্লোলের আগে ববীন্দ্রনাথ আদর্শকে সমানভাবে বজায় রেখে যে মননধর্মী বাস্তবতার স্বাদ দিয়েছিলেন সেকালে স্বভাবী পাঠকদের, কল্লোলের লেখককুল এক ধরণের বৈজ্ঞানিক নিরাসক্তচিত্ততায় উপন্তাস-ছোটগন্পে বাস্তবতাকে শিল্পীত করতে বসে কিন্তু নতুন বান্তবতার ক্বাদ দিতে সক্ষম হন। বিষয় নির্বাচনের বাস্তবতা, বক্তব্যের স্ব
ছপ'
আঘাত, পচনশীল সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বাস্তবতা তাদের একই সঙ্গে রব বিরোধিত! ও শ্ব-কাল বিদ্রোহিতাকে স্পষ্ট করে। একসময়ে রবীন্দ্রনাথ এদের বাস্তবতাকে কিছুটা ভৎসমা করলেও বস্তত “কল্লোল” গোষ্ঠীর লেখকর। রবীন্দ্রনাথের বাস্তবতা ও শরৎচন্ত্রীয় সমাজ ও বাস্তব ভাবনা থেকে বেশ কিছুটা অভিনবত্ব দেখিয়েছেন গল্প ও উপন্তাসের বিষয়, পরিবেশ ও প্রতিপাদ্য উপস্থাপনে | এ বিষয়ে মাণিক বন্দ্যোপাধ্যাষের উপন্তাস-ছোটগল্প সার্থক দৃষ্টান্ত । অচিস্ত্যকুমার সেনগণ্ত মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পকে মন্তব্য করেছেন, _“মাণিকই একমাত্র আধুনিক লেখক যে, কল্লোল “ডিডিয়ে' “বিচিত্রাণ্য চলে এসেছে-_পটুয়াটোলা ডিঙিয়ে পটলভাঙায় । আসলে সে “কল্লোলে'রই কুজবরধন 1২? বস্তত সেই মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁর নিজেব সাহিতা সম্পকিত চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন,--ভাবপ্রবণতার বিরুদ্ধে গ্রচণ্ড বিক্ষোভ সাহিত্যে আমাকে ৰাস্তবকে অবলম্বন কবতে বাধ্য করেছিল। কোন সুনির্দিষ্ট জীবনাদর্শ দিতে পাবি নি কিন্তু বাংল! সাহিত্যে বাস্তবতাব অভাব খানিকটা মিটিয়েছি নিশ্চষ 1৮২৮ প্রেমেজ্্র মিত্রের “মিছিল', “মহানগর” মাণিক বন্দোপাধ্যায়ে “পুতুল নাচেব ইতিকথা” পপস্মানদীর মাঝি", প্রাগৈতিহাসি ক, “লপীল্প” ইত্যার্দি গল্প-উপন্াঘে আমাদের মন্তব্যের প্রমাণ মেলে।
চতুর্থ লক্ষণ, সমাজে ও জীবন-যাপনে যা কিছু প্রচলিত, প্রথাসিদ্ধ, প্রাচীন ধাবান্গ থেকে এতকাল একটা আদর্শে স্বস্থিত হয়েছে, মে শম্পকে বিরুদ্ধ মনোভাবের প্রকাশ । এই প্রকাশের ভিত্তিতে ছিল সমকানীন যুবক বুদ্ধিজীবীদের নাস্তিকত। এবং সন্দেহ-সংশয়ে গড়া মন। যেহেতু এই ছুঘেখ মিলনরূপই শিল্পে-সাহিত্যে জীবন্ত হয়, তাই কল্লোল-ভাবনার সম্যক প্রকাশ ঘটে। অর্থাৎ বোঝাই যায, কললোল-প্রাণিত লেখকবা বাধা-ধরা 'আবাম বমণীয পথ” থেকে সরে এসেছিলেন । ক্ল্লোলের পথ সহুজের নয, স্বকায়তার পথ্থ। কেননা "তার সাধনাই ছি” নবীনতার, অনন্যতার সাধনা । যেমনটি আছে তেমনটিই ঠিক আছে এর প্রচণ্ড অস্বীকৃতি 1২৯
পঞ্চম লক্ষণ, বাস্তব সমাজের প্রচলিত ন্যাম-নীতি, ধর্ম, প্রেম-বিশ্বাসের কাঠামোর মূলে আঘাত হানার প্রযাস সাহিত্যের দিকেও মুখ ফেরাষ। এর ফলে লাহিত্যেধ বিষে বিচিত্রতা হ্ৃপ্টী ভয়। বিষষ নির্বাচনে বলোলের লেখকরা একেবারে নিয় মধ্যবিত্তেব মধ্যে নেমে আসেন । শুধু বিভ্তে নিম্ন নয়, শ্রেণী ও পেশায যাঁরা ছিল সাধারণের পক্ষে শিল্প-বসান্বাদের মাধ্যম হিসেবে বাবহারের বাইবে, শ্রমিক-কষক যাদের সাহিত্যে স্থান অত্যন্ত সীমিত ও নিছক তত্বগত অর্থে ছিল, তারা এল সর্বহারা জনতার প্রতিনিধি হয়ে । কৌলীন্তেব মর্যাদা পেলো তার।। কল্পোলের আগে তাদের এমন
২৮
দরবার মর্ধাদ! শিল্প-সাহিত্যে ছিল না, সামাগ্ত ছিটে-ফোটা থাকলেও নগণ্য । এ বিষয়ে কল্লোলের অন্যতম লেখক অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের মস্তব্যই অকাটা,_“ রবীন্দ্রনাথ থেকে নরে এসেছিল “কলোলঃ। সরে এসেছিল অপজাত ও অবজ্ঞাত মনুম্তত্থের জনতায়। নিম্নগত মধ্যবিত্তের সংদারে | কয়লাকুঠিতে, খোলার বস্তিতে, ফুটপাতে । প্রতারিত ও পরিত্যক্তের এলাকায় ৩০ আমর! এর ম্বপক্ষের প্রকৃষ্ট উদাহরণ কল্লোল ও কল্লোল-প্রানিত পঞ্জিকীব লেখকদের অনেকের রচনাতেই পাই। যেমন, “নিম্নগত মধ্যবিত্তের সংসাবের অতি বাট বাস্তব অথচ “নিষ্ষল মাথা! কোটার" ছুঃসহ যন্ত্রণার চিত্র প্রেমেন্দ্র মিত্রের শুধু কেরাণী, গল্পটি কল্লোলীয় লেখকদের মানসিকতার এক সার্থক প্রতিনিধি স্থানীয় বচনা । “মার্চেন্ট অফিসের কেরাঁণী ছেলেটির বিয়ে হল। সে নীড় বাধল যাকে নিয়ে সে মেয়েটি শুধু একটি শ্ঠামবর্ণ সাধারণ নারীব গৃহস্থের মেয়ে। তারা বাংলার নগণ্য একটি কেরাণী আর কেবাণীর কিশোরী এক বধৃ।১ এমন বর্ণনার পর লেখক একসময় তাদের সন্তান হওয়ার খবর দেন, সেই সঙ্গে দেন সম্ভান জন্মের পব স্ত্রীর দুরারোগ্য স্থতিকাবোগের খবর । এই অবস্থায়__“তাভাতাডি ঘরে ফেরার জন্য গ্রাণ আকুল হয়ে উঠলেও ছেলেটি হেঁটে আসে- ট্রামের পয়সা বাচিয়ে ফুলেব মাল! কেনবার জন্ত নয়, অস্থখের খরচ যোগাতে । তাব সেই অভিযোগহীন, মুক দারিজ্রের শেষ চিন্রটি-'সেদিন জ্ঞান হারাবাব আগে মেয়েটি একটিবারের জন্যে এতরদিনকাণ মিথ্যা করুণ ছলনা ভেঙে কেঁদে ফেলে বলল, আমি মরতে চাইনি-_- ভগবানের কাছে বাতদিন কেঁদে জীবন ভিক্ষ] চেয়েছি, কিন্ত-__।
অর্থের বণ্টন বৈষম্য মধ্যবিত্ত জীবনকে কেমন অসহায করে, কয়লাকুঠির শ্রমিকদের পীবন্যাপনে কত কষ্ট ও সহিষুতা, বাস্তব জীবনে কি ছুঃসহ যন্ত্রণা, প্রতিদিনের সংলারে স্বামীর পাশে স্ত্রীর প্রথাবন্ধ সংস্কীরকে মেনে নিয়ে বাম করার বদলে প্রতিবাদী ক্-_-এ সবের পরিচয় আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের 'নাহিত্যে। লেখকদের মধ্যে কেউ সমন্তা এনেছেন বড় মমাজের প্রেক্ষিতে-__যেমন, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পন্মানদীর মাঝি", শৈলজানন্দের কয়ল! কুঠির গল্প তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামস্ততন্ত্রের ভাঙনের প্রতিরূপ আকা উপদ্যাপ “কালিন্দী”, গল্প “জললাঘর” ইত্যাদি। সমাজকে বাদ দিয়ে একান্তভাবে ব্যক্তিক সমস্টার প্রতিচিন্তরণেও কল্পোলের লেখকর1 বেশী তৎপর হতে সচেষ্ট হয়েছেন । এমন ব্যক্তিত্বের উদ্বোধন ও গ্রতিক্রিয়া সমাজকেই অস্বীকার করেছে, সমাজের বীধ। নিয়মের প্রতিষ্পর্ধী হয়েছে । যেমন, গ্রবোধ কুমার সান্তালের ববর্ণ* গল্পের শ্র্প চবিজ, মনীন্্রলাল বন্ধুর “শুভা” উপন্তাসের 'শুভা১। ব্বর্ণা গল্পে লেখকগ্রলিখেছেন £
“আমি বললুম, ভবে তৃমি এ বৈধব্যের সাজা নিয়েছ কেন ?
চে
স্বর্ণ হাসলো । বললে, আমার শরীরের উপর দিয়ে একজন পুরুষের অস্তিত্ব দিনরাত ঘোষণা করতে থাকবে--এ দাসীত্বই বা কেন? গল্পের অস্ত্র বর্ণ রাঁডাবৌকে বলেছে : “অভ্যন্ত নীতি-বুদ্ধির সংস্কার ত্যাগ করো, দেখবে কোথাও আর বিরোধ নেই ।”৩১
উপগ্ভাস-শিল্পের বিচারে নরেশচন্ত্র সেনগ্রপ্তের শশুভা” নিশ্চয়ই সার্থক উপন্যাস নয়, কিন্তু উপন্যাসের বিষয়ে শুভ চরিজ্রের মাধ্যমে যে কথ লেখক বলেছেন, তা এক ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠার কথা এবং তা প্রচলিত সমাজের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেই। ঘরের বধূ শুভ স্বামীর সংসার ত্যাগ করে বাইরে বেরিয়ে এসে এক সময়ে ফিরে যাওয়াব বিরুদ্ধে বলে, “বেশ্যাবৃত্তিতে এত ভয়ের কথা কি? অন্ত উপাষে যদি জীবিক! অর্জন না হয় তবে শরীর বেচিয়া খাইলে এমন কি অপরাধ। তবু তো স্বাধীন হইব ।”৩১ এই সমস্ত চিন্তার মূলে বিদেশী সাহিত্য পাঠের ষে প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট ত1 মানতেই হয়। কিন্তু কেবল বিদেশী সাহিত্য পাঠেই এমন সব প্রথাবদ্ধ ন্ায়-নীতি-বিধ্বংসী চিন্তা-ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা বলা ঠিক হবে না। এ সবের মূলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তাঁ সমাজের অন্তঃশীল ভাঙন, সংসার জীবনের উৎকেন্দ্রিক চিন্তা-চেতনা, একটি বিশৃঙ্ষল মানমিকতা--যা৷ ক্রমাগত হতাশা, দারিদ্র্য, অসহায়তা, নৈরাজ্য ও নৈরাশ্টয, অনিশ্চয়তারই জন্ম দেয়--কতকাংশে তা-ও ক্রমশ সক্রিয় থেকেছে। দেশীয় সাবিক অব্যবস্থার মধ্যে বিদেশী সাহিত্য-পঠনজীত ভাবধার! ইন্ধন দিয়ে এমন সব সম্পূর্ণ বিপরীত আদর্শের তথ সামগ্রিক আদর্শহীনতাকে পালন করেছে।
বিষয়ের সঙ্গে সমদ্বিত পরিবেশ গ্রহণেও কল্োলের লেখকরা কথাসাহিত্যের চলাচলকে ব্যাপক রূপ দিয়েছেন। এই ব্যাপকতা নগরজীবন-অংকনে ও নগর ভাবনাকে নিখুত অংকনের মাধ্যমে যেমন ধরা পড়ে, তেমনি পল্লীকেন্দ্রিক বাংলাদেশের গ্রাম্য ও গ্রামীণ জীবন-রূপায়নেও প্রতিষিত হয। প্রেমেন্দ্র মিত্র (পাক, উপনয়ন, মিছিল ), বুদ্ধদেব বন্থ ( সাড়া» যেদিন ফুটলো কমল ) অচিস্ত্যকুমার সেনগুপ্ত (কাক জ্োথ্স। ), গোকুল চন্দ্র নাগ (পথিক প্রবোধ কুমার সান্যাল (প্রিয়বাদ্ধবী, যাযাবর, নবীন যুবক ) প্রমুখ যেমন বিশাল বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ বাস্তব অভিজ্ঞত1 কম থাকায় বহু ক্ষেত্রে নগর জীবনকেই কথাসাহিত্যের অন্যতম পটভূমি করেছেন, সেই সঙ্গে কলকাতা-কেন্দ্রিক জীবন চিত্রণে একেবারে নাগরিক বৈশিষ্ট্যে চরিত্র ও বক্তব্যকে ওতপ্রোত করেছেন । তেমনি বিভূতি ভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় € পথের পাঁচালী, অপরাজিত, দৃষ্িগ্রদীপ, আরণ্যক ), তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় ( রাইকমল, ধাত্রীদেবতা ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ নানাভাবে পল্ীজীবন ও শহর-বিচ্ছিষ্ন বিচিত্র অরণ্য ইত্যাদির জীবনকে কথাসাহিত্যের
খত
পরিবেশে ব্যাপক ক্ধপ দিয়েছেন। বিভিন্ন পেশা-নেশার মানুষজন, নতুন নতুন পরিবেশ, শছবে জীবনের নানান উপসর্গ ও উপজাত দ্িককে উপন্যাস ও ছোটগল্পের বিষয়ে গ্রন্থণ করে কল্োলের সময়কালের লেখকর। বাংল! কথাসাছিত্যের অনেক মুখ খুলে দিয়েছেন-_ এট। কম গৌরবের কথ। নয়।
ষষ্ঠ লক্ষণ, সমাজ-নিরপেক্ ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব এবং জটিল অতি আধুনিক মনস্তত্ব-সম্মত ব্যক্তিমনের গভীর গহন লোকের রহস্ত উন্যোচন-প্রয়াস কল্পোল-সমসাময়িক লেখকদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছিল। আগেই বলেছি, প্রথম মহাযুদ্ধ শুরুর আগের “বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন” থেকে যে সমবেত চেতনার উৎসাহ আবেগ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে, আন্দোলন শেষ হয় সেই উৎসাহে ভাটা পড়ার মধ্য দিয়ে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও অব্যবহিত পরবর্তাঁ- কালের কয়েকটি আন্দোলনও এমনভাবে যুবকপ্রাণে হতাশা, অনিশ্চয়ত৷ এনে দেয়। আমাদের বিশ্বাস, এমন গণ-আন্দোলনের গভীর হতাশ। থেকেই সচেতন বুদ্ধিজীবী যুবকপ্রাণ অন্ভত সেই সময়ে ক্রমশ আত্মকেন্দ্রিক হতে থাকে । আত্মকেন্দ্রিকতার প্রতিষ্ঠা ঘটে ব্যক্তির ব্যকিত্বে, নিবিশেষ গণচেতনা তার প্রতিম্পর্ধ! । কল্লোলের লেখকদের চিন্তা চেতনায় ও কথাসাহিত্যে যে ব্যক্তির সম্বর্ধনা, যে ব্যক্তিত্বের শিল্পবেদী রচনাব প্রয়াস, তার মূল এই যুগের শ্বভাবেই নিহিত ছিল। যেহেতু এক ধবণেব ব্যক্তিকেন্দ্রিকত৷ লালিত হয় যুবক প্রাণের স্বভাবে, তাই আত্মলীন হতাশা॥ নিঃসঙ্গতা থেকেই আত্মরোমস্থনের মত মনের গভীরে ডুব দেবার চেষ্টা দেখা যায় সমকালের কথাসাহিত্যেব চরিত্্গ্তলির মধ্যে--বিশেষ করে নায়ক নাধিকার মনে । রবীন্দ্রনাথ একেই বলেছেন “আতের কথ! বের করে দেখানে। |৮৩৩ বংকিমচন্দ্রের রোহিনী, রজনী ইত্যাদি চরিত্রে যার স্চনা, রবীন্দ্রনাথের বিনোদদিনীর চবিজ্রে যার দীপ্ত-আধুনিকতায় বোধন ও বিস্তার, কল্লোলের লেখকর। তাকেই আবে জটিলতায় বাধেন। তাই সঙ্গত কারণেই টান! লম্বা কাহিনীর বদলে এক একটি ঘটনায় উচ্চকিত পরিবেশে কথাসাহিত্যের নায়ক-নায়িকার শ্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব নিয়েই উঠে এসেছে ম্বভাবী পাঠকদের সামনে । প্লটের ক্ষেত্রে গল্প বলার বল্পা টেনে ধরার গুট কারণের মধ্যে কিশোর তরুণ সাহিত্যিকদের নিজেকে নিয়ে নিঃসঙ্গ থাকার প্রয়াস অস্বীকার করা যায় ন|। কল্লোলের লেখকর! ছিলেন প্রায়শই শহরকেন্দ্রি । যদিও বিষয়ে বৈচিজ্র্য এনেছেন তীরা, কিস্ত যতটা ন৷ প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার হ্ৃত্রেৎ তার থেকেও বেশী বিদেশী সাহিত্য পঠন ও দেশীয় নিজ পরিবেশের বিচিত্রতায় তা স্পষ্ট হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চরিত্রের মনের গভীরে ডুব দেওয়ার ব্যাপারটি কল্লোলের লেখকদের নিজ সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে বিচরণ করে চরিয্র অংকন প্রয়াস কিনা মে সংশয় থেকেই যায় । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে রচিত ধূর্জটি প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের “রিয়ালিস্ট', 'অন্তঃশীলা” আবর্ত' উপন্াসগুলিতে ঘে চেতনা
৩১
প্রবাহের (97680) 01 0010901057685) পরিচয়, বুদ্ধদেব বনু, অচিস্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রমুখের নায়কদের কাব্ক স্থ্যমামণ্ডিত চিন্তা-ভাব্নার মধ্যে যে বাক্তির ব্যক্তিত্ব ও অন্ধকারাচ্ছন্ন মানসভূমির উন্মোচন--তা৷ যেমন যুগের উপহার, তেমনি বাংল! কথা- সাহিত্য ধারায় নতুন একটি প্রবণত৷ সষ্টির পরিচায়কও বটে |
শেষ লক্ষণটি হুল, কল্লোলের লেখকদের রচনারীতি ও গদ্য এবং ভাষা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে বিরোধী মনোভঙ্গির স্বাক্ষর পাখার সার্থক প্রয়াস । নিঃসন্দেহে কোলের লেখকরা বংকিমচন্ত্র, ববীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র অনুস্থত কথামাহিত্য শাখার রচনাভঙ্গি, গঞ্ভরীতি ও ভাষাদর্শে স্বতন্ত্র আনতে প্রযাসী হয়েছিলেন । তাঁর! বুঝেছিলেন, পুরনো পাত্রে নতুন মদ পরিবেশন ও প।ন বাস্তবিকই খ্মাশান। তাই কল্লোল-সমসাময়িক- কালের লেখকদের স্বকাল-বিরোধিতা হয়ে উঠেছিল অবধারিত, এবং তা-ও ভঙ্গিতে স্পষ্ট বিরোধিতার মৃত” “কল্লোল”-কে নিয়ে যে প্রবল প্রণোচ্ছ্াস এসেছিল তা শুধু তাবের দেউলে নয়, তাষারও নাঢ মন্দিরে । অর্থাৎ “কল্লোলের” বিরুদ্ধতা শুধু বিষযের ক্ষেত্রেই ছিল না, ছিল বর্ণনার ক্ষেত্রে। ভঙ্গ ও আর্গিকেণ চেহারায়। বীঠি ও পদ্ধতির প্রকৃতিতে । ভাষাকে গতি ও ভাবকে ছাতি দেবাব জন্তে ছিল শব্ধ স্থজনের পবীক্ষা- নিরীক্ষা। রচনাশৈলীর বিচিত্রতা । এমন কি, বানানের সংস্করণ ।,৩৪ এই সময়ের লেখকর! নায়িকাব বর্ণনায় গতাঙুগতিকতা৷ বর্জন করেছেন। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের “ইন্দ্রাণী” উপন্তাসে তার প্রমাণ আছে। ন্রনারীর দেহ-সম্পর্ক বর্ণনায়, যৌনতাকে বাস্তবতা দেওয়ার বাসনায এর! নতুন শব্ধ ও গগ্যভঙ্গি অবলম্বন কবেছেন। প্রবোধ কৃমার সান্যাল, বুদ্ধদেব বন্থু, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, প্রেমেন্্র মিত্র প্রমুখের একাধিক ডপন্তাস ও গল্প এই বক্তবের প্রমাণ বহন করে । রবীন্দ্রনাথের কথাসাহিত্য--উপন্যাস ও ছোটগল্পে কাব্যময়তার প্রয়োগ ছিল নানাভাবে, কল্লোলের লেখকদের ভপন্তাস ও গলে যে কাব্যময়তা, তা বিদেশী গদ্ভরীতির যেমন অন্ুব্তন, তেমনি রোমান্টিক বিলাসের গুজ্জল্যে নয়, প্রতিষ্পধী নব কাব্যন্মোতের স্বাদ দানের জন্যহ কল্লোলের লেখকর!] রীতিতে কাবা- ময়তাকে গ্রহণ করেছেন । এমন কাব্যময়ত! কিন্তু মাণিক বন্দ্যোপাধ্যাযেব রচনায ছিল না। পাশাপাশি মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈজ্ঞানিক নিরালক্ত রীতি-সিদ্ধির পরাকাষ্ঠ। দেখিয়ে কল্লোলের নব-আঙ্গিক প্রচারের প্রবণতায় একাধিক 'ক্রস্কারেণ্ট স্টি করেছেন। অর্থাৎ কল্লোল-অনুবর্তী লেখকদের মধ্যেই যেমন ভাবে ছিল স্ববিরোধিতা, তেমনি তঙ্গিতেও তা গাঢপ্রোথিত। এই লক্ষণও প্রথম মহাযুদ্ব-পরবর্তী সময়ের ফল । যেভাবে হোক প্রচলিত ব্যবস্থা থেকে মুক্তি, তার বিরোধিত1--এই রকম বেপরোয়। মনোভাব ছিল কল্লোল গোষ্ঠীর লেখকর্ধের | যেখানে চারপাশে অনড পাথর, তাকে সবাবার জন্তে এমন
৬
মনোভঙ্গিই যে অনেক সময় অত্যন্ত জরুরী ও কার্করী হয়ে ওঠে, কল্লোলের লেখকরা তার প্রমাণ রেখেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে রচিত তীর্দের কথালাহিত্যে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে 'কল্লোল'-এর আবির্ভাবকাল থেকে পরবর্তী পনেরো- ষোলো বছর, অর্থাৎ ১৯২৩ লাল থেকে ১৯৩৯ এর সময়-সীমায় কঞ্সোল গোষ্ঠীর লেখকরা কখনো! বিক্ষিগ্তভাবে, কখনে! সবল সচেতনায়, আবার কখনোবা! অচেতন ম্বতংদ্ফুতায় যে নতৃন কথাসাহিত্যধার! প্রবর্তন করেছেন, তার বিস্তারিত পুত্ধান্ুপুত্খ আলোচন আমাদের আদে উদ্দেশ্টা নয়, পরবর্তী আলোচনায় প্রসঙ্গত এসেছে মাত্র । আমার্দের লক্ষ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধব-সমকালীন বাংল! কথাসাহিত্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু ( ১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯ ) হুওয়ার প্রথম দিকে প্রথম ছু'-বছব ( ১৯৩৯-১৯৪১) এবং যুদ্ধের মধ্যাহ্নকাল ( ১৯৭১, নভেম্বর ) থেকে যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময়পীমা-_-এই ছুইভাগে যথাক্রমে পরোক্ষভাবে ও প্রত্যক্ষত বাংল! কথাসাহিত্য-ধারায় যুদ্ধের আঘাত-অভিঘাতে যে অত্যভভুত পরিব্ন ঘটে, যে সমাজ জীবন ও নৈতিক আদর্শের বিপর্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্যে সেই বিপর্যস্ত রূপের অগ্নিপরীক্ষ। শুরু হয়ে যায়, তার আলোচনায় কল্লোল গোষ্ঠীর নতুন ধাবা প্রবর্তনার স্বরূপ ব্যখ্যার প্রয়োজন নিঃসন্দেছে।
উল্লেখপণ্জী ও টাকা
১০56] আঃ16108 10 067085]) 0009৮ 17855 290815890. 80 8015৮08 £7070 90088, 26108120675, 0৫ 2800098 (7000 609 11000189 ০0৫ ৪০0০১] 960177৮ ( দা 9৪6৪০ 11010061009 1 85708517 15169886086 62155180080 550 00-57, 0 2207291 )
২2006 1055) 800 16 790219 (1954) 7৪101) 702 07) [ড, “09 ০৪] 2100. 89511151080
খ্ক 1১7:818০9 'আলালের ঘরের ছুলাল' (১৮৫৫) 105 ৭0 00800 78০০০,
৪ 8000670 0210 596100 (1957) 82678698500 025] 010
€ [৮৪ 025
৬ উপন্টামে জীবন ও শিল্প (১৩৮৪ ) ডঃ উজ্জবলকুমার মজুমদার প্ ও
৭ এ প্. ৩-6
৮ স্বাধীনতা! সংগ্রামে বাংলা! নরহরি কবিরাজ চতুর্থ অধ্যায় “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ভারতের জাতীয় আলোলন প্ ২১৫
» এ দ্বাদশ অধ্যা 'সন্ত্রাসহাদী আন্দোলন প.্ ১৯৩
১* “কালাম্তর' গ্রন্থ ( ১৩৪৪ ) “সতোর আহ্বান প্রবন্ধ (কাতিক, ১৩২৮) গ্ ১৯৮
১১ এ "স্বরাজ দাধন' প্রবন্ধ ( আশ্বিন ১৩৩২) প্ ২৮৫
৩৩
১২ 71907970095 (00206, 1919 ) 7৯, 791075 105৮৮ 0 277.7, ০285-58 [00808৩. 042?
১৩101 0427
১৪17)6 0562 00 [715 07516 (1954,42015]) 15০98 95৯69 2]5 70911086102 0 5.
১৫100 [119 80167901008 0 10
১৬ “আজকের দিনে অনেকেই হয়ত জানেন ন, সেই সংহতি-ই বাংলাদেশে শ্রমজীবীদের অন্যতম মুখপত্র, প্রথমতম মাসিক পত্রিক1। এই ল্ষীণকায় সবল্লামু কাগজটিই গণ-জরযাত্রার় প্রথম মশালদার ।" কল্লোল যুগ ( আধা, ১৩৫৮ ) অভিস্তযকুমার সেনগুপ্ত চতুর্থ পরিচ্ছেদ প্ ৩১
১৭ এ প্ ৩০
১৮ কালের পুতুল ( জানুযারী, ১৯৫৭) প্রবন্ধ 2 'যতীন্ত্রনাথ সেনগুপ্ত" বৃদ্ধদেৰ বহু পৃ ১৩২
১৯ এ প্ ১৩২
২* এ প্রবন্ধ 2 'কলোল ও দীনেশরগীন দাঁশ' পৃ ২২
২১ গ্রবন ২ “বাল! ছাগল (১৯২৬--৫০), গৌরকিশোর ঘোষ দেশ, সাহিত্য সংখা, ১৩৬৪ প্ ১৯৭
২২ অচিন্থকমার সেনগুপ্তকে লিখিত পত্র কর্পোল যুগ” প্ ২২
২৩ সাহ্তিত্তাচর্চ। (১৩৬১ নৈশাথ ) প্রবন্ধ £ “রবীগ্রনাথ ও উত্তর াধক' বুদ্ধদেব বন পৃ ১৪৭
২৪ 'সবুষ্ষের অভিযাঁন' কবিঠাঁ বলাকা কাব্যগন্থ রবীত্রানাথ ঠাকুর পৃ ১
২৫ লেখকের কথা (১৯৫৭) প্রবন্ধ 2 'সাহিতা করার আগে' পৃঙ*
২৬ “জীবনকে দেখবার পাঠ নিতে যদি হ্ামহ্বন গোকির পাঠশালাধ গিষে থাকি তাতে গ্োষ কি” প্রেমেন্ত্র মিত্র “কালি কলম” পত্রিক1, ১৩৩৩ ( লেখকের প্রেরিত চিঠির অংশ )
২৭ কল্লোল সুগ অচিন্তাবমার সেনগুপ্প পু«২
২৮ লেখকের কথ! ( ১৯৫৭) প্রবন্। " “সাহিত্য করার আগে" মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায পৃ ৩১
২» কল্পোলযুগ অঠিন্তাকুমার সেনগুপ্ত অষ্টম পরিচ্ছেদ পূ৮২
৩০ এ পু ৮৩
৩১ “হণ' (গল ) প্রবোধ কুমার সাগ্গাল পৃ ৭২
৩২ শুভ ( উপন্যাম ) নরেশ চন্দ্র সেনগুপ্ত প. ২৭
৩৩ “চোখের বালি'র ভূমিকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃও
৩৪ কলোলবুগ অচিস্তাবমার সেনগুপ্ত অষ্টম পরিচ্ছেদ পৃ ৮২
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকাঁলীন বাংল] কথাসাহিত্য ৩
হ্হিতীন্ত্র অ্ধ্যান্জ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালীন পশ্চাৎপট
ছ্িতীয বিশ্বযুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয ১ল1 সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯। আমর! আগের অধ্ায়ে প্রথম বিশ্বদুদ্ধের শুরু থেকে তাব গতি-প্রক্কতি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত ওই ধাবাটির একটি অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা বলেছি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘটনা তাবই আর একটি জটিলতম ক্রম-স্ত্র । ব্্তমান অধ্যাষের প্রথমেই সংক্ষিপ্তভাবে দ্বিতীয় বিখঘুদ্ধেব আশস্তের রূপ এবং বিস্তারের বিশ্বজনীন ্বভাব-বৈশিষ্ট্য আলোচনায় রাখছি। কারণ, আমর! দেখবো, এই যুদ্ধে এতিহানিক-রাজনৈতিক বিশ্বজনীন গতি-প্রকতির মধ্যেই ভারতের যুদ্ধ-সমকালীন অবস্থাব একটি 'ক্লাইম্যাকৃস্ঃ বপ তৈবী হয়েছে এবং তা পরিণত বপেই ইতিহাসেব দলিল হযেছে। মূল আলোচ্য নির্দিষ্ট ছয়টি বছর কেবল যুদ্ধ-ইতিহামের এঁতিহান্সিক-বাজনৈতিক পৃষ্ঠাগুলিকেই সমৃদ্ধ করেনি, ভারতের সামাজিক-অর্থনৈতিক, সেই সঙ্গে অৰধারিতভাবে সাংস্কৃতিক- সাহিত্যিক জগতকেও এক ভয়াবহ অগ্নিপরীক্ষাব মধ্যে টেনে এনেছে, যার ফল পরবর্তী দশকগুলিতেও ভারতের জনগণ সর্বদিক থেকে নীলকণের মত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বৈজ্ঞানিক যুদ্ধ। কিন্তু তুলনায় তা অনেক বেশী ভয়াবহ । এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আকম্মিক আরম্ভ হয়নি, এর পিছনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ- পরবতাঁ একুশ বছরের নানান বিশ্বপ্রেক্ষাপটে বিধৃত রাজনৈতিক ঘটনা, সন্ধি, মীমাংস! ইত্যাদির তথ্য ও তত্ব নিহিত আছে। বিশ্বরাজনীতি? প্রধান কেন্দ্রবিনুটি ছিল প্রধানত এবং একমান্ত্র ধনতান্ত্রিক সমীজ ব্যবস্থায় লালিত সাম্রাজ্যবাদী রাষ্গোর্ঠীগুলির সম্পর্কের মধ্যে। এই সম্পর্ক ক্রমশ হ্বন্থ-ন্বার্থে সংঘর্ষে নামে । প্রথমে তৈরী হয় ছুই বিবদমান সাআজ্াবাদী বাষ্ট্রগো্ঠী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের উদ্ভব এই সংঘর্ষ থেকেই | কিন্তু ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে পরিবেশ তা৷ সম্পূর্ণ শ্বতন্ত্র। এই স্বাতস্ত্্ের কারণ সমাজতান্ত্রিক সাম্যবাদী রাষ্ট্র সোভিয়েট ইউনিয়নের সবিশাল উত্তব।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন বিব্দমান ছুই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী এবং তৃতীয় মমাজতান্ত্রিক সোভিয়েট ইউনিয়ন-_এই তিন প্রবল শক্তি বিশ্বের মানুষের সামনে
বিরাজ করলেও এদের ভিত্তিতে সমস্ত রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের একটি বড অংশ যুদ্ধ-লিপ্ত হতে উদ্মোগী হয়ে উঠেছে। প্রথম মহাযুদ্ধের শিক্ষা এবং সোভিয়েট ইউনিয়নের নতুন সমাজতন্ত্রের ভাষ্যই একত্র সমস্বিত তখন। এর ফলে লমাজতাস্ত্রিক রাষ্ট্রের শ্রমিক সচেতনত। সার বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষকে কিছু এক্যবদ্ধ হবার শিক্ষ। দিতে শুরু করেছে । এবং, যেমন সর্বশ্রেণীর শ্রমিকদের শ্রমের দানেই দৈনন্দিন জীবনের পক্ষে একটি গঠমান ও সভ্য সমাজেব পরিপুষ্টি ঘটে, তেমনি শ্রমিকদেব শ্রমেই যুদ্ধের রসদের ভাগ্াব পূর্ণ কর! হয়। তাই এর যুদ্ধের রসদের ভাগ্ারই নিযস্ত্রণ কৰে যুদ্ধকে ।
স্থৃতরাং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময প্রথম মহাযুদ্ধে কিছুটা শিক্ষিত মান্য যেমন সচেতন হয, তেমনি সচেতন হয় শ্রমিক সংগঠনগুলিও। দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধের যে পরিবেশ, ত৷ শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে ওতপ্রোত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেব সময় (১) সাম্রাজ্যবাদী বাষ্ট্রগোর্ঠীগুলির মধ্যে আত্মছন্দ প্রবলতম, (২) সমাজতান্ত্রিক বাষ্ট্র দোভিয়েট ইউনিয়নের প্রভাব সারা বিশ্বের রাজনীতিতে নানাভাবে অভিনন্দিত, অথচ এ বিষয়ে সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী শংকিতও, এবং (৩) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিশেষভাবে আহত বিশ্বঅর্থনীতিব সঙ্গে যুক্ত শ্রমজীবী মান্ুুষগুলির অনেকাংশে এঁক্যবদ্ধ হবার গোপন বাসন তীত্র।
আমর! লক্ষ্য করেছি, ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় ও পরেও বিশ্ব-রাজনীতি সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগোষ্ঠীর কেন্দ্রে আর নেই। না থাকলেও তাদের মধ্যেকার বিবাদ সমানভাবে বর্তমান এবং তা তাদের প্রত্যেককেই ক্রমশ হীনবল ও হতবল করে তুলেছে। এরই সঙ্গে প্রবল আঘাত করার মত ঘটনা! ঘটেছে সমাজতান্ত্রিক বাষ্ট্রে উদ্ভবে। একদিকে ধনতন্ত্রের বিশাল প্রাসাদে ঘুণ ধরতে শুরু করেছে-_-যা দুরারোগ্য, অন্যদিকে এমন ধনতন্ত্রকে যথে।চিত আঘাত হানার ক্ষমতা নিয়ে দেখা দিয়েছে সোভিয়েট ইউনিয়নের শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্টব্যবস্থা। সমগ্র বিশ্বের ভূমিতে 'যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রনাফকদের মূঢতা, অবিবেকী চিন্তা-চেতনা, স্বার্থপরতা ও অহংসর্বস্বতার তিত্তিকে কাপিয়ে দেবার মত দেখা দিয়েছে শ্রমজীবী মান্থষের এঁক্যবন্ধ আত্মমচেতনতা ৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিবেশ অত্যন্ত জটিল, কিন্তু বিশ্ব-রাজনীতিকে সামগ্রিকভাবে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সহায়ক । ১৯১৯ সালের ২৮শে জুলাই তারিখের ভার্সাই চুক্তি এবং পরবতাঁ একাধিক চুক্তি ও মীমাংসার সুত্রগুলি যে শ্বতঃক্কুর্ত নয়, একধরণের হুকুমনাম! ( ৫10080100 ) ছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত একটি বিশাল দায়িত্জ্ঞানহীন ঘটনার মধ্যে বিশ্বকে নিয়ে আসায় তা
৬৯০
প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মূলত ক্ষমতালোভী, অহমিকাসর্বস্ব অবিবেকী বিশ্ব- রাষ্্রনায়কদের মুখোশ উন্মোচিত কবে আমল রূপটি যে স্পষ্ট করেছে, তা-ও প্রমীণ কবে। ক্রমাগত একাধিক চুক্তি যে ছলনা, গ্রহন, স্বার্থান্বেষী সাআরাজাবাদী গোঠীগুলির আরও বড ক্ষমতা ছন্দে লিপ্ত হবার মত সুনির্দিষ্ট কৌশলমাত্র--দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবতাবণায় সেদিকটি৪ প্রমাণিত হযে যায।
যদ্ধ আরম্ভ হওয়ার প্রায় ছু'বছর পরে, মৃত্যুর কিছু আগে রবীন্দ্রনাথ স্পষ্টভাষায় ইউরোপীন যদ্ধবাজ াষ্ট্রনায়কদেব চরিত্রকে ইঙ্গিত করে বলে ওঠেন, সমস্ত মুরোপে বর্বরতা কি রকম নখাদন্ত বিকাশ কবে বিভীষিকা বিস্তার করতে উগ্ত। এই মানব পীড়নেব মহামারী পাশ্চাতা সভাতাব মজ্জাব ভিতব থেকে জাগ্রত হযে উঠে আজ মানবান্সার অপমানে দিগন্ত থেকে দিগন্ত পর্যন্ত বাতান কলুষিত কবে দিষেছে ।৯ তখনকার পপাশ্চাতা সভ্যতার মঞ্জার ভিতব" ছিল কঠিন মদগবাঁ ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার অসুস্থ, অন্থাভাবিক উপাদান । এইভাবে একদিকে সামাজ্যবাদী ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার স্তরে বিবাদ ও পরস্পরের মধ্যে অন্ত্রসংঘাত, আর একদ্রিকে নব সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার উদ্ভবে সংশম, সন্দেহ এবং ভীতি--এই দোটানাষ আবন্ত হয দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ |
হিটলারের নেতৃত্বাধীন ফ্যাসীবাদী জার্মানী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু কবে ১৯৩৯ সালের ১ল1 সেপ্টেম্বর । বিখাত এঁতিহাপসিকের মতে,যদিও ১৯৩৯ সালের ১ল! সেপ্টেম্বর হইতে জার্মানী হাতে-কলমে যুদ্ধ আবস্ত কিল, প্ররুতপক্ষে উহার আয়োজন চলিতেছিল অনেকদিন আগে হইতেই । ইউবৌপে জার্মান “মিলিটাবিজম” বা সামরিকবাদ দীঘকাল ধঁিয। প্রভাব খিস্তার কবিষ। আসিতেছিল।”২ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বস্তত দীর্ঘ- আচরিত জার্মান “সামবিকবাদে*ব তথ! জার্মান ফ্যাসিবাদের উৎকট আত্মপ্রকাশ । ১৯৩৯ সালেব ১লা সেপ্টেম্বর ভোরে হিটলারেন সেনাবাহিনী শ্বাধীন পোলাণ্ডের সীমা অতিক্রম করে, পোলাগ্ড আক্রমণ করে অকন্মাৎ। ৩রা সেপ্টেম্বর ব্রিটেন জার্মানীর বিরুদ্ধে পাণ্টা ব্বস্থ৷। হিসেবে যুদ্ধ শুরু করে ৷ ছিউবোৌপে নরমেধ যজ্ঞ আবস্ত হইল ।'৩
জার্মীন আক্রমণ করাব কথা ব্রিটেনের ছিল না। “ভার্পাই ব্যবস্থ1 ও উদীয়মান ফ্যাসিষ্ট ব্যবস্থার মধ্যে বিরোধ চরমে উঠল। প্রথম ছিকে মৌল বিরোধের দিকে নজর রেখে, সোভিয়েত-বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গী থেকে, ধনতান্ত্রিক দেশগুলি ( ব্রিটেন, ফ্রান্স, আমেরিকা) জামানীকে তৌষণ করার নীতি (মিউনিক চুক্তি যার সবচেয়ে বভ প্রমাণ ) অনুসরণ করে।১৪ দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধের আলোচনায, টাঁকা-ভায্ে একথাই প্রমাণ হয়, ১৯৩৮ লালের ২৯শে সেপ্টেপ্বর যে মিউনিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয বুটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিঃ নেভিল চেম্বারলেন ও জার্মানীর হের হিটলারের সঙ্গে--তার মধ্যে বিরাট ফাক ও
৩৭
ফাকি ছিল। তা ছিল প্রহসনের মত। ধার! মিউনিক চৃক্তির মধ্যে গভীর শাস্তির ললিত বাণী শুনে উৎস্থক ও উৎসাহী হয়ে উঠেছিলেন, “সেই উৎস্থক জনতা জানিত না যে, মেই স্বাক্ষরিত কাগজের টুকবা শীদ্রই ঝটিকাঘাতে দিগন্তে উডিযা যাইবে। ইউরোপের বিগত ১** বছরের ইতিহাসে মিউনিক চুক্তিব মত এন বড কলংকিত চুক্তি আর কখনও স্বাক্ষরিত হয় নাই। কারণ, এই চূক্তিব দ্বারা চেকোঙ্সোতাকিয়ার মত একটা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাষ্রকেই শুধু হিটলারী জার্মানীর নিকট বলি দেওয়। হইল না, চেক গভর্ণমেণ্ট ও জনগণের প্রতিও বিশ্বাসঘাতকতা করা হইল ।১*
মিউনিক চুক্তিব বিশ্বাস ভাঙে প্রথম জার্মানী, আব তাকে বাধা দিতে এগিষে আসে প্রথম বৃটেন, ক|বণ জার্ধানী ও বৃটেন-_ছুই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মধ্যেকাব সংঘর্ষ তখন তুঙ্গে উপনীত । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু তাই হযেছে অবারিত, স্বতঃক্কৃত। একদল আক্রমণকারী, আর একদল আক্রানস্ত--এই ছুই গোঠী থেকে রচিত হল ছুই শিবির । একদিকে ফ্যাসিবাদেব নোংর। থাবা, আর একদিকে সবল উত্তোলিত সমবেত হাতে মুক্তি-যোদ্ধার পতাকা । লক্ষণীয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদ ঘত বেশী আগ্রাসী শক্তি নিয়ে এগিয়েছে, বিভিন্ন আক্রান্ত দেশেব মুক্তিপিপানা ততই তীব্র হয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শিক্ষা! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শোষিত রাষ্ট্র ও জনগণকে কিছুটা সচেতনতা ও শক্তি দিয়েছে নিঃসন্দেহে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ স্তর থেকে পববতাঁ ছ'বৎসরের প্রবাহও অত্যন্ত জটিল। এই জটিলতার অন্যতম কাবণ সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েট ইউনিয়নের অস্তিত্ব ও গুরুত্ব। ২২শে জুন, ১৯৪১ সালে হের হিটলার কর্তৃক মোভিয়েট রাশিয়াকে আক্রমণের ঘটনায় সেই যুদ্ধ-প্রবাহের জটিলতা জনগণকে যেমন বিস্মিত করে, তেমনি বিশ্বধুর্ধের শোধিত জনগণের মুক্তিযুদ্ধ আখ্যা-উপযোগী পরিবেশও তৈরী হয়ে যাঁয়। দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ২৩শে আগষ্ট ১৯৩৯ সালে দশ বছরের জন্য বাশিয়। হিটলাবের সঙ্গে এক অনাক্রমণ চুক্তি করে বসে অকম্মাৎ। এই চুক্তির রহস্য বিহ্বল, স্তম্ভিত জনগণ বুঝতে পারে মি। কাবণ ফ্যামিবাদ যেখানে কমিউনিজম-এর জন্ম থেকেই চরমতম শক্র সেখানে এমন চুক্তি বাস্তবিকই গভীর-জটিল রহস্যকেই তুলে ধরে । এই অনাক্রমণ চুক্তি বজায় থাকে ২২শে জুন, ১৯৪১-এর পূর্ব পর্বস্ত ।
জার্মানীর রাশিয়া আক্রমণ যুদ্ধের শ্রোতকে লক্ষণীযভাবে প্রভাবিত করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ে ওঠে ফ্যাসিবিরোধী ন্ায়যুদ্ধ। একদিকে বুটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হল, অন্ত্দিকে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র জার্মানী ইতালী ও তার নঙ্গীরা। রাশিয়ার সঙ্গে বুটেন ইত্যাদি সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর একজোট হওয়ার কারণ ফ্যাপিবাদের দুর্বার
২৩১৮
দুর্মদ আক্রমণের কাছে নিজেদের আত্মরক্ষার প্রয়াস। এবং এই আত্মরক্ষার প্রয়াসে তার! তাদের ছিমুখী উদ্দেশ্টকে গভীরে-গোপনে দিদ্ধ করতে প্রয়াসী হয়। একদিকে জার্মানীকে সম্পূর্ণ দমন, অন্যদিকে, যদিও সোভিয়েট রাশিয়া তাদের মিব্রগোষ্ঠী, তবু তার নবোডুত সমাজতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থার প্রচার-প্রসারকে দমিত করে তাকে দুর্বল করা। এই সুত্রেই বুটেন-ফ্রান্দ-আমেরিকা গোষ্ঠীব মত সাত্রাজাবাদীর পক্ষে তৃতীয় উদ্দেস্ঠ ছিসেবে ধনতন্ত্রকে মজবুত করার বাসনা উপেক্ষা! করা যায় না। সমস্ত পৃথিবীকে ধনতাস্ট্রিক সমাজ-বাবস্থার ধাতাকলে খর্ব করে ওউ্পনিবেশিক আধিপত্য অটুট রাখার দিকেই এই গোষ্ঠীর ছিল অন্তিম লক্ষ্য গু তৎপরতা |
ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধির মৌল প্রবণতার ব্যাখ্যায় ও স্ত্র-নির্দেশে ব্যাখ্যাকার বলেছেন,_ £দ্বিতীয় মহামুদ্ধ যাপা পরিচালনা কবছিল, তারা দুটি প্রবণতার দ্বার! প্রভাবিত ছিল। একটি প্রবণতার পৃষ্ঠপোষক ছিল উপরোক্ত ব্রিটেন, ফ্রান্স ও আমেরিকার শাসকচক্র। অপর প্রবণতাটি পরিপুষ্ট হচ্ছিল সোভিযেট রাশিয়াব নেতৃত্বে, যার লক্ষ্য ছিল এই যুদ্ধকে মুক্তিযুদ্ধে পবিণা'ত ক1)”১ যেছেতু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সমকালীন জনগণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই কিছুটা যুদ্ধ-শিক্ষিত হয়, যুদ্ধ সম্পর্কে সচেতন থাকে, এবং যেহেতু সোভিয়েট সামস্ততন্ত্রের আদর্শ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সামনে ছিল অস্তর-গত তাৎপর্ষে প্রধানতম প্রতিপক্ষ, তাই শ্রমজীবী মাম্্ষও যুদ্ধেব গতি-প্রকৃতির সঙ্গে সম-সচেতনা ও সতর্কতা দিষে যুদ্ধের ধারাকে যথার্থভাবে চিহ্নিত করতে থাকে | অবশ্যই এই চিহ্িতকরণ নানান জটিল 'ক্রেপকারেণ্ট” এব মধা দিয়েই সম্ভব হয়। তবু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যে এক অর্থে ফ্যাসিবাদেপ বিরুদ্ধে সর্বস্তরেব মানুষেব মুক্তিযুদ্ধ, সেই দিকেই পৃথিবীব রাজনীতিতে যুদ্ধ ঘটনা ও শোত তাত্পর্য পেতে থাকে ।
১৯৪১ সালের মধ্যভাগে সোভিয়েট রাশিয়। প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসারিত মুখ পথ বদল করে । লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্তনিহিত ম্বভাব-বৈশিষ্ট্যের। এই যুদ্ধব_সারা পৃথিবীতে নানান জটিল ম্রোতের মধোও ফ্যাসিবাদেব বিরুদ্ধে যুদ্ধ,_মুক্তিযুদ্ধ' এই অভিধায় উজ্জল হয়ে ওঠে । ১৯৪৫ সালের শেষতম যুদ্ধ-বিরতি চুক্তির দিন ২রা সেপ্টেম্বব পর্যস্ত যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সীমা--তার মধ্যে একাধিক ঘটনা যেমন বিশ্ব-রাজনীতিকে নদির বুকে শক্ত হাতে ধরা হালের আন্দোলনের মত নানামুখী করেছে, তেমমি আবার নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বিশ্বরাষ্ট্রগোর্ঠীর ছুই মহান শক্তিকে-_একদিকে সাম্রাজ্যবাদী, উপনিবেশবাদে বিশ্বাসী ধনতান্ত্রিক শক্তি, আর একদিকে সমাজতান্ত্রিক বাষ্ট্রের সাম্যবাদ শক্তি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এঁতিহাসিক-রাজনৈতিক কাহিনী, ঘটন! ও প্রবাহ-পরিণতির সঙ্গে যুদ্ধে
লিপ্ত গ্রতিটি রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রশীসিত উপনিবেশগুলিও ঘনিষ্ঠ সম্পক্ত। ভারত ছিল সে সময়ে বুটিশদের পক্ষে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপনিবেশ । “গ্রেট ব্রিটেনের চোখ দিয়ে দেখলে এই সময়ে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থানের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম । ব্রিটেন ও আমেরিকা তখন বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধে পরাজয় বহুম করতে বাধ্য হচ্ছে।***যুদ্ধের এই সংকটময় মুহূর্তে ভারতের লোকবল, অর্থ নৈতিক সম্পদ, ভারতের সামরিক সাহায্য ইঙ্গ- ষাকিন যুদ্ধজয়ের পক্ষে একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে | স্থৃতরাং এমন বিশাল একটি যুদ্ধেব ভয়াবহ ভার, যন্ত্রণা. শৌষণ-অভিশাপ নিধিচারে বহন ও ভোগ করতে হয়েছে ভারতকেই। তাই ভারতের বুকে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ রূপ এবং রাজনৈতিক- সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থায় তাব প্রভাব- প্রতিক্রিয়।৷ লক্ষ্য কবাব মত।
ছুই
দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ-সমকালে বিশ্ববাজনীতিব পটভূমিকায় ভারতেব এঁতিহাসিক-রাজ- নৈতিক অবস্থ। ক্রমশ অত্যন্ত জটিল হযে ওঠে । এবং এটাই স্বাভাবিক, কারণ, প্রথমত, ভারত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রধান অংশগ্রহণকাবী রাষ্ট্র বুটেনের একটি ওঁপনিবেশিক রাষ্ট্র দ্বিতীয়ত, তার অভ্যন্তবে প্রথম মহাযুদ্ধের পর থেকেই জাতীয় আন্দোলনেব জটিলতা গুরুতব রূপ পেতে থাকে এবং তা-ই দ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ব-সমকালে তীব্রতম হয়ে ওঠে, তৃতীয়ত, যে সমাজ-তান্ত্রিক রাষ্ট্রের সুচনা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পবেই সোভিয়েট রাশিয়ায় এবং সেই স্যত্রে ভাবতে ১৯২৯ সালে গঠিত হয় কমিউনিষ্ট পার্টি, সেই পার্টি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালে এবি অন্যতম অস্তিত্ব হয়ে দীভায, চতুর্থত, যুদ্ধের কারণে ভারতেব খাদ্যকে ম্যাযনীতিহীনভাবে, অমানবিকভাবে সৈন্যদের রসদ হিসেবে শাসক বুটিশ কর্তৃক গ্রহণ করায় খাগ্ঠাভাব তীব্রতম হয়ে ওঠে এবং তার যা ফল, তাযুদ্ব-সমকালীন ভারতী প্রেক্ষাপটকে কালো-করাল ছায়ায় ঢেকে দেয়।
১৯৩৯ সালেব ১ল! সেপ্টেম্বর জার্মানীর হের হিটলারের নির্দেশে যখন জার্মান স্বাধীন পোলরাজ্য আক্রমণ করে এবং তার বিরুদ্ধে ওর! সেপ্টেম্বর বুটেন করে প্রথম যুদ্ধ ঘোষণ1, তখন কিন্তু ভারতীয়র] সেই যুদ্ধের প্রকৃতি কি হতে পারে প্রত্যক্ষত, তার কোন স্পষ্ট ধারণ রাখতে পারে নি। তবে বংলাদেশের সে সময়ের একটি মাসিক পত্রিকা পরোক্ষভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভবিষ্যৎ রূপ সম্পর্কে মন্তব্য করে লিখেছেন” অবশেষে মহাযুদ্ধ বাধিল। একদিকে জার্মানী, অন্যদিকে বুটেন, ফ্রান্স ও পোলাও মহাসমারোছে সমরানলে ঝাপ দিয়াছে । ***** শেষ পর্যস্ত একটা আপোসের কথা চলিতেছিল। হের হিটলার এবং মিঃ চেম্বারলেনের মধ্যে নেভিল হেগারসন তীাতের মাকুর মত
ছুটাছুটি করিলেন । কিন্তু তাহাতে যে শান্তির সকল সম্ভাবনাই ব্যর্থ হইল। '"' যে যুদ্ধ এবারে বাধিল নৃশংসতায়, ধ্বংসলীলার ব্যাপকতায় ও ভীষণতায় গত মহাযুদ্ধ ইহার তুলনায় ছেলেখেলায় পরিণত হুইবে। সেই আশংকায় বিশ্বাসী এন্ত ৮
ভারতে একটান! ছ*ব্ছবের ছ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালীন প্রভাব-প্রতিক্রিযা ভষাবহ। এই প্রভাব ও প্রতিক্রিয়ার স্বরূপ নির্ণয় করতে হলে ভারতের আভ্যন্তরীণ সমন্তা। ও জনগণের মানসিকতাগুলিকে সামনে বেখে আলোচনা প্রয়োজন । বস্তত এই মানসিকতা- গুলি আমাদের এই পর্যায়ে আলোচনায় একান্তভাবে দেশের এঁতিহাসিক-বাঁজনৈতিক প্রসঙ্গেই সীমাবদ্ধ থাকছে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকালকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা একান্ত প্রয়োজন-_যদিও সেই ভাগ আপেক্ষিক। ভাবতবর্ধে দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধের মধ্যাহকাল শুরু হয ১৯৪২ সালের মধ্যবন্তী সমম থেকে | কিন্তু এই যুদ্ধ-প্রতিক্রিযার চরম সময হঠাৎ আলে নি, এব মূল আছে হিটলার বাহিনী কর্তৃক সৌভিয়েট বাশিষাকে আক্রমণ কলার মধো । এই আক্রমণ ঘটে অতি-আকন্মিকতায় এবং ১৯৪১ সালের ২২শে জুন। “১৯৩৯ সালের গ্রীষ্মকাল পর্বস্ত সর্বত্র কমিউনিস্টরা একা নিদারুণ কুজ্মটিকার মধ্যে পড়িলেন 7৯ নব গঠিত এবং পার্টির আন্তর্জাতিক আদর্শে স্থিব-বিশ্বানী ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি তখন চবম বিভ্রান্তির মধো পড়ে। প্রথমে ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সাম্রাজ্যবাদী গোতঠীগুলির পরম্পরের মধ্যেকার যুদ্ধ, কিন্তু পরে স্টাপিনের রাশিয়াব সঙ্গে হেব হিটলাবের জার্মানীর অনাক্রমণ চুক্তি, হিটলাবী যুদ্ধের প্রকৃতির সাআজাবাদ থেকে কাসিবাদে ক্রমরূপান্তর, শেষে হিটলার কর্তৃক সোভিয়েট রাঁশিযা আক্রমণ-_-এই সণস্ত পবস্পর বিরোধী ঘটনা ত্বরিত ঘটায দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ এক জটিনতম পরিস্থিতি রচন| কবে ভাবতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে-আমাদের নির্দিষ্ট প্রথম ভাগে।
ঠিক এই সময় কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী অন্যান্য দলগুলির শাসক-বিবোধী আন্দোলন ঘেমন তীব্রতা পায়, তেমনি দলগুলিব মতাদর্শগত এবং তৎকালীন শাসক যুদ্ধবত বুটেনকে যুদ্ধে সাহাযা কব নিষে মতদ্বৈধতা আবে! এক জটিল অবস্থ। এনে দেয়। ৩বা সেপ্টে্বব যুদ্ধ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ভারতেব তৎকালীন বডলাট লর্ড লিনলিথগে! ভাবতকে মৃদ্ধরত বলে ঘোষণ! কবেন। কিন্তু এই ঘোষণার সঙ্গে ভারতের জনগণ ও জননেতাদেব মতামতের কোন যোগ ছিল না। অর্থাৎ যুদ্ধের শুরু থেকেই ভারতের জনগণকে সম্পূর্ণ অন্বীকার করাব একটি বেপরোয় মনোভঙ্ষি একমাত্র সত্য হয়ে উঠেছিল বিদেশী শাসকদেব মধ্য, আর এই বুত্বেই পনিবেশিক ভারতবাসীর উৎপীডিত মানসিকতা আরও বিব্রোহী হয়ে ওঠে শাসকের বিকুদ্ধে। এই বিদ্বোছে ইদ্ধন যোগায় শাসক-চক্রের অনমনীব মনোভাব
৪১
যেমন, তেমনি ভিভাইভ এগ রুল" নীতি যার ফলে একদিকে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, অন্যর্দিকে যথেচ্ছ শাসন, দমন, পীডন অবাধে চলতে থাকে । এরই মধ্যে ভাবতীয় রাজনীতিতে আমলাতন্ত্র পায় সর্বাধিক প্রাধান্য ।
ছ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ধের প্রথম ভাগেব প্রথমদিকে ভারত জাপানের দ্বাবা প্রত্যক্ষভাবে আক্তাস্ত হয নি, অথচ শাসক বুটিশ যুদ্ধকে তাদের যুদ্ধ বলে ভাবতীয়দের কাছে বার বার বাখতে চাঘ। এর ফলে সামাঙ্গযবাদেব যে যুদ্ধ তাব ফ্যাসীবাদী চবিভ্র সম্পর্কে ইউরোপ ফ্ুণ্টে তার বাধাহীন অগ্রামনকে বুঝতে অক্ষম ছিল ভাবতবাসী। কারণ প্রথম মহাযুদ্ধ যেমন স্বদূর ইউরোপ খণ্ডেই আবন্ত হয়ে শেষ হয়ে যায়, ভাবতবাসীর ধারণা ছিল, এই নদ্ধ৪ সেখানেই শেষ হবে এবং প্রথম বিশ্বাদ্ধের মত দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধে তাদের কোন প্রতাক্ষ অভিজ্ঞত! ঘটার সযোগ আসছে না । অর্থাৎ ভারতের বুকে দ্বিতীয় বিশ্বধুদ্ধের প্রতাক্ষ অভিজ্ঞতায় তাব চরিজ্র তখনো বোঝাব কোনে৷ উপায় না থাকা ভাবতীয় জাতীযতাবাদী নেতাদেব সেই ফ্যাসিঈ চরিত্র বোঝ! সহজসাধ্য হল না।
আর এই সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেব বাস্তব গতিপ্ররৃতি ভারতের প্রতিবেশী ব্রন্ধদেশ, মালয, কাছাকাছি চীন, ইন্দোনেশিয়। ইত্যাদি বাষ্ট্রে-অর্থাৎ প্রাচা ভূখণ্ডে যে বিশিষ্টতা আনে, তাতে তার! ফ্যাসীবাদী আগ্রাসনের জটিল ও মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা পায়। তাই তাদের আন্দোলন যখন একই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের যৌথ বূপেরই বিরুছে, তখন ভাবত এক জটিল যুদ্ধ-ব্যবস্থার সন্মুখীন_-যার হাল ধরে আছে শাসক বুটিশ। ভাবতবাসীব বুহত্তব মানবিকতাবোধ ও অভিজ্ঞতায প্রাচ্য খণ্ডের মোভিষেট ইউনিষন পরিচালিত 'মুক্তিযুদ্ধ' ( দ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ধ যা ১৯৪২ সালে তাৎপর্য পায ) যথেষ্ট মূলা পেলে ও ইউপনিবেশিক শাসনে জর্জবিত, শোষিত মানষ বুটিশকেই একমাত্র শক্র হিসেবে ধধে রাখে । এর আর একটি কাবণ, বুটিশ শাসকরা তখন বার বার নেতাদের বন্ধ আবে্দন-নিবেদনকে নস্যাৎ করে সামান্যতম স্থুস্থ সবল পূর্ণ স্বাধীনতা দানে অস্বীকৃতি জানাষ। দ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে ভাবতে সম্পর্ক বিচার কবতে বসে একজন ভাষাকার পলেছেন,--ব্রিটিশ সামাজ্যবাদেব হস্তক্ষেপেব ফলে ভাবতে ফ্যাসিবিবোধী সংগ্রাম ও সাম্রাজ্যবাদ বিবোধী সংগ্রাম--এই গঙ্গা-যমুনার মিলন প্রক্রিষাটি দানা বাধতে পারল না। ভারতে সৃষ্টি হল এক জটিল পরিস্থিতি 1১০
এই পরিস্থিতির মধ্যে আমেব্রিকার প্রেসিডেণ্ট রূজভে্ট ভারতের জাতীয় নেতাদের মানসিকত। ও যুদ্ধে অনহযোগের বাসনা থেকে বোঝেন যে, ভারতকে এই যুদ্ধে যদি সম্যকভাবে না জভানো যায়, তবে যুদ্ধের রসদ সংগ্রহ সহজসাধ্য হবে না। তাই তার চাপে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী চাচিল ১৯৪২ সালের ২৩শে মার্চ ক্রিপ্স্কে দূত হিসেবে পাঠান
৪২
ভারতে । প্রস্তাব ছিল, যুদ্ধশেষের পরেই উপনিবেশের মত স্বাধীনতা পাবে ভারত । নতুন শাসন না প্রবতিত হওয়া পরস্ত ভারতের প্রতিনিধিরা বডলাটের সঙ্গে সক্রিয় অংশ নিয়ে শাসন কাজ চালাবেন । যুদ্ধ থামলেই ভারতীয় নতুন সংবিধান গঠনের জন্য মিলিত হবেন। যদি কোন প্রদেশ সে সংবিধান মানতে রাজি ন। হয়ঃ তবে আলাদ1 সংবিধানে তার! গুপনিবেশিক স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে। ভারতের বিখ্যাত ইতিহাসকার ডঃ রমেশচন্দ্র মজুযদীর মন্তব্য করেছেন।--পিরবর্তীকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মনে হয়ঃ ইহার অপেক্ষা উতর কোন প্রস্তাব তখন সম্ভবপব ছিল ন1।**৯ তখনকার কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ-_ ছৃপক্ষই নিজ নিজ মতাদর্শের দিক থেকে এতে আপত্তি করে।
এবং এব পরেই আসে, গান্ধীজীর “ভারত ছাড়ো” আন্দোলনেব আহ্বান ১৯৪২ সালেব আগ মাসে । এই আন্দোলন এঁতিহাপিক “আগষ্ট বিপ্লব নামে পরিচিত । কিন্তু এই বিপ্লবের আগে থেকেই জাতীয কংগ্রেসে ছিল মতবিরোধ । গান্ধীজীর সঙ্গে স্ভাষচন্দ্রের মতাদর্শগত ছন্দ, স্ভাষচন্দ্র গঠিত ফবওয়ার্ড ব্কেণ মত ও পথ, জয়প্রকাশ নারায়ণ প্রমুখের সোস্যালি্ট পার্টির পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, অতিবাম আর এস পি-ব ব্যাখ্যা--এই সবই যুদ্ধ-সমকালীন দেশীষ পবিস্থিতিকে বিভ্রান্তিকব কবে তোলে । এর- মধ্যে ঘটে শ্ভাষচন্দ্রেব ভাবত থেকে পলায়নেব ঘটনা ১৯৪১ সালের জানুযারী মাসে। লক্ষণীষ, এই ঘটনাই বিশ্বযুদ্ধ পরিস্থিতিকে ভারতের সঙ্গে যোগস্ত্র বচনাব অন্যতম সহায় । কারণ, এই পলায়নের পর আজাদ হিন্দ সরকাব গঠন, ভাবতের সীমান্তে জাপানেব সহযোগিতায় পববর্তী কালে আজাদ হিন্দেব দেশ-যুক্তির জন্য প্রচণ্ড লড়াই ইত্যাদি ঘটনাঘ ভারতের নিজন্ব জাতীয আন্দোলন ও কমিউনিষ্ট পার্টিব ভূমিকায আর এক অভিনব জটিলতার শষ্টি হয়।
এমন জটিলতার মধ্যেই আগষ্ট আন্দোলন সংঘটিত হলেও যা মূলে গান্ধীজী নির্দেশিত অহিংস ছিল, তা হয় সহিংস । এবং যেহেতু সে সময়ে দেশীয় নেতাদের মধ্যে একই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ নিয়ে আলোচনা, মতার্বর্শগত ব্যাখ্যা ও বিভেদ চলে, তবু মূলত শত্রু বুটিশ শাসক, এবং তারাই ভারতীয়দের সামনে তখন একমাত্র প্রতিপক্ষ, তাই আগষ্ট আন্দোলন একই সঙ্গে অহিংস ও সহিংস পন্থা সার! ভারতে এক উত্তাল গণজাগরণের রূপ নেয়। এমন সর্বভারতীয় কঠিন স্বতংস্ফুর্ত গণজাগরণেব রাজনৈতিক তাৎপর্য ব্যাখ্যায় একালের বিখ্যাত এঁতিহাপিক প্রাক্ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্বের চট্টগ্রামের বিদ্রোহের সঙ্গে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নেন,_“আগষ্টের এই আন্দোলনই ইংরেজের শাসনকালে বঙ্গ দেশের সর্বপ্রধান হিংসাত্মক বিল্বোহ বলিয়া পরিগণিত হইবার যোগ্য ।১২ এই আন্দোলনের প্রাক্কালে ও সমকালে বহুনেতা ও কর্মী গ্রেগার হন, বু হতাহত হন
৪৩
বুটিশ নিযুক্ত পুলিশ বাহিনীর অত্যাচারে । সে সম্পর্কে ডঃ বমেশচন্দ্র মজুমদারের মন্তব্যই যথার্থ,২_ গিভনমেন্টের যে নির্মম পাশবিক অত্যাচার চলিয়াছিল সভ্য জগতের ইতিহাসে তাহার তুলন। ছুর্লভ ।,১৩
এই আগষ্ট বিপ্লব__য। খ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালীন ভারতের বুকে যুদ্ধ-গ্রতিক্রিয়ার একেবারে মধ্যাহ্কালকে চিহ্নিত কবে, তা বাংল! কথাসাহছিত্যকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। ছোটগল্প ও উপন্তাসে এই আন্দোলনের ছবি জীবন্ত হয়ে আছে তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাণিক বন্য্যোপাধ্যা, বনফুন, স্ববোধ ঘোষ, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ননী ভৌমিক প্রমুখের রচনায় ।
১৯৩৯-এ যুদ্ধ আরম্তের পর থেকে ১৯৪২ এর আগষ্ট আন্দৌলন এবং ডিসেম্ববে বাংলাদেশের কলকাতা শহরে জাপানী সৈন্যদের বোম বর্ষণের ঘটন। পর্যস্ত ভারতের যুদ্ধ সমকালীন রাজনৈতিক ঘটনাগুলির পাশাপাশি চলতে থাকে পাম্প্রদায়িক দাঙ্গা- হিন্দু- যুনলমানেব অমানবিক সম্পর্কের জঘগ্ভতম রূপ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ১৯৩৭ সালের জানুয়ারী মাসে নতুন সংবিধান অনুযায়ী প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নতুন মন্ত্রীসভা গঠন করে বৃটিশ শাসক-গোর্ঠী। এর পরের কয়েক বছব হিন্দু-যুদলমানের সাম্প্রদায়িক দাক্ষা-হাঙ্গাম! প্রায় বন্ধ থাকার পব আবাব আরম্ত হয় ১৯৪০ সালের আগষ্ট মাসে। আগষ্ট মাসের ঢাকার হিন্দ্ু-মুললমানের দাঙ্গা, সেপ্টেম্বব মাসের বর্ধমানের দাঙ্গা, ১৯৪১ সালেব ফেব্রুয়াবী মাসের মহরমের শোভাযাত্রায় হিন্দু-মুসলমানের প্রবল সংঘর্ষ, ফেব্রুয়ারী মাসেরই শেষর্দিকে লোক গণনার সময সাম্প্রদাধিক লোক সংখ্যার হিসেবকে কেন্দ্র করে নানাস্থানে সাম্প্রদায়িক বিরোধ, মার্চ মানের ব্যক্তিগত কলহে খুলনা জেলায় সাম্প্রধাপ্সিক সংঘর্ষের তাগুব যুদ্ধ সমকালীন ভারতবর্ধ তথা বাংলাদেশের প্রথম পর্বের সামাজিক-সাম্প্রদায়িক সমস্তাকে জটিল করে । ১৭ই মার্চ ১৯৪১ সালে দাঙ্গার এক বিরাট রূপ ম্প্ট হয় ঢাকা শহরে । ২১শে মার্চ শান্ত হওয়ার পর ১*ই এপ্রিল আবার সেই দাক্ষার লেলিহান অগ্রিশিখা জলে ওঠে । দাঙ্গা ক্রমশ দাবানলের মত পূর্ববঙ্গের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পে । ১*ই মার্চ এবং এপ্রিলের শেষ দিকে সম্প্রীতি রক্ষার জন্য শুভেচ্ছ। সমিতি” গঠন ও শাস্তির ঘোষণাপত্র প্রচারিত হলেও ২৬শে জুন আবার দাঙ্গ। বাধে ঢাকা শহরে । চলে ৭ই জুলাই পর্বস্ত এবং কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর আবার অক্টোবর মাসে ।
লক্ষণীয়, এই দাঙ্গার বিরুদ্ধে স্থভাষচন্দ্র বন্থু প্রয়ুখ নেত। ইংরেজ শাসকের কাছে লিখিত প্রতিবাদ 'জানিয়েও কোন ফল পান নি। তৎকালীন ফজলুল হক মন্ত্রীসভা ও মুসলিম লীগের নস্ট! চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেন নিজেদের সাম্প্রদায়িক মনোভর্গিকে-
ধ্যত ও স্বম্থ না কবাঁব ফলে । তাবতবধে যখন এমনি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের উত্কট রূপ, বহিধিশ্বে তখন যন্ধের রথচক্র উচ্চরবে ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ধ্বজ। উডিয়ে অগ্রসরমান |
এমন অবস্থায় ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির সক্রিষফতা ছিল সর্বাধিক । সেই সময়েয় বাখ্যায় ইতিহাসকার বলেছেন, __বঙ্গদেশে কমিউনিষ্ট মতবাদ্দেব প্রভাব খুব বেশী না তই্টলেও গভর্ণমে্ট বিচলিত তইঘ! উঠিল ।,১৪ অবশ্বাই “কমিউনিষ্ট আন্দোলনের ন্থায় শ্রমিক আন্দোলনও অন্য প্রদেশের তুলনাষ বঙ্গদেশে খুব বেশী প্রভাব বিস্তার করে নাই।'১৫ কিন্ত সংগঠনেব ব্যাপ্তি না থাকলেও অন্তমিহিত শক্তির বলিষ্ঠতায় কমিউনিষ্ট পার্টি উল্লেখযোগা ভূমিকা নেয়। কমিউনিষ্টদের পক্ষে ১৯৪১ সালে ২২শে জুন ছিটলারী জার্মানী কর্তৃক অকন্মাৎ সোভিয়েত বাশিয়া আক্রান্ত হওয়াব পর সমগ্র পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোলাটে'১১ হয়ে ওঠায কমিউনিষ্টরা, আগষ্ট আন্দোলনে বুটিশের বিরুদ্ধে যখন সারা দেশব্যাপী প্রচণ্ড বিক্ষোভ এবং সে বিক্ষোভ কংগ্রেসের পক্ষে ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে এবং সোভিয়েত রাশিয়! ও চীনের স্বপক্ষে থাকার মতকে মেনে নিষেই, তখন তারা বুষ্টিশকে যদ্ধে সাহায্য করার জন্য মত দেয। কংগ্রেস বে-আইনী ঘোষিত ও জাতীয় মেতাবা কাঁবাগাবে নিক্ষিপ্ত হয আন্দোলনের পূর্ব যুহ্র্তেই । আর অন্যদিকে হিটলার কর্তৃক রাশিয়! আক্রান্ত হওযাষ যুদ্ধ সাম্মাজাবাদী মুদ্ধ না থেকে হযে ওঠে “ফ্যাসিজমেব বিরুদ্ধে পথিবীব্যাপী মান্তষেব স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার যুদ্ধ । স্্রতবাং নীতি ও আদর্শ হিসাবে ভাবতীয় কমিউনিষ্ট পার্টি এই যৃদ্ধে সহযোগিতা কবিত প্রস্তত ছিলেন 1৯৭ কমিউনিষ্টদের এই সিদ্ধান্তের ফাল ২২শে জুলাই, ১৯৪২-এ নিষিদ্ধ কমিউনিষ্ট পার্টির নিষেধাজ্ঞা বাতিল হয় এবং ভাগের নেতারা যখন পেলেন মুক্তি, তখন জাতীয নেতাবা কারাগারে বন্দী । বটিশের চবম অত্যাচাবে সামনে মাগঈ বিপ্লব তখন সন্থিংস ও অঙ্তিংস দুই বূপেই এক পিশাল গণ অভ্যাঙ্খান। এই প্রেক্ষিতে বমিউনিষ্ট পার্টিব ভূমিকায় প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ দেখা দে দেশেব মান্ষের মনে। কমিউনিষ্টরা তখনকার দ্বিতীয় বিশ্বযৃদ্ধকে আগা! দেয় 'জনযুদ্?, আব জাতীষ নেতার। কমিউনিষ্টদেব বলে “দেশদ্রোহী ।,
এ এক জটিল পরিস্থিতি তৈরী হয় দেশীষ আন্দোলনের অভ্যন্তরে । অবশ্যই কমিউনিষ্টদের বিরুদ্ধে কুৎসা অভূতপূর্বভাবে বধিত হলেও কমিউনিষ্ট পার্টি দুর্বল না হয়ে ববং উত্বোত্বব শক্তিশাল” তপ্ত থাকে । বারণ কমিউনিষ্ট পার্টি নানা সংগঠনের মাধ্যমে দেশেপ প্রতাক্ষ অবাবস্তাল যোকাবিল। কবার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যায়। জনগণে সঙ্গে তাদের নিবিড যোগের কাবণেই একটি পার্টি নানীবকম প্রতিবাদ" বিরুদ্ধ তবঙ্গে এমন শল্কি অর্জন করতে পেরেছিল । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতিহাসকার বলেছেন,
“কমিউনিষ্টদের দেশপ্রেম, ভারতীয় স্বাধীনতার প্রতি দরদ এবং ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে নড়াইয়ের তীব্র আকাঙ্ষা ভারতের মুক্তিকামী কোন পার্টির চেয়েই কম ছিল না।”১৮ সেই বিশ্বদ্ধদ্ধের আকম্মিক পরিবতিত পরিস্থিতিতে স্ভাষচন্দ্রের প্রচেষ্টাকেও ফ্যাসিজম”- এর সহায়ক আখ্য। দেওয়ায় নিশ্চগ্ই কমিউনিষ্ট পার্টি তুল যে করেছিল তা পবে স্বীকাব করে। এই সময়কার কমিউনিষ্ট পার্টিব মত, পথ ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে আর এক টীকাকার বলেছেন, কমিউনিষ্ট পার্টির “সঠিক পথ ছিল : দেশের মধ্যে সাআজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম ও ফ্যাসিবিবোধী সংগ্রাম যাতে পরম্পর বিরোধী অবস্থানে দ্রিকে চলে ন! যায সেদিকে লক্ষ্য রাখা, সাআ্রাজ্যবাদ-বিরোধী সংগ্রাম ও ফ্যাসিবাদ-বিরোধা সংগ্রামের মধ্যে সেতু বন্ধন রচনা করা ।** ***কমিউনিষ্ট পার্টি সঠিকভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে পারেশি। কমিউনিষ্ট পার্ট আস্তর্জাতিক বিরোধের উপর সঠিকভাবেই গুরুত্ব আরোপ করেছিল, কিন্তু তা করতে গিয়ে জাতীয় বিরোধটিকে ছোট কবে দেখেছিল ।,১৯ 00101011015 7১91৮ 2100 177019,8 ৮৪11) গ্রন্থে ডঃ গঙ্গীধর অধিকারী এই 'ছোট করে দেখা”-কেই “মারাত্মক ভুল” বলে শ্বীকার করেছেন ।
দেশের আত্যান্তরীণ অবস্থার প্রেক্ষিতে রক্তক্ষয়ী স্ববিশাল গণঅভ্যুর্থানে দীপ্ত আগষ্ট আন্দোলন এবং বিশ্বযুদ্ধেব বিশাল প্রেক্ষিতে ভারত তথা বাংলাদেশের উপর জাপানী ফ্যাসিবাদের যথেচ্ছ বো) বধণ_ এই ঘটনার সঙ্গে ক্রমাগত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, কমিউ- নিষ্টদের জটিলতম অবস্থা ও বৃটিশ শাসকেব অকথ্য অত্যাচার, শাসন-শোষণ মিলিয়েই দ্বিতীষ বিশ্বযুদ্ধ সমকালীন বাংলাদেশেব বাজনৈতিক অবস্থা চিহ্নিত। এই বাজনৈতিক অবস্থা ভারতের পক্ষে মধ্যাহুকীল। যুদ্ধের দ্বিতীয ভাগে আছে যেমন যুদ্ধের ছুর্মদ গতিব সঙ্গে, ফ্যাসিবাদের যথেচ্ছ রূপের প্রসারের সঙ্গে তা বিরোধী পক্ষের প্রবলতম প্রতিরোধ ও যুদ্ধের অবসানের দিগন্ভরেখার ইঙ্গিত, তেমনি ভারতের বুকে আছে অসহনীয় খাগ্যাভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মানবশ্হুষ্ট বিখ্যাত পঞ্চাশের মন্বম্তর | এর সঙ্গে যুক্ত হয দুষ্ট ক্ষতের মত, বা অবধারিত উপনগ বা! ডপজাত” (85 1০৫০) বিষয়ের মত কালোবাজারী-মুনাফাখোর-মন্তুতদারের উদ্ভব, আমলাতন্ত্রের যথেচ্ছাচার, শহরমুখী বাস্ত- হাবার স্রোত ইত্যার্দির মত ঘটনা । জাগ্রত জাতীষ চেতনার বলিষ্ঠ প্রসার, গণ-অক্টুতথান, শ্রমিকশ্রেণীর সংঘবদ্ধ আন্দোলন, বৃটিশ শাসকের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ, হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতি রক্ষার শুভ প্রয়াস, জাতীয় চেতনা-চিহ্নিত সম্ত্রানবাদ, সহিংস ও অহিংস প্রতিরোধ ইত্যাদির সখান্তরাল ওই নব দুষ্ট ক্ষত বাংপাদেশে একের পর এক দেখা দিতে থাকে। এই সমস্তই দ্বিতীয় বিশ্বধুদ্ধ মকালীন বাংলাদেশের সামাজিক অর্থনৈতিক বৈষস্্য, মুন্রাম্ীতির সঙ্গে জভিত ধনী ও ব্যবসায়ী শ্রেণীর দ্বণ্য পাপকর্ম ও স্বার্থপরতা,
নত
'লোভ-লিপ্ম৷ সমাজের অভ্যন্তরে নৈতিক পতন, দুর্নীতি, সমস্ত রকম মূল্যবোধকে বিন করতে থাকে । দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগে কল্লোল" পত্রিকার কালে সমাজ পরিবেশে যুদ্ধের ছিল শ্ঈথ-মন্থর আবিভাব-গতি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকালটিতে তা যেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট গতিতে বিশাল ও ভয়াবহ কূপ নেয়।
তিন
বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকাল কুৎ্সিৎ দারিজ্র্ের কাল। আর একথাই যথার্থ, যে কোন দেশের প্রতিটি মানুষের মধ্যে অর্থের ব্টন-বৈষম্যজাত দারিজ্র্য এবং সামগ্রিকভাবে দেশেব উৎপাদন-নির্ভর অর্থনৈতিক দুরবস্থা বস্তুত দেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষমতাকেই করে শৃংখলিত | যখনি অর্থনীতি শৃঙ্খলিত হয়, তখনি তার প্রভাব পমাজদেহে পডবেই । সমাজ এবং অর্থনীতি একেবারে অঙ্গাঙ্গীভাবে জডিত। একটির বিবর্তন অপরটির হাত ধরে চলে । বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা অনুধাবন করলে বোঝ! যায়, এই পর্ধের রাজনৈতিক সচেতনতা ও উত্তালতার সঙ্গে ঠিক বিপরীত-বর্মী সম-শক্তিতে সমাজ ও অর্থনীতির অধঃপতন ঘটে ।
১৯২৯ সালে সাও। বিশ্বের প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্ভী অর্থনৈতিক অবস্থার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে দে সময়ের বিশ্ববাজার মন্দন। যাওয়ার প্রসঙ্গ পূর্ববর্তী অধ্যায়ে আমরা আলোচন! করেছি । তার জের এনেছিল বেকারত্ব । মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের সংকটের মাধ্যমে সেই ধারার অন্ধুবর্তন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ব-মকালে বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক অব্যবস্থায় চরম আঘাত হানে । আঘাতের কারণ, নিশ্চিতই বিশ্বযুদ্ধের আকম্মিক আবির্ভাব। দ্বিতীয় কারণটি বাংলাদেশের ভাগ্যে উপনিবেশবাদের নির্মম ভার, যা রূপ নেয় প্রবল নির্যাতনে ও উপেক্ষায়--এ সবের মধ্যে নিহিত। একদিকে জাতীয় চেতনায় উদ্ধ্ক বিশাল জনতা, অন্যদিকে সেই জনতার অভ্যন্তরে স্থবির বৃদ্ধের মত স্থির অর্থনৈতিক ছুরবস্থার শোচনীয় বপ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ব-সমকালে যখন ওঁপনিবেশিক রাষ্ট্রের মানুষ হিসেবে আমরা চরম শোধিত, নানাভাবে আন্দোলনের মধ্যে বার বার মার খাচ্ছি, তখনি দৈব অভিশাপের মত প্রাকৃতিক ছুধোগ দেখা দেয়। ১৯৪২ সালের অক্টোবর মাসে মেদিনীপুরে দেখা দেয় প্রবল ঝড়, বন্তা। এই হ্ত্রে অর্থনীতিতে আরও আঘাত পড়ে। কিন্তু এহ বাহা। এরই মধ্যে যুদ্ধরত মিত্রশক্তি বুটেন শামক-ব্ূপে চরম অপদার্থতার স্বাক্ষর রাখে সার! বাংলাদেশে । যুদ্ধের সৈম্তদের জন্ত বলদ সংগ্রহে তার! তৎপর থাকে ভারতেই_য্দিও ভারতের তথা বাংলাদেশের মানুষের প্রজা! হিলেবে স্ভায্য থাস্ক-
৪৭
অর্থ-গ্রাসাচ্ছাদনটুক্ তারা পাচ্ছে না। তার ওপর শব্রুপক্ষের কয়েকটি রাষ্ট্রে তখন রগানি বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় কাচ! মালের দেশ ভারতবর্ষয এক সংকটজনক অবস্থার সম্মথীন। এই সঙ্গে বুটিশ শীমকের পোস্ত ব্যবসায়ীদের চরম বল্নাহীন অর্থগৃর,তা, নব সৃষ্ট যুনাফাখোর- মজুতদারদের আবির্ভাব সে সময়ে ধনীকে আর ও ধনী, গরীবকে আরও গরীব করে তোলে ।
যার! এ সবের মধ্যে বিস্তে ও মানসিকতায়, দামাজিক আভিজাত্যে মধ্যবতাঁ অবস্থায স্থিত-_সেই মধ্যবিত্ত জনসাধারণ জীবনযাপনে সম্পূর্ণ দূর্বল হয়ে পডে। ঠিক এমন অবস্থা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ব-সমকালের অবধারিত ললাট-লিখন ছিল এমনই করুণ সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত । এই সময়ে যে উতৎকট খাছ সমস্য। দেখ। দেয, ধীরে ধীরে সেই ১৯৪৩-এর মন্বস্তর--যা “পঞ্চাশের মন্বস্তর নামে ইতিহাস-খ্যাত হযে গেছে--তার অশুভ ছায়৷ নামে । তার ফল শুধু অগনন মানুষের অমানবিক মৃত্যুকেই একমাত্র দৃষ্টান্ত কৰে না, সেই সঙ্গে সমাজদেহে গভীর ক্ষতমুখ ও ক্ষতের বিস্তার স্পষ্ট করে।
মূলত সে সময়ে দেশের খাছ্ের অবস্থা এবং অব্যবস্থা ও সাধারণ মান্ুষেব অমানবিক দুর্গতির সংবাদ দিতে গিয়ে একটি বিখ্যাত পত্রিকার “সংবাদ সাহিত্য” বিভাগে লেখা হল,_“বাংলাদেশের সর্বত্র খাগ্যাভাবে হাহাকার উঠিয়াছে। প্রত্যেক জিলার প্রত্যেক মহকুমার প্রত্যেক শহরের এবং প্রত্যেক গ্রামের সংবাদে এই অন্ন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রবোর অভাবই মুখ্য বিষয় । চুরি ও ডাকাতিব হিডিকও প্রতিদিন বাড়িযা চলিযাছে__ এবং এগ্ডপিও যে থাস্ভাভাবের ফল, তাহাতে সংশয় নাই। মন্বম্তরের ঠিক পূর্বান্নে যেরূপ ঘটা উচিত, ঠিক সেরূপই ঘটিতেছে। কিন্তু সর্বাপেক্ষা কোলাহল উঠিযাছে আহার্য ও অপর প্রয়োজনীয় বস্তভর বিক্রয় এবং বণ্টনের অব্যবস্থায়। এই অব্যবস্থার জন্য প্রথমত দায়ী-ধাহাদের হাতে দেশের শাসনভার আছে তাহারা ।***তাহার। এ দেশীয় ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হাতে এ দেশীয়দের অন্রবস্ত্র সমস্ত। সমাধানের ভার দিয়া ভগবানের ও বিবেকের কাছে দ্বোষমুক্ত আছেন ।১২০ কিছুট। গ্লেষের সুরে ছিতায় বিশ্বযুদ্ধের সমকালে প্রকাশিত এই পত্রিকায় পরিবেশিত সংবাদ সেকালের অর্থনৈতিক ও সামাজিক চিন্রকেই জীবন্ত করে তোলে । আর একটি পত্রিকায় লেখক কালীচরণ ঘোষ তার “বর্তমান জীবন ধারণ সমন্তা” প্রবন্ধে লিখেছেন, “ক্রমে কোন ভ্রব্ই পাওয়া যায় না। যে দামে যাহ! পাওয়া যায়, তাহ! গৃহস্থের ধাধা আয়ের শক্তির বাহিরে ।"****কত লোক এই দুর্দিনে অন্নবস্ত্র চিকিৎসা ও গমনাগমন উপলক্ষে নিঃস্ব হইতেছে, ভিটা মাটি বিক্রয় করিয়া! পরযুখাপেক্ষী পরনির্ভর হইয়! তিক্ষান্্রে জীবনাতিপাত করিতে প্রস্তত হইতেছে তাহা আমেরী সাহেবের সংবাদ রাখার কথা নহে ।,২৯
৪৮৮
এই সমস্ত সংবাদ প্রমাণ করে যুদ্ধ সমকালীন বাংলাদেশের যুদ্ধ-প্রতিক্রিয়াজাত শোচনীয় অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও শংখলি'ত অবস্থার কথা। লীধারণ মান্ষের স্থিত জীবন উন্মুপিত, বঙমান জীবনযাপন পদ্ধতি বিপর্যস্ত, ভবিষ্যৎ জীবন ব্যক্তিমান্থষের পক্ষে সম্পূর্ণ আশা-ভরসাহীন। ভারতের বাইরে যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতে তথ! বাংলাদেশে যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিচিত্রণ লক্ষিত হয়, তা যৃদ্ধ- পূর্ব অবস্থারই এমপ্রসারিত ৰপ। ১৯৪১ সালের শেষ দিকে যুদ্ধেব গতিমুখ পরিবতিত হলে, ১৯৪২ সালেব স্বদেশী আন্দোলনেব উত্তীল রূপ দেখা দিলে (যার কথা আগেই আলোচনা করেছি ) দেশীষ অর্থনীতিতে তাব প্রতিক্রিযা তীব্র হয়। মেদিনীপুরের ঝড (অক্টোবর, ১৯৪২), ১৯৪৩-এব দামোদরে বন্তা। ইত্যাদির মত প্রাকৃতিক দুযোগে শশ্ত- হানি, সরকারপুষ্ট-মজুতদাপ-চোবাকাখবারির বাতের অন্ধকাবের অনাধু তৎপরতা, যুক্তিহীন মুদ্রাম্্ীতি বাংলাধেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত কবে।
বাংলাদেশেব সমাজ মধ্যবিত্তনির্ভর ছিল। এই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর একভাগ ভূমি নির্ভব জীবনযাপনে অভান্ত, আর একদল চাকুরীপ্রাণ। চাকুীপ্রাণ মান্থুপগ্তলি ছিল শহবমুখী। যে সব মধ্যবিত্ত ছিল ভূমির আয়ের ওপর নির্ভরশীল, একান্নধ্তী পবিবাণে সংন্য বুদ্ধি, শহরজীবনেব আকর্ষণ, অভাবে জমি বিক্রয়েব অমোঘ প্রবণতা-- এসব কারণে দ্বিতীয় ছিশ্বযুদ্ধেব আগেই তাদের যেমন লোপ পাওয়ার মত অবস্থ' ছিল, যুদ্ধ-সমকালে প্রায় লুপ্ত হওয়ার দিকেই তাবা এগোয়। শিক্ষিত চাকুরীপ্রাণ মধ্যবিত্তরা স্বল্প পরিমাণ শিগ?ি& মাহিনায়, যুদ্ধকালীন দুর্মূল্য ভাতা মানাতে চেষ্টা কবলেও ক্রমাগত অসম্ভব দ্রপ্মলাবাদ্ধ ও দ্রবোর যোগান হাস হওয়ার ফলে তাদেল অবস্থা ভধ্বশ্বাস হষে ওঠে । একদিকে তারা শিক্ষিত অন্যদিকে বিত্তে মধ্য-ক্ষমতার অধিকার'--ফলে সামাজিক ও ব্যক্তিক মানসিকতায় তার্দের জীবনধারণে যেমন জটিলতা দেখা দেয়, তেমনি সামাজিক মান-মহাদ| রক্ষা করতে গিষে চরম বযতিবাস্ততার মধ্যে পডে।
শহরবেন্দ্রিক এই মধাবিত্তজীবন ক্রমশ নিজ নিজ মান ও আভিজাত্য রক্ষা করতে গিষে অসুস্থ হতে থাকে । শহরে ভিড হুষ গ্রাম-মানুষের । চাষীরা চাষ ছেডে শহরে ভিড কবে, কারণ খবা, শস্তহানি, বন্যা, ঝড ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্ধোগে চাষ সম্ভব নয়। শহরের মিল কারখানায শ্রমিকশ্রেণী ফুলতে থাকে জন-সংখ্যার চাপে, শ্রমনিয়োগ সমন্ত। দেখা দেয়। শহরে ছিল রেশনিং বাবস্থা । তাই শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের কাছে খাছ সমস্থা৷ প্রকট ছিল।
অন্যদিকে মধ্যবিত্ত সমাজে অবনাদ, অবক্ষয় আরও গভীরে শিকড বসায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরৰতীকালে দুর্বল, অন্ুস্থ আধিক অবস্থার চাপে যে মধ্যবিত্ত মানুষ শংকিত ছিল,
বেকার জীবনের হতাশা, বেদনা, ক্ষোতে-অবসার্দে ছিল শৃংজ্রলিত, ছিত্তীয় বিশ্বযুদ্ধ- ল্কালে নেই মধ্যবিত্ত সমাঞ্জে ধরে ক্ষয়রোগ- -গভীরে-গোপনে তার শায়ুকের মত গতি । মধ্যবিত্ত জীবনের শোচনীয় অবক্ষয়, অবনতি সম্ভবত একটি পূর্ণরূপ পেতে চায় মন্তস্তর, অভাব, অসহায়তা, অবসাঙ্গ, কিংকর্তব্যবিমূচতার মধ্যে থেকেই । তাই যুদ্ধ-লমকালীন বাংলাদেশের যেটা সবচেয়ে লক্ষণীয়, ত। হুল দ্রারিদ্র্য, বেকারত্বের কারণে অতি সংগোপনে মধ্যবিত্ত সমাজদেছে নৈতিক অধ:পতনের লক্ষণীয় দিপড়িগুলি।
এরই পাশাপাশি ছিল বৃটিশ রাজশক্তি-লালিত অথচ নিক্ষিয় জমিদারশ্রেণীর অস্তিত্ব। ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই তারা বুঝেছিল পরিবতিত পরিস্থিতিতে তাদের দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে । তবু বুটিশ লালনে-পোষণে তাদ্দেরই গোষ্ঠী মজুতদ্রার, মুনাফাখোরের মধ্যে ভিডতে থাকে । বিদেশী ক্যাপিটালিস্টদ্ের সুত্রে তারা হয়ে ওঠে ব্যবসায়ী । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকাল এদের কাছে ছিল এক হ্বর্ণোজ্জল অধ্যায় ।
বাংলাদেশে এমন যুদ্ধ সমকালের ছয়টি বছরের প্রায় সমগ্র সময়সীমাই অস্থিত থেকেছে, অন্তত যুদ্ধের মধ্যাহ্কাল থেকে পরবতী সাডে তিন বছর নিশ্চয়ই । আর, এই অস্থিত অবস্থা দুঃসহ শৃংখলিত অর্থ নৈতিক অবস্থার চাপে উৎকেন্দ্রিক করেছে মধ্যবিত্ত জীবনকে । একদিকে জাতীয় জাগরণ আন্দোলন, গণবিক্ষোতের বিশ্ময়কর কূপ, অন্যদিকে অকল্পনীর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, একদিকে পথের স্বণ্য পশুর মত সর্বহার] বুভূক্ষু মান্ঠষগুলির অমানবিক চীৎকার, কাতরতা, অসহায় মৃত্যুবরণ, আর একদিকে সরকার-পুষ্ট এবং দেশীয় স্বার্থপর অর্থলোভী মানের হঠাৎ্বডলোক-হওয়ার ঘ্বণ্য মানমিকতা, একদিকে সরকারের “অধিক খাছ ফলাও অভিযানের আহ্বান ও রেশনিং বাবস্থার মাধামে খাছোর বন্টন ব্যবস্থায় ভারসাম্য আনার প্রধাঁস, অন্যদিকে সেই ব্যবস্থাকে ভিত্তি করে যুনাফাখোর, মজুতদার ও কালোবাজারীদের লোকচক্ষুর অন্তরালে লোলুপ শকুনি-গৃধিনীদ্দের মত বিচরণ__এমন বৈপরীত্যের মধ্যেই আসে চরমতম সামাজিক-অর্থ নৈতিক বিপর্যস্ত রূপ -সমন্বস্তর।
এই মন্বস্তর সম্পর্কে ছ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিষ্থাসের গবেষক বলেছেন;-_-“বুটিশ ও ভারতীয় পু'জিপতিদের হাতে সরকারী খাদ্য ব্যবস্থার ও বণ্টনের ভার ছিল এবং তারা ইচ্ছামত দাম চডাইয়! মুনাফাবাজির চরম করিয়াছিল। অধিকস্ভ মিলিটারি কণ্টাকটারদের হাতে প্রচুর খাঘ্যশন্ত মজুত ছিল । এরাও মজুতদারি ও মুনাফাবাজির দিকে ঝুঁকিয়াছিল। সরকারী অক্ষমতা, হাদয়হীনতা ছুনীতি ও অপরিমিত লোভের কারসাজির জন্ত পঞ্চাশের মন্বস্তর এত ব্যাপক ও ভয়াবহ হইয়াছিল ।২২ যুদ্ধবসমকালের অর্থনৈতিক ছুরবস্থার পিছনকার ইতিহাস বাস্তবিকই এই । স্পষ্টই বোঝা ঘায়, এমন তক্গুর অর্থনীতি
দ্বিতীয় বিশ্বযুগ্ধ-লমকালীন বাংল1 কথাসাছিতা ৪
্বা্থান্বেবী তদানীত্তন সরকার ও উপনিবেশে বসবাসকারী স্ুযোগ-সন্ধানী দেশীয় মানুষই নিজেদের ভাগ্য হিসেবে রচন। করতে পারে । মানবতা-বিধ্বংসী এইসব দেশীয় অস্তিত্থই তো! যুদ্ধে বিশাল আকারে মুখব্যাান করে সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের দোসর হয়।
পাশাপাশি সমা্চিজ্রের একটি ছবি ও তার ব্যাখ্যা! ওই গবেষক উপস্থাপিত করেছেন। দেখা যায়, যখনি দেশে রাজশক্তির কর্তৃত্ব দুর্বল ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত হ্য়, রাজশক্তি অক্ষম হয় সাবিক শংখল! বজায় রাখতে, অর্থাৎ নানা দিকের বিশৃংখলায় মান্গষে মানুষে মানসিক ও মানবিক এক্যহ্থত্রগুলি হয় বিচ্ছিন্ন, তখন স্থবিধাভোগী সম্প্রদায় প্রকাশ্ঠে দেখ! দেয় । নীতি নিয়ম হয় অবহেলিত, সুযোগ সন্ধানীদের তৎপরতা! হয় তীব্র। যুদ্ধ-মকালে তা-ই ঘটেছিল বলে শুধু পুরুষ নয়, নারী সম্প্রদায়কে ম্ববিধামত কাজে লাগানোর চেষ্ট1 হয়। অর্থাৎ নারীর! ব্যবহারিক জীবনের যাবতীয় স্ববিধ। আনয়নের অন্যতম সহায়ক হয় | নারীর। পুরুষদের পরিচালিত সংসারের দারিজ্র্য ঢাকতে বাইপ্পের কাজে ও অর্থনৈতিক অবস্থাব উন্নতি সাধনে প্রয়াসী হুয। এই প্রয়াস যুদ্ধের আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। যুদ্ধ সমকালে তা যেমন ব্যাপক আকার ধারণ করে, তেমনি নেয় বীভতম রূপ। এই রূপের পরিচষয দিতে গিয়ে গবেষক বলেছেন,_-গণিকাবৃত্তি বাাপকভাবে প্রনার লাভ করে এমন কি তথাকথিত ভদ্রমহলে' পধস্ত এই পাপ গভীরভাবে অন্থপ্রবেশ করিয়াছিল। বিদেশী সৈন্ত ও অফিসারদের মনোরগুন ও অবসর বিনোদনের নাম করিয়া! “সবকারী” ও “বেসবকারী” পৃষ্ঠপোষকতায় গণিকাবৃত্তির বন্থল প্রচলন হুইয়াছিল। মিলিটারির নান! শাখায় মেয়েদের চাকুরী এই দুর্ীতিকে বিশেষভাবে পরিপুষ্ট করিয়াছিল ।২৩
বস্তত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালে অর্থ নৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়ার এইগুলিই ছিল বিশেষত্ব, এই গুলিই ক্রমশ স্থায়ীভাবে সমাজের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেয়। যেহেতু কালের প্রেক্ষিতে সব দেশের বুদ্ধিজীবী ও লাধারণ মানুষই যুগকে মেনে নিয়েও, সচেতন থেকেও অনহায়তার অমোঘ শিকার হয় এবং তা-ই তার কালের ললাটলিপি হয়ে দেখা দেয় তাই এই যুদ্ধ-সমকালের বাঙালী মানস এমন প্রতিক্রিয়ায় অবধারিত শিকারমান্র হয়েছিল। এর সম্যক প্রতিচিত্রণেই নিবদ্ধ থেকেছেন যুদ্ধ সমকালীন বাঙালী লেখককুল।
চার যুদ্ধ সমকালে জটিল রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক জলস্ত পটভূমিতেই ঘটে
বাংলা কথাপাহিত্যের উজ্জ্বল অগ্নিপরীক্ষা। আমর! মনে করি, যুদ্ধ সমকালকে যথাযথ রূপ দিতে লমকালের লেখকর! ঘে অনামান্ত কৃতিত্ব দেখিয়েছেন, তা তুলনারহিত।
৫১
এইসব কথাসাহিত্যই ছ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ দর্পণ । অথবা বলা যায়, সমকালের কথাসাহিত্য ছিতীয় যুদ্ধের সর্বাবয়ব দলিল। এমন মন্তব্য করার কারণ, যুদ্ধসমকাঁলের প্রায় সব লেখকই ভারতের বুকে সংঘটিত এবং যুধ্যমান বিশ্ব-পরিস্থিতির অন্তর্গত পরিপার্খের প্রাচ্যথখণ্ড থেকে সংক্রামিত যুদ্ধের সমস্ত বকম সংকটের কারধ-কারণ সম্পর্কে ছিলেন সচেতন । এই সচেতনতার স্তর যেমন ছিল সমকালের লামাজিক- অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক অবস্থার সঙ্গে সম্প€ক্ত, তেমনি ছিল গভীর মনস্তাত্বিক ভিত্তির গপরও নিবিভ-গ্রথ্িত। এই সমস্ত' চেতনায় সামগ্রিকভাবে লেখকের মানসিক স্বচ্ছতা, নিরাঁকতা ও বলিষ্ঠতার স্বাক্ষর আছে। যুদ্ধ-সমকালে রচিত কথাসাহিত্যে তার পরিচয় মেলে ।
অর্থাৎ কল্লোল-কালিকলম-প্রগতি-_এই পত্রিকা গোষঠী-উখিত এবং এই সব পত্রিকার লেখকবা যে নতুন কিছু কবার উদ্দামতার আবেগে কথাসাহিত্যে চমক এনেছিলেন, যা ধার! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্ব সময় পধন্ত নানাভাবে সাহিত্যে প্রতিফলিত হযেছিল, যুদ্ধ আরম্তে তা তার আবেগদীপ্ত কিছু বাস্তব, কিছু অবাস্তব ্বপ্নমযত। থেকে সরে এসে আরও কঠিন বাস্তবভিত্তি পায়। কারণ যুদ্ধের সর্ববিনাশী মারণাস্ত্র তখন বাংলাদেশের বুকের গভীরে নানার্দিক থেকে আঘাত হানছে। এমন প্রচণ্ড অভিজ্ঞতার মধ্যে কল্লোলীয় চেতনা যে আরও পরিষ্কার হবে এ সময়ে, আবও ঘনিষ্ঠ কার্ধ-কারণ সম্পর্কে স্থিত হবে, তা-ই ম্বাভাৰিক।
আমর! আগের অধ্যায়ে বলেছি, এমন যুদ্ধের ভিত্তি রাজনীতি-ভাবনার দিক থেকে এক জটিল অবস্থার ওপর নির্ভরশীল ছিল। একদিকে পুরনে। সাম্রাজাবাদ ও তার নৰ প্রকাশিত রূপ ফ্যাসিবাদ, অন্যদিকে উদার গপতস্ত্রে বিশ্বাসী মানুষের স্ব: চেতনা, এ সবের মধ্যে নব শিশুর মত আবির্ভূত সাম্যবাদ--এই তিনটি তাত্বিক মতা- দর্শের সংঘাত-সংঘর্য তখন যুদ্ধকে গতিপ্রাণ করে । আর আমাদের দেশের লেখক- বুদ্ধিজীবী মান্য এই রাজনৈতিক মতাদর্শ থেকে কথাসাহিত্যের উপযোগী বিষয়গুলি ছেঁকে গ্রহণ করতে গিয়ে নি:সন্দেছে যুদ্ধ-চিন্তা, কার্ষকারণ সম্পর্ক-ভাবনাকে বড করে তুলেছে । কল্পোলের লেখকদের আবেগ-উদ্দীপনা এই সময়ের রাজনীতি লচেতণায একট। অন্য রূপ পেতে আগ্রহী । অর্থাৎ যুদ্ধ-সমকালের লেখকর1 সচৈতনভাবে রাজনীতিকে কথাসাহিত্যের অস্তভূক্ত করেছেন।
যুদ্ধ সমকালের রাজনীতির ছুই প্রধান রূপ- আবেগমধিত বৃটিশ-বিরোধী জাতীয়রপ, আর সোভিয়েট রাশিয়। থেকে আগত মার্কপীয় ব্যাখ্যাব বূপ। ধনত্ত ও দেশীয় সামস্ততন্ত্রের বিরোধ, সেইসঙ্গে সামন্ততঙ্ত্রের ক্রম-অবলোপ ও নাধারণ মানুষের
€
মধ্যে তার আত্মগোপন ঘটে যুদ্ধ সমকালে। দেই রূপে অর্থাৎ জনগণের চেতনায় তা সম্পক্ত থেকে একপময়ে ধনতন্ত্রের বিরুদ্ধেই তা আবার জেহাদ ঘোষণা করে। খন তার নাম হয় সর্বহারাতন্ত্র। ধনতম্, সমাকাতন্ত্র ও লর্বহারাতন্ত্র_-এ সবের একটি যুক্তি- নি্ট ব্যাখ্যা ও বিকাশের রূপ তুলে ধরেন মার্কস । সেই নবীন ব্যাখ্যার অন্থুসারী হন কেবল যুদ্ধ সমকালেই বাংলা কথাদাহিত্য ধারায় আবির্ভূত একাধিক লেখক।
কল্লোল যুগের লেখকদের যৌনতা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা, নর-নারীর দেহগত সম্পর্ক- ভাবনার এঁতিহ্সম্মত রূপের বিরোধিতা করার প্রয়াম ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নতুন তাৎপর্ধ পেতে থাকে । তা-ই স্বাভ্যবিক, কারণ খাগ্ঠমংকট, মন্বপ্তর, শহ্রকেন্দ্রিক মধ্য- বিত্ব-মনস্কতায় নরনারীর সম্পর্ক ও মুল্াবোধে বিরাট ফাটল ধরেছে প্রতাক্ষভাবেই। ঈশ্বর বিশ্বাস, ধর্মাধর্ম চেতনার মূলে আঘাত পড়েছে দবচেয়ে বেশী । তাই প্রেমের মম্পূর্ণ নগ্ন দেহতিত্তিক ব্যাখ্যা, রক্তমাংসের সম্পকিত উপস্থাপনারীতি সমর্থন পেয়েছে যুদ্ধ সমকালীন মন্বম্তর, অবক্ষয়ে পরু'দন্ত বাংলাদেশের পরিবেশে । যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ রূপ, রাজনীতি, যৌনতা, প্রেম, মধ্যবিত্তের অবক্ষয়, মন্বন্তর, গণবিক্ষোভ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মুনাফাখোর-মজ্ুতধারদের নবরূপে আত্মপ্রকাশ, বিদায়ী সামস্ততঙ্ত ও ধনতন্ত্রে বিরোধ, অগহায় প্রার্কৃতিক ছূর্ধযোগ, লক্ষ লক্ষ মানুষের অমানবিক মৃত্যুর মিছিল, ক্ষধিত মান্থুষের গ্রাম ছেডে কলকাতা আসায় নবহ্ষ্ট বাস্তহার! স্প্রদায়__ এদের একেব পর এক পরিচয়ের মধা দিষেই বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হয়ে ছয় বছরের ব্যবধানে শেষ হয়ে যায়।
তাই বাংল! কথানাহিত্যে এ সবেরই যথাযথ বূপচিত্রণে তৎপর থেকেছেন লেখকর।। আমব। এর ফলে লক্ষ্য করেছি এই সমষে হ্ষ্ট কথাসাহিত্যে বিষয়ের বৈচিত্রা। এই বিচিন্ত বিষয় গুলিকে অনেকাংশে কথালাহিত্যে নতুন নতুন প্রবণতা হিসেবেই লক্ষ্য করেছি। আর একটি কথ। ম্মরণীয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরন্তের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের লেখকর। কথাসাহিত্যে প্রতাক্ষভাবে যুদ্ধ নিয়ে ভাবিত হন নি। এমন কি যুদ্ধের মধ্যাহ্নকাল আসার অব্যবহি »পূর্ব প্রায় ছু'বছরের মধ্যেও কথাসাহিত্যে ভার যথাযথ গ্রহণ ঘটেনি। কারণ যুদ্ধ তখন দূর ইউরোপে ও ভারতের বাইরে কিছু ভূখণ্ডে। এর ফলে ১৯৩৯ সালের ১লা দেপ্টে্বর থেকে ১৯৪৯ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যস্ত অনেক লেখক যুদ্ধ পূর্ব ভাবনাকে একমান্র বিষয় করেই কথাসাহিত্য রচনা! করে গেছেন।
এই স্ুত্রেই আমাদের বক্তবা, যুদ্ধ প্রভাব্তি চিন্তা-চেতনায় উদ্দীপ্ত কধাসাহিত্য ছাড়াও বেশ কিছু গতানগগত্তিক সাহিত্য বচনারও পরিচয় আছে এই মময়ে। অবস্তই ঘে কোন দেশের সংকটময় কালটিতে কিছু সাধারণ লেখক থাকেনই, ধার! কালচেতনায়
€৩
আদে তটম্থ না হয়ে নিজেদের খেয়ালখুশিমত সাহিত্য রচন। করে যান। আমরা সে রকম লেখক ও লেখকদের পরিচয় স্বতন্ত্র একটি অধ্যায়ে রাখছি । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে কল্পোলের কালে ধার। ছিলেন কিশোর ও যুবক লেখক, তারাও যুদ্ধ সমকালে কিছু যুদ্ধ- প্রতিক্রিয়।-বিচ্ছিন্ন সাহিত্য স্থষ্টি করে গেছেন। সেগুলি রচনার কালগত যৌক্তিকত৷ আলোচনার লঙ্গে সঙ্গে তাদের উল্লেখও রাখছি। অর্থাৎ যুদ্ধসমকালে রচিত ও ঠিক এই সময়সীমার মধ্যে প্রকাশিত-_ছুই ধারার রচনার মধ্যকার একটি গতাহ্ছগতিক বিষয় ধারার পরিচয় তুলে ধরাই আমাদেব উদ্দেস্ঠয
যুদ্ধ-সমকালের কথাসাহিত্যে বিষয়ের দিক থেকে বিভিন্ন প্রবণতাকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার আগে আর একটি প্রসঙ্গ নিশ্চয়ই থেকে যাষ আমাদের আলোচনার মধ্যে-- তা হল রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গ । ববীন্দ্রনাথের মহাপ্রয়াণ ঘটে ১৯৪১ সালে । ১৯৩৯ সাল থেকে তীর মৃত্যুর পূর্ব পর্বন্ত ববীন্দ্রনাথ একাধিক কবিতায় তাব পরিণামী প্রতিভার অসাধারণ স্বাক্ষর রেখে গেছেন, প্রবন্ধাদিতেও সেই পরিচয় সমানভাবে প্রকাশিত । রবীন্দ্রনাথ চিরকালই মানবতা -বিধ্বংসী যুদ্ধের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন। তীর তীব্র তীক্ষ অন্ুভূতি-প্রবণ মনে যুদ্ব-ঘটন। নানাভাবে প্রতিক্রিয়ার সার্ট করেছে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কথা ভেবেই তিনি লিখেছেন “সর্বনেশের” মত কবিতা, “নর্ভাতার সংকট, ( ১লা বৈশাখ, ১৩৪৮ )-এর মত প্রবন্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রবীণ, প্রাজধদ্ধ বয়সান্তিক জীবন-চেতনায় স্থিত্ধী বিশ্বকবিকে দারুণভাবে আঘাত ববে। প্রতিভার পবিণামী চেতনায় সেই আঘাতের প্রতিফলন ঘটেছে কবিতাষ, প্রবন্ধে, জন্মদিনের বক্তৃতায়, বহু চিঠিপত্রে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পর থেকে তব মৃত্া-কাল-এর মধাবর্তী সময়ের মধ্যে বিশ্বকবি মাত্র তিনটি গল্প রচনা করে গেছেন--যেগুলি তার “চ্িনসঙ্গী” গল্পগ্রন্থে ( সম্প্রতি প্রকাশিত গল্পগুচ্ছ ৪র্থ খণ্ডে) সংকলিত হয়েছে । আমাদের আলোচ্য পর্বের মধ্যে সেগুলি রচিত ও প্রকাশিত হয়েছে বলেই রবীন্দ্রনাথকে সেই তিনটি গল্পের জে আলোচনায় রাখব।
বর্তমান অধ্যায়টি শেষ করার আগে পরবতা অধ্যায়গুলির বিষষ-নির্ভর বিভাগীয় লক্ষ্য এবং বৈশিষ্ট্য, সেই সঙ্গে বাংল। কথাসাহিত্য শাখার শিল্পরীতিগত অস্থিরতা দ্বিতীয় বিশ্বধুদ্ধ-সমকালের যুদ্ধ প্রতিক্রিয়াজাত বিভিন্ন প্রবণতার ল্জ্জে এখানে রাখছি ।
(১) বাংল! কথাসাছিত্যে গতাম্থগতিক বিষয় ও ভাবধারার অন্ুম্থতি | বার! প্রধানত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকাল্লেই আবির্ভূত, প্রতিষ্রুতি-সম্পন্ ও সাধারণ--ছুই ধারার লেখকের প্রাসঙ্গিক কথাসাহিত্য এই পর্বে আলোচিত হবে । (২) বাংলা কথাসাহিত্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চিত্র উপস্থাপনার প্রয়াস আমাদের আর একটি লক্ষ্য।
গোপাল হালদার, নবেন্দু ঘোষ, স্থবোধ ঘোষ, তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ বসু, বরেন বন্থ, সপ্রয় ভট্টাচার্ধের মত একাধিক কথাঁকারের গল্প ও উপন্তাস আমাদেব আলোচ্য । (৩) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মন্বন্তর-প্রতিক্রিয়ার সফল ক্ষেত্র বাংলা কথা- সাহিত্য | তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, নবেদদু ঘোষ, প্রবোধকুমার সান্যাল, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, সরোজ রায়চৌধুরী, সুবোধ ঘোষ রমেশচন্দ্র সেন, নারায়ণ গঙ্গোপাধায, গোপাল হালদার, নরেন্দ্রনাথ মিত্র প্রমুখ আমাদের এই পর্যায়ে আলোচ্য লেখক। (৪) বাঁপক গণবিক্ষোভের উজ্জল ভিত্তিভূমি বাংল। কথানাহিত্য । গোপাল হালদার, স্থবোধ ঘোষ, মনোজ বস্তু প্রমুখের রচনা! এই পর্যায়ে আলোচনার লক্ষ্য । (8) বাংল! কথাসাহিত্যে নবোডূত ধনিকশ্রেণী, সামাজিক শ্রেণী-বৈষম্য এবং অস্থিরতা ও অবক্ষয়ের চিত্র। তারাশংকরঃ গোপাল হালদার, জ্যোতির্যঘ রায়, রমেশচন্দ্র সেন, প্রবোধকুমাব সান্তাল, অচিস্তাকুমার সেনগুপ্ত, প্রেমের মির, ধূর্তটি প্রপাদ মুখোপাধ্যায, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবোধ ঘোষ, নারায়ণ গঙ্গো- পাধ্যায়, সোমেশ চন্দ প্রয়ুখের নাম এই ধারায় উল্লেখ্য । €৬) বাংলা কথাসাহিত্যে প্রেমভাবনা, নণ্নাীব দেহ-সর্বস্বত1 ও উৎকেন্দ্রিক হৃদয়ভাবের জীবনচিত্র । ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ- সমকালে সমস্ত কথাসাহিত্িকই কমবেশী এই বিষয়ে সমান শিল্প-সচেতনার স্বাক্ষর রেখেছেন তাদের গল্প-উপন্যাসে । (৭) বাংল! কথালাহিত্যর বিষিয়ে বিবিধ আম্বাদ বৈচিন্রা। সমকালের ছোটগল্প ও উপন্যাসের বিষয় অবলম্বন ও চরিত্র-সথপ্টিগত অভিনব দিক, কথাসাহিত্যে অলৌকিক রস, হাশ্যরস ইত্যাদির ধারাই এই পর্যায়ে আমাদের লক্ষ্য । বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়, প্রমথনাথ বিশী, শিবরাম চক্রবর্তী, অচিস্তাকূমার সেনগুপ্ত, রমাপদ চৌধুরী, বুদ্ধদেব বন, বনফুল এইসব লেখকের নাম প্রসঙ্গত ম্মরণীয। (৮) বাংলা কথাসাহিত্যেন অঙ্গপজা-_রচনারীতি, গগ্রীতি ও তাবাদর্শ আলোচনা! এই অধ্যাযের একমাজ্র লক্ষ্য ।
যুদ্ধ সমকালে বাংল! কথাসাহিত্যে নানান বিপরীতমুখী শ্লোতের সমাহার ঘটেছে । যেমন এই সময়ের বিপ্লবী, জাতীয় রাজনৈতিক ছোটবড দূলগুলিব মধ্যে এবং পুরনো-নতুন মওবাদের অনুসারী মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, মতাদর্শগত সংঘাতের রূপ মজ্জাগত ছিল, তেমনি কথাসাহিত্যেও ছিল বিষয ও শিল্পরীতির বিভ্রান্তি, অস্থিত- চিত্ততার নিগুঢ প্রয়োগ । আমরা প্রধানত ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় তার স্বরূপই তুলে ধরবো পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে। ঘুদ্ধ-সমকালীন রাজনৈতিক -সামাঞজিক পরিবেশ ও অবস্থা এবং কথাসাহিত্যধারাই উত্তরকালের সর্বছিকের গতি-প্রকুতির একক্ান্ত নিয়ামক।
উল্লেখপঞ্জী ও টীক।
১ 'মপ্যতায় সংকট' জন্মোত্নবের ভাষণ £ ১লা বৈশাখ, ১৩৪৮ রবীন্দ্রনাথ
২, ৩ স্বিতীর মহাবুদ্ধের ইতিহাস ১ম খণ্ড প্রথম পর্ব-নবম অধ্যা বিবেকাননা মুখোপাধ্যার প্ ৮৭,৮৭
৪ স্বাধীনত! সংগ্রামে বাংল! ( ফেব্রুয়ারী, ১৯৭৮ ) চুর্দিশ অধ্যায় নরহরি কবিরাজ পৃ ২১৭
৫ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ইতিছান প্রথম পর্ব : পঞ্চম অধ্যায় বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় পৃ ৪৯
৬, ৭ স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংল। ( ফেব্রুয়ারী, ১৯৭৮ ) চতুর্দশ অধ্যা নরহরি কবিরাজ পৃ ২১৬, ২২১
৮ *সামফিকী' ভারতবর্ষ ২৭ বর্ষ ১ম খণ্ড ৪র্থ সংখ্যা আশ্বিন, ১৩৪৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯ পৃ ৬৩৭-৬৩৮
» দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ইতিহাস ছিতীয় খণ্ড ৬ষ্ঠ পর্ব এয়োদশ অধ্যায় বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যার পৃ ৭৮৮
১* স্গাধীনত! সংগ্রামে বাংলা নরহরি কবিরাজ চতুর্দশ অধ্যায় “ঘ্বিভীর মহাযুদ্ধ ও ভারতের জাতীয় আন্দোলন" প্ ২১৮
১১-১৫ বাংলাদেশের ইতিহাস (ঃ্্থ খণ্ড) ড" রমেশচন্্র মজুমদার প. ৩৬৬, গ্রয়োদশ অধ্যায় প্. ৪৬৫, ৪৬৫, ৩৫৮১ ৩৫৯
১৬-১৮ দ্বিতীয় মহাবুদ্ধের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড) বিবেকানন্য মুখোপাধ্যার যষ্ঠ পর্ধ আয়োদশ জধাযয় প. ৭৮৮, ৭৮৯, ৭৯৬
১৯ শ্বাধীনত| সংখ্কামে বাংল! নরহরি কবিয়াজ চতুর্দশ অধ্যায় প. ২২৫-২২৬
২* শনিবারের চি) সম্পাদক-সঙ্জনীকান্ত দাদ ১৪শ বর্ষ অষ্টম সংখা! জৈষ্ঠ ১৩৪৯ সংবাদ সাহিত্য গা. ৪৪১-৪৪৪
২১ ভারতবর্ষ ৩ বর্ধ ৩য় সংখ্য। ভাঞ্জ, ১৩৪৯ প. ২৯৪-২৯৫
২২, ২৩ দ্বিতীয় মহাধুদ্ধের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড) বিবেকাননা মুখোপাধ্যায় ষ্ঠ পর দ্বাদশ অধ্যার
প ৭শ*৫ ৭৮৬
ততীস্র অধ্যাস্ত গতানুগতিক বিষয় ও ভাবধারার অনুস্থতি
এক
দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষ তথ] বাংলাদেশ সম্যকভাবে অন্ুতৰ করে যে সে একটি সাত্রাজ্যবাদী শাসনের অন্তর্ভুক্ত গুপনিবেশিক বাষ্ট্র। এই অন্ভৰ নিশ্চয়ই বিগত ছুই-শতকের-__যে সময় থেকে বূটিশ শাসন স্থায়ীভাবে ভারতের বুকে চেপে বসে--সেই সময় থেকেই তীব্র থেকে তীব্রতর হয় বটে, তবে ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ভারতকে, সমস্ত প্রতিবাদ সত্বেও যুদ্ধরত রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করায় সেই তীব্রতা চরম অবস্থায় চলে আসে। ভারত তথা বাংলাদেশে যে একাধিক ঘটনায় একের পর এক এ্রতিহাসিক-রাজনৈতিক-সামাজিক ও অর্থ নৈতিক পরিবর্তন ঘটে, তারই শুতে আসে সাহিত্য ভাবনার আমূল রূপান্তর । সেই হুল বাংল! কথা-সাহিত্যের অক্সলিপরীক্ষাব কালের একমাত্র সচক।
বাংলা কথাপাহিত্যে এই পরিব্তন একের পর এক নতুন নতুন প্রবণত! নিয়ে আসে। সমুদ্র তীরে আকম্মিক ভেসে আস! এক একটি বড বড় ঢেউ যেমন পাড ভেঙে এক একটি কঠিন রেখ একে দিয়ে যায়, তেমনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ ঢেউ বাংলা কথা- সাতিতোর প্রবাহে এক একটি নির্দিষ্ট ধাপ সৃষ্টি কবে দেয়। সেই হৃষ্টিগুলি বিশ্বযুদ্ধেরই লণ]ট লিখন। 'এঈ পক্ষণীঘ পবিব্ঙনের সময় একজন ন্জনশীল কথাসাহিত্যিক যথে৪্ সচেতন হলেও সমস্ত সমকালীন ঘটনার প্রতিচিত্রণে রচনাকে সমৃদ্ধ করতে পাবেন না। এই বক্তব্যের স্বপক্ষে এক সমালেচকের মন্তব্য যথার্থ বলে মনে করি 4৯ 96206 আতা 08100061060 08০6 ৬10) 016 0110 9 106 18, 95 জাত 108৩ 8560) 21 010-0991)101)60 0917)612) 11664119860 ৮5 0916001]5 (000895৫, 870 ০808015 ০1 £15106 20. 63:001516৩ 2100 01181081 10200016019 ৪৮০)৩০% সাঃ) 1018 28066---196 15 1001 2 0136-0910518) 8100 2 19 1000 176 110 ছা11] 016560% 001750 65509 00 005 6965 8100 52৫9 ০01 (1)5 %০210.+১
সচেতন প্রতিশ্রুতি-সম্পন্ন কথাসাহিত্যিক অবশ্বই দেখেন সমালোচক-কধিত ৪1) ও200015105 800 0122079] 010101৩ 01 50৮)5০% 9/100011) 1105 18085, | কিন্ত ঠিক
€৭
এমন বদলের সময়ে বহু লেখক আছেন ধারা আদৌ দেটুকুও করেন না, বা করার মত শক্তিধর হন না । তীরা হুন গতান্গতিক কথাসাছিত্য ধারার ধারক, বাহক, পোষক ও রষ্টা । ঘে পরিবর্তন সম্ভব হতে চলছে যুগের কারণে, বিশ্বযুদ্ধের মত এক ব্যাপক বিশ্বগ্রাসী বৃহত্তম ঘটনার 'আভিঘাতে, নেই পরিবর্তনকে শিল্পলম্মতভাবে গ্রহণ করার ক্ষমত। তাদের থাকে না। তীর সমস্ত ঘটনা! দেখেন, তার ভাগী হন সমকালের পরিবেশে, কিন্তু নাহিত্যম্থরির সময় মে সব থেকে সম্পূর্ণ বিবিস্ত থেকেই চিস্তাকে ভাষায় লিপিবন্ধ করেন। প্রথমত শিল্প-ক্ষমতার সীমা বন্ধতা, দ্বিতীয়ত ঘটনাকে শিল্পীত করার যত যোগ্যতা- হীনতাই তাদ্বের গতানুগতিক ধারার অন্ুপন্থী কবে তোলে। তাবা অবশ্ই পাঠক পান, কিন্তু সে পাঠকও তাদের নিজেদের মত জাগতিক বাস্তব প্রয়োজনের লমস্ত কিছুর মধ্যে বেঁচে থেকে এক অদ্ভূত বিলাসিতায় “শুধু দিনযাপনের শুধু প্রাণধারণের গ্লানি' থেকে একটু স্বতন্ত্র স্বাদ গ্রহণেই তৃণ্ত থাকেন। য। কিছু প্রচলিত, পূর্ববর্তী ধ্যান-ধারণার একাস্ত অনুগত, বশংব্দ--তা। গ্রহণেই তার। সিদ্ধকাম। তাই এদের ভরসাম়ু প্রতি কালেই একদল জনপ্রিয় কথা-সাহিত্যিক থাকেন ধারা নিজেদের জগতটুকুর বাইরে যাওয়া ৰানন। সম্পূর্ণ ত্যাগ করেই সাহিত্য রচনায় নিবিষ্ট হতে ভালবাসেন । 41176 130920181 00০115৫০001 011010126 ০01 01981191009. 71116 ৫০ 10091 10০01 ৪11 17010100 ৪10 2০০5১650 ০০11০ 0 566 91116010110 190105 85 901611070 011061186901) 85 1 40968 01 1010. 11069 ৪০০০ 0106 06611065 2180 ০৩1166 01 106 01011)917 01001101921 10081) 2100. 5/01121),,২ এই সমস্ত জনপ্রিয় সাহিত্যিক বেশীর ভাগই গতাহুগতিক ধারাকে চিহ্ছিত করেন। পাঠক জনতার (16915 00110, ) তুট্টি সাধন কবতে বসে থে বিষয় তারা আকডে থাকেন তার সঙ্গে বিশেষ একটি সময়ের লক্ষণীয় পরিবর্তনের, অবধারিত সমাজ-ন্যায়ের বিশিষ্ট রূপাস্তরগুজির কোন যোগই থাকে না, থাকে না সময়কে যথাযথভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবার অমোঘ নির্দেশ, সহজ সত্যপন্ধ প্রতিশ্রুতি | সাহিত্যের ক্ষেজ্জে গতান্গগত্তিক ভাবনার মনোরম গদ্যে অন্থহতি জনপ্রিয়তা আনে, আর এই জনপ্রিয়তার জন্য হট উপন্তাসগুলি--'2০0 ৪০০৫ ৮০০০৪, 11056 %1181119 31971765701) 210 1177৩ ৪০০০০, 0 70090: 0০9০919, 010 %10101) 076 ০০91001 ০01116 9189 16060160 001) 0১611 26580615, ৩ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই বাংলাদেশে একদল লেখক ছিলেন ধার। নিজেদের মনের জগতটুকু নিয়েই কথাসাছিত্যে বেচে থাকতে অত্যন্ত, উপন্্যম ও ছোটগল্পের বাধ! ছকে, বিষয়ের অতি-পরিচিত নিয়মান্গুগ অত্যন্ততায় পূর্ণ-পরিতৃপ্ত, আত্মন্খী । ছিতীয়
€ ৮
বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পর আমাদের আলোচ্য সময়সীমায় তারা এবং নতুন কিছু কথাসাহিত্যিক সেই জগতে থেকেই স্থির মধ্যে নিমজ্জিত থেকেছেন শ্বকপোলকল্লিত মানসিক আরাম, বিলাস, প্রশান্তিতে। তারা মূলত মানদিকতায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লেখক এবং এই শ্রেণীর লেখক বিশ শতকেব গোড। থেকেই এমন একজাতীয় উপন্তাসধারার স্থায়ী প্রবাহ বজায় বাখতে সক্ষম হন, য। - 13001181160 006 11056110869103 01 2. £:৩৪ 18819 70601016 তব!) 10০ ডা1)10) (116৩ 10000 71999910107
আমবা এই প্রপঙ্গে দেইসব লেখকদের কথাই ম্মরণ করছি, ধার যুদ্ধ-সমকালে প্রচুর লিখেও সহবদয় শিক্ষিত পাঠকদের প্রাগ্রসর কোন চিন্তায় দীপিত করতে পাবেন নি, বাংল কথাসাহিত্যকে নিয়ে যেতে পারেন নি কোন নতুন জায়গায়, কোন নতুন প্রাণের উজ্জীবনে সহায়ক সবুজ জমিতে -যেখান থেকে উত্তরস্থুরী লেখকরা সুস্থ প্রেরণা, প্রশ্ন ও প্রাণ পেতে পারেন । ড/11ত15 ৬18০ 061 08015 10 ০0105 €0 121728 আআ?) 00৩ 0114 21 12186 (514 10 16058 1000 075 01019 ০0017067 606৩ ০210 66] [689019]% 8016 ০--**0১৩ (60৫61109০01 10115 (৩150160)-950001 101041৩ 01895 %/11061" 6101161 (0 1010 11] 011 11100561120 6০০106 20111615 1001560 1) 1215 0%/10,15600569 ০01 619৩ €০ ০010116 10107861610 20 6১00660119919 289110৬7 50110 11) 17100 10৩ 1080106179 0 06] ৪1. 1)0178৩.১৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভাবনীয পরম্পর বিপরীতমুখী ঘটনার ভয়াল উতরোলের মধ্যে এ'র। একটি নজন্ব জগত তৈরী করে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লেখক ছিসেবে। তা-ই হল তীদের '0০66010815 081170৬৭011, কোন ওপনিবেশিক রাষ্টেরে পক্ষে যখনি অন্য একটি উন্নত বাষ্্র শাসক হয়ে দেখা দেয়, তখন সেই শাসক-রাষ্ট্রের উন্নত সমাজ- ব্যবস্থা অন্ন্ূত ওঁপনিবেশিক বাষ্ট্রের সমাজ-ব্যবস্থাকে এমনভাবে নেত্বত্ব দেয়, যার ফলে একে একে শোষণ, রক্ষণ, পরিচালন ও শেষে অস্বীকার করার মত অবস্থা স্বাভাবিক- ভাবেই তৈরী হযে যায় । এমন বক্তব্য রেখেছেন মহিলা অধ্যাপক-সমালোচক 1০1 1191)০০ তার একটি বিখ্যাত প্রবন্ধ গ্রন্থে, 7105 801009801) 01 09৩ (5০010102119 05৬০101০0 50০16(169 09 (60101010811 0006৮61016৫ 17958 ০60 915; 10 50101, (861 00 0:00501, 0000 (0 889190, 810 (135) 6০ 18001৩.৮৬ ঘুদ্ধ-লমকালে যখন বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবে ্বপনিবেশিক রাষ্টরশাসনে ও শোবণে পধু'দস্ক, তখন এক দল কথাসাহিতািক যে আয়াসহীনভাবে মধ্যবিত্ত মানমিকতায় গমীর-সন্ধষ্ট থেকে কথ৷ সাহিত্যের সুপ বুদ্ধি করবেন, তা ত্াঁদেখ ও্পনিবেশিক স্বভাব ও মানমিকতার পক্ষে '্বাভীবিক ঘটন]।
৪
যুদ্ধ-সম্কালে যে কোন যুদ্ধ-আক্রান্ত এমন ব্রাষ্ট্রে জনমানস প্রধানত ছু'ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদল শোধিত, আন্ একদল শোষক। শোধিতদের মধ্যে নিম্নবিত্ত, গরীব অথচ শিক্ষিতরা আছে। শোষকদের মধো শুধুমাত্র বাষ্ট্রপরিচালক-গোরষ্ঠী নয, সেই সঙ্গে অর্থের কৌলীন্যে সমাজের ওপব-তলাষ বসবাসকারী মানুষও আছে । হার! নিয়বিত্ত শিক্ষিত, গরীব-শিক্ষিত তাবা কগাশাহিত্য-পাঠকে গ্রহণ কবে নিছক আনন্দ উপভোগেব মাধাম হিসেবেই । সেইভাবেই তাদের মানস গঠন, নির্মাণ করা হয় বুর্জোয়া সমাজে । সমাজের ওপরতলার বিলাসী আত্মতৃপ্ত স্বার্থপব ভোগী সখী মানুষের কাছেও যুদ্ব-সমকালে বিলাসের সাহিত্যই কাম্য হয। এইভাবে 'পাঠক-জনতার মধ্যে” এএভারেজ পাঠক সংখ্যায় দ্বিগুণ হযে যায়। আর, সেই কারণেই, আঠারে৷ শতকের শেষদিকেব ইংরেজী জনপ্রিষ উপন্যাস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিষে এক বিদেশী সমালোচক যে মুল্যবান একটি উক্তি কয়েছেন, আমরা আমাদের এই বক্তব্য প্রতিষ্ঠীয তার মন্তব্যটিকে একমাজ্র প্রামাণ্য হিসেবে মেনে নিতে ইচ্ছুক--4...]016 05 & 1218 ০০৫১৬ ০1 9০0০1 ড/107101) 16৫ 1115 2006005 ০01 005 155011)6 0100110, 1606০15৫ 2180 91121960016] 10196118010109) 210 5010011195 0:0৮5 0106 1000 67000111790 2100 0165261%6 80918001611 11115 11900 06 56061911917 ০ 169:06159 (০০01 00611 [01995016.1
আমাদের দেশে দেখা গেছে, যুদ্ধ-সমকালের লেখকরা! খনি সাধারণ পাঠককে আনন্দ দেওয়াব জন্য এবং তাদের আনন্দে তৃপ্ত থাকার জন্য উপন্যাস ও ছোটগল্প রচন! করেছেন, তখনি তা হযেছে শিল্পের দিক থেকে ছোট মাপের হি । ৮06 0 01009108015 2০01 006 100০] 816 109 00100181715 25 2. ও ০04 610(610911)17)6106 200 165 100110116 85 & 0ণো) 01 81৮.৮ বিশুদ্ধ শিল্পের মাপে যথেই্ খাটো হওয়ার জন্যই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালের গতানুগতিক ও অনুল্পেখ্য বেশ কিছু কথালাহিত্যিকদের নাম ও কিছু গ্রন্থের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেই তাদের প্রবণতা বোঝাব চেষ্টা কর! ঘাক আপাতত ।
অবশ্তই এন গতাঙ্থগতিক ধার। চলতে চলতেই তারই প্রবাহের মধ্যে দেখ! দিয়েছেন এমন কিছু গ্রতিশ্রুতি-সম্পন্ন কথাসাহিত্যিক ধার! সংখ্যায় অল্প হলেও পরীক্ষা করেছেন উপন্তাস ও ছোটগল্পের সমকালীন বিষয় নির্বাচনে, রচনার বিশেষ আঙ্গিক গ্রহণে এবং যুদ্বসম্কালকে নীলকণ্ঠের মত ধারণ করে বড বাস্তবতায় তার চিত্র প্রাগ্রমর প্রতি- চিন্রণে। তাদের রচনা! ধরেই আমাদের পরবর্তী অধ্যায়গুলির বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
ও
যুদ্ধের সমকালে বাংল! কথা সাহিত্যিকদের মধ্যে ধাদের গতানুগতিক লেখক ধারায় রাখতে চাই, তারা বস্তত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরবর্তী সময় থেকেই একে একে সাহিত্যের আমর জুডে বসেন। অল্প ক্ষমতা-সম্পন্ন শরৎচন্দ্র-অন্থকারী ও প্রভাবিত লেখকগোী, কল্পোলের কালের অপ্রধান কথাসাহিত্যিককুল এই আলরের প্রধান কুশীলব। অক্ষরজ্ঞান-সম্পন্ন পাঠকের সংখ্য। ভ্রুত বুদ্ধিব সঙ্গে সঙ্গে নিটোল গল্প পডে নিছক আনন্দটুকু পাগয়ার বাসনাও বাডে। তাই আমার্দের দেশের একজন প্রবীণ, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার ও প্রাজ্ঞ সমালোচক যথার্থই মন্তব্য করেছেন, দ্বিতীয় দশকের শেষের দিক হইতে অর্থাৎ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, বিবাহের নব্দম্পতীকে বই উপহার দেওয়ার রেওযাজ শুরু হয়। এই চাহিপার ফলে অল্পমূল্যের অথচ-ভালো ছাপা ও বাধাই, দুই একটি ছবিওযালা, উপযোগী নামধুক্ত উপন্যাসের উৎপাদন ও বিক্রয় বেশ বাড়িয়। গিয়াছিল। ভালো? মাঝাব, নিরেশ--সব রকমের লেখকই প্রীতি-উপহার উপন্যাস রচনায অবতীর্ণ হইয়াছিলেন। কোন কোন লেখক বছরে চার পাচখানি করিয়! উপন্তাস অথবা গল্লের বই বাহির করিতেন 1৯ ডঃ সেনের এই মন্তব্য সর্বাংশে গ্রহণযোগ্য । তবে হান্ক! ধরণের বাজার চাহিদা মেটানোর সঙ্গে যুদ্বসমকাল পর্যন্ত এই ধরণের গ্রস্থার্দি রচনার অন্ত পামাজিক কারণও ছিল। সমস্ত বাস্তব দুঃখ-মন্তরণা থেকে পরিয়ে এনে মান্ষকে কিছু সময় ভোলানোর চেষ্টা, লেখকদের পলায়ন” মনোবৃত্তি, মধাবিস্ত পাঠক-জনতার মনকে নিজ নিজ ক্ষমতা মত লালন কবে লেখকদের চটকদ্দারি মুনাফা কথার বাসনা, গাল-গল্প, সন্ত। প্রেমের কথায় পাঠকদের জন্্রালু কাব মত উপনিবেশিক মধ্যবিস্ত মানপিকতা_এ সবও এমন রচনাধারা ব্জাঘ রাখার পিছনে কখনে। প্রতাক্ষ, কখনো বা পরোক্ষভাবে কাজ কবেছে। অবস্থাই এইসব গ্রন্থের লেখকদেব পাঠক-উপযোগী বাংল। গদ্য লেখাব এবং বানানো গল্প বলার ক্ষমতা ছিল বলেই ডঃ সেন একটি যথার্থ মন্তব্য কবেছেন,-“সাময়িক প্রয়োজনেব ফসল হইলেও এই সবই একেবাবে নিগুঁণ নয ।১০
গতাহগতিক 'ধাধাঘ লেখকর1 তাদেব গল্প-উপন্যাস দিয়ে যুদ্ব-সমকালের পাঠক- জনতার রুদ্ধশ্বাস মনের অবস্থা কিছুটা "২০116? দানের কাজ করেছেন। লেখার নিটোল কাহিনী, রোমার্টিক ও মেলোড়রামাটিক প্রেমকথা, বানানো আবেগাত্মক সের্টিমেপ্টাল করুণ রসপূর্ণ ছুঃখকথা, সাধারণের অভাব-অভিযোগকে হ্থন্দরভাবে এবং মির্টি গম্ভে ও ভাষায় বলতে পেরেছেন বলেই “একেবারে নিগুণ, না হয়ে
লেখাগুলি “খ্যাভারেজ' পাঠকদের মর্মে গিয়ে আসন গ্রহণ করে যুদ্ধ-সম্কালীন পরিবেশে ।
৬২১"
ছুই
সাধারণ মাধুলি প্রেমের কাহিনী সরস ভাষায় ও মনোরম করে বলে পাঠকদের মন সহজেই জয় করা যায়। খ্যাতকীতি লেখকর! প্রেমের কথায় কিছু স্বাত্ত্রা চিহ্নিত বৈশিষ্ট্য রাখতে সমর্থ হন। অন্যত্র তীদের প্রসঙ্গ আলোচ্য হবে। গতান্থগতিক ধারার কথাসাহিত্যে প্রেমের একেবারেই মায়ুলি নিটোল গল্প-রসেই যেসব লেখক ব্যস্ত থেকেছেন, তারাই আপাতত এখানে আলোচ্য। অবশ্যই গতান্ুগতিকতার মধ্যেও কিছু অল্পক্ষমতা-সম্পন্ন লেখক কোন কোন গ্রন্থে গতানুগতিক বিষয় বাদ দিয়ে বিষয়ে বৈচিত্র্য আনতে সচেষ্ট থেকেছেন। সেই বিষয়-বৈচিত্র্য সমকালের ঘটনা, পরিবেশ ইত্যাদির অনুগত হতে দেখা ঘায় কোন কোন দিক থেকে।
নীরেজ্্নাথ রায় একালের একজন বিশিষ্ট অত্যস্ত মননশীল প্রবন্ধকার। তিনি যুদ্বসমকালে রচন! করেছেন '“দাবী' নামের বড় গল্পের আকারে ছোট উপন্তাস, বা নভেলেট । উপন্যাসটির মূল বিষয় গতানুগতিক প্রেম এবং সেই প্রেম হান্ধ1! রোমাম্সরসে সিক্ত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লেখকেব সমাজ-ভাবনা ও মনন্তত্ব বিশ্লেষণের স্বাভাবিক ক্ষমতা । কিন্তু উপন্যাসটির নায়ক-নায়িকা ও অন্তান্ত চরিক্জগুলির শিল্পন্তায় আদৌ রক্ষা করতে পারেন নি। চরিক্রগ্তলি উপন্যাসের শেষে কয়েকটি নীরস "টাইপ'-ঞ রূপ নিয়েছে। নায়ক-নায়িকার প্রেমের নিক্ষলত্ব লেখকের শিল্প-উদ্দেশ্তের কেন্ছে প্রধান বিষয়।
পশুপতি ভট্টাচার্য “অবশ্তস্ভাবী” উপন্াসে তার শিল্প ক্ষমতার অক্ষম দিকটির প্রমাণই রেখেছেন নায়ক রাসবিহারী চরিজ্রটির জীবন-বৃত্তান্ত অঙ্কনে। এই চরিআ্র আদৌ স্বাভাবিক ও সহজ হয়নি, কারণ, লেখক একাধিক মেলোড্রামাটিক ঘটনা যোগ করেছেন। সে সব ঘটনা চরিত্রের অন্তর-গ্রকৃতির সঙ্গে নিবিড়-সম্পক্ত নয়। তারিণীকমল পণ্ডিতের “দেবী” নামের উপন্যাসটি একেবারেই বস্িমী যুগের স্বতি টেনে আনে। বিশ শতকের চারের দশকে উপন্তান লিখতে বসে তিনি বঙ্কিমের শিল্পাদর্শের মূল শক্তিকে এতটুকুও গ্রহণ করতে না পেরে হাহ্যকরভাবে তার অনুসরণ করতে প্রয়াসী হয়েছেন। গ্রন্থে লেখক নরেশচন্দ্র সেনগুণ্ডের একটি ভূমিকা আছে, ত৷ থেকে জানা যায়, “দেবী” উপন্তাসের অধিকাংশ বিষয় লেখকেন্ব ব্যক্তিগত জীবন-অভিজ্ঞতা-অনুসারী। কিন্তু অভিজ্ঞতা শৈল্লিক-কল্পনায় সংযত ও দীপ্ত হয় নি আদৌ। লেখকের-্মুল নীতিকথায় উপন্তাসের অপমৃত্যু ঘটেছে কাহিনী সুত্রে । উপন্তাসের কাহিনী ও ঘটনার একাধিক অসঙ্গতি, লেখকের সংযমের অভাব “দেবী উপন্তানকে হাস্যকর করেছে।
'পাস্থপাঁদপ' গল্প সংকলনের তিনটি গল্পেই আর এক কথাকার জ্যোতি নেন গতান্ধ-
৬২
গতিক তাবনার অগ্থপন্থী। নাম গল্পটির ভরঘুরে নায়ক গুভঙ্কর ও নায়িকা দিসিলের ষে প্রেম বা! অন্ত এক গল্পেব হক্ারোগাক্রান্ত নায়কের যে মানস ভাবনা তা ঘতট! যুক্তি- গ্রাহ তার থেকেও বেশী সেট্টিমেণ্টাল, আবেগাত্মক। যুদ্ধনমকালে অবশ্যই এই জাতীয় আবেগময়তা-_য! পূর্বন্থরী মনীন্দ্রলাল বন্ধ প্রমুখের রচনায় অত্যধিক ছিল, তাতে লাধারণ পাঠক আবিষ্ট "হত সহজেই । পরিচয় পত্রিকার দ্বিতীয় খণ্ড, পঞ্চম সংখ্য। জৈষ্ঠ, ১৯৪১ সালে প্রকাশিত 'প্যানথার” গল্পে লেখক রজত মেন বেকার এম. এ, পাশ নায়ক হিরগ্য়ের চরিত্র আকতে বসে যে প্রেমের কথ! শুনিয়েছেন, তাব মধ্যে অভিনবত্ব বা প্রেম ভাবনার বিশুদ্ধ কোন উত্তরণ অথবা সমকালীন সামাজিক বাস্তব কোন সমস্যার ছাযাপাত নেই । হিবুণাযেব প্রেমিক! ধনী কন্ত! মায়া তাৰ প্রেমিকের জন্য চাকরির চেষ্টা করছিল কিন্তু তার বাবার বিরূপ কথায় নে এগোতে পাবে না। গ্রাষে বাব। মার যাবার পর অবিবাহিতা বোন ও বিধবা মাকে নিষে আমে কলকাতায় এবং “কমানমিষাল ব্যাঙ্কে চাকরীও পায় নিজের চেষ্টায। সে কলকাতায আসে মাযার অন্ত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ার সংবাদে । গল্লের শেষে আছে চিবাচবিত চমক । হিরম্ময যে ব্যান্কের কাজে একান্ত অক্ষম তা তার মিযোগবর্তা বডসাহেব মিঃ মিত্র বুঝতে পেবে ভীষণ তিরক্ক/র করে তাকে । আর তখন তাব বাছে আছে মিঃ মিত্রের জন্ত কেটে আনা মেট্রো সিনেমা! হলের একটি টিকিট । তিবস্কাবেক পর মিঃ মিত্র যখন গাড়িতে ওঠে, তখনই হিরগ্ময়ের চোখে পড়ে সেই “প্যানথার' গাডিটায় আর একজন মহিলাধাত্রা, তারই প্রেমিক! মায় । এই গল্পের নায়কের মনে পরিণামী বিপরীত অন্থভূতি ঘে করুণ রম ও আকন্মিকতার স্থষ্টি করে, ত| সাধারণ পাঠকের উপভোগ্য হলেও গল্পের কোন বড় বক্তব্য তুলে ধরে না।
এমন বু অখ্যাতনামা ও নতুন লেখক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই গল্প- উপগ্যাম লিখতে শুরু করেছিলেন। যুদ্ধ-সমকালে সেইসব লেখকের লেখনী বন্ধ বা মন্থর না হয়ে বরং নতুন উৎমাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে ব্যস্ত থেকেছে । এই সময়ের যে সমস্ত রথ প্রকাশিত, সেগুলি সমকালের সমাজ-বাস্তব্তাকে গ্রহণ করেনি, কোন কোন ক্ষেত্রে করলেও যথার্থ শিল্পের মর্ধাদায় সেসব চিত্রিত হয়নি। এই লেখককুল সম্পর্কে বাংল! পাহিত্োর প্রখাত এক ইতিহাসকার বলেছেন,--“বর্তমান শতাবের দ্বিতীয়-তৃতীয়- চতুর্থ দশকের গল্প-উপন্তাস লেখকদের সম্বন্ধে বিস্তত আলোচনা স্বত্ত্র গ্রন্থ সাপেক্ষ । ইহাদের সম্বন্ধে বিস্তৃত আলোচনা! প্রস্তত গ্রন্থের পরিধিতে কুলাইবে না।”১১ আমরাও এই মতের অন্পন্থী। তবে এই ইতিছাসকার তীর গ্রে ধাদের «একজ্স উল্লেখ করিয়া ক্ষান্ত'* হয়েছেন, তাদের মধো প্রখ্যাত কথাকারদেরও নাম আছে। আমরা তাদের
ও
বাদ দিয়ে, কারণ তাদের যুদ্ধ-সমকালের রচন৷ প্রসঙ্গ বিভিন্ন অধ্যায়ে প্রসঙ্গ-অনুযায়ী বিস্তৃত আলোচনা! করেছি, উৎসাহী অন্ুসদ্ধিৎহু পাঠকদের উল্লেখিত ইতিহাস-কারের রচিত অন্য কথাকারদের সেই প্রস্তত তালিকাটি১৩ দেখতে অনুরোধ কবি।
মান্ষের সভ্যতার ইতিহাসে দেখা! যায়, যখন একটা সময লক্ষণীয় রূপাস্তবের সম্মুখীন, মানুষের নিদিষ্ট সমাজ ভাঙতে ভাঙতে অন্ত এক কেন্দ্রের দিকে যেতে উৎন্থক, তখন নেই লমাজভূক্ত সেই লমাজের অন্থ্বর্তা কিছু বুদ্ধিজীবী, বিশেষ করে কথাসাহিতিক যেমন রূপাস্তর ও ভাঙনকে টীকা-ভাষে, জীবনের ব্যাখ্যায় ধরতে উৎস্থক থাকেন, তেমনি বনু অল্ল-ক্ষমতা-সম্পন্ন লেখক পমস্ত বিপ্লব, আন্দোলন, রূপাস্তর, ভাঙন থেকে সম্পূর্ণ অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে আত্মতৃপ্ত নহজ সরল গালগঞ্প ও প্রণয় কথাকে প্রধান করে একজাতীয় সাহিত্য ভাবনায় রত থাকতে অভ্যস্ত হন। যুদ্ধসমকালে এমন দ্বিতীষ- দলের লেখক সংখ্যাতীত ছিলেন। তাদেব বেশ কিছু নামের উল্লেখ উপবি-উক্ত ইতিহাসকারের তালিকায় মেলে।
অবশ্যই এই অক্ষম, জীবনকে সহজ সরল করে দেখতে অভ্যস্ত লেখক বাংলাদেশের উনিশ শতকে বঙ্কিমের আবির্ভাবের অব্যবহিত পরেও কম নংখ্যাষ দেখ! যায় নি। বঙ্গিম- চন্দ্রের দীপ্ত প্রতিভার সমকক্ষ সে সময়ে কেউ ছিলেন না। তার ধাবা অঙন্গকারী ছিলেন, তাদেব ক্ষমতাও স্বক্ষেত্রে কম নয়। কিন্তু তাদেব বাদ দিয়েও একদল কথাসাহিতিক হালকা জীবনযাপনেব বিলাসগুলিকে বিষয় করে উপন্তাস ও গল্প লিখেছেন, যেগুলির উল্লেখ শুধু ইতিহামেই থাকে, “দিনান্তে নিশান্তে শুধু পধপ্রান্তে ফেলে ফেলে যাওয়া? আগাছার মতই তাদের মর্ধাদা। এমন সাহিত্যিককৃল বিশ শতকে রবীন্দ্রনাথ ও শবৎ- চন্দ্রকে অন্নকরণ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আরও ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরস্তের অব্যবছিত পূর্ব সময় পর্যস্ত এই অঙ্থুল্লেখ্য কথাসাহিত্যিকের দল বাংল! কথা- সাহিত্যের দীপ্তি ও বেগকে এতটুকু ন! বৃদ্ধি করে বরং তার ভারকে আরও বেশী ওজন দিয়েছেন।
যুদ্বসমকালের গতানুগতিক ধারার বহু গল্পকার ও ওপন্তাসিক এমন ভার যোগ করেছেন কথাসাহিত্যের ধারায় । এই জাতীয় সাহিত্য-রচন। সাস্রাজ্যবাধী, পনিবেশিক শাননতন্ত্র ও অর্থনৈতিক সমাজ ব্যবস্থায় সম্ভব। জীবনের কোন দায়-দায়িত্ব-ভাবনা নয়, সুখী সময়ের মধ্যে কোনরকমে মুখ লুকিয়ে নিজেকে লালন করা এই বুর্জোয়া লেখক ও পাঠকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য । যুদ্ধ-সমকালের অগ্রধান ও অন্ধল্লেখ্য লেখকর! সেই বৈশিষ্ট্যের স্বাক্ষর রেখেছেন তাদের রচনায়।
একজন এদেশীয় সযালোচক বলেছেন, “সাংস্কৃতিক সংকটের প্রভাব যেহেতু দৃরবগাহ
.
ঠক সেই হেতুই সাংস্কৃতিক দংকটমোচন বড় কঠিন।৯৪ যুদ্ধ সমকাল ইতিহাসের সমস্ত দিকের শত বাংলাদেশের সাংস্কতিক সংকট দেখা দেওয়ার পক্ষেও এক বিশে . চিহ্নিত স্ময়। এই সময়ে আবির্ভূত লেখকরা সচেতনভাবে তাদের ছোটগল্প ৩ উপন্তাসে সময়ের সাংস্কিতিক নংকটকে চিত্রিত করতে সচেষ্ট ছিলেন, সংকট মোচনে তাদের সক্রিয়তা, অন্তত কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রে, তেমন স্পষ্ট হয় নি, হতে পারে ন!।' কারণ, এর পক্ষে আমাদের যুক্তি উপরিউক্ত সমালোচকের যুক্তির অস্থরূপ | গতাঙ্থগতিক ধারার লেখক সেই মংকটকে করেছেন উপেক্ষা, অস্বীকার, অধিকাংশ ক্ষেঅে হয়েছেন বিশ্বত। এই বিশ্বতি একদিকে, অন্যদিকে চুল গ্রন্থ রচনার বাসনার উল্লাস। এর ফলে তার! দ্বায়িত্ব সম্পূর্ণ এড়িয়ে নিজ্রাভিভূত মধ্যবিস্ত আরাম-পিপান্থ পাঠকদের কাছাকাছি থেকে, তাদের একান্ত মীমিত বোধ ও বুদ্ধির ওম্ গ্রহণ করে তৃপ্ত থেকেছেন ।
স্বভাবতই এমন গতাম্থগতিক রচনা পবত প্রমাণ হয়েছে বাংলা কথাসাহিত্যেক্ প্রবাহে । পাচুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের মিলন লগ্ন» রাধিকারগ্রন গঙ্গোপাধ্যায়ের» কিলঙ্কিনীর খাল", আশীষ গুপ্তের “ন্বপ্র দেখা মেয়ে” নবগোপাল দামের উপন্তান “নি:সহ যৌবন+, গল্পগ্রন্থ “তারা একদিন ভালোবেসেছিল', আশালত। সিংহের “কলেজের মেয়ে» ফান্ধনী মুখোপাধ্যায়ের “তু মম জীবন” গৌতম সেনের, প্রিয়া ও মানসী,” অমল দেবীব “ম্ুধার প্রেম ইত্যাদি গ্রন্থের কাহিনীর বিষষ ও প্রতিপাদ্য যেমন, তেমনি চটকদারী গ্রন্থ-নামগুলিও প্রমাণ কে, এই ধারার লেখকরা যুদ্ধের রক্তক্ষয়ী, সর্বমানবতা।-বিধ্বংসী পবিবেশে কি মানমিকতায় লেখনী চালনা! করে গেছেন নিবিবাদে ।
ও্পনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষিত, হ্বল্পশিক্ষিত ও অশিক্ষিত সর্বশ্রেণীর মানুষের মধ্যেই এক ধরণের অবধারিত হতাশা, অনিশ্চয়তা, মৃত্যা- ভয়, চখম দারিদ্র্য, বিষাদ গ্রস্ততা, জীবনের ক্ষণন্থায়িত্ব-চিস্তা থেকে যায়। যুহ্বসমকালের গতানুগতিক ধারায় লেখকদের গল্প-উপন্যাস রচনার প্রয়াস বস্তত এমন অবস্থায় একধপণের পলায়নী মনোবৃত্তিরই পরিচায়ক । এই মানসিকতা সভ্যতার ক্রমবিকাশে যতর্দিম যুর্জোয়া। সমাজ-ব্যবস্থা বজায় থাকবে, ততদিনই ছুরারোগ্য ব্যাধির মত থেকে যাবে। ভারত তথা বাংলাদেশের মত ওউপনিবেশিক যুদ্ধ-আক্রাস্ত রাষ্ট্রে তা সমাজ- বিকাশের ন্তায়েই থেকে গেছে। গতাস্থগতিক ধারার লেখককুল তাই যেমন শ্বক্ষমতার সীম! চিহ্নিত করেঃ তেমনি ম্ব-কালীন সমাজের শিকারও হয়ে ওঠে। যুদ্ধ নমকালে লিখতে বসে রসের লাহিত্যে হাল্কা! পান্সে রদ পরিবেশন করে অধম লেখকরা শুধু শয্যা -শয়নের স্খটুকুই ভোগ করার ব্যবস্থা! করেন নি, সেই সঙ্গে ধনতান্িক লমাঙ্গ-ব্াবস্থায়
৬৫
চিরকালের বুর্জোয়াদের চিরকালের সুখনিদ্রার ব্যবস্থাও পাকা করতে চেয়েছিলেন। ভরসা, সে সমযষের অতি সচেতন লেখকরা । তারা সময়, যুগ ও যুদ্ধব-পরিবেশকে নীলকষ্ঠের মতে। সাহিত্যে গ্রহণ করায় আমরা আজও আশাবাঘী।
উল্লেখপজী ও ীকা
১4. 129589 0£ 06 [০৮৪1 (1965) [২063৮ [19091] 00, 1] 7105 [০59119৮৪ 0506৩ 2 49-50
২ 4116 71050667901 106100198৪9 5 9০0:00 08009807, 9০0০19%ড্ 1) ০০০৪ (1961) 07696 ০৭ [08108 11009109910 6 62-63
৩:09 6০9001%চ ০৪] 73) 7081800 1770-1800 (1969) ,41,9 [1০200901708 1১:91806 [5 ডু
৪ 11050 01] “010 290662108 10 010৩ ০08)” [১69
৫ 20 [70000006102 60 6109 001721151) ০৪1 (৬০1 2): ঢা010 হয়ত 20069 9 1950 80010 796৮16 [00:00006100 0149
৬716 0010201%] 70000101060হ 2 4 7990108 0£ 915 95519 2. 24. 0180090 00 00000109107) 2 18
ণ 100৬1000192 10591 00. 5)0815700 1770-1800 (1969) ও 8 910707010108 177019509 ঢ ড
৮ [020 00 01109 [০৬৪] 11276 1১ ]
৯-১৩ বাঁংল| সাহিত্যের ইতিহাস (চতুর্থ খওড) (১৮৯১--১৯৪১) ডঃ কুমার সেন সংস্করণ ১৯৬৩ চতুর্দশ পরিচ্ছেদ £ গল্প উপন্যাস ২২ পূ. ৩৫* ৩৫০, ৩৫৭ ৩৫০, ৩৫০৩৫
১৪ “মধ্যবিত্ত সপ্্কতির সংকট আর একটি দিক" প্রবন্ধ ডঃ নীহাররগ্রান রায় শারদীয়া আনন্দ বাজার পন্্রিক! ১৩৮৭ প্ ২৯৩
ছিভীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালীন বাংল! কথাদাহিত্য
চত্র্থ অম্প্যান্ত্ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চিত্র
এক
দ্বিতীয় বিশ্বযদ্-সমকালের কথাসাহিত্যে যে ব্যাপক বৈচিত্র্য দেখা দেয়, তাঁর মূল কারণ সম-নময়ের অভিনব বিচিত্র ঘটনাপ্রবাহ ও পরিবেশ । বিশ শতকের মধ্যভাগে এমন একটি বৃহত্বম ও জাটলতম ঘটনার নুত্রেই অনেকাংশে উপজ্জাত ( 3 0100091) অংশের মৃত অবধারিত হয় খাগ্যাতাব, ভয়াবহ মন্বস্তর, যুদ্ধ-ভয়ে ভীত মানুষের শহরজীবন ত্যাগ, তীব্রতম রাজনৈতিক অস্থিরতা, গণ-বিক্ষোভ দেশীয় অর্থনৈতিক দুরবস্থা, সামাজিক অবক্ষয়, ক্কুধা-পীডিত গ্রাম-মান্থষের শহরমুখী হওয়ার স্থির-নির্দিষ্ট গ্রবণতা ইত্যাদি ।
ছোটগল্প ও ব্যাপকভাবে উপন্যাসে এ মবের অব্লম্বন শ্বতঃদ্ফৃ্ হয়েই সম্ভব হয়। কারণ ছিসেবে উপপ্থামের বিষয়-ভাবনায এক সমালোচকের একটি যুক্তি স্মরণ করি, [06 00561... 62010165016 81169 01 1162 188191791, 00181 200 0950001981081--108/ 1010 ৪89 10018] 8100 50171081 2150, ১ বাংল! কথামাহিত্যিকর! উপগ্তাদ ও ছোটগল্প উভয়তই-81191) 011109-কে চিত্রিত করতে বসে গ্িতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বূপকেও মাঝে মাঝে শিল্পসন্মতভাবে আকতে ভোলেন নি।
এই যুদ্ধ ইউরোপীয় ও এশীয় অন্তান্ত রণাঙ্গনের মত ভারত তথা! বাংলাদেশের বুকে আদৌ তেমনভাবে পা রাখেনি। কিন্ত গ্রথম বিশ্বযুদ্ধ ময়, বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারতের দৌরগোড়ায় রণবেশে হুঙ্কার দিয়েছে। তবে যেভাবেই আসক যুদ্ধ একটি দেশের বুকে তার কালোছায়৷ ফেলবেই যে কোন ভাবে বা রূপে । যদিও একজন সমালোচক ২ যুদ্ধকে বলেছেন পুরনো! এক প্রতারক এবং তার স্বরূপ এখন আমানের আর তেমন প্রবঞ্চিত করতে পারবে না, ত| আমাদের সবুজ শন্যভূমির জীবন থেকে কবরখানার দিকেই পথ ফেধায়, তবু বিশ শতকে এর দাপট অনেক বেশী। বিশ্বযুদ্ধ হয় ছুই বিব্মমান পক্ষের লঙ্গে-_যারা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী শক্তিধর | আর এই যুদ্ধ আরস্ত হলে একপক্ষ 'ার একপক্ষকে ধ্বংস করার জন্ত যুদ্ধোম্বাদেই সোচ্চার হয়ে ওঠে। ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর্ত হলে বুটিণ শাসকের পক্ষ থেকে বৃটেনে মিঃ উই্নষ্টন চার্চিল 'হাউন অফ কমন্দে।
৬৭
ঘোষণ! করেন, 10905 1 2099 11৩ 0০ ৪০৩ 77101511917) ৫550:০9৩৫.৮৩ একদিকে হিটলার-শাসিত জার্মান এবং তার সঙ্গী ইতালী, আর একদিকে বুটেন-আমেরিকা--এই ছিল ছুই যুদ্ধ-উন্খ প্রতিপক্ষ । এক পক্ষ আর একপক্ষকে চরম আঘাত হানতে সর্বশক্তি নিয়োগে বন্ধপরিকর ।
যুদ্ধের শ্ক্ক থেকে যে মমরায়োজন, তার ভিত্তি গ্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই ধীরে ধীরে তৈবি হুচ্ছিল। অর্থাৎ যুদ্ধ যে আধুনিকতম সভ্যতার একটি অন্যতম দিকের উপজাত অংশ, তা রাষ্্রনায়করা তেবেছেন পরিকল্পিত মননেই। ন্বয়ং চাঁচিল তার একটি গ্রন্থে এই যুদ্ধের ভয়াবহতা ও অসহায়তার কথ। প্রথম মহাযুদ্ধেরও অনেক আগেই লিপিবদ্ধ করেন। তিনি মন্তব্য করেন, 0) 00৩ 00811619 ০1 016 01%111960 090100) £680 8110168, 10810 (0)098005 900108, ০০11106...]1) 211 (1119 (00010) 11715 1)019981]5 9191151)661) 10105 10015107191 2100 118 (6511009 ৪16 651]9 1990, 01019 1106 21109 1189 ৪, 1215 (0 0611, ৬10) 65$5009 010 51101) ৪, 9081৩, 0196 1)01759 210. (9819, 005 8121000) 200 9/69109659 01 1027) 816 81106 0180185010570191)9016,5
যুদ্ধ ঠিক এমনি প্রভাব ফেলে । যর্দিও প্রত্যক্ষ ভয়াবহ যুদ্ধের ব্যস্ততম রণাঙ্গন নয, তবু এই বাংলাদেশের আবাসিকদের মধ্যেও প্রথম দিকে ইউরোপীয় যুদ্ধ ভারতবানীকে তেমন নাড়া দেয়নি, দেওয়ার কথাও নয়। টান! ছ'বছর ধরে যুদ্ধ যখন তার বথচক্রেব গতি তীব্রতর করে দুর্ভাগ্যের ললাট লিখনকে একমাত্র গত্য করে তোলে, তখনি ভারতবামীর তথা বাংল! দেশীয় সর্বাবয়ব জীবনযাঁপনকে তা হানে আঘাত । বাঙালীরু এই সময়ের মানসিকতাকে চাপা তীক্ষ তীত্র গ্লেষ ধিয়ে স্থ-চিঞ্জিত করেছেন মে সময়েব একটি বাংলা মাসিকপত্র,_“বর্তমান ইউরোপীয় যুদ্ধের দরুণ যদি আমাদের ব্যবহারিক অস্থবিধা কিছু ভোগ করিতে না হইত, তাহা হইলে আমাদের মত স্থখী জাত পৃথিবীতে এখন আর কেহ থাকিত না। আমর। নিয়মিত খাইতেছি দাইতেছি এবং যুদ্ধে ভবিষ্যৎ গতি লইয়! জল্পনা-কল্পনা করিতেছি--এমন স্থথের অবস্থ। ফুটবল লিজনেই সম্ভব, প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধের ব্যাপারটা এতদিন আমাদের কাছে শীন্ডখেলার মতই একট! উত্তেজনা ব্যাপারই ছিল। কাগজের দর বাড়িয়। এবং নোটের ভাঙানির অভাব ঘটিয়া৷ আমাদের মধ্যে কিঞিৎ অশান্তি দেখ। দিয়াছে ।৫
যুদ্ধের প্রভাব বাঙালী জীবনে ও মননে আসে ধীরে ধীরে। বাঙালী তরুণ বুদ্ধিজীবী লেখকরা এই যুদ্ধকে আরন্তের পরবর্তী ছু'বছর তেমনভাবে তাদের গল্প- উপন্তাসে গ্রহণ না করলেও পরবর্তী যুদ্ধের প্রথর মধ্যাহুকালে গ্রহণ করতে বাধ্য হন।
২৬৮
যুদ্ধের স্বভাবই এই, যেভাবে হোক লেখক-বুদ্ধিজীবীদের তার সঙ্গে জডিত করবেই। 'ঘুদ্ধমান্রেই ধ্বংদ ও মৃত্যু আছে, আছে নিভীঁকতা৷ ও আত্মাৎসর্গের দৃষ্টান্ত । তা শুধু নৃশংসতা নিয়েই পাপবৃত্ত রচন। করে না, উত্তেজনার বেডাজালে ব্যক্তিগত ও সমগ্টিগত জীবনে শক্তি, সাহস ও তারুণাকে বন্দী করে ফেলে ।”৬ বাঙালী লেখক, মে সময়ে ধারা তরুণ নবাগত--তার! যেমন, তেমনি ধার প্রতিষিত তরুণ- তীরাও বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় যুদ্ধ ঘটনাকে ও পবিবেশকে গল্প-উপস্তাসে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পংস্ত করেছেন।
কিন্ত সত্যিকারের “ওয়ার লিটারেচার” বলতে পাশ্চাত্য দেশের লেখকরা! ঘে কথ বুঝিয়েছেন, প্রত্যক্ষ রচনার মাধ্যমে যেভাবে একটি যুদ্ধ-বি্ষয়ক কথা- স।হিত্যের স্বতন্ত্র ধারাপথ চিহ্নিত করেছেন, তা, আমাদের বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে তৈরী হযনি। “৮191 7.16618016'-এর বৈশিষ্ট্য বলতে গিয়ে একজন সমালোচক বলেছেন, 70106919, 11701051561)595, [08০10195102] 2100 170181 11)8121)1, 1176 8০০01806 100150101 ০91 65061101000 216 2]] 06510619065 17 581 17057210116, ০৪ 0055 8:6 001 5800801610 11) 11)6100961555 » (1169 10005 ৮৩ ০0100101186 101) 036 92101) 01 80 0010901120৩ 10100 2170 0116 911050150০0 81010701906 01700819119 006 24010013 ০000015 15101 01 (116 (0.৭ জীবনের মধ্যে সত্যের সন্ধানই কথানাছিত্যিকদের লক্ষ্য হয় নিশ্চয়ই, যুদ্ধ-সাহিত্যেও তার অন্বেষ। থাকে । কিন্তু বাংলাদেশের লেখকরা যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ভয়াল ও করাল রূপ দেখেননি । ইউরোপীষ জীবনে অত্যান্ত লেখকদের অনেকেই প্রত্যক্ষভাবে সৈনিক ছিলেন। যুদ্গ-রণাঙ্গনে সর্বদিকের অভিজ্ঞতা ছিল তীদের রক্ত-মাংস-মজ্জ।-প্রাণ । তাই শিল্পীমন ও যুদ্ধ-অভিজ্ঞতার বসদ ত।দেব যুদ্ধকে নিষে গল্প-উপন্তান লেখায় যেভাবে প্রাণিত করেছে, বাংলাদেশের লেখকর| তার ধারে-কাছেও যেতে পারেন নি।
এক কথায তা সম্ভবও ছিল না। আমাদের দেশের লেখকরা প্রত্যক্ষ যুদ্ধে সৈনিক হিসেবে অংশ গ্রহণ করেননি, তার্দের করতে হয়নি । তারা কলকাতা, আসাম সীমান্ত, রেঙ্গুন এবং সারা বাংলাদেশের বুকে কিছু বোমাবর্ষণের ঘটনা, তয়াবহুতা, সাধারণ মানুষের পলায়ন-তত্পরত। ইত্যাদি বিষযকে গল্প-উপন্তাসে প্রণঙ্গত গ্রহণ করেছেন। দে সবের প্রত্যক্ষ চিত্ত নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু পাশ্চাত্যের লেখকদের মত সেই যুদ্ধ-সত্যকে দর্শম দিষে টীকা-ভাষো দীপিত করার কোন স্থযোগই তারা পাননি । হেমিংওয়ের “ফর ছুম দি বেল টোল্স্ ও “এ ফেয়ারওয়েল টু আমৃ.স্”, জণ পল সাত্রের “উইনডো, ভগ্নার-এর সীম, রাশিষান লেখক কোজিয়েভের 'স্টালিনগ্রাড", ভা-দা ভাদিলিয়েভম্কার 'রেইনবো+ লিয়া এরেনবুর্গের ফল অব প্যারা” এরিখ মারিষ! রেমার্কের 'অল কোয়ায়েট অন দি
৬৪৯
ওষেস্টান্ন ফ্রণ্ট॥ টলস্টযের “ওযার এগ পীপ” মিখাইল শলোকভের “এণ্ড কোযাযেট ফ্লোজ দি ভন/ জেমদ জোন্স্-এর লেখা “ক্রম হিযার টু ইটানিটি' ইত্যাদি বিখ্যাত “2 0০৭৩1, গুলির মত কোন কথানাহিত্য বাংল! ভাষায় রচিত হযনি। এইসৰ গ্রন্থ সম্পর্কে একটি সাধারণ মতা, এক সমালোচকের “৬12 [০৬০119-দেব সম্পর্কে মন্তব্য-স্থত্রে পরিষফাব হবে, ৬21 005611515 215 1501 90010105159 01 17150011819, 2180 1)6111)01 21৩ 0069 2$01886 ৫০01019175, 01১০ 9090181] 0:91101105 2180 1816106 ০01 10611815 1924 11610 (0 8%191955 1201)01 906012] 1009005, 71)5% 216 109121]5 010109119 10 12101901200 ০060 11069 216 9০110101098] €0 039 70011 01 61176 ০:৫- 61)60 10) 6৩11085 01 1], 21109 816 9611810196--90110 11701056165 11 (15 692101705 ) ৮০৫ 11 01169 1856 £1098011081101) (210৫ (1165 18660 11) 076 16811) 10 06 96155910156 [01 011518, 111010001176 10116 00170000160 19901৩১......৮ বাংলাদেশের লেখকর1 এমন সংজ্ঞা আসতে পারেন না যদিও, তবু যুদ্ব-বিষষকে যতটুকু গল্প-উপন্তাসে গ্রহণ করেছেন তারা, তাতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান একাধিক বাঙালী কথাসাহিত্যিক লিখেছেন %০ 691698 1960)6£ 5090181 1100৫5, এবং সেই সঙ্গে হযেছেন 861 0761081-ও কোন কোন ক্ষেত্রে ।
লক্ষ্য কবার বিষয়, যুদ্ধ নিয়ে মহত্তম কথাসাহিত্য রচন। বাংলাসাহিত্যে যুদ্ধ-সমকালে যেমন লম্ভব হয়নি, তেমনি হযনি যুদ্ধোত্তর কালেও। তবে যুদ্ধপ্রতিক্রিয়ার প্রতাক্ষ ও পরোক্ষ চিত্র এবং প্রভাব বাংলা কথাসাহিত্যের ধারায় নানাভাবে লক্ষ্য করা যায়। বাংল! সাহিত্যে যুদ্ধ-ভাবন৷ দেখ! গেছে উনিশ শতকের দেশাত্মবোধক গানে, কবিতায় । রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় মধুস্দন দত্ত, নবীনচন্দ্র সেন প্রয়ুখের কাহিনী কাব্যে ও মভাকাৰ্যে যুদ্ধের বর্ণনা আছে দেশাতবোধে ও রোমান্স-রসে সিক্ত হয়ে। দ্বিজেন্দ্রলাল এবং আরও একাধিক নাট্যকারের নাটকে গান ও অন্যান্য প্রসঙ্গে যুদ্বকথ। কিছু পাওয়। যায়। বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা কথাপাহিত্য-ধারাধ প্রত্যক্ষ যুদ্ধকথা একেছেন 'রাজসিংহ” উপন্যাসে, পরোক্ষভাবে আছে “চন্দ্রশেখর” উপন্তালে ৷ কিন্তু এসব জায়গায় যুদ্ধ ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বাইরে এবং সম্পূর্ণ প্রাচীন এঁতিহাসিক পরিবেশে । সেখানে যুদ্ধক্ষেত্র ও পরিবেশে আছে রোমান্দরল এবং মধ্যযুগীয় যুদ্ধ-ব্যবস্থা ও রীতি ।
বিশ শতকের আলোচ্য যুদ্ধ-সম্কালে কেবল কথাসাহিত্যিকদের নয়, কবিদের নানাধরণের রচনায় এবং চিত্রশিল্পীর চিত্রে যুদ্ধ স্থান পেষেছে। কবি স্বকান্ত ভট্টাচা তার এক বন্ধুকে কলকাতায় জাপানী বোমাবর্ধণের অভিজ্ঞতার কথা দীর্ঘ চিঠির মাধ্যমে জানাতে গিয়ে যেভাবে যুদ্ধ-আক্রান্ত শহরের বর্ণনা দিয়েছেন, তা অনেকাংশে সমকালের
এ,
প্রত্যক্ষ যুদ্ধ-তথ্যের দলিল বিশেষ | কবি-বন্ধু অরুণাচল বস্থকে লিখছেন, “** কাল রাত্রিতেও আক্রমণ হয়ে গেল, ঝাপারট। ক্রমশঃ দৈনন্দিন জীবনের অন্তরূক্ত হয়ে আসছে, আর এট একরকম ভরসারই কথা । গুজবের আধিপত্যও আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে। তোর1 এখানকার সঠিক সংবাদ পেয়েছিস কিন! জানি না তাঁই আক্রমণের একটা ছোট- খাটে। আভাস দিচ্ছি । প্রথম দিন থিদিরপুরে, দ্বিতীয় দিনও থিদিরপুরে, তৃতীয় দিন হার্তীবাগান ইত্যাদি বু অঞ্চলে (এই দিনকার আক্রমণ সবচেয়ে ক্ষতি করে ), চতুর্থ দিন ডালহৌসি অঞ্চলে ( এইদিন তিন ঘণ্টা আক্রমণ চলে আর নাগরিকর্দের সবচেয়ে ভীতি উৎপাদন করে, পরদিন কলকাত। প্রায় জনশৃগ্ত হয়ে যাষ ) আর পঞ্চম দিনে অর্থাৎ গতকালও আক্রমণ হয় । ******সন্ধ্যায় বৌদির ওখানে পুনর্গমন করলুম এবং সচ্য আলাপেব খাতিরে বৌদির পরিবেশিত চা পান করে আবার বক বক করতে লাগলুম । **০০০* কিছুক্ষণ গল্প করার পর, ৯-১* এমনি সময় সের্দিনকার সবচেয়ে বড ঘটনা ঘটল । বৌদি সাম্য বলে উঠলেন, বৌধহয় সাইরেন বাজছে । রেডিও চলছিল, বন্ধ করতেই সাই- রেনের মর্মভেদী আর্তমাদ কানে গেল । সঙ্গে সঙ্গে দারদা তাড়াহুডো৷ করে সবাইকে নীচে নিষে গেলেন এবং উৎকণ্ঠায় ছুটোছুটি, হৈ-চৈ করে বাড়ি মাৎ করে দিলেন । এমন সময় রঙ্গমঞ্চে জাপানী বিমানের প্রবেশ । সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু স্তব্ধ । আর শুরু হয়ে গেল দাদার “হায় হায়” বৌদির থেকে থেকে সতয় আর্তনাদ, আর আমার অবিরাম কীপুনি। ক্রমাগত মন্থর মুহ্তগুলো বিহ্বল মুহৃমীনতায়, নৈরাশ্যে বিধে বিধে যেতে থাকল, আর অবিশ্রাস্ত এবোপ্লেনের ভয়াবহ গুঞ্জন, মেসিনগানের গুলি আর সামনে পিছনে বোম। ফাটার শব । সমস্ত কলকাতা একযোগে কান পেতে ছিল সভয় প্রতীক্ষায় । সকলেই নিজের নিজের প্রাণ সম্পর্কে ভীষণ রকম সন্দিপ্ধ। ক্রতবেগে বোমার এগিয়ে আসে, অত্যন্ত কাছে বোমা পভে আর দেহ মনে চমকে উঠি । এমনি করে প্রাণপণে প্রাণকে সামলে তিনঘণ্টা কাটাই। তখন মনে হচ্ছিল, এই বিপদময়তার যেন আর শেব দেখা যাবে না।** কিন্তু সমকালের গল্পকার ও ওপনাসিকগণ যুদ্ধকে নানাভাবে গ্রহ করেছেন তাদেব ৃষ্টির মধ্যে । কোন কোন লেখকের লেখনীতে যুদ্ধ শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিক ঘটনাই থেকে গেছে। যুদ্ধের কালের চরিত্র ও পটভূমি ভার্দের, কিন্তু যুদ্ধের পরিপামী সিদ্ধান্ত গল্পে ও উপগ্যাসের মৌল কেন্ত্রে অস্থপস্থিত। কোন কোন লেখক যুদ্ধের প্রস্ততি কিতাবে শাসককুল গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের বুকে, তার বিষয়কে বিস্তৃত করে রাজনৈতিক- অর্থ নৈতিক-এঁতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন ।
একদল কথাকার আছেন, বার! যুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাটুকুকে কাহিনী ও ঘটন। থেকে ক্রমশ চরিত্র-স্তায়ের গভীরে নিয়ে গেছেন । প্রত্যক্ষ যুদ্ধকে নিপ্মে কোন দর্শন নয়,
৭৯
প্রত্যক্ষ যুদ্ধ যে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে কিভাবে গুঢ প্রতিক্রিয়ার স্থ্টি করেছে, তারই প্রতিচিন্তরণ তাদের লক্ষ্য । যুদ্বসমকালে আলাম সীমান্ত, সিঙ্গাপুবর-বর্মার প্রত্যস্ত প্রদেশে কিভাবে যুদ্ধবাজ জাপানী বোমরু বিমান আক্রমণ করে, সহজ জীবন সমূলে বিপর্যস্ত হয়, তার নিপুণ বিবরণ দিয়েছেন একাধিক বাঙালী লেখক । উনিশ'শ বিষালিশ সালের ডিসেম্বর মাস কলকাতার বুকে ভয়াবহ রাত্রির অভিজ্ঞতা আনে সাধারণ শহর- বামীর জীবনে । তার ছবি আঁকতে সে সময়ের ক্ষমতাবান সময়-সচেতন প্রায় নব লেখকই কম-বেশী আন্দোলিত হয়েছেন। তবে একথা ঠিক, যুদ্ধের প্রত্যক্ষ চিত্রের থেকে তার পরোক্ষ চিত্র নয়, প্রভাবই-_য অন্তঃশীল প্রতিক্রিয়ার মত-_তাব পরিচয় বেশী দেখ! গেছে যুদ্ধ লমকালীন বাংল৷ কথানাছিত্যে । সমকালীন কথাসাহিত্যে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ বর্ণনা মাঝ নয়, যুদ্ধের প্রত্যক্ষ রূপ ও পরোক্ষ কূপ --এই দুইয়ের শিল্পসম্মত ব্যবহার দেখা গেছে। একাধিক কথাকাখ আছেন, ধার! যুদ্ধের সঙ্গে প্রধানভাবে জডিত সৈনিকদের জীবন-যাপন, বৈশিষ্ট্য ও সম্গকালে সৈনিকদের সশস্ত্র বিপ্রবের পথে অগ্রসর হওয়ার কথাকেও যুদ্ধের মেজাজে উপস্থিত করেছেন তাদের রচনায় । যদ্দিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঙালী লেখকদেব বড কোন যুদ্ধজীবন-দর্শন রচনার স্থযোগ করে দেয়নি, তবু এই যুদ্ধ নানাভাবে বাঙলা কথাসাহিত্যকে বিচিন্ত্-রসান্বাী করেছে । শহবের বুকে ব্ল্যাক-আউটের রাত্রি, একাধিক কর্ণ-বিদারণকারী এবোপ্পেন উভে যাওয়ার শব, রাস্তার ধারের বাফল, ওয়াল নির্মাণ, ময়দানের বুকে সৈন্যদেব নিঃসঙ্গ গোপনতার জন্য পরিখা নির্মাণ, অন্ধকারের বুক বিদীর্ণ করে সাইরেনের আত্ম- সতর্কতান্থচক চীৎকার, বোমাবর্ধণেৰ শবে ঘরের মধ্যে সংসারী মান্ুষেব আর্ত, অতর্ক প্রশ্হীন নিঃসাড প্রতীক্ষা, ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে নিক্ষেপিত বোমায় বিধ্বস্ত শহরের কিছু বাড়ি ও রাস্তার ছবি, রাস্তায় রাস্তায় মিলিটারী সৈন্যের টহল দেওয়া ও হইসল, ধ্বনি- এসব বাংলাদেশের বুকে যুদ্ধ সমকালেই যুদ্ধের অনাগত অথচ প্রত্যক্ষ রূপাবয়বের সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটায়। এসব নাহিত্যে কিছুতেই অন্বীরূত হতে পারে না। কথাসাহিত্যিকরা সমকালকে নিশ্চয়ই রচনায় গ্রছণ করবেন । পেই অভিজ্ঞতাই তাদের ভবিস্তৎ ঘুদ্ধ-সাহিত্য সংক্রান্ত শিল্প-অভিজ্ঞতার অন্যতম মানদণ্ড হয়ে ওঠে । বাংলাদেশের কথাসাহিত্যকর| এসব থেকে নিজেদের কোনমতেই সরিয়ে রাখেন নি। তাই- সমকালে রচিত একাধিক গল্প-উপন্যাস যুদ্ধ-চিত্রের অংশত প্রত্যক্ষ ও ব্যাপক অর্থে পরোক্ষ দলিলের মত মর্ধাদা পায়। একমাত্র শিল্পের প্রয়োজনে তারা দ্বতংস্কূর্তভাবে এসেছে বলেই সেই বিষয় বাংল। কথাসাহিত্যের এই ধারায় অভিনব নংযোজন হয়ে-আছে ।
ণ৭ ছুই
যুদ্ব-পমকালে লেখকদের মধ্যে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত ছিলেন তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, অল্সদীশংকর রায়, বিভূতি ভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতি মুখোপাধায়, মনোজ বস্থ, প্রবোধ কুমার লান্তাল, অচিন্তযকুমার সেনগুপু, বুদ্ধদেব বন্থ, প্রেমেন্্র মিঃ গোপাল হালদার প্রমুখ । একেবারে নবাগতদের মধ্যে স্ববোধ ঘোষ, নারায়ণ গঙ্গো- পাধ্যায়, নরেন্দ্রনাথ মিত্র, নবেন্ু ঘোষ_এ'দের নামও এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে । লঘুচালে গল্প-উপন্যাস লিখে সে সময়ে যথেষ্ট প্রবীণ কেদারনাথ বন্্যোপাধ্যায় প্রমুখ লেখককে ও এই সময়ে যুদ্ধ চকিত কিছু রচনায় নিবিষ্ট হতে দ্বেখি। এদের একাধিক ছোটগল্প ও উপন্াসে নানাস্থত্রে উপস্থাপিত হয়েছে যুদ্ধ-্রসঙ্গ । অর্থাৎ প্রত্যেকটি লেখকই কম- বেশী যুদ্ধের ভাবনায় নিজেদের জড়িত করেছেন । কেউ যুদ্ধকে নিয়ে স্রেফ করেছেন, তার ভয়াবহতাকে একেছেন, কেউ বা আবার রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও এঁতিহাসিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ রূপকে যাচাই করতে সচেষ্ট হয়েছেন। কারে। কারো! রচনায় নায়ক-নায়িকাদেব যুদ্ধ ভাবনায় রোমাপ্টিক স্বপ্নবিলাও প্রাধান্য পেয়েছে ।
প্রচ্ছন্ন কৌতুক ও ঙ্জেষের সুত্রে কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তার “মাথুর” গল্পে যুদ্ধের পরিবেশ এনেছেন যদিও, তবু যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ার তীব্র রূপ কাহিনী, ঘটনা ও চরিন্ে নেই। এক বয়স্ক কুপণের বৈশিষ্ট্য এই গল্পে চিত্রিত। বড অফিসার মেজার গান্ধুলী সম্পর্কে মন্তব্য ও-_যুদ্ধ বিগ্রহের দুর্যোগ, অদ্ধোদ্য় যোগেব ভিড় এনে ফেলায়, 'তাব টুরের বা “ঘুরের” অন্ত নাই 1১০ ভাগলপুরের মথুর দরজির কাছে এলেন মেজার গাঙ্গুলী শীতের কোট বানাবার জন্য ৷ কথা প্রসঙ্গে মথুর জিজ্ঞেস করে £ “এই এক দুঃসময় এসেছে মশাই, কিষে হবে জানি না। আপনাদের কাছে তো সব খবরই আছে । কতদিনে এ জালা চুকবে মশাই, খদ্দেরদের খুশি করতে পারি
“তোমাদের যতর্দিন না আশ থেটে বোধ হয় ততর্দিনই চলবে ।* বলে হাসলেন । হুপ্ি আর হুর দুঞ্জনেই ত সহায়।”১১
গল্পের শেষে মেজার গাঙ্ুলীর স্ত্রী বিরজ। তাঁকে চা খেতে দেন। সেই প্রসঙ্গে উভয়ের উদ্তি-প্রত্যুক্ষির মধ্যে আছে যুদ্বজনিত পরিবেশে দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহৃত দ্রবোর অভাবের ইঙ্নিত এবং সেই স্তরে লেখকের গ্লেষ ঃ
'নাও-_-ভালো৷ করে দুকাপ চা খাও দিকি।”
কেটলি থেকে চা ঢালতে ঢালতে-_“চিনি কন্ট্রোলে গিয়ে গোলে ফেলেছে- মিষ্টি নেই» “তবে আব কেন--থাক্।”
৭৩
“তা কি হয়, সরকার ভালর জন্তেই করেছেন, চা স্কনেছি ভারি উপকারী, চীনের খায় ॥
“তা এনেছ দাও, আজ বেশ পারবো, খুব পারবো । হ্যা, উপকারী বই কি-মিষ্ট নাই বা ছল, অনেক তে! পেয়েছি, চিবদিনই কি থাকবে, যখন যেমন; _দাও। ভারতের ভাগ্যই তে! ত্যাগ ধর্ম-_১৯২ কেদার নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পে যুদ্ধের প্রসঙ্গটুকু আছে, তার পরোক্ষ প্রভাবের স্বল্প ইঙ্গিতও দুর্লত নষ, কিন্তু যুদ্ধের তীব্রতা, ভযাল কোন পরিচয় নেই । কিছু লেখক গল্পে প্রসঙ্গিকভাবে যুদ্ধকে বাবহাব কবেছেন মাত্র, যুদ্ব-ভাবনায তাডিত হযে তাকে কথা- সাহিত্যে গ্রহণ করেননি । “মাথুর” গল্পের লেখক সেই শ্রেণীতে পড়েন ।
স্থবোধ ঘোষের “কর্ণফুলিব ডাকো গল্পটির আরস্তেই আছে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ছবির সংবাদ ও তার জীবন্ত প্রতিক্রিযাব প্রতিচিত্রণ :
“বোম! পড়ছে দেভ হাজাব মাইল দূবে জোহার বারুর জাঙ্গাল আর সিঙ্গাপুরের জাহাজঘাটায়। হাজার লোকেব জীবন্ত ধড ছিটকে পডলো৷ হাওডা আর শেষালদা ষ্টেশনে । ...পালাচ্জে সবাই--ছেলে, মেয়ে, জোযান, বুড়ো৷ সবাই,_-সবজাতের লোক । আধমরা, উদত্রান্ত, ফ্যাকাশে সব চেহারা, চোখ ঠিকবে পড়ছে, হিসেবের ঠিক নেই--কাশছে, হীপাচ্ছে, চীৎকার করছে ।১৯৩
যুদ্বাভয় এই গল্লের সচেতন নায়ক ঞ্রুবেশের মনে তীব্র প্রতিক্রিষা জাগা । একেবারে মধ্যবিত্ত সংসারী যুবক ধ্ুবেশ £
তার চাকরি গেছে, তবু বর্তমানে ধ্রুবেশের কাছে এটাই একমাত্র সত্য ণয়। টালিগঞ্জের ছোট ছোট বাসাবাডিব ধোৌঁয়াটে সন্ধ্যায় তার চোখে সে ছবি ভেসে এঠে-২ লিবিষাব মরুবেলায উদ্ধত সঙ্গীনের ঝলক। শোনা যায খারকভের কঠিন তৃষাবে পক্ষ পায়ের পথচলা! ধ্বনি । মস্ছিত প্রশান্ত সমুদ্রে আহত ক্রুজীরের গর্জন, মহাদেশেব পথে পথে ট্যাঙ্কেব ক্রেঙকার, আকাশে বোদ্বারের গুরু গুন |১৪ স্থবোধ ঘোষ নাষককে যুদ্ধ-সচেতনার মধ্যে বেথে যুদ্বসমকালেব মান্ষের মানসিক বৈশিষ্ট দেখিয়েছেন। ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চারিত্র্য ঃ
ন্বার্থে ও সর্বার্থে সংঘাত বেধেছে । এই অভ্যুদয়ের যজ্ঞে পুড়ে যাচ্ছে জাতিবাঘ, অর্থনীতির অন্ধ, প্রতাপের মৃঢতা, পরম্থ শোষণের খমন।। সাম্রাজোর চবি গলে যাচ্ছে। ধুলিসাৎ হয়ে পড়েছে ফ্যালিস্ত ম্পর্ধার চুডা।
ধবেশের মন প্রাণ ঘিবে অদ্ভুত এক ধরণের রোমাঞ্চ লাগে 1১১৫
বাংলাদেশের বুকে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ তখনো আসেনি । কিন্তু নায়ক সেই যুদ্দেব আশংকায় গ্লভীরভাবে আলোড়িত। ফ্রুবেশ এমন একজন নায়ক, যার অভিজ্ঞতায় শ্বতি-নত্রে
শ৪
আছে প্রথম মহাধুদ্ধের ছায়া । ঞ্ুবেশের যখন চাকরী গেল, তখন দে তার জন্য তেমন চিন্তিত নয়, চিন্তিত যুদ্ধের জন্যই | স্ত্রী রম! বুঝেছে তার স্বামীকে । তার ভাবন! £
“কিন্ত এই মানুষটিকে সে কতকট। চেনে । এধুনি খবরের কাগজ নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়বে । ক'বছর আগে ঠিক এইবকম স্পেন যুদ্ধের ভূতে পেয়েছিল গ্রুবেশকে | রাতিরে ঘুমের ঘোরে প্রলাপ বকতো | এক এক সময় ঘুমোত না। বিছানা ছেড়ে সার! রাত ঘরের ভেতর পাইচারী করতো 1৯৬ যুদ্ধের প্রভাব বাইবে নয়, গভীরে, রক্তের প্রবাহে । রমার প্রেমে গড়া ছোট সংসার-_শ্বামী টুটু অল্প মে এর সত্য। সে এর জন্য নিজেকে সম্পূর্ণ বিলিয়ে দিতে প্রস্তত, কিন্তু :
“অকম্মাৎ এল আঘাত। এত বড পৃথিবী পড়ে রয়েছে সেখানে--বড় বড সাধু বড় ব্ড লোভ আর পাপ। সেখানে লাগুক না যুদ্ধের আগুন । ছোট ছোট স্থখ দুঃখে ধুকপুক করছে পাখীর নীডের মত রমার এই জগৎ্। তাকে ন। ভেঙে-ছি'ডে ফতে- জঙ্গলের হানাহানি কি চলতো না? যুদ্ধের নাম শুনলে রমার সকল মন বিরূপ হয়ে ওঠে । রমার কাছে ঘর-ভাঙানিয়। এ যুদ্ধ ঘোর শক্র 1১৭
অন্য দিকে £
প্রবেশের কাছে এ যুদ্ধ ষেন যুগ গভানিয়া তীর্থংকর | সকাল সন্ধ্যা ঘুরে বেভায় পথে পথে-্রামে বাসে জনসভা | দেশনেতাদের বিবৃতি পডে। ছাত্র ও শ্রমিকদের ইস্তাহার পডে। শোভাযাত্রা দেখে । পোর্টাবের ছৰি আর লেখাগুলির কাছে থমকে দাড়িয়ে যায। কে কী বললে? কারা বুঝেছে এ মহাযুদ্ধ মহাঁপরিণামের পূর্বগামিনী ছায়া । কার! কাজের কথা বলেছে। কারা জেগে আছে ১৮ সাধারণ মধ্যবিত্ব মান্থুষ থেকে শ্বর্ু করে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ মকলেই যুদ্ধ লম্পর্কে চিন্তিত। এদের চিন্ত। ভাবনা যেমন আসন্ন যুদ্ধের ভীতি সম্পর্কে, তেমনি যুদ্ধ শেষ হলে কি করবে তার, কিভাবে তাদের যাবতীয় অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করবে, তা-ও ব্যক্ত । নায়ক ্রবেশেব প্রতিদিনেব অস্থিরভাব মধ্যে লেখক পেইরকম একটি চিদ্র উপহার দিয়েছেন কর্ণফুলির ডাক” গল্পে :
'জানী গুণা থেকে আরুম্ত করেঝি বটার ম!পর্যস্ত সকলের চিন্তা এক স্থুরে বাধা । যুদ্ধের পরেকে কি কববে, কি পেতে হবে-_-এটাই একক্বাত্র সমস্ত । সবলে ঝুডি ঝুড়ি কর্তব্য আর দাবীর পপর] মাথা নিয়ে বসে আছে-যুদ্ধের পরে, মাসীম। যুদ্ধের পরেই বীণার বিয়ে দেবেন। পেশ্রয়টের যুদ্ধের পরে এক হাত লভবেন- যার! জিতবে তাদের সঙ্গে। মহাবণিক সংঘ আজ থেকেই ছট্পট্ করছে-_-যুদ্ধের পরে কে কত বড কারবার ফলাবে ।,৯৯
খে.
বাংলাদেশের বুকে জাপানী বোমা বর্ধণের প্রত্যক্ষ সংবাদ আছে “কর্ণফুলির ডাকে” গল্পে। নায়কের যুদ্ধবিরোধী ভাবনা, সেই সঙ্গে তীব্র ম্বদেশভাবনা, নিজ গ্রাম বিরাজপুরের প্রতি আকর্ষণ দিয়েই লেখক গল্পের উপপংহার টেনেছেন। সন্ধ্যের কলকাতায় কার্জন পার্কের নরম ঘাসের ওপর ক্লান্তির আরামের মধ্যে, মানমিক প্রশাস্তির মধ্যে নাষক ধ্রবেশের এক হকারের আকম্মিক চীৎকাগ্ের অভিজ্ঞতায় যুদ্ধজনিত প্রতিক্রিয়া চিত্রিত :
হকার ছেলেট। চীৎকার কবে হাকছে বিকেলের টাটকা খবর-_চট্টগ্রামে বোম। পড়েছে--বোম। পড়েছে চট্টগ্রামে ।
হুড়োন্থড়ি আরস্ত হলো! কাগজ কেন নিযে । ফ্রবেশও হাতে পেল একটা । এক- বকম দৌড দিষেই সে এসে দাড়ালো একট! ল্যাম্পপোরষ্টরের কাছে।
দম বন্ধ করেই ঞ্রবেশ পডলে! ৷ সামান্ত বাহুল্যহীন কষেক লাইনের খবর ।-_তারা এসেছে । বোম! পড়েছে চট্রগ্রামে । লোক মরেছে, লোক ঘায়েল হয়েছে ।
তারা এসেছে। কর্ণফুলির জলে পড়েছে তার্দের কুৎসিৎ কালো! ছায়৷। পৃৰ আকাশেব তারার গায়ে কালি মাথিয়ে দেখ দিয়েছে খণক্ফুলিঙ্গের দল।
ধ্বেশ কাপছিল থরথর করে । দাতে দাত পিষে যাচ্ছিল।***." কে এরা? দেশের মাটিতে আগুন ছডাষ ।
বিশ্ব ইতিহাসের সব লেখা ছাপিয়ে সোনালী আখরে ঝিলিক দিয়ে উঠলে। একটি মাত্র নাম__বিরাঁজপুর । কর্ণফুলিব জ্বালাতরা জলের ঢেউ অসহায়ের মত ডাকছে কলম্বরে । তাও শুনতে পাওয়া যায় ।”২০
নবেন্দু ঘোষের “এই সীমান্তে, গ্রন্থের অন্ততূক্ত পলাতক" গল্পে আছে যুদ্ধের পরোক্ষ প্রতিক্রিয়াব ছবি। গল্পটির নাষক তারাপদ্দ মা, বাবা, স্ত্রী, পুত্র নিষ্বে সু মানুষ ছিল একদিন । যুদ্ধের প্রয়োজনে, এবং যুদ্ধের পরিবেশে চাকরী কোথাও না পেয়ে চাকরী নেয় সৈনিকের। সেই সৈনিক জীবনই কি ভাবে তাকে তাভা করে দিনের পর দিন, তার নির্মম ছবি একেছেন লেখক “পলাতক গল্লে। সৈনিক হিসেবে সক্রিয় জীবন পরিবেশে দিনের পর দিন তারাপদ হতে বাধ্য হয় নিষ্ঠুর, হিংস্র আর বিবেকহীন” তবু তার যন্ত্রণা ছিল তীত্র। সৈনিকদ্দের পরিবেশ থেকে পালিয়ে এসেও সে ভুলতে পারেনি সেই লিবিয়া ফ্রণ্টে ভয়াবহ যুদ্ধের কথা £
“মাথার ওপর ইতালীয় বোম্নাু বিমানগুলে অতিকায় ক্রুদ্ধ চিলের মত গর্জন করে ঘুরপাক খাচ্ছে, বোমা ফাটছে, মেসিনগানের গুলি বীকে বাকে চিট্কে পড়ছে বালুর ওপর, ধোয়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে উঠছে আর সঙ্গী সৈনিকের একের পর এক আর্তনাদ করে পড়ে যাচ্ছে 1২১
গড
যুদ্ধের এই ভয়াবহতা লেখক তারাপদর চিন্তায় এমনভাবে এঁকেছেন, যা প্রত্যক্ষ যুদ্ধের নির্মমতাকে স্পষ্ট করে । এমন যুদ্ধ যে কত ভয়াবহ, মানবতাবিধ্বংসী, সমস্ত মানুষের কাছেই ঘৃণ্য, একাস্ত অবাঞ্চিত, তা লেখক এঁকেছেন যুদ্ধের আর এক আত্মহননেচ্ছু সৈনিক চবিত্র জোসোফব জীবন্ত চিন্রটিকে ওই তুমুল লডাইযে কম্পিত রণক্ষেত্রের মধ্যেই উপহার দিয়ে £
“সে চীৎকার কবে এগোতে লাগল--“কমরেডগণ-_দোহাই ঈশ্ববেব-_থামাও এ খেলা, তোমব! কি ক্লান্তিবোধ করছ ন1? থাম্াও এ সব--এ পৃথিবী সকলের জন্া-_-কেন তবে এই রেষারেঘি ? আব যদ্দি না থাম বেজন্মীরা, তবে যিশুর রক্তেব দ্িবা-_আমায মার--”২২
তারাপদ মা-বাবার শ্রে-সম্পর্কের কথায পাগল হয়, স্ত্রীপুত্রের সঙ্গে মানবিক সম্পর্কের তৃঞ্জায় তৃষিত। কিন্তু সেই তারাপদ যুদ্ধে সৈনিক হিসেবে কি নকম ছিল লিবিয়ার একটি শক্রদেব ঘাটি অধিকার কবার সময ? সেই সময় সে একজন জার্মান লৈনিককে দেখতে পেল। তাব ছুটো পা হাটু থেকে উডে গেছে, বা হাতটায় বেযনেটেব খোচা । তাকে দেখেই সে তাব বেষনেট উচিযে সোল্লাসে 'এগিষে গেল । রক্তের গন্ধে তখন তার মাথ! বিমোচ্ছে। জার্মানটি' বলেছিল :
“বাচা ভাই, আমায় মেরোনা, আমিও মাশ্ষ__” কিন্তু সে শোনেনি, তবে দশ্ষিণব পাজরাষ এমন জোবে সে বেষনেটের খোচা দিষেছিল যে তান পাজরাগুলো পাটকাঠির মতো মট্ুমটু করে উঠেছিল.****০২৩ দ্ধ ও মৃদ্ধের নির্মম হা 'এবং পরিণতি যে কত ভযাবহ সর্বকালের মানবতা-বিনাশী আস্তত্ব, লেখক তাব প্রতিচিন্ত্রণে নিপুণ লেখনী ব্যবহাীব কবেছেন। পালিষে এসে তাব নিজের সংসারে তাপাপ? শান্তি পেয়েছিল, কিন্তু তা ক্ষণস্থায়ী । যুদ্ধ তাকে পিছু পিছু শেষ সীম পর্যন্ত বিতাডিত কবেছে, ছাযার মত লেগে থেকেছে । তারাপদ নিদারুণ কষ্টের মধো গল্পের শেষে আবার ধরা পড়েছে বটে পুলিশ অফিসার অজিতবাবু ও দুই কনস্টেবলের হাতে, কিন্তু তার ক্ষণিক সংসার-দ্গীবন-উপলদ্ধি তাকে যে কথ! ভাবিয়েছে সে কথ! সর্বকালের সববকমেব যুদ্ধ-বিরোধী ৰক্তব্যই £
“এখানে মরুভূমির বালু নেই, অপরিচিত দেশের ভয়াবহতা নেই, নেই ৰারুদের গোল! আর ঝকমকে বেয়োনেটেব আডালে শত্রুদের নির্মষ মুখ । এখানে শুধু শান্তি। ধারিত্রয আছে, অভাব আছে কিন্তু তবুও শাস্তি আছে 1২৪ বস্তত এ শাস্তি মানুষের, মানবজাতির তথ হুস্থ সবল সমাজ গঠনের উপযোগী মানবতার ।
৭৭ তিন
কথাসাহিতো সতভাবে রাজনীতি-সচেতন থেকেই গোপাল হালদার যুদ্ধ সমকালীন পরিবেশের নান! ঘটনাকে ব্যাখ্যা করেছেন নান! বিচিত্র চরিত্রের ভিড়ে । তার “পঞ্চাশের পথ" উপন্তাসে নানাভবে যুদ্ধের পরোক্ষ পের সঙ্গে আমাদের পরিচর ঘটিয়েছেন। উপন্তামের নায়ক বিনয় মজুমদার ভাক্তার, এবং বর্মা জাপানীদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রত্যক্ষ যুদ্ধজনিত প্রতিক্রিয়ার অভিজ্ঞতা নিষে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছে। এমন একটি নাক স্থষ্টি কবে লেখক যুদ্বসমকালের নান ঘটনাকে রাজনৈতিক তত্ব- তাৎপধে ব্যাখ্যা করার স্বযঘোগ পেয়েছেন। উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদেই নায়কের চিন্তা এবং চব্বিশ পরগণাব কৃষক ও রাজনৈতিক কর্মী এবং দুর্গা মণ্ডলের মধ্যে সংলাপ বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধের পরোক্ষ ব্ূপের পরিচয় দিষেছেন। গ্রামেব চাষীরা যুদ্ধকে দেখেছে অন্যভাবে । এক বুড়ো চাষী কৈব্তর কথ! :
'জমি-জম বাড়ি-ঘর সবই তো নিলে ফৌজের দরকারে । কেরোমিন নেই, লব্ণ নেই, কাপড নেই পবি কি? সব যুদ্ধে গেছে__এখন কুইনাইনও আমাদেব দেবে না। 'ছেলে-পিলপে আছে-_মাগীর। যায় কোথায়? ফৌজ এলেই তে। বে-ইজ্জত করবে মেয়েদের । মা-মেয়ে কিছু মানে তারা ? না, মান্ত বয়স, ধর্ম ?২৫ নাক বিনয় মজুমদাব নেযামতপুবে এসে গ্রামেব মান্ুদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়। তার বর্ণনা লেখক বিনয়ের কথায বর্ম যুলুকেব যুদ্ধেব স্বরূপ উত্থাপন করেছেন । বিনষ সেখানে £
“দেখেছিল রেক্গুনের মৃতেব সার | অবশ্ত মে কথা সে বলেছে। কিন্তু একটিমাত্র কথায়__ “আধ ঘণ্টায় বেন্ুনের পথে ছু হাজার মানুষ শেষ হয়ে গেল বোমা আর গুলিতে? তারপরে বললে “এই তো দেখছি-_-এর বেশি কিছু বুঝি ন। যুদ্ধের ।১২৬ আবার দোগাছির এলাকায় যুদ্ধের গুয়োজনে এরোড্রাম তৈরী ঘিয়ে কংগ্রেস দলের গোবিবাবাবুর সঙ্গে জমিদার রাযবাহাছুরের হাকিম মিঃ বিহারী সেনের কথাপ্রসঙ্গে রায়বাহাছুর স্বয়ং ডঃ বিনয় মজুমধারকে বলে £ ঘুদ্ধ যুদ্ধ খেলাই দেখেছেন আপনারা বর্ায় । এখানে দেখবেন যুদ্ধ যুদ্ধ ব্যবস1 1২৭ বাংলাদেশের বুকে যুদ্ধ সম্পর্কে এমন ধারণ। বস্তত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক পরোক্ষ পরিচযেরই উজ্জল দৃষ্টান্ত । সারা বাংলাদেশে যে যুদ্ধ প্রস্ততি গ্রহণ করে সাম্রাজ্যবাদী শাসকগোষ্ঠী, তা-ই বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে হয় বড অভিশাপ । যুদ্ধ ।বাংলাদেশের বুকে সেই প্রস্ততির অন্কপাতে কিছুই নয, কিন্তু জনজীবন যুদ্ধ প্রস্ততিতেই যুদ্ধের একজাতীয়
শট
অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় “পঞ্চাশের পথ উপন্তাসে । অন্ততম চরিন্, সরকারী আমলা মিঃ সেন এক স্কুল শিক্ষিকা ও সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী স্থধা গুপ্তাকে বলেছে £
“জেলায় জেলায় আমর! চাষ বন্ধ করে বেডাচ্ছি--নৌকো শালতি আমাদের হাতে এনে দিতে বলছি।-_চাষ বন্ধ, বাজার বন্ধ, হাট বন্ধ, মাছ ধর বন্ধ, লোক চলাচল বন্ধ-- সব বন্ধ__জাপানের পথ বন্ধ করছি তো। কড়ান্কুম দিচ্ছি এক পালা ধানও যেন বেশি না থাকে এসব এলাকায় । জাপান যেন এলেও শুকিয়ে মরে ২৮
“তেরশ পঞ্চাশ” উপন্তাসেও এই লেখক যুদ্ধ-্রতিক্রিয়ার ছৰি উপহার দিয়েছেন। কলকাতায় জাপানী বোমাবর্ধণ ঘটে গেছে । নায়ক ডঃ বিনয় সেই সাতদিন আগেব ঘটনাকে স্্তিস্ত্রে ধরে অতীতের অভিজ্ঞতায় নিমজ্জিত হয়ে যায় একসমষে £
'সে রাত্রিতে দাইরেন বাজল, বোম পডল, কলকাতায় নামল মৃত্যুর ত্রাস, প্রাণভীত পশুর মত অসহায় জনতা কলকাত৷ ছেডে শত দিকে ছুটল । আর স্থধা ও অমিতের জীবনগতি যেন উলটে গেল ১২৯ উপন্তানের অন্যতম জটিল চরিত্র বীরু সেন একজন পুরনো রাজনৈতিক কর্মী, পরে হযে ওঠে যুদ্ধের জিনিষপত্তরের কণ্টাক্টার । তাব সঙ্গে বিনয় মজুমদারের তর্ক চলে জাপানীদ্দের বোষাবর্ধণ প্রসঙ্গ নিয়ে । মেই কথোপকথনের মধ্যে উঠে আসে যুদ্ধের গ্রতাক্ষ দূপের ব্যাখ্যা চরিত্রের নিজেরই চিন্তাধারার ন্যায়ে £
“যুদ্ধই হচ্ছে বড ইপ্ডান্্রি । ...একই কণ্টাক্ট বছরের পর বছর চলছে । ইট আছে, তৈরী হচ্ছে এরোড্রামের ঘর, পরের মাসে হুকুম হচ্ছে, আরও শক্ত করো- ভেঙে ফেলে গভে!। সেই ইট দিয়েই গড়ো । সেই ইট দিয়েই গডা হল আবার সেই "শক্ত ইমারত। ...ঘুষ খাওয়! (কণ্টণক্টররা) মনে করে একবার জাপান এলেই হয়-_আরও লুঠ, আরও মজা। অন্তত জাপান বোমাটোম! না ফেললে ওর! ভয়ানক বিরক্ত হয়ত বোমা ফেললেই আবার পথ তৈরী হবে, ঘর তৈরী হবে, আরও কণ্টাক্ট পাওয়৷ যাবে।
বিনয় বললে, তুমিও তাহলে তাই চাও বীকু--বোম! পড়ুক?
_-চীইতাম। কিন্তু এ জেলার লৌক আধি। আমি যাব কোথায় ?৩০
উন্নপঞ্চাশী উপন্যাসের শেষে লেখক কলকাতার বুকে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের কালোছায।৷ নামার ছবি একেছেন তথ্যের সত্য এবং শৈল্লিক সততার সঙ্গে । নুধার সঙ্গে বিনয়ের হৃদয়-সম্পর্ক গড়ে ওঠায় বিনয় ক্রমশ আত্মবিশ্বাসী, ভালোবাসায় আত্ম হয়ে ওঠে। নামান বূঢ বাস্তব কাজের শেষে একনময়ে হুধার সঙ্গে হুম সম্পর্কে চিস্ত। তাকে বিভোর করে দেয়। শীতের রাতের ফিন জ্যোত্মার পরিবেশে ব্যক্তি বিনয়ের মনে যে প্রেম স্মতির রোমাঞ্চ, ত। মুহূর্তে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় কলকাতার বুকে রাতে জাপানী
পট
বোমারু বিমানের সক্রিয় হানার সংকেত ধ্বনিতে । বস্তত যুদ্ধের প্রত্যক্ষত৷ এমনি নির্মম, অবধারিত--য৷ ব্যাক্তির সমস্ত আশা-আকাজ্ষা ভবিষ্যৎ চিস্তাকে ধংস করে। এমন যুদ্ধের ছবি একেছেন লেখক কেবল বিনয়ের কোমল ভাবনাকে আকতে বসেই শুধু নয, বিনয়ের বোন হেনা, তার যুদ্ধের কি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দ্বেয়, তাকেও নিপুণভাবে উপস্থাপিত করার মধ্যে ঃ
“৪ই শোনো--এয়ার ক্রাফটের শব । ওর] এল বোধ হয় ।
ছেন। চমকে উঠল । কান খাডা করে শুনল। তার সমস্ত মুখচোখের উপর শ্মনিবার্ধ উদ্বেগের ছায়৷ এক মুহূর্তে শত গুণ হয়ে উঠেছে। শুধু একটি ছোট কথা--এলো” | মনে হল কতদুর থেকে ওর কত শক্তি দিয়ে হেনা বের করেছে কণ্ঠ থেকে এই কথাটি__তাতে সেই ম্পষ্টতা নেই। সহজতা নেই আর ।
আকাশে উড়োজাহাজের পরিচিত শব্ধ শোন! যাচ্ছে । দিনেরাতে অনেক বাব শোনা এই শব্দ-- বৌ -_৩, তবু এই নিমিষে মনে হল যেন কি একটা শঙ্কার ইঙ্গিত তাতেই বয়েছে।
ছুই একটা নিঃশব্ধ নিমেষ । আকাশের প্রান্তে কোনদিকে যেন একটা নতুন শব । সেই বৌ--ও--ও শব্দটা দূবে চলে গেছে, একটা নতুন ঝর-ঝর, শব যেন শোন! যাচ্ছে । হেনার জিজ্ঞান্থ দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বিনয় সহজভাবে বলল, শুনছ? মনে হুচ্ছে জাপানী প্রেনের শব ।
উৎকর্ণ হয়ে রইল সকলে ।
বিনয় বলল, গুছিয়ে ফেল ঘরটা ।******
রুদ্ধ ঘরের স্তিমিত আলোকে কারও যুখচ্ছবি তত দেখা যায় না। কিন্তু স্তব্ধতাই যেন সে ছৰি পরিষ্কার ফুটিয়ে তুলছিল।
সেই আকাশ চেরা ঝর-ঝর কোন দুরস্ত পাখী ছুটেছে। তারপর দুম্--
ছুম--ছুম
নিস্তব্ধ ঘরের কথা বন্ধ হয়ে গেছেল। দরের শব্দে ঘরের স্তব্ধতা যেন কেঁপে কেঁপে উঠতে লাগলো । ঘরের ছুয়ার, জানাল। সব ঝটিকাঘাতে ছিটকে ভেঙে পভবার মত। ইরা তায় মায়ের।গল। জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠল, মা।
কি ও ।- শচীন্্রপ্রসাদ বুঝছিল, তবু ষেন বিশ্বাস করতে চায় না।
বিনয় বলল, বোম।। খুব কাছে নয়, তবে দুরেও হবে ন!।
ইরা আবার কেদে উঠল, মা
হেন! প্রাণপণ চেষ্টায় বলল, এই যে কি হয়েছে? কিছু নয়।
৬৬
ক রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে । তবু বলতে হচ্ছে, যত পাবে তত মহজ কে হেনাকে বলতে হচ্ছে, কিছু নয়। কিছু নয়, ইরা ।
শব্দ তেমন জোরে নয়, নিকটেও সম্ভবত নয়। তবুভয় ও আশঙ্কায় ইরা অস্থির ৷
মা? মা1-বারে বারে ইর| শিউরে কেঁদে উঠছে। মায়ের গলা জড়িজ়ে ধরেছে।
আকাশের শব থেমে গেল | ঘরে নিস্তব্ধতা কঠিন হয়ে রইল । কেউ কথ! বলে না। সময যেন কাটে না-_-থেমে আছেঁ। বিনয়ই প্রথম কথা বলল, বোধ হয় দরে চলে গেছে, বাধ! পেষেছে। তার কণ্ঠস্বর এখনও তেমনি উদ্বেগহীন ও উত্তেজনাহীন | যেন কোন পরিচিত সাধারণ ঘটন। সম্পর্কে সে কথা বলছে।
হেনাও দাদার এই স্বরে এই ম্বাভাবিকতায় যেন অনেক আশঙ্কা অনেক ত্রাসের ভার থেকে মুক্তি পেল। জিজ্ঞাস করল, দুরে চলে গেছে ?-__-তার কণ্ঠে একটি আশার সর ।
শচীপ্রসাদ এই প্রথম প্রশ্ন করলো । ভষ অপেক্ষা! দুশ্চিন্তাই তাতে প্রকট, সত্যি, বোম। পডেছে মনে করে! ?
মনে তো হয সত্যি বলে, তার বেশি কি করে বলব?
কত দূরে ? খুব দূরে বলে মনে হল ?
তাতো বলা শক্ত কলকাতার মত শহরে ।
কোনদিকে? টালিগঞ্জের দিকে নয, কি বল?
কিছু বলা যাষ না।
অল ক্লিয়ার একটানা স্থরে বেজে উঠল ।”৩১ কলকাত। তথ৷ বাংলাদেশের বুকে যুদ্ধ কিভাবে মানুষের আশ্রয় ত্যাগ করার মত ভয়» আতংক* অসহায়তা হষ্টি কবেছে লেখক নায়কের সেই দৃষ্টি দিয়ে অল্প কথায় তা একেছেন £
বিনয় যেতে যেতে দেখলে আজ কলকাতার পলায়ন দৃশ্ত। এমনটি নে বেঙ্গুনেও দেখতে পেত ন।। বাজার বলতে না বসতে ভেঙে গেছে। দোকঠন পাট খোলেনি ১২
যুদ্ধ-সমকালের অন্যতম কথাকার তারাশংকর বন্য্যোপাধ্যায়ণ তার “মন্বস্তর উপন্তান্গেব মূল পটভূমি কলকাতার বুকে বিশ্বযুদ্ধের আড়ষ্ট, অসহায়, রুদ্ধশ্বাস পরিবেশকে সার্থক শিল্পের সততায় আকতে তভোলেননি। আধুনিক নত্যতার এক একটি স্তস্ত হুল একটি দেশের প্রধান শহর । কলকাতা শহর ঘেরকম্মই সাত্রাজাবাদী শাসক-গোঠী
৮১
-শাদ্দিত সভ্যতার আর এক পীঠস্থান । এর ওঁজ্জল্য, উৎসাহ, ক্লেদ, গ্লানি, অদ্ধকারময়তা, পিচ্ছিল জীবনকে লেখক গ্রহণ করেছেন সর্ধদিক থেকে । আলোকিত এই শহরের অন্ধকার দিক আপাতদৃষ্টিতে আলোয় ধরা পড়ে না। কিন্ত যুদ্ধ-সমকালের প্রেক্ষাপটে খন শহরজীবন রক্ষার কারণে ব্লযাক-আউটের ব্যবস্থা হয়, তথনি সভ্য ও অ-সভ্য ছুই শ্রেণীর মানুষের রক্তমাংসের চেহারাই নানাভাবে অন্ধকারের কালি নিষে দেখ! দেয়। তার মধ্যে জোতদার-মজ্ুতদার-আমলাবাবুর! যেমন আছে, তেমনি আছে অসহায় গীতাদের দল। লেখক উপন্তামে এদের নিপুণ ছবি একেছেন ব্যাকআউটের কলকাতার ছবির মধ্য দিযেই। আর এই ব্ল্াকআউট হওয়ার মূল কারণ শাসক কর্তৃপক্ষের যুদ্ধভয় ৷ যুদ্ধের পরোক্ষ ছায়া প্রমীরিত হতে হতে এক সময়ে কলকাতাকেও গ্রাস করে £
ব্যাকআউটের কলকাতা, * আজ শত্রুপক্ষের আকাশচারী বোমারুর ঠ্েনদৃষটি হতে আত্মগোপনে জন্য তার সমস্ত আলো, আলোক-নিয়ন্ত্রণী আবরণে এমনভাবে আচ্ছন্ন কর! হয়েছে যে অন্ধকার জমাট বেঁধে শহবের বাভীগুলোব মাথায় এবং বাস্তার বুকের উপর নেমে এসেছে। ট্রামবাস-মোটরের আলোক বশ্ি দীপ্তিহীন প্রেতচক্ষের মত অন্ধকার রাস্তার মধা দিয়ে সবে আসছে যাচ্ছে । বাস-ট্রামের ভিতরে আবছা আলোর অম্পট্টতার মধ্যে যাত্রীদের দেখা যায, চেনা ঘাষ না, মনে হয বূপহীন অব্যবের একটি দল চলেছে । রিক্লার যাত্রীদের দেখাই যায় না, নীচের কাগজ ঢাকা স্তিমিত আলো ছুটি বিন্দুর মত ছুটে চলে যাষ, নেহাৎ কাছে এলে দেখা যায় মানষেব ছুটে! পা শুধু উঠছে, পড়ছে । ফুটপাতেব ওপর মা্ধয় চলছে সম্ভপিত গতিতে
পথ-পার্থখের দোকানগুলির ভিতরে আলে। জ্বলছে, কিন্তু তার রশ্িধারা বাউরের দিকে নিষস্ত্রণ-আবরণীতে প্রতিহত।** অন্ধকাবের মধ্যে প্রায় অদৃশ্য চলন্ত মানুষের দল এইথানে এসে কালো কালো! মৃতির মত কয়েক মুহর্ঠেব জন্য জেগে উঠে আবাব অন্ধকাবের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। ***** আকাশের বুকে এরোপ্নেনের শব্ধ উঠছে, পাশাপাশি ছুটি রঙিন উক্কাবিন্দুর মত লাল নীল ছুটি আলোকবিন্দু "আকাশের এক প্রাস্ত থেকে অন্ত প্রান্তের দিকে চলে যাচ্ছে ৮৩৩ এমন ব্ল্যাক-আউটের রাত আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে সাইরেন ধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে, সভ্য মানুষের গভীর বাতের শাস্তিট্ুকুণ থাকে না। সাধারণ মানুষের আতংক বস্তত প্রত্যক্ষ যুদ্ধের ভয়াবহুতারই সমান । ' উপন্তাসের নায়িকা নীলার এক রাত্রির অভিজতা!
চিত্রণে লেখক যুদ্ধতয়ের জীবন্ত মানস-ছবি এ কেছেন £ ছবিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকাঁলীন বাংল! কখাসাহিত্য ৬
৮২
গাইবেন বাজছে। নীল! উঠে বসল। সাইরেন বাজছে, উচু পর্দায় উঠে নীচু পর্দায় নামছে, আবার উচু পর্দায় উঠছে। মহানগরীর আত্ম! তার মাথার উপর মরণ লোকের শিকারী বাজপাখীর শব্জে মরণভয়ে আতংকিত হয়ে বিলম্বিত ছন্দে কাতর কার! কাদছে, মধ্যে মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে । নীলার চোখে তখন ঘুম- বিহ্বল দুটি (৮৩৪ ষে কারণে শহরের বুকে এমন ব্লযাক-আউটের মহড়া যার মধ্যে আছে সাইরেনের বার বার বিপদ-সংকেত ঘোষণা, সেই রাত্রির অন্ধকারেই আসে হৃযোগ-সন্ধানী যুদ্ধবাজ প্রতিপক্ষ । রাতের অন্ধকারে আসে, বোমাবর্ষণ করে নিবিচারে, আবার ফিরে যায় তারা। শুধু আতঙ্কটুকু থেকেই যদি যুদ্ধভয়ের মানসমুক্তি ঘটত, তাতে তত অনহায়তা ছিল না। যার! অসামরিক ব্যক্তি, পরিবারভূক্ত, তাদের প্রাণ-নংশয়ের মর্সস্ধদ চিদ্র যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফলেরই সামিল। নাধিকা নীলাদ্দের একান্নবর্তা পবিবারে আছে বাবা-মা, দাদা-বৌদি, ভাই-বোন প্রভৃতি । বোমার ভষে তারা শহর ছাড়তে চায়। কিন্তু তাতেও তাদের মুক্তি নেই। অতকিতে আসে বোমা বধণের প্রত্যক্ষ অভিঘাত :
“প্লেনের শব্ধ উঠছে । এখানকার প্লেনের শব্ধ থেকে শৰের পার্থকা বোঝ! যাচ্ছে। ধাতব শব্দের রেশ নাই এতে এবং মধ্যে মধ্যে যেন থেমে থেমে আবার জোব হয়ে ওঠে। সকলেই আতঙ্কিত হয়ে উঠল।
সেই মুহুর্তেই হল বিস্ফোরণের শব ।
কয়ের মুহুর্ত পরেই আবার ।
আবার ।
সঙ্গে সঙ্গে উঠান প্রতিফলিত আলোকচ্ছটার আভার রেশ পাওয়া যাচ্ছে। বড় নাতনীটি ভয়ে কেদে উঠল ।
আবার বিশ্ফোরণের শব।
আবার!
আবার !
উঃ কি প্রচণ্ড শব্ধ! বাড়ীতে মেঝেতে কম্পন সঞ্চারিত হয়ে যাচ্ছে ।
দেবগ্রলাদ বললেন বড় ছেলেকে- মেয়েটাকে তুমি কোলে চেপে ধরে বস। বড় খোকাকে আষাকে দাও। চেপে ধরলে ওরা সাহম পাবে।
দয়জার মুখে ধাড়িয়েই পুজ্রবধূ ভূকরে কেঁদে উঠল ।--একি 1 একি! ওগো-_ষাগো !
--কি? কি বউম!।
৮
-ওরে খোকন! ওমা, আমার খোকন? একিহলমা?
আলোর লম্মুথে এনে দেখ! গেল-_শিশু বিবর্ণ--হিম--হয়ে গেছে । বিক্ফোরণের 'আতঙ্কে, মা কাপতে কাপতে শিশুর মুখে স্তন দিয়ে সজোরে তাকে বুকে চেপে ধরেছিল, _ শিশু যত চঞ্চল হয়েছে, মায়ের বাহুবেই্নী ততই দৃঢ হয়েছে--গভীরতর আতঙ্কের মধ্যে। শেষে দে যখন শান্ত শিথিল হয়েছিল--তখনও ম| তাকে ঘুমস্ত ভেবে বুকে চেপে ধরে বসে ছিল। কিন্তু তার মধ্যেই শিশু শ্বাসরু্ধ হয়ে মার1 গেছে ।”৩৫ 'মন্বস্তর? উপন্যাসে যুদ্ধের প্রতাক্ষ ছবি এসেছে নানাভাবে । ছুই বিরোধী পক্ষের সম্মুখে লড়াই-এর ক্ষেত্র কলকাতা! ছিল ন।। কিন্তু একপক্ষ সামরিক দক্ষতায় বৌম। বর্ষণ করে চলে যেত, আবার সাধারণ মানুষ তার বিষক্রিয়াকে নীলকণ্ঠের মত গ্রহণ করে অসহায় আতঙ্কিত জীবন, বহুক্ষেত্রে অমোঘ নিয়তির নির্দেশের মত মৃত্যুকে গ্রহণ করেই নীরব হয়ে যেত। সে সময়ের এক বামপন্থী কর্মী নৃপেন্দ্র তথা নেপীর যে আর্তমানুষের সেবার তৎ- পরতাঃ তার ছবিতে আছে যুদ্ধ-ক্রিয়ার বিষাক্ত রূপ £
কানাই প্রশ্ন করলে-_তোমার কাপডে জামায় এত রক্তের দাগ কেন নেপী?
ম্লান হেসে নেপী বললে_-বোমায় উণ্ডেডদের রক্ত কানুদা।
_উগ্ডেডদের রক্ত ?
--্যা, মে এক মর্মীস্তিক দৃশ্ট কানুদ]। একটা বস্তভীর ওপরে বোম] পডেছে। কতকপ্তলি নিরীহ হতভাগ্য-_উঃ, সে কি দৃশ্ট__কারও হাত গেছে, কারও পা গেছে, কারও বুকে কারও পিঠে স্প্রিশ্টার ঢুকে ছিন্ন ভিন্ন ক'রে দিয়েছে। বন্তীর মধ্যে কাটা হাত-পা-আম্গুল এখনও পড়ে আছে।
কানাই একট। গভীর দীর্ঘশ্বা ফেললে । কলকাতার বুকে যুদ্ধের বলি আরম্ত হযে গেছে ৮৩৩৬ উপন্তাসের নায়ক কানাই-এর অভিজ্ঞতার ছবি আরও ভয়াবহ । রাতে শক্রপক্ষের বোমা বর্ষণের পর ক্ষতির পরিমাণ দেখতে এসে কানাই অর্জন করে নতুন এক অভিজ্ঞতা। ইউরোপের রণক্ষেত্রে একের পর এক নিধিবাদে নিবিচারে সৈন্য মৃত্যুর যে ভয়াবহতা, সমস্ত রকম মানবতাবিধ্বংসী যে রণক্ষেত্রের লোলুপতা, তা এই যুদ্ধসমকালে রচিত কথ) সাছিত্যের নায়করা পায়নি, কিন্তু সীমিত ক্ষেত্রে যেটুকু অভিজ্ঞত। যুদ্ধের, তা যে কত ভয়ানক, তারাশক্কর বন্দ্যোপাধ্যায় কার আর্ত সেবার মধ্যে যেন তারই দলিল লিখেছেন £
“**“কানাইয়ের মনে হল, নরম লম্বা কিছুর উপর পা। দিয়েছে । টর্চ ফেলেই সে শিউরে উঠল। সাহ্গষের একখান হাত, বাহুর আধখান। থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিটকে এসে
৮৪
পড়েছে। সেদিকে চেয়ে থাকবার মত সমর নাই। সে এগিয়ে গেল। একজন পড়ে গোঙাচ্ছিল, তার ওপব আলো ফেলে দেখল---তার মাথা! থেকে রক্ত গড়াচ্ছে, কাধের থেকে রক্ত গড়াচ্ছে, সে চেতনাহীন । কানাই বদল তার কাছে (৩৭
বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাবেই আমে শহরের বুকে আত্গ্রস্ত মানুষের পলায়নের হিডিক। মনোজ বন্থু গ্রযখ এই পলায়নের ছবি একেছেন তার “সনিক' ভপন্তালে, প্রবোধ সান্তাল একেছেন সংক্ষেপে তার কোন কোন গল্পে । তারাশঙ্কর “মন্বস্তর' উপন্তালে সেই পলায়নের দৃশ্ঠকে জীবন্ত করেছেন । গুজব যেমন আছে, তেমনি আছে নিশ্রদীপ রাঞ্জির অন্ধকারে ঢাকা শহরের বুকে একাধিক সাইরেন ধ্বনি । বোমাবর্ধণের প্রত্যক্ষ শবের প্রতিক্রিয়াজনিত মানমিকতাতেই সর্বস্তরের মানুষের পলায়ন ঘটে দিনের পর দিন । নায়িক। নীলা অফিস থেকে ফেরার পথেই নানান গুজবকে শোনে । সেই রকম সব গুজবের থেকেই তৈরী হয় বিরাট শহরত্যাগীর দল :
“560 22 [070 0:91009+--কিলকাতা৷ থেকে সরে যাও,
জোর গুজব--বড়দিনের রাত্রি থেকে নিউইয়ার্ম-ডে পর্বস্ত কলকাতা তারা নমভূমি ক'রে দেবে।” মানুষের মনে গোপনে গোপনে আতঙ্ক সঞ্চারিত হয়েছে । আতঙ্কিত মানুষ গ্রতি কথায় বিশ্বাস করে পালাবাব যুক্তিকে প্রবল করে নিচ্ছে ।
হাওডায় শিয়ালদহে বিপুল জনতাব স্থটি হয়েছে। স্টেশন-প্রযটফর্মে ভিল ধারণের স্থান নেই। ছেলে-মেয়ে জিনিসপত্র নিয়ে পরম্পরের সঙ্গে চাপ বেধে বসে আছে পতঙ্কের মত। কোলাপ মিবল্ গেটে রেল কর্মচারীর বদলে ইউরোপীয় সৈনিক মোতায়েন হযেছে। কুলিদেব দর পয়সায-আনায় কুলুচ্ছে না, পাচ-দশ-বিশ-পঞ্চাশ টাকা পধস্ত। ধনীদের রাশীকৃত মাল ঢুকে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত গৃহস্থ থেকে কুলি কামিনের এক শা! । পড়ে আছে। ট্রেনেব পব ট্রেন চলে যাচ্ছে। কতক চুকছে মরীয়ার মত, বাকী সব পড়ে থাকছে । চীৎকার করছে। মুহুর্তে মুতে আলছে ট্যাকৃমি, ঘোডাব গাড়ি, রিক্সা, আক যাত্রি বোঝাই মোটর বাস। হাওড়া ব্রীজ জনসমুজ্দরে পরিণত হয়েছে ৮৩৮ যুদ্ধের সুক্ষ অন্তংশীল সামাজিক ও নৈতিক প্রতিক্রিয়া যেমন ছিল গভীরে, তেমনি প্রত্যক্ষ যুদ্ধ-ভযের কারণে একাধিক মৃত্যু, সম্পদ ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে ভয়ার্ত মানুষের পলায়নের কারণে অসহাষ “ইভাকুয়ি'-র দল-ও দেখা দিপ্লেছিল কলকাত৷ ও শহরতলীব বুকে । তার চিন্র বস্তুত প্রত্যক্ষ যুদ্ধেরই এক পরোক্ষ অবধারিত রূপ।
মনোজ বন্থুর সোনিক' উপন্তাস যেন যুদ্ধ-নমকালীন বাংল! কথাসাছিত্যের একটি অন্ততম উপযুক্ত দলিল। যুন্ধ-নমকালকে লেখক সমস্ত দিক থেকে এর পটতুধ্ ঘটনা,
ও
চবিজ্ঞ ও প্রতিপান্তে কনকনে লীতের দিনে গায়ে জডানো৷ অতিগ্রয়েজনীয চাদরের মতই অবধারিত ও ওতপ্রোত করেছেন। বাংলাদেশ তথ কলকাতার বুকে যুদ্ধের প্রস্ততি, প্রতাক্ষ যুদ্ধের স্থবূপ চিত্রণ, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক ছুর্যোগজনিত ক্ষতগুলি_ _মবস্তর ইত্যাদি, গান্ধীজীর আগষ্ট আন্দৌলনেব প্রতিক্রিয়া, গ্রামগঞ্জেও সুখে-শাস্তিতে বাম করা কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি ও অসছায়তা, রাজনীতিব সন্ত্রাসবাদ_-এসব মনোজ বস্থব এই উপন্তাস যুদ্ধ-সমকালকে লিখিত দলিলের মত নিশ্চিত করেছে । সে সময়েব দৈনিক অমুতবাজার পত্রিকার গ্রন্থ সমালোচনার প্রতিবেদনে “দৈনিক সম্পর্কে বল। হয,--"য00৩ 10005৮5138৪ 0০] 5101 0107৩ 026901951010 [01169 51006 016 50811 ০01 015 5600170 ০0110 ৪] 01 005 70151861012, 11106, 06589191101) 8170 11010905031 ০01 563051080. 1719 ০8085 19 1080১ 1019 117065 818 [01015 ৫19৮7, 1)15 760 2100 5/01061) 9০ 1০ 116, 1100170916 10005/16065 ০01 1176 069581)1 116 8190 5101 168119]া) 01 06817611995 181860 1106 00০01 60 1116 1)616171 018 11106 101110910 00070100116 01 01৩ 81211. 08860 01 ০001 0069.৩৯
উপন্যাসেব অন্যতম নায়ক সদ্য জেল-ফেরত পান্নালাল ও তার সঙ্গী শিক্ষিকা উম! সন্ধ্যে কলকাতায় হেটে চলেছে । এ কলকাতা জনবহুল শহর নয়। রেুন-বর্মার পতনের পব আসন্ন যুদ্ধ-ভযে ভীত সাধারণ মান্ষগুলিব শহব ছেডে পালিয়ে যামাব পর সন্্ন্ত শংকিত কলকাতা £
“এখন ব্লাক-আউটের মধ্যে মনে হচ্ছে, গহন অরণা ছাষে অনন্ত রাত্রিবেল! চলেছে ছুটি প্রাণী। দু'পাশে রুদ্ধ-কবাট নিঃশব বাভিগুলি যেন বন্ধ শতাব্দীব পরিতাক্ত অট্টালিকা--মাটিব নীচেকাব বিলুপ্তি থেকে সম্প্রতি এক প্রাচীন নগর খুঁড়ে বের কবা হয়েছে।
ভয় ভয় করছে উমার । কাছে--অত্যন্ত কাছাকাছি একেবারে পাচ্ছর গ৷ ঘে*সে চলেছে।
পান্ু-দা গো।
পাল্নালাল অন্যমনস্ক ছিল, চমকে ওঠে।
ফুটপাথে উঠে এস। লরী আসছে এ যে। চাপা দেবে।
ছুটো আলো অনেক দূরে--দৈত্যের রক্তাক্ত চোখ ছুটে! । গর্জন করতে করতে প্রবল বেগে লরী ছুটে গেল। বন্দুক হাতে একদল বিদেশী তার উপর । তাদের হাসির ধ্বনি আর লরীর আলোয় রাস্তা এক মুহুর্ত জীবন্ত হয়ে আবার গভীরতর অন্ধকারে নিময্প হল।'৪০
৮
কলকাতার বুকে যুদ্ধ আসেনি, এ হুল আসব যুদ্ধকে প্রতিবোধ করার মহড়া । শহরকে নিশ্পদিপ করে, বন্দুকধারী বিদেশী দৈন্যের তৎপরতা বৃদ্ধি করে, শহরে মাছষধের শহুর- ছাড়! করে সে সময়ের শানক-সম্প্রদায় যে অবস্থাব স্যটি করেছিল বাংলাদেশে, তা যুদ্ধের কালে! ছায়ার ভয়কে থমথমে করে তোলে । আবার এই যুদ্ধ-কথাই সত্য হুয জাপানী বোমার প্রত্যক্ষ আক্রমণে । বাকাবডশি গ্রামে কলকাতা থেকে চলে-আসা জমিদার হরিহর রায়ের কাছে কলকাতার অন্গুপমের কাছ থেকে চিঠি আসে। তাতে জান যায় £
ধবাইশে ডিসেম্বর সেই যে বোমা পড়েছিল কলকাতায় । তারপর থেকে সমস্ত ঠাণ্ডা। এত আন্দোলন-আলোচন। হচ্ছিল বোম! নিয়ে। কিন্তু দেখা গেল বড় রকমের পটক। ফাটাব চেষে হয়তো কিছু বেশি । পর্বতের মৃষিক প্রলব। গ্যাসপোস্ট দু-একটা ছেঁদ। হয়েছে, প্রচুর কাচ ভেঙেছে, মহিষ ও মানুষ মরেছে গুটিকয়েক, পার্কে ও রাস্তায় গর্ডও হয়েছে দু-্বশট। ৷ ব্যান, এদের তাড়। খেয়ে সেই যে বোমাওয়ালারা পালিয়েছে, আর কোনদিন হয়নি এয়ুখো । শহরে মানুষজন ফিরে আসছে । লোক চলাচল বেডেছে রাস্তায় ।*৪১ বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেনি, যর্দিও তখনো শাসকশ্রেণী অর্থাৎ বুটিশর! ছিল যুদ্ধলিপ্ত। দ্বিতীয় বিশ্ববুদ্ধ প্রথম বাংলাদেশের মান্যকে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞত৷ দান করে। কলকাতার বুকে বোমাবর্ণ সেই অভিজ্ঞত। দিলেও তা নামমাত্র । কিন্তু প্রত্যক্ষ-যুদ্ব-অভিজ্ঞতা নামমাজ্জ হলেও, তাপ্ন পরোক্ষ ফল ভয়াবহ । তা সমাজদেহকে অন্থভাবে, আরও গভীব ছুংখজনক ছুবারোগ্য রোগে আক্রান্ত কবে । শহর ছাড়িয়ে বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে তার প্রতিক্রিয়। ছিল ভয়াবহ । “টসনিক' উপন্যাসের শেষে উমা ও সুপ্রিয়া! যখন হা-অল্নে হতাশ, বিধ্বস্ত, নিম্নবিত্ত ও কৃষকদের গ্রাম ঘুবতে বেরোয়, তখন স্বৃপ্রিয়া গ্রশ্নাত্বক শ্বগতোক্তির মধ্যে মেই ভয়াবহতারই ইঙ্িত ঃ
“নিংশবে চলেছে উম! আর স্থপ্রিয়।। আপন মনে হঠাৎ স্থপ্রিয়া বলে ওঠে, অথচ একটা বোমা পড়েশি এধিকে কোথাও । কলকাতায় দু'চারটে পটকার মতো যা ফুটেছিল, তার আওয়াজ আসেনি এতদূরে । কিসে গুডল গ্রাম ?৪২
মনোজ বন্ধ তার উপন্যাসে যে যুদ্ধে প্রতাক্ষ চিত্র একেছেন তা মূলত গ্রাম বাংলার ও কলকাতার বুকে নেমে-আসা, সাধারণ মান্্যদ্বের জীবন-যাপনে '্রভাবিত-করা যুদ্ধের ছায়ারূপ। বরেন বহু তার 'রঞ্তরুট” উপন্তাসে অবশ্তই গ্রামবাংলা! থেকে সরে গেছেন, লাধারণ মান্্ষকে সাধারণভাবে রেখে যুদ্ধের ছবি আকেননি, তিনি বাঙালী যুবকপের অসহীয়ভাবে যুদ্ধের পৈন্তদলে যোগদান ও দেই সৈনিকদের আসক যুদ্ধের সম্মখীন হওয়ার
৮৭
জন্ত তৈরী-হওয়া এবং সেই সুত্রেই .যুদ্ধ-পরিবেশ ও যুদ্ধ-অভিজ্ঞতার এক জীবন্ত ছবি উপহার দিয়েছেন । সৈনিকদের ক্যাম্পের একজন সন সৈন্তদলে-নাম-লেখানো নায়ক অমলকে শোনায় £
'রঙুরুট "হচ্ছে বি্রুট কথাটার মিলিটারী সংস্করণ। যত্বো আকাট মুখ্যুব পাল্লায় পড়ে ইংরেজী তাষায় এমনি হান হয়েছে 1৪৩ কিন্ত ভবিষ্যতের অভিজ্ঞতায় অমল বোঝে-_-“রঙরুট* কথাটার আর একটা অর্থই ঠিক__ তুল পথ" । যুদ্ধ যে মানুষকে কোথায় নিয়ে যায়, সমাজের কোন স্তরে নামাতে পারে, প্রতাক্ষ যুদ্ধেব সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সৈনিক জীবন তারই প্রমাণ দেয়। বাংলাদেশ ছেডে অমল দেশীয় তরুণ সৈনিকর্দের সঙ্গে আসে আসাম সীমান্তে । সেখানে জাপানী সেনার ভযে ভীত ইভাকুষীদের অবস্থা শোচনীয় । সে রকম এক ইভাকুয়ীর নিরম্ন অসহায় অবস্থা থেকে সাময়িক বাচাতে গিয়ে অমল যখন হাবিলদার ভট্টাচার্যের কাছে খাবার চাইতে আমে সৈনিকদের সংরক্ষিত রস্দ থেকে, তখন হাবিলদার যেভাবে কথা বলে, যে ইঙ্গিত দেয়, তা সমস্ত নৈতিক জীবনকে কবরস্থ করারই সামিল £
“*****এটা হল লড়াইয়ের মাঠ, এখানে ওসব সের্টিমেপ্টাল ব্যাপার চলেনা ৷ জানেন ওই ইভ্যাকুয়ীদের কাছে হাজার হাজার টাকার বর্ম নোট আছে। এক টাকার জিনিষের জন্যে একটা দশ টাকাব নোট ওর অল্লান বদনে দিয়ে দেবে। আপনি যা জিনিষ দিচ্ছেন, তার জন্তে পঞ্চাশ টাকা ওই তন্তরলোক হাসিমুখে দেবে । আমাকে অন্তত কৃডিট! টাক! দিতে হবে ৪৪ সৈনিক জীবনের নির্দয়তা সুগঠিত সমাজ-জীবনে আনে অভিশাপ। ববেন বহন তব উপন্তাসে যুদ্ব-সমকালের বিশ্বপ্রেক্ষিতকে পটভূমিতে রেখেছেন । সেই যুদ্ধরত ছুই ধনতাস্ত্রিক গোষ্ঠী এবং তাব মধ্যে জড়িয়ে পড়। সমাজতান্ত্রিক বাষ্্ রাশিয়া-_- এদের যুদ্ধজনিত তৎপরত! বাংলাদেশে ও বাঁঙীলী মানুষদের যেভাবে যুদ্ধতীত ও রদ্বশ্বাস কবে তোলে তা লক্ষা করার মত। ইম্ফষলেব ঈরজায় জাপান আপাতত শাস্ত। বৃটিশদের তৈরী বাঙালী সৈম্তর! শাসক শ্রেণীব নির্দেশে সীমান্তে আডষ্টভাবে আসন্ন যুদ্ধের জন্ প্রতীক্ষারত। এরই মধ্যে লেখক কিন্তু সৈন্ঠের যে প্রতিবাদী মানসিকতার ছবি এঁকেছেন তাদের সংলাপ-বিনিময়ের মাধ্যমে, তা তাদের তীব্র বুটিশ-বিরোধিতাকেই স্পষ্ট করে :
“******সৈস্ঘ সে যে দেশেরই হোক না কেন, আমাদের মতই তাদের অবস্থা । এই রকম একটা অমাঙ্ষিক অবস্থার মধ্যে কতদিন জীবন কাটাতে পারে। এইবার তারাই দেবে লভাই বন্ধ করে।
৮৮
খগেন বললে, তোর মুখে ফুল চন্দন পড়ুক অনন্ত, এ শালার যুদ্ধ থামুক, আর যেন পারছি না! ।
পাঁচকড়ি বললে, “কিন্ত জামানী যদি রাশিয়ার হাতে ঘায়েল হয়, তাহলে এ শালা বৃটিশর। তে! বহাল তবিয়তেই থেকে যাবে। তবে আর এত ব্ভ যুদ্ধট! হযে লাভ কি হুল
অনন্ত বললে, 'ল[ভট। এই হুল ঘষে ভারতবর্ষের কুডি লক্ষ লোক যুদ্ধের সমস্ত কায়দা শিখে নিলে । এই যুদ্ধ থামার সঙ্গে সঙ্গে তারাই পারবে এ শালাদের পিটিয়ে পগাব পার করতে ।১৪৫ বাধা হয়ে যে সব বাঙালী সৈনিক-জীবন বেছে নিয়েছে, তারা কলকাতার পরিবার জীবন থেকে দুরে সরে থাকলেও পবিবার জীবনের সেই শাস্তির নীড়ের আকর্ণ, তাব মধ্যে বাস-করা মান্ষপ্তলির জন্য উৎকঠ্ঠা, উদ্বেগ ত্যাগ করতে পারেনি । যুদ্ধভয় এবং যুদ্ধজনিত জীব্নহানির ভয় তাদ্দের মধ্যে পরোক্ষ গভীর প্রতিক্রিয়ার স্বটি করে। িঙুরুটেগর লেখক নিপুণ শৈল্পিক দৃষ্টিতে বাঙালী সৈনিক অনস্তর মানস জটিলতায় তা প্রাণবন্ত করেছেন । কলকাতায় থাকে অনন্তর সংসার, বাবা-ম'-ভাই-বোনেবা। সেখানেই জাপানীরা একদিন বোমা বর্ণ করে। এখবর পায় সিভিলিয়ান এ এস. এম-এর মুখ থেকে £
'জানেন, কাল দুপুরে জাপানীরা কলকাতান্ব বোমা ফেলেছে ।
অনস্ত আচমকা সীট্ থেকে লাফিয়ে ওঠে, “এা--বোমা 1 কলকাতায় ?”
এ, এস. এম, বললে, গা ।
ক্ষণেকের জন্যে অনন্ত ভাত পা৷ অবশ হয়ে যায়, ধপ করে আবার সে টুলটার ওপর বসে পডে। ধারে ধারে তার মাথাট। ভারী হয়ে আসে-_ঝুঁকে পড়ে বুকের ওপর ।
একটু পরে চোখ তুলে সে তাকায় এ, এস. এম-এর মুখের দিকে । সে বেচারা ফ্যাল ফ্যাল করে অনস্তর মুখের দিকে চেয়ে আছে-_নিজেকে ষেন সে মস্ত অপরাধী মনে করছে এমন একটা খবর দেওয়ার জন্যে । আর অনস্তর দৃর্টি চলেছে রকেটের মত ছটে, ব্রহ্মপুত্র পার হযে, আলাম ছাভিষে বাঙলায়-বাঙলার সোনার মাটি মাড়িয়ে, সবুজ গাছের তল! দিয়ে গিয়ে গৌচেছে কোলকাতার পিচঢাল] ঝকঝকে তক্ভকে রাস্তায় -রান্তার পর রাস্ত| পার হয়ে তার এদে ঘুণধরা বাড়ীর সামনে । হঠাৎ তার দুষ্ট থমকে যায়-ঘাড মাথা! গুঁজে এদে। ঘুপধর বাডীট! মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে । তার মা, দাদা, বৌদিদিরা। এর! কি কেউ বেঁচে নেই! বাচার মত অবসর কি এরা কেউই পায়নি? তাদের জীবনের কোন আভাস তে! সে পাচ্ছে না--একটা গোষ্ডানির শবও
৮৯
তো] ওই ধ্বংসস্তুপ ভেদ কবে বেরিয়ে আসছে না! তাহলে কি সব শেষ-__এই মানুষগুলো, যারা আর কিছুক্ষণ আগেও বেঁচে ছিল-_কয়েকদিন আগেও যাব! তাকে চিঠি লিখেছে পুনরায় বিয়ে করতে, বুক ভরে চেয়েছে স্বথে শান্তিতে ঘর করতে--ত্ার৷ আজ কেড নেই। জাপানীবা বো ফেলে সব শেষ করে দিলে-মুছে দিল তাছের সমস্ত আশা আকাজ্! এই পৃথিবী থেকে ।
ঝুট করে অনন্ত উঠে পড়ে, হন্হন্ কবে হাটতে থাকে ক্যাম্পের দিকে । হ্যা, ছুটি তার চাই-ই। 'তাব ছুটি যদি না দেয, তাহলে সে আজই ফোর ডাউন আসাম মেলে পালিয়ে যাবে--বাডী সে যাবেই । যাদের নিয়ে তার জীবন-_যাদের জন্তে সে বেঁচে আছে, তাদেল মরা বাচা সে নিজের চোখে দেখবে 1৪৬ আসাম সীমান্তে আছে রেঙ্গুন। বর্ীর কোহিমাকে ছুর্দিক থেকে আক্রমণ করেছে জাপানীবা । ডিমাপুবের পেট্রোল সাইডিং-কে বুটিশ সৈম্যর] কড! গার্ড দিয়ে ঘিরে রেখেছে । সংকটাপন্ন কোহিমার কথা ভেবে ভিমাপুরে থমথমে ভাব, চারপাশ ব্র্যাক আউট। কলকাতার ব্লাকআউটের চিন্র একেছেন একার্ধিক কথাসাহিত্যিক । কলকাতায় বোযাবর্ধণেব প্রত্যক্ষ ছবি, সাইরেন ধ্বনিব ভয়াবহ নির্দেশের ছবি জীবন্ত করে এঁকেছেন একাধিক উপন্তাসিক। কিন্তু প্রত্যক্ষ যুদ্ধ-সীমান্তে বসে সৈন্যদের ষে যুদ্বঅভিজতা, তার নিপুণ বর্ণনা! দিযেছেন বরেন বন্ু। মে অভিজ্ঞতা সিভিলিয়ান্দের এলাকায় বোমাবর্ধণ থেকে ভিন্ন । একদিকে সৈনিকদের জীবনযাপনে উচ্চৃজ্ঘলতা, অন্ত- দিকে বাচার জন্য অসহ্াযতা__-এই ছুষেব সংযিশ্রণে ববেন বন্থুর অস্থিত চিত্র ভিন্ন যুদ্ধ- স্বাদ দেয :
“হঠাৎ সাইরেন বেজে উঠল।
দুঃসহ সে আতনাদ বুকফাটা কান্নার মত মানুষকে পাগল ক'রে তোলে । অসন্য সে অবস্থায় মুহূর্তের জন্যে বিভ্রান্ত হয়ে পডে। উধের্ব চোখ তুলে আকাশের দিবে চাষ । াদ্দ। আকাশের কোণে চাদের আলো ঝলমল করছে । আতঙ্কে তাদের গাষে কাটা দিয়ে ওঠে।
কয়েক সেকেও্ড পবেই ছুটল এ্যার্টি-এয়ার ক্রাফট থেকে গুলি। ভিমাপুর বেস-এর মব কটা এযাক-এযাক্ পোষ্ট থেকে একই সঙ্গে ফারারিং চলতে থাকে । কথনও গুলি ছুটছে রিপিট ফায়ারে--কখনো অটোম্যাটিক । সমস্ত আকাশট। ট্রেসার বুলেটেব আগুনে লরল রেখার রূপালী জলে ছেয়ে গেছে ।
সাইরেনের শব অফিসাররা লক্ষ্য করছিলেন, ট্রেঞ্চে যাওয়ার আগে মদের গানে শেষ চুমুকট! দিয়ে নিচ্ছিলেন । কিন্তু ফায়রিঙের শবে হাত থেকে গ্লাস খসে পড়ে যায়
৪
নেশ! তাঁদের ছুটে যায় । মেজর নেলসন্ এক দৌড়ে বাইরে ছুটলেন। সমস্ত স্টেশনট! কাটা তার দিগ্নে ঘেরা--কেবল দুহাত চওড়া জিগ্ জ্যাগ একট! রাস্তা রাখা হয়েছে থার্ডক্লাম ওয়েটিং রুমের সামনে । সোজ! দৌড়ে বাইরে যেতে গিয়ে মেজর নেলসন্ ছোচট খেলেন সেই কাটা ভাবের বেডায়, সামলে ওঠার আগেই তিনি আটকে পড়লেন কীাটাতারের মধ্যে | ওহ্ গড'-_আর্ডনাদ যারা শুনলে তারা সজাগ হয়ে সঠিক রাস্ত| ধরলে।
রেকী স্কোয়াড ব্রেণগানগ্ুলোকে থাক গ্রাক পজিশন করে নিয়েছে। এক ঝাঁক প্লেন উড়ে আসছে কোহিমাব দিক থেকে, তার শবে হাওয়ার কীপন বেডে উঠেছে। ব্রেনগান ক্রু হাতেব পাতা ঘেমে উঠেছে । রাইফেলম্যানরা “নিল ডাউন? পজিশনে বসেও উরুর কাপন বোধ কবতে পাবছে না। প্লেনের ঝশাকটা যেন ছড়িয়ে পড়েছে-_ জমাট শব যেন পাতলা হয়ে যাচ্ছে। ক্রু নাম্বার ওয়ান চিৎকার করে উঠল, “কোথায় গেল সেই শুয়োবক! বাচ্চ। কনেনি ”
একজন রাইফেলম্যান বলে ওঠে, তুই চালা গুলি-__-সে শালা এতক্ষণে কেঁচোর গতে ঢুকেছে--"চাপা। একটা গোঙানির শব্ধ খুব কাছে, কোথায় গুমরে উঠেছে! চমকে নে সেইদিকে ফিরে চায়। তাদেরই একজন রাইফেলম্যান মুখ থুবডে স্যাগুব্যাগেব ওপর পড়ে রষেছে।
ইয়ার্ড ফোবম্যান সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে পাইলট ইঞ্জিনটাকে কেটে নিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে সার্টিং নেক-এ। পয়েপ্টস্ম্যানব! হাতবাতি নিভিয়ে শ্স্রিট ট্রেঞ্চে আশ্রয় নিয়েছে। তাব। চেয়ে আছে আকাশের দিকে, মৃত্যু ষেন গুঁড়ি মেরে এগিক্ে আসছে তাদের কাছে -আবণকাছে।
রিজার্ভ ব্যাচ ততক্ষণে শুষে পড়েছিল। সাইরেনের শবে তার উঠে বসেছে। এরপর আব তাদেব কিছুই করবার নেই--তার! রয়েছে নিরাপত্তার সের! বন্দোবস্তেব মধ্যে। ইচ্ছে করলে তাব! সম্পূর্ণ নিশ্চিন্তভাবে শুয়ে থাকতে পারে-_তবুও তারা! উঠে বসেছে। এ্যাক্ এাক্ ফায়ার যখন সুরু হল তখন জনকয়েক ম্বাটির ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে পডেছে-_ছু*তিন জন কাপডে পায়খানা কবে ফেলেছে । কতক উঠে দাড়িয়ে কাঠ হয়ে আছে, কেউ কেউ আপন মনে বিডবিড করছে। হঠাৎ একজন চিৎকার করে উঠল, 'আমি পালাব--আমি মবতে পারব না--* অন্ধকারের মধ্যে ছোটাছুটি করে নে পথ খুজতে থাকে ।'৪?
বরেন বসন "অন্ধিত বাঙালী সৈনিকদের যেষন নতুন নতুন অভিজ্ঞতার চিত্র আছে উপন্তাসে, যেমন আছে যুদ্ধজনিত ভয়, হঠাত্মৃত্যুর আতঙ্গ-উৎকণ্ঠা, তেমনি আছে যুদ্ধ থেকে একদিন মুক্তি পাওয়ার জগ্ত আস্তরিক চাপা আশা-উৎসাহ-উদ্ভাস । আস্তর্জাতিক
৯১
দাবাখেলাষ যুদ্ধের একদিন শেষ এগিয়ে আসে । জার্মানীর দিকে নাৎসী বাহিনীকে হটিষে আসে একদিক থেকে বীরদপ্ রাশিয়া, অপরদিক থেকে আমেরিকা । এদিকে বটিশ বাধ! দিতে থাকে আর এক ফ্রণ্টে জাপানীদের । জয়ের এমন বিজয় রথচক্রের উল্লসিত ধ্বনির মধ্যে বাঙালী সৈনিকদের প্রতীক্ষিত মুহূর্তগুলি নানারদিক থেকে উতরোল হয়ে ওঠে । যুদ্ধ যে মানুষ চায় না, যুদ্ধকে যে মানুষ ঘ্বণা করে, যুদ্ধ কোনদিন শেষ হলে যে সর্বস্তরের মানুষের হৃদক্নরক্ত পবিত্র আনন্দের নীল নীলিমাকে নিবিড অলম্কৃত করতে পারে, এমন এক পরিস্থিতি একেছেন লেখক রেডিও থেকে বাংলায় যুদ্ধের টাটকা খবর শোনার পব £
“ছেলেবা ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে পডে--গোল হয়ে হিসেব করতে বসে, আর কতদিন। আশায়, আনন্দে মন নেচে ওঠে, বুক ভ'রে যায়-_যুক্তির পথে তারা পা বাডিয়েছে। লাল ফৌজ এগিয়ে চলেছে বালিনের দিকে--তাদের চ্লার পথে বুক ভর! বদ ঢেলে দেয় লক্ষ যোজন দরে বসে এই মুক্তিকামী মাচ্ছ্ষগুলে। ৷ যুক্তির প্রতীক লালফৌজ-_জীবনে তাদের এনেছে আশা, উৎসা, উদ্দীপনা । তারাও যেন চলতে থাকে লাল ফৌজেব সঙ্গে কার্পেথিয়ান পর্বত ডিঙিয়ে ভ্যানিয়ুৰ পার হয়ে, ওয়ারশ*র ওপর দিযে, দুর্মদ পদক্ষেপে বালিনের দিকে । বালিন। বালিন হয়ে গেলেই যুদ্ধ শেষ-_তাদের যুক্তি--সৈনিক জীবনের অবসান! আবেগে উচ্ছ্ীসে বুকের মধ্যে তোলপাড করতে থাকে । তারাও তাহলে বীচবে। আবার তার। বাড়ী ফিরবে 1৪৮
সঞ্ষষ ভট্টাচার্ষের “রাত্রি” উপন্তাসে দ্বিতীয় বিশ্বধুদ্ধ এসেছে পরোক্ষভাবে--উপন্তাসের প্রধান প্রেক্ষিতরূপেই । যুদ্ধের কোন প্রতাক্ষ চিন্ত্র নেই, নেই পবোক্ষভাবে কোন চিত্রের উপস্থাপনা | যুদ্ধ আছে উপন্তালের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত চরিত্রগুলির বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি-তর্ক- আলোচনার মধো । উপন্যাসটিকে লেখক প্রপান পাঁচটি অধ্যাষে ভাগ করেছেন ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৩-_এই পাচটি বছরে ম্বতত্ত্রভাবে রেখে এবং প্রত্যেক বছরেব নির্দিষ্ট সাল দ্রিয়ে চিছিত কবে। প্রথম অধ্যায়ের সচনাই যুদ্ধ আরস্তের সংবাদ দিয়ে ঃ
প্রবীরের চীৎকার £ 'যুদ্ধ--লেগে গেছে বলেছিলাম কিনা ?
তত স্্ধাস প্রবীরকে আর সময় দিলে নাঃ যুদ্ধ কে বাধালো ?
“কে আবার? রণকামুক ছিটলার 1 সশন্দে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে প্রবীর বসে পড়ল--উত্তেজন! থামিয়ে এখন যুদ্ধের কূটনৈতিক পাকচক্রের আলোচনায় মন দিতে হবে।
“বুদ্ধ লাগবে তো! জানাই ছিল । ওটা অমুতবাজার স্পেশ্যাল ?
কহ
কাগজট। স্ুহাদের হাতে তুলে দিয়ে দিয়ে প্রবীর বললে : “হিটলারের ছবির নীচে ফ্যানাটিক লেখা--উপযুক্ত পদবী |,
*****কাগজ থেকে মুখ তুলে স্বহাসই বললে £ “যুদ্ধ ত সবাই চেয়েছিল-_হিটলার তা হলে ফ্যানাটিক হতে গেল কেন ?******তোরা কমুনিসটরা ধনতত্ত্রের পতনের জন্টে একট! যুদ্ধ কায়মনপ্রাণে আকাঙ্ষ। করছিলি কেন ?
“দে যুদ্ধ মানে পোলাও্ড আক্রমণ নয়--১৪৯
সঞ্জয় ভট্টাচাধ শিক্ষিত খান্ুষগ্ুলির যুদ্ধজনিত উত্তেজনা! ও যৃদ্ধ বিষযে ন্তর্ক-বিতর্কেই যেমন তীর যুদধ-শাবণার পরিচয রেখেছেন, /তমনি বাংলাদেশ তথা কলকাতার বুকে যুদ্ধেব ঞ্ুম*্অগ্রগতিব একটি চিন্তর একেছেন শিল্পের সততাঘ । স্থহীসের ফ্ল্যাটে একটা বাত কাটাবার পর তাখ প্রেমিকা শ্রামলীব সঙ্গে সকালে চা থেতে খেতে স'লাপ-বিনিযযেব সমষ মুদ্ধেব একটা খবখ-চ্ত্র আক) হযে যায £
'ঘুদ্ধেব টউত্তীপে সারাদিন হৃম্কাব দিষে বেডাতে চাও নাকি তুমি? ভাসির সঙ্গে কথাগুলে৷ ছিটিযে দিল শালী ।
“ঝা ত নয়”_টোস্ট চিবিষে চলল স্ুুভাস : 'যুদ্ধটায় আমাদের খানিকটা সচেতন থাকা উচিত, আমাদেব ভাগোর সঙ্গেও জড়িত যে এ যুদ্ধ, ততটুকু স্চেঠন | হল্যাপ্ত- ডেনমার্কে নাৎসী এরোপ্রেন বোমাব ফমল বুনছে কিন! বা প্যারিম ত্যাগ করতে বেনো ক'ফ্রোটা চোখের জল ফেলেছে এসব উত্তাপ স্ষ্টিব খবর না রাখলেও চলে যদি এটুক কাগুজ্ঞান থাকে যে পথিবীব বং বদলাবার যুদ্ধ লেগেছে-আর ভারত সেই পথিবীব্ট একটা দেশ ।,৫9 যুদ্ধ আরম্তের বছর ছুই পব থেকেই বুটিশ উপ-নবেশ শাসিত বাংলাদেশ তথ। কলকাতা প্রতাক্ষ যুদ্ধের ভযে তটস্থ হযে ওঠে । তার চিত্র একেছেন লেখক £
'জনশুন্য হযে চলছিল কলকাতা ৷ এতোর্দিন ব্ল্যাকআউটট। ভয়ংকর মনে হত নাঁ_- এখন সতা ভয়ংকর মনে হয়। এই কালো বাত্রিঘ গোপনতায় সত্যি কোথায় কি যেন একটা ষড়যন্ত্র চলছে--একসময় এম ৩1 ঝাপিষে পড়বে অসহায কলকাতাব উপর। বেজে উঠবে লাইবেনের একট! অশুভ তীক্ষ আর্তনাদ__সেই যাস্িক আতমাদ হাজার রক্তমাংসেব আর্ভমাদেব সংগে মিশে ভরিষে তুলবে কলকাতাব আকাশ 1” ৫১ "অফিস থেকে নিজেব গাভি করে শমীনকে নিয়ে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনাষ ঘুখর হয়ে ফেরার পথে একসময়ে হুজনেই নীবব হয়ে যায় যুদ্ধ ভয়ে ভীত সদা-চঞ্চল চৌরঙ্গীর পরিবেশ দেখে £
'জনহীনতাষ নিষ্প্রাণ চৌরঙ্গী। বিশু, বিদর্ণ কলকাতার চেহারা । কিন্ত এই
ভীত
বিশ্তুদ্ধ দেছেও কোথায় যেন বেঁচে আছে প্রাণ। ১৯২১ বা ১৯৩০-এর প্রাণ না হোক তবু যে প্রাণেরই উত্তরাধিকার রক্তের ক্ষীণত্রোতে যেন আবিষ্কার করা যায । বন্দেমাতরম ধ্বনির সঙ্গে ফিরে এসেছে আবার সেই উতৎক, সেই রহস্ত। কিন্তু হয়ত বড ছুর্বল এই প্রাণের উতৎ্মাহ। ভঙ্জুর, বাচতে পারবে না৷ বেশিদিন 1৫২
“রাত্রি” উপন্তাসে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া আছে, যুদ্ধ চিত্র নেই। তবে প্রতিক্রিয়ার চিন্বে, যুদ্ধ নিশ্চিতভাবেই তার একটি এঁতিহামিক ক্রমে উপস্থাপিত।
চার
বাংলাদেশের মান্য যুদ্ধ-সমকালের প্রেক্ষাপটে কেবলমাত্র উনিশ শ' বিয়াজিশ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের কষেকটি দিন প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধকে দেখে। আর যুদ্ধেব প্রস্ততির কারণে কলকাতার বুকে নিপ্পর্দীপের মহড়া, ইতস্তত বাফল-ওয়াল তৈরী, ট্রেঞ্চ খোঁড়া, মাইবেনের ধ্বনি, বিমান আক্রমণের প্রতিরোধ করার প্রস্ভতি, বাংলাদেশের বুকে ট্রেনে-্রাকে মিত্র-পক্ষেব অগণিত সৈম্ত সমাবেশ-_এ লব দিয়েই যুদ্ধ সম্পর্কে একটা অভিজ্ঞতা গড়ে তোলে মনে । আমাদের দেশের কথাকারগণও সেই অভিজ্ঞতার ফপল রচনা করে গেছেন বাংল! ছোটগল্প-উপন্থাসে ৷
ইংরেজ কবি শ্যাহ্থন, ওয়েন_এদেব মত কোন লেখকই প্রত্যক্ষ যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এশিয়া-ইউরোপে ইলিয়া এরেনবুর্গ,, আনেষ্ট হেমিংওয়ে, লিও টলষ্য, মিখাইল সলোকভ, এরিখ মাবিয়া রেমার্ক প্রয়ুখের মত প্রত্যক্ষ রণভূমিতে যোগদানের বাস্তব অভিজ্ঞতার পরিচয় আমাদের দেশেব লেখকদেব উপন্তাসে নেই, থাকার কথাও নয। কারণ, প্রথম কথা হল, আমাদের দেশের জল-আবহাওয়ার পরিবেশ ও ভৌগোলিক অবস্থান যুদ্ধের ভয়ংকব ও বীভতৎ্ম মানসিকতা। গঠনের একাস্ত পরিপন্থী । তাই, যুদ্ধ কয়েকদিনের জন্য বাংলাদেশের বুকে সদস্ভ পদক্ষেপ ঘটালেও তার তীব্রতা! তারাশংকর, স্থবোধ ঘোষ প্রমুখের রচনায় নেই। দ্বিতীয়ত, ভারতবর্ষ কোনদিনই বিশ্বযুদ্ধের একমাত্র রণাঙ্গন, উগ্র যুদ্ধপ্রেমীদের প্রধান লক্ষ্য হয়নি। ভারতের রূড বাস্তব যুদ্ধের শিক্ষাগ্রহণ সম্ভব হয়নি কোনদিনও প্রত্যক্ষ যুদ্ধের মাধ্যমে। ভারত শাস্তি- প্রিয় দেশ। নিজের থেকে বাস্তব যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া এবং প্রত্যক্ষ যুদ্ধজয়জনিত আগ্রাসন মনোভঙ্গির থেকে বরং প্রবল যুদ্ধ-বিরোধী মানসিকতাই তার চিরকালের চারিত্র্য।
এই সুত্রেই আসে যুদ্ধ নিয়ে ঝড় জীবন দর্শনকে উপস্তাস-গল্পে গ্রস্ত করার কথা । টলস্টয়ের 'ওয়ার এগ পীস' রেমার্কের "অল কোয়ায়েট অন দি ওয়েস্টার্ণ ক্র,
৪
হেমিংওয়ের “ফর হুম দি বেল টোল্ম্” সলোকতের উপন্তাসের মত বড় জীবন্শন-দাপ্ত বক্তব্য তারাশংকরের মন্বন্তর? উপন্তাসের যুহ্ধচিত্রে, গোপাল £হালদারের পঞ্চাশের পথ উপন্তালের যুদ্াপ্রসঙ্গে, ৰরেন বন্থুর “রুরুট” উপন্তাসের শিক্ষার্থী 'সৈনিকদ্ষে্র জীবনে, নবেন্দু ঘোষের 'পলাতক" ও সুবোধ ঘোষেব 'কর্ণফুলির ডাকে? গল্পের নায়ক ভাবনায়, মনোজ বন্থুর "সৈনিক" উপন্যাসের প্রতিপান্চে স্পষ্ট হয়নি। যা হয়েছে, তা মূলত যুদ্ধ প্রস্তুতির মহ্ুডাকে লক্ষ্যে রেখে কলকাতা শহরের পরিবেশ-প্রতিচিন্ত্রণ মার ।
অর্থাৎ বাংলা উপন্তাস ও ছোটগল্লে যুদ্ধপ্রভাব এসেছে নিছক চিত্রের বান্তবতায়, শিল্পের দর্শনে নয়। তার পরোক্ষ রূপ দেখতেই আমর] অভ্যান্ত হয়েছি কথাকারদের বিবিধ বিচিত্র রচনায় ও মানসিকতায । পরিবেশ-দচেতন। £ুগল্প ও উপন্তাসে অনেকটা! উদ্দীপন বিভাবের মত কাজ করেছে, তার বেশী কিছু নয়। গল্প ও উপন্তাসের কাহিনী ঘটনা ও পরিবেশের পথে মানস-পরিভ্রমণ করতে করতে স্বভাবী পাঠক যুদ্ধের কিছু পরোক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করেন বাস্তব চিত্রের সততায় । কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় যুদ্ধ গ্রসঙ্গটুকু উল্লেখ করেই গল্প শেষ করেছেন। সঞ্জষ ভিষ্টাচার্য মধ্যবিত্ত বিলাসী বুদ্ধিজীবীদের মধ্ো যুদ্ধের তথ্যকে বিতর্কে জোর'লে আলোয় তত্বাভাদে কূপ দিয়েই তার উপন্তানিক কর্তব্যটুকু সমাধা প্ুকরেছেন। তাবাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যক্ষভাবে বোমাবর্ধণের ভয়াবহতা, আড়ষ্টতা, অসহায় অবস্থার শিল্পসম্মত প্রতি চিত্রণে থেমে গেছেন।
যুদ্ধ হয়েছে আনামে আর বাংলাদেশে । আসাম সীমান্তে সৈনিকর। যুদ্ধ করেছেন, বাংলাদেশে সীমান্তে যুদ্ধের কারণে বোমাবর্ধণের ঘটন। ঘটেছে মাত্র। এই সামান্ত অভিজ্ঞতা শিল্পের স্ত্রে জীবনের গভীরতা প্রকাশে ম্বচ্ছ আয়নার কাজ করেনি। রেমার্কের উপন্তাসের সেই ক্ল্যাণ্ডার্সের ভয়াল রণক্ষেত্র তো! হয়নি কলকাতা তথা বাংলাদেশ । তাই টলস্টয়ের “ওয়াব এগু পীসের" মত বিরাট যুদ্ধব-জিজ্ঞাসার মহাকাব্য হয়ে ওঠেনি ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমকালের কোন ৰাংলা! উপন্যাস । বরং আমর] মনে করি, যুদ্ধের ভয়াল অন্ধকার, আডঙ্ রুদ্বশ্বান পরিবেশ প্রতিকী রূপ পেয়েছে বাঙালী লেখকদের লমাজ-চেতনায়, নৈতিক ভাগুন ও অয়ক্ষষ ভাবনায় । যুদ্ধের পরোক্ষ চিত্র ও প্রভাব সমাজ, ব্যক্তি ও জীবনের গভীরে এনেছে প্রত্যক্ষ তথ্যের সতারূপ, সমকালের উপন্তাস ছোটগঞ্পে তারই সাদর শিল্প-ন্বীকৃতি |
ন৫
উল্লেখপঞ্জী ও টাকা
১880৫620 মি০৪1195 (1968), ১ 70690066800, 1901690 3 662০3 11890, 0.8. 9 8 ২5৮ 19 50. 85012106 700005660, 01615015601 1718 00550098130 ৪008)98 00 €%118,00 70096509090 1506 62 4061046 0৪ 9 119 18508 09 দ৪ড 80006) 686 ০০020116108 ॥ 069 99109027০01 ৪] 608515098৮1. 100৩ 88870015556 70020000 310005]0 043. ৩ ও 20111610911 96958810080 (00011810690 12070 10019) 8100057 96966209: 4 1939 ৮] 81006 86০৫5 01 21851858700 71610 70০9 ( [00000, 1898 ) ডা109600 £ং ৪, €01)0101011, ৮12205, ৫ "শনিবারের চিঠি' সম্পাদক-সজনীকান্ত দাদ “সংবাদ সাহিত্য ১২শ বর্ষ ১*য সংখ্যা আৰণ ১৩৪৭ প্. ৫৫ ৬ কল্লোলের কাল জীবেন্্র নিংহ রার প্. ১২ ৭1119 [,165156025 ০1 52 (1978) 45075 06706216020 00:40 00000105868 99 চুব6:০” 99 ৮1109 1,5662510 88608670)0 28100] 0055195 ৮ 19 ৯ ক্কান্তের চিটি ২৮শে ডিসেম্বর ১৯৪২ বেলেঘাট! সোমধার বেল] ২টো “সুকান্ত সমগ্র“ নবম যুদ্রণ মাধ ৯৩৮৩ পূ. ২৯১-২৯৩ ১*-১২ “মাথুর' গল্প কেদারনাথ বঙ্্যোপাধ্যায় 'নমস্কারী। গল্প-নংকলন প্রথম সংক্করণ ১৯৪৪ পূ. ১৯ ৩5 ৭ ১৩২০ “কর্ণফুলির ডাকে' গল্প সুবোধ ঘোষ পরশুয়ামের কুঠার' গ্রন্থ (১৯৪২) প্ ৮৭, ৯৩, ৯৪ ৭৪, ৯৬ ১০৬, ৯৬ ১০৮ ২১-২৪ 'পলাতক' গল্প নবেন্দুঘোষ এই সীমান্ত শ্রস্থ (মে, ১৯৪৫ ) প্ ৭২, ৭৬-৭৭, ৮১ ২৫-২৮ পঞ্চাশের পথ (অক্টোবর ১৯৪৪) গোপাল হালদার পরিচ্ছেদ-ঢুই প্ ৩*, পরিচ্ছেদ-তিন পৎ $৪ ৭৫, চতুর্থ অধ্যার ৮২ ২৯, ৩* “তেরশ পঞ্চাশ' গোপাল হালদার প্রথম প্রকাশ জানুয়ারী ১৯৪৫ প্রথম অধ্যায় প্ ১*, পঞ্চম পরিচ্ছেদ প্.৮৭ ৩১-৩২ উনপঞ্চাণী গোপাল হালদার পরিচ্ছেদ এগারো! প্. ২২২-২২৪, পরিচ্ছেদ-বারে। পূ ২৬৮ ৩৩-৩৮ “মস্ত তারাশংকর বন্যোপাধ্যায় তৃতীয় সংস্করণ মে ১৯৪৫ অধ্যায়-আট প্. 4*-9১, জধ্যায়- বাইশ প্.২৩৫, ২৫ অধ্যায়; পূ ২৮৪। অধ্যায় একুশ পূ ২৩২, অধ্যায়-তেইশ পৃ ২৬২-২৬৬, অধ্যার-বাইশ পৃ ২৪৫ ৩৯ 3090৮ 29519 4082515985৮ 1786:185 22-,1946 04 ৪৯-৪২ সৈনিক মনোজ বন বট মুদ্রণ সেপ্পেম্বর ১৯৫১ প্রথম পরিচ্ছেদ ৩ পৃ ৮-৯, সপুম পরিচ্ছে। ১ পৃ ১২২. একাদশ পরিচ্ছেদ ১২ পৃ ২১৪ ৪৩-৪৮ রঙুরুট বরেন বনু প্রথম সংস্করণ *৯৪৫ ছ্িতীর় অধ্যায় পৃ ৩৪, পরিচ্ছেদ ৬ প্র ১৫৪, পরিচ্ছেদ ১১ পৃ ২৩২, ২৩৫-২৩৬, পরিচ্ছেদ ১৫ পৃ ২৯১-২৯২, পরিচ্ছেদ ১৬ পৃ ৩১১ ৪৫-৫২ রাত্রি ( ১৯৬৬) জঞ্র় ভটাচার্য অধ্যার £ ১৯৩৯ এক পৃঁন-১১, অধ্যায়; ১৯৪৭ এক পৃ ১৩৭, অধ্যায়: ১৯৪২ এক পৃ ২৫৫, অধ্যায় £ ১৯৪২ দুই প্ ২৮৯
শৃুও অস্যাস্ত্ প্রাক্কৃতিক দুর্যোগ ও মন্বস্তর-প্রতিক্রিয়ার ছৰি
এক
বাংল! কথাসাহিত্য দ্বিতীয বিশ্বযুদ্ধ-সমকালের পরিবেশে সবচেয়ে বেণী সমৃদ্ধ হযে ওঠে প্রাকৃতিক দুর্যোগ চিত্র ও মন্বস্তরেব কথায়। গল্প ও উপন্তাসের বড় বিষয় তখন চতুদিকে চেপে-বদা মহাম্বস্তরই । কোথাও প্রত্যক্ষভাবে, কোথাও বা পরোক্ষে, কখনো আবার মন্বস্তরেব গতীর কালো ছায়াপাতে বাংলা ছোটগল্প ও উপন্যাসের বিষয় হয়েছে সমৃদ্ধ। বল! যায়, সে সময়েব লেখকর| নানাভাবে তাড়িত হয়েছেন এমন একটি স্থবিশাণ নর্বব্যাপক ভয়াবহ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হওয়ার কারণেই । এই সময়ে গতা- ন্নগতিক ধারার লেখকরা এসব থেকে মচেতন-ভাবে এবং সঙ্ঞানে সরে গিয়ে ফেভাবে গল্প ও উপন্যাস রচনা করেছিলেন, তাতে তাব। প্রধান লক্ষ্য করেছিলেন কথাসাহিত্যের মূল ছু'টি বৈণিষ্ট্য। এক বিদেশী সমালোচকের ভাষায় সেই বৈশিষ্ট্য দু'টি চিহ্নিত করা যাক, 6 0 00166 200৪ 8008৫ 006 1006] ৪16 169 00100121110 9৪ ৪ 0010 01 61661191110611 010 115 10061101119 85 & 0াণা। 01 811৮১ মন্তব্যটি সমালোচক কবেছেন ইংলগ্ডের মধ্য-আঠারো শতকের চারজন ব্ড উপন্যাস- কারের বচনার পরিবেশ, তাদের উপন্যাসের শিল্পমূল্য ও উদ্দেশ্য বিচার প্রসঙ্গে । এই মন্তবাটি আমাদের দেশের ছিতীয বিশ্ব-ুদ্ধ-সমকালের গতানুগতিক ধারার কথাসাহিত্য ও সাহিত্যিক মম্পর্কে যথোপযুক্ত মনে করি ।
কিন্তু অত্যন্ত চেতন ও প্রথম শিল্প বোধ এবং বুদ্ধিসম্পন্ন লেখকরা মন্বস্তরকে এদের মত আদৌ এডিয়ে না গিয়ে ম্পষ্টভাষায় ও গৃঢ ব্যগ্নায় বিষয় করেছেন, বাস্তবতায় রূপ দিয়ে গেছেন গল্পে ও উপন্যাসে । মন্বন্তরের করাল ভয়ঙ্করী রূপেব সামনে দীড়িয়ে যুক্ধসম- কালীন দমাজের ও মানব-তাগোর মধ্যে নিশ্চিত ভাঙন করতে শুরু হয়েছিল। বাইরে ও ভিতরে সেই ভাঙনের তয়াবহ রূপ । তা ক্রমশ চরম নৈরাশ্ঠ ও অবক্ষয়কে অবধারিত করে তোলে । আর এই সময়ের কথালাহিতো তা-ই ম্পইত গৃহীত হয়েছে। চারপাশের অবক্ষয়কে কেউ হবু এঁকেছেন আগামী দিনের নৈরাশ্ঠটকেই সত্য তেবে, কেউ বা আবার মনবস্তরের পরেও বড় জীবনের আশা জানিয়ে রচনায় তার বক্তবাকে প্রতিষ্িত করেছেন।
৭
মোটকথা, বাংলাদেশের মে সময়ের বুদ্ধিজীবী লেখকবা সচেতনভাবেই গল্পে ও উপন্তাসে সমাজের মহতী অবক্ষয়ের বূপকে অভিনন্দিত করেছেন বূঢ বাস্তব-বোধে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকাল পর্যন্ত বৃটিশ কথাসাহিত্য সম্পর্কে এক সমালোচক যে মূল্যবান মন্তব্যাট করেছেন, তা আমাদের দেশের আলোচ্য সময়ের লেখকদের লেখা সম্পর্কেও সমান মানে প্রযুক্ত হতে পারে” 0355 আঃ ৪0০৪৮ & 80015 10101) 17081)1- 6৪ ৪11 119৩ 0188510 ৪8065 01 ৫0602061২00 7 11081. ৪ 91808009190 19 (1091 (16 ড/110615 006185615959 108160985 ০0%৩1-511)011)10815 01 0106 81065 01 00৩ 80016 0065 ৫৩০1০1.২ বাংল! সাহিত্যের লেখকর! নানার্দিক থেকে মহামন্বস্তরের রষ্টা, সাক্ষী ছিলেন বলেই মন্বম্তরজনিত অবক্ষয়কে যথাযথ শিল্পের মমতায় ও শিল্পীর নিরাসক্-চিস্ততাষ আকতে সক্ষম হয়েছেন ।
মন্বস্তর ছিল মূ অবিবেকী মাশ্থবেরই স্থষ্ট অবস্থা । এগারো শ' ছিয়াত্তর সালে যে মন্স্তর দেখা দিয়েছিল, তা-৪ ছিল স্বার্থান্ধ মানুষের তৈরী। দেশে দুতিক্ষ এসেছে বটিশ শাসন স্থায়ীভাবে ভারতের বুকে কায়েম হওয়ার পর থেকে তাদের ব্যবহৃত নীতিব ঈলথ-মস্থর গতিযুখে এবং নিগুঢ় অভিশাপেই | বৃটিশ শাসন-ব্যবস্থায় বাংলাদেশে যখন শহর গডে ওঠে অগণিত গ্রামকে অবহেলা করে, ভ্রুত শহরের বুকে শ্রেণীবিস্তাস দেখা দেয, তখন থেকেই ছু্তিক্ষ তার মাটি তৈরী করতে থাকে । এই সমাজশ-উন্তবের ইতিহাস ও মন্বম্তরের অবধারিত আবিভাবেব মৌল ন্যায়কে মনে রেখে প্রখ্যাত এক বাঙালী ইতিহাসকার মন্তব্য করেছেন,_-“কলকাতায় ও শহরতলীতে, মুখ্যত কলকাতায় যখন এই শেণী দ্রুত গড়ে উঠছে, ঠিক তখনই দশকের পর দশক জুড়ে বাঙলার গ্রামাঞ্চল ক্রমশ দরীদ্র থেকে দরি্রুতর হচ্ছে। ভূমির ধারা নূতন মালিক হচ্ছেন জলসেচ ব্যবস্থার দািত্ব সম্বন্ধে তীদের কোনো! সচেতনতা। নেই, ইংরেজ রাজসরকারের তো তা নেই-ই। তার ফলে কৃষির ক্রমীবনতি এবং দুণ্ভিক্ষেব পৌন:পুনিক করাল গ্রাম অনিবার্ধ হলো 1৮৩
বৃটিশ শুপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থায় বন্তত শাসক সম্প্রদায়ের নিদারুণ অদৃরদশিতা ও কুৎসিত সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থপরতাই এমন মহামন্বম্তরের জনক । এর সঙ্গে যুক্ত হয় প্রাকৃতিক দুর্ষোগ ও ভয়াবহ বন্তা । উনিশ শ' একচল্লিশ সালের ডিসেম্বর মাসে জাপান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হিটলারী বাহিনীর সহযোগিতায় ও প্রেরণায় যুদ্ধে অবতারণ। করলে ভারত তথা বাংলাদেশে যুদ্ধ নানাদিক থেকে প্রভাব ফেলে। এরই স্তরে ঘটে পূর্ব সীমান্যের বাংলাদেশ ও আসামে পৃর্োন্চম যুদ্ধ প্রস্ততি । কলকাতার বুকে বেশ কয়েকবার বোমা- ব্ধণে তার রূপ আরও তয়াবহ হুয় সাধারণ নাগরিকদের জীবনে।
এমন যুদ্ধ-পরিবেশে এমন কিছু ঘটনা! ঘটে যার মধ্য থেকে জনম নেয় মন্বস্তর-- অনেকটা
ছিতীয় বিশবযুদ্ধ-সমকালীন বাংল! কথ্াসাহিত্য ?
৯৮
সমুদ্র মন্থনে জাত অম্বতধারার পাশে সীমাহীন বিষ-ম্রোতের মৃত। কিন্তু সান্রাজ্যবাদী শাসককুল সেই বিষে নীলকণ্ঠ হতে চাইল না, মন্বন্তরের বিষ ও তার জ্বাল অন্থ-পরমাণুর আকারে ছড়িয়ে পড়ল আমাদের দেশের ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার-ভিক্তিক জীবন- যাপনের গভীরে । উনিশ শ' বিয়াজিশ সালের ছুর্বার আগষ্ট আন্দোলনের প্রতিরোধ ও জালা তখন শাসককুলকে ক্ষিপ্ত পশুর মত অত্যাচারী করে তুলেছে দেশীয় মানুষের বিরুদ্ধে। এমন মানসিকতার প্রতিশোধ নিতেই বুঝি শানককুল আসন্ন মহামন্বম্তরের প্রধানতম অবিবেকী ভূমিকায় থেকে যায়।
(১) উনিশ শ বিয্লাজিশ সালের অক্টোবরে মেদিনীপুর নিদারুণ প্রাক তিক ছুর্ষোগ অর্থাৎ সাইক্লোনে বিধ্বস্ত হয়ে যায়, সেই সঙ্গে আশপাশের জেলাগুলিও » (২) উনিশ শ' তেতাল্লিশ সালে প্রাকৃতিক ছুর্ধোগের কারণে ঘটে বিপুল শশ্তহানি , (৩) এই সালেই আবার দেখ! দেয় দামোদরের গ্রচণ্ড ব্ন্যা । এমন প্রাকৃতিক ছূর্ষযোগের ছৰি বাংলাদেশের বুকে যুদ্ধ-গুরুর পর থেকেই ছিল। এই বিষয়টি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালের একটি বাংলা মাসিক পত্রিকায় সংবাদ আকারে এইভাবে অঙ্কিত,--“পশ্চিম বাংলার উপরে অন্নকষ্ট ও ছুর্শীর করাল ছায়া পড়িয়াছে। বীকুড! ও বীরভূমে এবার সময়ে বৃষ্টি হয় নাই এবং যে বৃষ্টি হইয়াছে তাহাও পরিমাণে বড কম। ইহার ফলে, সময়-মত ধান্থ রোপন হয় নাই। তবুও আশ্থিন কান্তিকে বৃষ্টি হইলে, ধান্য কতক পরিমাণে বাঁচিত এবং ইচ্ষু আলু 'ইত্যার্দি ববিশস্তেব আবাদ হুইত। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, এই সময়েও বৃষ্টির অভাব হইয়াছে।*"" ' অনাবৃষ্ি জনিত শশ্তহানি পশ্চিমবাংলায় অভূতপূর্ব নহে।”৪ যুদ্ধ আরম্তের পর প্রথম দিকে যে প্রারুতিক দুর্যোগ, আগস্ট বিপ্লবের পর তা চরম ভয়াবহ রূপনেয়। কিন্তু এই যুক্তি ঠিক নয় যে এই দুর্যোগকে মানুষের পক্ষে প্রতিরোধ কর! সম্ভব ছিল না। একাধিক প্রাকৃতিক দুর্ষোগের কারণে যে শস্তের অভাব তাকে ন৷ দর করে, তার ওপর খখাড়ার ঘা+এব মতই শম্তের শোষণ নিবিচার, অবারিত ও বধিত আকারে চলে শানক গোষ্ঠীর দ্বারা যুদ্ধের রসদ মেটানোর অজুহাতে । অর্থাৎ (১) যুদ্ধের রসদ সংগ্রহের অন্ুহাত, (২) নবস্্ট জোতদার-মজুতদদার-চোরাকারবারীদের কালে হাতের কলকাঠি চালনার ষড়যন্ত্র_-এই ছুই কারণে এমন এক মন্বন্তর বাংলাদেশের বুকে বুকচাপা অনড ভারী পাথরের মত চেপে বসে, যার ফলে এক কোটির মত লোকের জীবন নানাভাবে ধ্বংসমুখীন হয় ।
সাম্রাজ্যবাদী শাসকগোষ্ঠী এর নিরসনে দু'টি পথ ধরে-_ প্রথমত, অধিক খান্ভ ফলাও, অভিযানের সুচনা ঘটায়, দ্বিতীয়ত, থাস্ রেশনিং প্রথার প্রবর্তন করে। ছুটি খাস্কনীতিই উনিশ শ' তেতাঙ্লিশে গৃহীত ও বাস্তবায়িত করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে
৯৪
সঙ্গে বাংলাদেশের বুকে বসতির চাপ ভয়ানক বাড়ে,--“"শ্যুদ্ধের দরুণ আমাদের বাংলা- দেশে নিদারুণ অঙ্্-সমন্যা। দেখা দিতেছে |" "**্রদ্ধদেশ, মালয় প্রভৃতি স্থান হইতে বনু ভারতবাসী অন্তত কিছু দিনের জস্ত বাংলাদেশে আসিয়া আশ্রয় লইতেছে। এই সকল দ্বেশ হইতে ভারতবর্ষে প্রবেশ পথই বাংলাদেশ । যুদ্ধের জন্য সহস্র সমর নতুন লোকেরও আমদানি এখানে হইয়াছে, ফলে অন্নসমন্তা মারাত্মক হুইযা উঠিযাছে 1, সাময়িক পত্রের এই সম্পাদকীয় প্রতিচিত্রের ভাষ্য মত্য। এই পত্রিকাই অপর একটি সংখ্যায় রেশনিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত থেকে আরম্ভ করে সর্বহা'র! শ্রেণীর মানুষ পর্বস্ত কোন্ জাতীয় অবক্ষয়ের সম্মুখীন হয়েছে, তার একটি নিপুণ আলেখ্য সংবাদ আকারে পরিবেশন করেছেন,--১৩৫*-এর মন্বন্তরে যেমন মহামৃত্যুন্বানের মধ্য দয! বাংলার তথাকথিত নিষ্শ্রেণীর মান্ছষের সকল সমস্যার নিরসন হইয়াছে, ১৩৫১ সালে তেমন নিয়মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বহু লজ্জাকর ও ক্লেশকর সমাধান হইয়া যাইবে। মৃত্যুর শীতল করাঙ্গুলি ইতিমধ্যেই তাহাদের দিকে প্রসারিত হইয়াছে ।***ব্লা নাই কহ নাই সাধারণ গৃহস্থ ভন্রলোকেব। নিঃশেষিত জীবনীশক্তি লইয়! পথেব মাঝখানে অকম্মাৎ মরিয়া বীচিতেছেন। এরূপ দৃষ্টান্তের অভাব নাই। ইহাবা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক একটি ক্ষুত্্র বা বৃহৎ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ৬
ছিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালে যুদ্ধবিধবন্ত বিশ্বজনীন প্রেক্ষাপটে ভারত তথ! বাংলাদেশে যে মহামস্বন্তরের স্থচনা, তার মুল ভিত্তিতে সম্ভাব্য কারণগুলিকেই আমরা আলোচনা করলাম। এই মন্বন্তরের ফলে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী, মধ্যবিত, নিম্নবিত্ত, গরীব, সর্বহারা সকলেই নানাভাবে ঘা খেষেছে। এদের শ্রেণী-সচেতনা যেমন তীব্র হয়েছে, তেমনি তার উত্ককট স্বাতন্ত্র মার খেয়েছে নানাস্যত্রে। অভিজাতর৷ আভিজাত্যবোধকে বিসর্জন দিয়েছে, কেউ বিসর্জন না! দিতে পেরে আত্মহননে নিঃশেষ হয়েছে নিজে এবং তার পরিবারকেও সেদিকে ঠেলে দিয়েছে। সুস্থ জীবন-নীতির হয়েছে সমূলে বিনাশ। কখনে। নিজেদের সারল্যে কখনো বা ইচ্ছাকৃতভাবে, আবার কখনো প্রবল অনীহার মধ্যে নীতি, আদর্শ থেকে সরে গিয়ে ছুনীঁতির ছুঃসাহসকেই একমাত্র জীবন ও সত করেছে নারীরা ।
এইসব গ্রহণ করেই বাংলা কথাসাহিত্যে মহামন্বম্তর হয়েছে অন্যতম উজ্জ্বল বিষয়। সেই বিষয় অনেকাংশে বাংলা কথাসাছিত্যে একটা চরম অগ্নিপরীক্ষার পরিবেশও রচন। করে। এমন অগ্নি-পরীক্ষার মধ্যেই স্থটি হয় প্রবোধ কুমার সান্তালের “অঙ্গার+এর মত গল্প, প্রকাশিত হুয় পরিমল গোস্বামী সম্পাদিত “মহামন্তম্তর” গল্প-সংকলনঃ মনোজ বন্থুর ছুংখ নিশার শেষে" গল্প সংকলন, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রিডিন ঘাটঃ গল্প এবং একাধিক
১৪৩
লেখকের মন্বন্তর বিষয়ক গল্পরচনা। এসবের পাশাপাশি গোপাল হালদাবের “উনপঞ্চাশী, পঞ্চাশের পর ও “তেরশ পঞ্চাশের মত মনুস্তর ভিত্তিক “ট্রলজি' জাতীয় উপন্যাস, তারাশংকবের মন্বস্তর” মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, নবেন্দু ঘোষ প্রয়ুখের একাধিক উপন্তাম-ছোটগঞ্পও মন্বন্তরের জীবন্ত ছবিকে জীবন-গ্যায়ে স্পষ্ট করে দেয়। উনিশ শ” তেতাল্িশ সালের মহামন্বন্তর যে সমাজ জীবনে এনেছিল ক্ষয়রোগের থেকেও মারাত্মক ব্যাধি, আজকের সমাজ ত প্রমাণ করে। যে ব্যাধি প্রবেশ করে মে সমাজে, তা কর্কটরোগের মত দুরারোগ্য । একাধিক লেখক মহামন্বম্তরকে গল্পে, উপন্তাসের জীবন- শিল্পে গ্রতিষ্ঠিত কবতে বনে নমকালের ন্যায়ে স্থির থাকেননি, আগামী দিনের কথাকে ব্ঞ্চনায় বোঝাতে সচেষ্ট থেকেছেন। কেউ আশাবাদী, কেউ বা নৈরাশ্তের দ্বিকে ঝুকেছেন সিদ্ধান্তে এসে নির্বাক বিন্ময়ে। প্রগাচ বিষগ্নতায় গল্প-উপন্তাসের উপসংহারে স্তব্ধবাক বিশ্ময়ে থেমে থেকেছেন একাধিক কথাকার । সচেতন সমাজবাদী লেখকর। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকৌণ থেকে নিরাস্ক্রচিত্ততায় ম্বস্তরের এঁতিহাসিক-রাজনৈতিক-সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমন্যাটিকে যুক্তি-তর্কে ও মননধর্মী শিল্পের মধাদ। দিতে উৎসুক থেকেছেন। মন্বন্তর যে মানুষ, সমাজ ও জীবন এবং মানবতার আঘর্শে প্রাণিত 'পবিবার-জীবন-্সমন্ত দিক থেকে অক্টোপাশের বদ্ধনের মত জড়িয়ে ধরেছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-সমকালের প্রেক্ষিতে রচিত একাধিক বাংলা গল্প ও উপন্তাপ তা-ই প্রমাণ করে।
ছুই
বাংলাদেশে প্রথম যে মন্বস্তর দেখা দেয়, তা হল বিখ্যাত ছিয়াতরের মন্বন্তর এবং তাবই সজীব ছবি একেছেন বঙ্কিমচন্দ্র তার “আনন্পমঠ" উপন্তাসে সন্যাী বিদ্রোছ্থের প্রেক্ষাপটে । ১৯৪৩ সালের মন্বস্তর ছিল আরও ভয়াবহ, নির্জম। এক ব্যঙ্গগঞ্জের লেখক প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে এই দ্বিতীয় মন্বস্তবের চিত্র উপহার দিয়ে বলেছেন, “এদেশে একবাব মন্বন্তর ঘটেছিল, এবারে ঘটল মহাম্ঘন্তর । একদিকে পথে পথে ক্ষুধার্ত নরনারীর মিলিত আতনাদ, অন্যর্দিকে খবরের কাগজে সভায় সমিতিতে তার প্রতিধ্বনি । চোখের সম্মুখে রাজপথের উপর লোক মরছে, পথে পথে মৃতদেহ পডে আছে, মা ম্বৃত শিশুকে কোলে নিযে কাদছে, স্ত্রী ্বামীর মুতদেহের পাশে কাদছে। কলকাতা শহরেই এই ভয়াবহ দৃশ্য দিনের পর দিন আমর! দেখেছি, আর তার সঙ্গে দেখেছি এই হতভাগ্যদের ফটোগ্রীফঃ মৃত ও মুমুুর বীভৎস সব ছবি, সর্বত্র একই ধরণের ছবি, যেমন পথে পথে একই ধরণের কান্না আর একই ধরণেণ মৃত্যু
ব্যাপারটি এমনই কল্পনাতীত, এমনই আকশ্মিক যে প্রথমে এ দশ্ত চোখে দেখলেও
১৬১
কারও ঠিক মতো বিশ্বাস হয় নি। প্রথমে এল গৃহসংসার ভেঙে দিয়ে পল্লীবাসীরা, এসে চালের দধ্োকানের সম্মুখে “কিউ করে দ্রাভাল। বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না, বসল। শেষে বসতেও পারল নী, শুয়ে পডল ৷ চব্বিশ ঘণ্টা পথের উপর অপেক্ষা করে থাকলে তবে কণ্টেশালের দোকানে সকালে ছু-সের চাল মিলতেও পাবে। বৌদ্ড্রে বৃষ্টিতে পথের উপর পশুদলের মতো জীবম্মত নবনাবীর ভিড জমে গেল। যাবা মবে গেলেও পথে বেরিয়ে আসতে পাবেনি তাদের কি ছুর্দশ। হল জানা গেল ন1।৮
এমন চিত্রের সার্থকতম প্রতিরূপ ছল বাংল ছোটগল্প ও উপন্তাস, যেগুলি যুদ্ধ সমকালে, ১৯৪৩ সালে ও অব্যবহিত পরবতাঁ কালে রচিত হয়েছে । গল্পকার ও ওউপন্যাসিকরা সকলেই লমান ক্ষমতায় ও সবক্ষেত্রে উচ্চ শিল্প-মর্ধাদ] দিষে যে মন্বস্তরকে চিঞ্জিত করেছেন, তা নয়, তবে বাংল! কথাসাহিত্যেব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসমকালীন পরিবেশে এইসব চিত্রের বাস্তবতায় ও তথ্যনিষ্ঠটায লেখকর! যথেষ্ট আস্তরিকতা ও যত্্শীলতাব প্রমাণ দিয়েছেন । কথাকারদের বক্তব্যের বলিষ্ঠতা যেমন আছে, ভেমনি আছে মহামনস্তরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবজাত সুক্ষ জটিল রূপের, সমাজ-ন্ায়-পরিবর্তীনের প্রতি চিন্রুণ।
মন্বস্তর যুদ্ধ-সমকালীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক-সামাজিক পরিবেশ থেকে জাত এক দুষ্ট ও ছুরাখোগ্য ক্ষত । এই ক্ষত কেবল অল্নের অভাব ও ত1 থেকে অকাল, অন্বাভাবিক ভয়ঙ্কর বীভৎ মৃত্যুকেই নির্দিষ্ট করেনি, অতি সংগোপনমে আমাদের সচেতন মনেব অজ্ঞাতে কখন যে কর্কট রোগের বীজাণু আমাদের সমাজদেছে ও জীবন-মনের রক্তে সংমিশিত করে দিয়েছে, তা জানতেই পারিনি । জীবন-নীতি ও মানবতার নীতিতে আমরা যে কতট1 ফাকা, ফাপ! হয়ে গেছি যুদ্ধদমকাল থেকেই, সমাজেব বাধন ছি'ডে সমাজকে কতটা যে উৎ্কেন্দ্রিক করেছে এই মাছ্গষের তৈরী কবা মন্বস্তব, তাব পরিচয় সমকালের লেখক-বুদ্ধিজীবীরা নানাভাবে তাদেব রচনায় প্রমাণ রেখেছেন । শিল্পীর আঁকা ছবিতে, সমাজ-সচেতন কবির কবিতায়, সমকালের ছুঃখ-ছুর্দশাষ ব্যথিত গাক়কের গানে যেমন এই মন্বন্তরের নিপুণ ছবি মেলে, তেমনি করুণ সমবেদনায় সার্থক হয়ে আছে তা৷ গল্পে উপন্তাসেও ।
প্রখাত কথাসাহিত্যিক-সমালোচক গোপাল হালদার মন্তব্য করেছেন,_-“এই মন্বস্তরুকে সম্পূর্ণ বপ দিতে পারেন এঁতিহাসিক নয়, শ্রষ্টা। তীর দৃষ্টিতে ভূল থাকতে পারে, কিন্ত তার সৃষ্টিতে তবু একটি সম্পূর্ণতার সাক্ষর থাকবেই ।”৮ 'মহামম্স্তর' গ্রন্থে সম্কলিত গল্পগুলির মধ্যে সম্পূর্ণ নাটকের আঙ্গিকে লেখা শচীন সেনগুপ্তের “রাজধানীর রাস্তায় রচনাটি বাদ দিলে থাকে অচিন্তযাকূমার সেনগুপ্তের “কালনাগ+, নবেন্দু ঘোষের “কষ্ধি” পরিমল গোম্বামীর “শেষের হিসাব ও “ভাঙন”, গ্রবোধকুমার সান্তালের অঙ্গার”
১৬২
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “ভিড়', বিভ্ৃতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের বীর প্রশ্ন, মনোজ বন্থর "দ্বীপের ান্ষ* মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “কে বাঁচায়, কে বাঁচে', সরো'জ রায়চৌধুরীর “ক্ষুধা, ও “ক্ষুধার দেশের যাত্রী নামের এগারোটি গল্প। গল্পগুলি ১৯৪৩ সালের মন্বস্তরের প্রামান্ত দলিল বিশেষ । “ভূমিকায় গোপাল হালদার বলেছেন, “ব্দেনার যে তীব্রতা, যে নিষ্ঠুতততা, ষে স্থগভীর অনস্তাপ এই সমসাময়িক লেখকদের চেতনাকে অস্থির ও বিঙ্ষু্ধ করে তুলেছে তা বোধ হয় ভবিষ্যৎ শিল্পীরা! এমন করে উপলদ্ধি করতে পারবেন নী। হয়ত সে ইচঙ্গিতও তাদের গ্রহণ করতে হবে এইরূপ সমসাময়িক চিত্র উপকরণ থেকেই--সমধর্মী শিল্পীদের চেতনায় এই মন্বস্তর কি দাগ বেখে গেছে তা থেকেই ।...-এইভিহাসের স্বাক্ষব এর পাতাক্স, সাহিত্যেরও নতুন স্বীকৃতি এর সকল কাহিনীতে ।*৯
'মহামনবন্তরে' সংকলিত গল্পগুল সম্পর্কে “নিবেদন” অংশে সম্পাদক আরও কিছু সাধারণ অথচ মূলাবান মন্তব্য করেছেন,--বিশুদ্ধ গল্পমূল্য ছাডাও ছুতিক্ষের মর্ম ইতিহাস হিসাবে এর একটা অতিরিক্ত পৃথক মূল্য আছে এবং সেইখানেই 'মহামন্বস্তর'-এর বিশিষ্টত।।...এব গ্রতোকটি কাহিনীই চোখে দেখা ঘটন! থেকে লেখা ।...এর গল্পগুলোতে ট্রাজেডি ফুটে উঠেছে তাব কারণ লেখকগণ চোখে দেখ! ঘটনার ট্র্যাজেডি থেকেই তাদের গল্পের প্লট সংগ্রহ করেছেন অর্থাৎ দুতিক্ষের ট্রাজেডিই তাঁদের গল্প লেখায় অন্ধপ্রাণিত করেছে ।*১১দুভিক্ষেব ট্র্যাজেডি ছু"দ্িক থেকে স্পষ্ট হতে পারে, এক, স্থূল অর্থে প্রতিদিনের অয্বন্ত্রের বাচাব সংস্থান সংগ্রহে অক্ষমতা ও অক্ষম সংগ্রামের দিক থেকে, ছুই, সুক্্ অর্থে সমস্ত রকম সামাজিক, মানবিক, নৈতিক সম্পর্ককে রক্ষা করার প্রয়াস, প্রয়াসে পরাজয়, অসহায় পতনের দিক থেকে৷ স্থল এবং লুগ্ষ্ব দু'দিকেই মানুষে মাস্থুষে সম্পর্কের কথা নিশ্চয়ই প্রধান। তবে “দিনযাপনের, প্রাণ ধারণের গ্লানি্টুকু একদিকে যেমন সতা, অন্যর্দিকে তেমনি সম্রস্ত রকম মানসিক জটিলতা।, বৈষম্যের সুত্রে মানুষের আত্মিক সংকট, মানবিক সম্পর্কের সমূহ ধবংদ ও সেই স্থত্রে মান্থষে মান্ধষে চরম বিচ্ছিন্নতাও সত্য হতে দেখা যায়। প্রাকৃতিক ছুর্যোগ বা মানুষের সৃষ্ট খাত্যাভাবে যে ছুতিক্ষ, তা দূর হয়ে যায় একদিন। শুধু থান্য বস্ত্র আবার একদিন মেলে । কিন্তু এক সময়ের খাস্যাভাবের ষে সামাজিক-মানবিক ও নৈতিক মংকট গভীর ছায়াকে গভীরতম করে ম্ান্থুষের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে, তাকে সম্পূর্ণ সরানো আর কোন দিন হয়ে ওঠে না। বিপরীত ও নতুন সামাজিক প্রেক্ষিতে তা নতুন রূপ নিয়ে সমাজের ও মানুষের মনে ও জীবনে সম্পুজ থেকে ঘায়। তা প্রগতির ভিত্বিকে যেমন জীর্ণ করে, মানুষের মন ও প্রাণের নৈতিক বোধের পরিশীলনের প্রক্রিদনায় প্রধান অন্তরায় হিমেবে থেকেই যায় । বুর্জোয়া সমাজ
২৬৩
ব্যবস্থায় এমন একটি মন্বস্তর সমাজ-জাষ্টিলতার যেমন আষ্টা, ভেমনি সমস্ত রকম মানুষে মান্ছষে মানবিক-নৈতিক সম্পর্কে গোপনতম, সর্বহস্তারক, শীতল আততায়ীগ।
মন্বস্তরের এমন আততায়ীর ভূমিকা লক্ষ্য করি প্রবোধ কুমাব সান্তালের “অঙ্গার” গলে। এই গল্পে “হামন্বন্তর' গ্রস্থে সংকলিত অন্ত গল্পগুলিব মত মন্বস্তরের নিষ্ুর, বাস্তব নগ্ন তথ্যের ভার নেই, আছে ম্বন্তরের সর্বগ্রাসী করাল ছায়াব শান্ত হিমশীত্ল সত্য-রূপ। “অঙ্গার” গল্পের দিল্লীর সরকারী চাকুরে উত্তমপুরুষ কথক নলিনাক্ষ অবশ্য তাঁর বর্ণনা যুদ্ধের তথ্যকে বর্জন করেনি, এই বিরাট মহানগর একদিকে হয়ে উঠেছে কাঙ্গালী প্রধান ও আর একদিকে চলছে যুদ্ধ সাফল্যের প্রবল আয়োজন। ফলে, যার! অবস্থাপন্ন ছিল তার! হয়ে উঠেছে বহু টাকার মালিক, আর যারা গরীব গৃহস্থ ছিল, তারা হয়ে এসেছে সবস্বান্ত। দেশের সবাই বলছে ছুতিক্ষ, গবর্নমে্ট বলছেন, না, এ দৃতিক্ষ নয়, খাছ্যাভাব। **অসংখ্য যানবাহনের জটলা-_ ট্রাম, বাস, মোটর, গরুর গাড়ি আর মিলিটারী লবির চাকার আচড়ানির মধ্যে শোনা যাচ্ছে অগণ্য মৃত্যু পথযাত্রী ছুিক্ষ পীড়িত্রদেৰ আর্তরব। জঞ্জালের বালতি ঘিরে বসে গ্রেছে কাঙালীরা।, পরিত্যক্ত শিশুর কঙ্কাল গোঙাচ্ছে মৃত্যুর আশায়, স্ত্রীলোকর্দের অনাবৃত মাতৃবক্ষ অস্তিয ক্ষধার শেষ আবেদনের মতো! পথের নালার ধাবে পডে রয়েছে ।১১ নলিনাক্ষর ব্যক্তিগত প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লেখক একেছেন মন্ন্তরের তথ্যের প্রষ্াণ দেওয়। নগ্ন ছবি,--আমাব হোটেলের নিচে সমস্ত রাত ধরে শত শও কাঙালীর কান! শুনে বিনিদ্র ছুংস্বপ্রে এই কটা দিন কোনমতে কাটিয়েছি--আর পাঁরিনে ৷ ছুর্গন্ধে ভরা কলকাতা ।”১২ খাগ্য ও অর্থ নিয়ে লাভ ও লোভের খেলায় বুর্জোয়া সমাজে একদল হয় ধনী শোষক, আর একদল হয় চিরকালের সর্বহারা শোধিত। এমন সমাজ-রূপ ও পরিবনের পরিবেশ যে ১৯৪৩-এর মন্বস্তরই, সে বিষয়ে লেখকের তথা গল্পের কথকের স্ক্্সচেতনা এই জাতীয় মন্তব্যে লক্ষ্য করার মত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে মন্স্তরের যোগ গভীর, নিবিড। মাস্ষের সম্পূর্ণ স্বার্থসিছ্বির জন্য তৈরী-কর! যুদ্ধ যে মানুষের মধ্যে এনেছে বৈষম্য, নৈতিকতার অধঃপতন, ঘটিয়েছে মানবতার সমূল ধবংস, যুদ্ধই যে সৃষ্টি করেছে চিরকালেব স্থযোগ-সন্ধানীদেব, যুনাফাখোর- মজুতদারদের, বাড়িয়েছে লোভীর লোভ, অবলীলায় স্ত্টি করেছে অর্থ-্ষমতার গর্বের ও আভিজাত্যের নতুন ধরণের বণিক সমাজ, তার পরিচয় আছে নলিনাক্ষর বিশ্লেষণে» “আজকাল অন্ন দুর্মভ, চাকরি দুর্লভ নয়। যারা চিরনির্বোধ ছিল, তার! হঠাৎ চতুর হয়ে উঠলে! এই সম্প্রতি। একশো টাকার বেশি ষাইনে পাবার কল্পন! যাদের চিরজীবনেও ছিল না, তারা যুদ্ধ লরবরাহের কণ্ট.াকৃটে সহসা হয়ে উঠলো লক্ষপতি এবং ছুত্তিক্ষকালে
১৪০৪
চাউলের জুয়াখেলায় কেউ কেউ হলো সহম্রপতি । হয়তো হুটুর মতো বালকও সেই যুদ্ধকালীন জুয়ার ভাগা ফিরিয়ে ফেলেছে । এ যুদ্ধে কিনা সম্ভব ?৯৩
প্রবোধ কুমার সান্যাল 'অঙ্গার' গল্পে যুদ্ধ-সমকালেই যে সমাজের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের বীজ নিছিত আছে, ত| বুঝেছিলেন । গোট! সমাজে নৈতিক অধঃপতনের সর্বাবয়ব চিন্র যেমন এঁকেছেন, তেমনি দেখিয়েছেন যুদ্ধ-বিধবস্ত বাংলাদেশের যুবকদের ম্লান মতি, প্রাণঙ্ীনতা, যুবপ্রাণের ভিতবের শক্তির ক্ষষরোগে অপচয় । শেক্ালদার বাজাবের কাছে ছোট পিসিব মেজ ছেলে পচিশ বছবও বষল হয়নি এমন টুন্থর সঙ্গে হঠাৎ দেখা হয়|র পর টুগ্চব যে ছবি একেছে নলিনাক্ষ তার তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতায়, তা দুভিক্ষ- কাতর, বল! ভাল বিধ্বস্ত এক সমকালীন যুবকেরই প্রকৃত রূপ :
“দেখ। হতেই সে থমকে দাভালো । বললুম, কিরে টু?
চমকে সে ওঠেনি, কিছুতেই বোধ হয সে আর চমকায় না । কেবল তার অবসন্ন চোখ ছুটে! তুলে সে শান্ত কণ্ঠে বললে, কৰে এলে ছোটদ1?
তাবু হাত ধবে বললুম, তোদেব খবর কিরে ?
খবর ?--বলে দে পথের দিকে তাকালো । কসাইখানাব মিলিটাবী মৃত্যুপথযান্ত্ী রুগ্ন গাভীর মতে। ছুটো৷ নিরীহ তার চোখ , যেন এই শতাব্দীর অপমানের ভারে সে চোখ আচ্ছন্ন ।”১৪
পিদিমা-শোভন।-হারু-মীন্ুদের বৌবাজারের বাড়িতে হঠাৎ দেখা কবতে এসে নলিনাক্ষর ঘে অভিজ্ঞতা, তা-ই “অঙ্গার” গল্পের কেন্দ্রীয় এবং একমাত্র বক্তব্য | সেখানকার অভিজ্ঞতাব হৃত্রে পাঠকরা যে চিত্র দেখে, তার মূল সমাজ জীবনের একেবারে গভীরে প্রোথিত। তা কোনন্নিন আব উন্মুলিত হবে কিনা এমন সন্দেহই আছে গল্পের মূল জিজ্ঞাায় । আশ! নয়, হতাশ! দিয়েই গল্পের পরিণতি অস্কিত। বৌবাজারের বাড়িতে প্রথম ঢোকার পর প্রকাশ্ঠ দিবালোকে নলিনাক্ষর পিসিমা-মীন্-হারুর মধ্যে যে অভিজ্ঞতা অর্জন, ত1 তয়াবহ। মন্বপ্তবের কারণেই ফরিদপুরের গ্রাম ছেডে ঠিকানা গোপন করে, নলিনাক্ষর প্রতি মাসের সুস্থ সাহায্য-দান-টুকুকে অস্বীকার কবে এই বাড়িতে আছে তার।। পারিবারিক মান-সম্মান লঙ্জ। গোপন করতেই এমন আত্মগোপন, আত্মনিরবাসন ! নির্বাপন--সমস্ত সুস্থ সমাজজীবন, মন ও পরিবেশ এবং আত্মীয় সম্পর্ক থেকেই :
“পিলিমা এতক্ষণ বসেছিলেন, অতটা লক্ষ্য করিনি । তিনি এবার উঠে ধাড়াতেই তার ছিন্ধ ভিন্ন কাপড়খানার দিকে চেয়ে মুখ ফিরিয়ে দাড়ালুম । তিনি বললেন, এ বাড়ির ঠিকান। তুমি কাউকে দিয়ো না বাবা।
১৩৪
এমন লময় মী এসে দরজার কাছে চঞ্চল হাসিয়ুথে দাভালো । ব্ল্লো, মা, মা, শ্ুনছ? এই নাও একটা আধুলি'**হবিশবাবু দিল-_।
মীন্থর মাথাব চুল এলোমেলো, পরণের কাপডখান। আলুথালু ৷ মুখখানা! বাঙ।, গলাব আওয়াজটা উত্তেজনায় কাপছে । অত্যন্ত অধীরভাবে পুনরায় মে বললে, যোগীন মাষ্টা বললে কি জানো মা, আজ রাত্তিরে গেলে সেও আট আন দিতে পাবে ।
পিসিম। অলক্ষ্যে আমার মুখের দিকে একবার তাকিযে ঝংকার দিষে বললেন, বেবো --বেবে! হারামজাদি এখান থেকে । বেঁটিয়ে মুখ ভেঙে দেবো তোব।
মীনু যেন এক ফুৎকারে নিবে গেল। মাষের মেজাজ দেখে মুখের কাছ থেকে সবে গিয়ে সে অন্থযৌগ কবে কেবল ৰললে, তুমিই ত বলেছিলে ।
হারু ওপাশ থেকে ঠেঁচিয়ে উঠলো, ফের মিছে কথা বলছিস, মীন্গ? এখন তোকে কে যেতে বলেছিল? মা তোকে রাত্তিরে যেতে বলেছিল না ?৯৫
নলিনাক্ষর পিলিমার মেয়ে মীনগুকে সে এ বাড়িতে ঢোকার সমযেই যেভাবে দেখেছে, সে অভিজ্ঞতা-চিত্র,--'বছর বারো৷ তেবো৷ বষেসের একটি মেযে সকৌতুকে উপর তলাকার সিড়ি বেয়ে মেসের দিকে যাচ্ছে এবং তাঁকে দেখে চার পাঁচটি লোক উপব থেকে নান! রঙ্গে হাতছানি দিচ্ছেঃ আমি তাকে দেখেই চিনলুম, সে পিসিমার মেয়ে ।'১১ আর এই সঙ্গে প্রথম সেই গ্রামের পিসিমাকে দেখাব আঘাত তাকে স্তস্তিত করে, “পিসিম। হিন্দুঘরের নিষ্ঠাবতী বিধবা, ত্রান, আঙ্ছিক, পূজা, গঙ্গাপ্মান, দান ধ্যান এই সব নিয়ে চিরদিন তীকে একটা বড সংসারের প্রতিপালিকাৰ আসনে দেখে এসেছি। সচ্ন্নীতা গরাদের থান পর পিসিমাকে পৃজ।! অর্চনার পরিবেশের মধো দেখে কাহদিন মনে মনে প্রণীম করে এসেছি । কিন্তু তিন বছরে তার একি পবিবর্তন? আমিষ বান্নাঘরে বসে ভাঙা কলাইয়ের বাটিতে চ! খাচ্ছেন তিনি ।৯৭
পিমিমার এই অবতবুণ--এ হল সমাজের মধ্যে ঘুণ ধবাব প্রতীক-গ্রতিম দিক । মা হযে সহ্য-ফুটে-ওঠা কিশোরী স্ব-কন্তাকে পাঠীয় রাতে মেসের পুরুষদের কাছে পদ্সা আনতে । মেয়ে মীন্গু তা উৎসাহে পালনও করে, ছেলে হারু মাবোনেব সামনে সে কথ। চীৎকার করে বাইরের মানুষের কাছেও বলতে নিদ্ধিধব । এ চিত্র মহামনবস্করেই সম্ভব হয়েছে।
বউবাজারের বাড়ির সংসারে শোভনা৷ এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিজেকে নিঃশেষ করেনি 'ষনের দিক থেকে । তাই নিজের ছেলেকে বিধবা হবার পর শ্রগুর বাড়ির লোকদের কাছে ছেড়ে দিয়েও বাচার জন্য সংগ্রামে ক্লাম্ত হতে হতে নলিনাক্ষকে কাছে পেকে শ্বাসরুদ্ধ আর্ড কণ্ঠে বলতে পেয়েছে,--“ছোড়। বলতে পারে৷ আর কতদিন এমনি করে
১৩৬
বাচতে হবে? এ যুদ্ধ কি কোনে! দিন থামবে না ?৯৮ এই শোভনার শেষতম চিত্রটি শোভনার ঘরে আসার জন্য উদগ্রীব খাঁকি-শার্ট-পরা লোকটির সামনে নঙ্গিনাক্ষকে বল! উক্তি, তার কাতর উগ্রভঙ্গি ও :
শোভন! সহসা! আমার পায়ের ওপর লুটিয়ে পড়ে হাউ হাউ করে কাদতে লাগলো! । ব্ললে, কবে ছোডদা, কবে এই রাক্ষুসে যুদ্ধ থামবে, তুমি বলে যাও। তুমি বলে যা, কবে এই অপমানের শেষ হবে, আমাদের মৃত্যুর আর কতর্দিন বাকি?
আন্তে আস্তে আমি পা ছাভিয়ে নিলুম। শোভনার হৃৎপিণ্ড থেকে আবার রক্ত উঠে এলো । বললে, তুমি যেখানে যাচ্ছ, সেখানে যদি কেউ মানুষ থাকে, তাদের বলো, এ যুদ্ধ আমর বাধাইনি, দুভিক্ষ আমরা আনিনি, আমরা পাপ করিনি, আমর! মরতে চাইনি***।১৯
শোভনার মধ্যে বাচাব তীব্রতম আকুতি এবং বাচার প্রয়াস সুস্থ জীবন-বাসনা নিয়েই । কিন্তু মন্স্তরের অভিশপ্ত নিশ্বাসে যে জীবন পতনে ও পচনে অন্ধকারছুষ্ট, তা কি খাগ্ঠাভাব মিটলে ফিরে আসবে আগের সুস্থতায়? পিমিমা নিজের কিশোরী মেয়েকে পাঠিষেছে মেসের আবাসিকদের কাছে । আব বড মেয়ে বিধব। শোভনার সঙ্গে তার সম্পর্ক কি রকম? মানুষে মান্ষে সম্পর্কে ষে বিচ্ছিন্নতা, মা-মেয়ের মানবতার সম্পর্কে যে. নগ্ন কদর্য কপ, ত| সেই হারু-মীন্থকে নির্দয় প্রহাবের কথায়, সম্পর্কের স্থির চিজ্ে নিখুত £
'পিসিমা কলতলার পাশ থেকে বললেন, মারবো না? কলঙ্কের কথ! নিয়ে দুজনে বলাবলি করছিল, তাই বেগম মেরেছি । বেশ করেছি।
কিন্তু ওদেব মেরে কলক্ক ঘোচাতে তুমি পারবে ?
পিসিম! চিৎকাব কবে উঠলেন, ভাবি লম্বা লগ্বা কথা! হয়েছে তোর শোভা । এত গায়ের জালা তোব কিসেব লা? দিন রাত কেন তোর এত ফৌোস-ফ্োসানি? কপাল পোভালি তুই, মান খোয়ালি, মেকি আমার দোষ? পেটের ছেলে-মেষেকে আমি মারবো, খুন করবো, য। খুশি তাই কবধবো--তুই বলবার কে ?
শোভন! গর্জন কবে বললে, পেটের মেয়ের যে তোমার পেটের অন্ন ঘোগাচ্ছে, তার জন্তে লজ্জা! নেই তোমার? মেরে মীন্ুটার গায়ে দাগ করলে তোমার কী আক্কেল? একেই ত ওর ওই চেহারা, এর পর ঘর খরচ চলবে কোখেকে? লজ্জ! নেই তোষার ?
তবে আমি হাটে হাড়ি ভাঙবো, শোভ1-_-এই বলে পিসিম। এগিয়ে এলেন । উচ্চকণ্ঠে বললেন, নলিনাক্ষ আছে তাই চুপ করেছিলু় । বলি, ফরিদপুরের বাড়িতে বসে বিনোদবালার ঠিকানা কে যোগাড় করেছিল ? গাড়িভাডা কার কাছে নিয়েছিলি তুই ?
১৬৭
অধিকতর উচ্চক্ঠে শোভন] বললে, ত হলে আমিও বলি। মাস্টারকে কে এনে ঢুকিয়েছিল এই বাসায়? হবিশ যোগেনদেব কাছে কে পাঠিয়েছিল মীন্থকে ? আমাকে কেরানি বাগানের বাসায় কে পৌছে দ্িষে এসেছিল? উত্তর দাও? জবাব দাও? হোটেলের পাউরুটি আর হাডের টুকবে। তুমি কুভিয়ে আনতে বলোনি হারুকে ? দুটু বাডি আপ। ছাড়লো কার জন্যে?
মুখ সামলে কথা বলিস, খোভ। |."
মারমুখী মা ও মেয়ের এই অদ্ভুত ও অবিশ্বান্ত অধঃপতন দেখে আমি আর স্থির থাকতে পারুলুম না । উঠে বাইবে এসে দাভালুম 1২০ এমন কলহের চিত্রে এই দুই নায়িকা একদিন বাংলাব শ্টামল গ্রামেব স্রেহশীল! আচাবনিষ্ঠা, ঈশ্বরবিস্বাসী মা ও পরম আদরের কন্যা গৃহবধূ ছিল-_তা৷ ভাবতেই পাবা যায় না । ১৯৪৩-এর ভযাবহ মন্বন্তব একে একে অবতরণিকাদের জন্য সিডির ধাপগুলি তৈরী করে দিয়েছিল। মন্বন্তরের নির্মম নিষতিব নির্দেশ এর মধ্যেই ! মা ও মেয়ের, মা ও ছেলের, ভাই ও বোনের, স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্ক যে কত মধুর, কত বড়, তাকে সম্পূর্ণ তূলিয়ে দেয়, যেন বা ভুল প্রমাণ করে “অঙ্গার' গল্পের এমন চিত্রগুলি। নলিনাক্ষ শেষে ওদের জন্যে জামা-কাপড়, খান্চ এনে দিলে অসীম তৃপ্তিব মধ্যে শোভন! সেই অন্তীতেব মানবিক সম্পর্ক, আত্মসম্মানবোধ, আভিজাত্যবোধেব সম্মতির মধ্যে ডুব দেখ £
'ছোভদা, মনে আছে কোর। জামা-কাপড় পরে লোকের সামনে এসে দাভানে। আমাদের পক্ষে কি লজ্জার কথা ছিল? দোকান থেকে চাল-ডাল এলে লুকিয়ে সেগুলোকে সরিয়ে ফেলতুম-_পাছে কেউ ভাবে, চাল কেনার আগে আমাদের বুঝি খাবার কিছু ছিল না। মনে আছে ছোডদ। ?২৯
ব্স্তত গ্রবোধ কুমার সান্যাল মন্নন্তরেব যথার্থ প্রতিক্রিয়াটি শিল্পসম্মত এবং নিম্পৃহ এক এঁতিহাসিকের দৃষ্টিতে বুঝতে পেরেছিলেন । বুঝেছিলেন যুদ্ধের পরিবেশে এই মন্বন্তর কোন সাময়িক অবক্ষয় মাজ্স হ্ৃপ্টি করবে না, এর প্রভাব আগামীিনের সমাজ- ক্ষষের উপযুক্ত ভূমিকাই রচনা করছে। গ্রামবাংলার পরিবারের শহরমুখী হওয়া, শহরের ছুষ্ট ক্ষতকে সর্বাঙ্গে ছুরারোগা ত্ব্য কোন যৌনব্যাধিব মৃত গ্রহণ করা, শহবের অমোঘ মৃত্যুবাণ ষে মানুষে মানুষে চিরকালেব মানবিক সম্পর্কে ভাঙন সৃষ্টি ও একজন থেকে আর একজনকে অবধারিত ৪1678610-এর মধ্যে ঠেলে দেওয়ায় তার আঘাত গ্রহ্ণ--এই বিষয়কেই লেখক গল্পের মধ্যে আগ্ঘন্ত নিরাসক্ত দুটিতে একেছেন। এই নিরাসক্তি কত বড় শিল্প-ব্যঞ্জনা পেয়েছে, তার প্রমাণ নিহিত আছে গল্পের বর্ণনায়
১০৮
একাধিক উপম! ব্যবহারেব মধ্যে। মন্বস্তরেব অন্তঃশীল স্ুপের ছবি আকতে গিয়ে লেখক শোভনার একটি হাসিকে এভাবে চিজ্ জিত কবেছেন £
“দেখতে দেখতে তাঁর গলার ভিতর থেকে পচ ভাতের ফেনার মতো। একপ্রকার রুগ্জ হাসি বমির বেগে উঠে এল | শীর্ণ মুখখানা যেন প্রবল হাসির যন্ত্রণায় সহসা ফেটে উঠলো। শৌভনা হা-হা করে হানতে লাগলো । সে হাসি বীভৎস, উন্মত্ত, নির্লজ্জ এবং অপমানজনকও বটে। আমার নির্বোধ কৌতৃহল স্তব্ধ হয়ে গেল ১২২
গল্পের মুল কথক নলিনাক্ষও একটি চরিত্র এবং গল্পের মূল লক্ষ্য থেকে সে বিচ্ছিন্ন নয়। সে এদেবই পরিবারেব একজন । সে দ্িল্লীব অধিবাী এবং একজন মোট। মাইনের চাকুবে। বাংলাদেশে যুদ্ধদমকালীন মন্ম্তর সম্পর্কে দে একেবারেই অজ্ঞ। সমস্ত ব্যাপাবটাই তাব কাছে যেমন কৌতৃহলেব, তেমনি বিষাদময়তার, তেমনি নির্য আঘাতেব ও বেদনাব। তার একেব পব এক পরিবার-জীবন, ব্যক্তিজীবন, সমাজ জীবন সম্পর্কে ধারণ ভাঙতে ভাঙতে এক সমধ সে নিজেকে ফাক। ফাপ। মনে করে। সেও যেন পবিবার জীবন থেকে চিবকালেব জন্য বিচ্ছিন্ন এক মানুষ__এক নির্জন ত্বীপ। এক ইংরেজ কবির ভাষায “৬/৩ 216 09৩ 1)0110%/ 15000২৩-এব একজন । সেই বিধ্বস্ত কলকাতায় আস। এক প্রবাসী বাঙালীব আত্মোক্তি নিহিত নিঃসঙ্গতা ভষগ্কব :
“আমি এই পবিবারের মানুষ, আমি এদেরই একজন, এই আত্মীয় পবিবাবেই আমার